নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফারুক হোসেন - নাট্যকার ও পরিচালক

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪১

কোন এক অফিসের ঢাকা ব্রাঞ্চে একজন নতুন স্টাফ জয়েন করেই অফিসের সবার সাথে বাজি ধরতে শুরু করে, এবং সবাইকে হারিয়ে দিতে থাকে। ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সাথেও দু’দুবার বাজি ধরে হারিয়ে দিয়েছে। অফিসের সবাই যখন তার বাজির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ তখন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তাকে চিটাগাং ব্রাঞ্চে বদলি করে দেন। তারপর চিটাগাং ব্রাঞ্চের ম্যানেজার এক্স কর্নেল সাহেবকে ফোনে অনুরোধ করেন,‘একে যেন ভাল মতে টাইট দেন, কারণ- এর বাজির যন্ত্রণায় ঢাকা অফিসের সবাই ফতুর হয়ে গেছে।’ চিটাগাংয়ের ম্যানেজার, এক্স কর্নেল সাহেব আশ্বস্ত করেন,‘চিন্তা করবেন না, এমন টাইট দেব, জীবনে আর বাজি ধরবে না।’
সেই স্টাফ চিটাগাং অফিসে জয়েন করেই কর্নেল সাহেবের কামরায় গিয়ে বলে,‘স্যার, বাজি আপনার ডান পাছায় একটা ফোঁড়া আছে !’
এক্স কর্নেল চমকে ওঠেন,‘হোয়াট !’
‘আপনার ডান পাছায়...’
স্যাটাপ ! গেট আউট !’
‘স্যার এক লক্ষ টাকা বাজি।’
‘জাস্ট গেট আউট।’
‘দুই লক্ষ টাকা।’ এক্স কর্নেল সাহেব থমকে যান,‘ডান পাছায় একটা ফোঁড়া...।’
ঢাকার ম্যানেজারের কথা এক্স কর্নেল সাহেবের মনে পড়ে,“এর সাথে বাজিতে কেও কখনও জিততে পারে না, সবাইকে সে হারায়।” আজকের বাজিতে সে হারবে, কারণ কর্নেল সাহেব জানেন ওনার পাছায় কোন ফোঁড়া নেই, তার ওপর দুই লক্ষ টাকা।
‘স্যার আড়াই লাখ টাকা ।’
আড়াই লাখ ! কর্নেল সাহেব হুট করে রাজি হয়ে যান,‘ডান।’
তারপর কর্নেল সাহেব পেন্ট খোলেন। স্টাফ কর্নেল সাহেবের পেছন হাতিয়ে দেখে, না কোন ফোঁড়া নেই। সে আড়াই লক্ষ টাকা চেবিলে রেখে মন খারাপ করে বেরিয়ে যায়।
সাথে সাথে এক্স কর্নেল সাহেব ঢাকার ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে বলেন,‘কি লোক পাঠালেন, এর সাথে নাকি কেও বাজিতে হারে না, সেতো প্রথম দিনই আমার কাছে আড়াই লাখ টাকা হারল?’
ঢাকার ম্যানেজার অবাক,‘সে আপনার সাথে কী বাজি ধরেছে ?’
‘আমার পেছনে না কি ফোঁড়া আছে, হা, হা, হা।’
‘তা-তা-তারপর ?’
‘তারপর আর কি, পেন্ট খোলি, সে পরীক্ষা করে দেখল, কোন ফোঁড়া নেই, তারপর আড়াই লক্ষ টাকা রেখে বেরিয়ে যায়।’
‘ব-ব-ব-বলেন কি ! পরীক্ষা করার সময় সে কি আপনার অই (...) জায়গায় আঙুল দিয়েছে ?’
‘ভাল ভাবে পরীক্ষা করতে হলেতো দিতেই হবে, তাতে আমি কিছু মনে করি নি।’
‘মা-মা-মাইরা ফালাইছেন।’
‘মানে !’
‘টাইট দেয়ার জন্য তাকে আপনার কাছে পাঠাচ্ছি শোনে সে আমার সাথে দশ লক্ষ টাকা বাজি ধরে গিয়েছে - প্রথম দিনই সে আপনাকে অই জায়গাই আঙুল দিয়ে ঘুরাবে !’
এটা একটা কৌতুক। এই কৌতুকের ভাব নিয়েই ফারুক হোসেন তার প্রথম নাটক “বাজিকর” লিখে, সালাউদ্দিন লাভলু পরিচালনা করেন। চ্যানেল আইতে প্রচারিত হয়েছিল। বাজিকরের ভূমিকায় অভিনয় করে সহিদুজ্জামান সেলিম সে বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরুষ্কার জিতেছিলেন।
কিন্তু নাটকটা দেখে আমার অনেক রাগ হল, একটা কৌতুক নিয়ে কেন নাটক লিখবে ? নাটকের বিষয় বস্তুর কি এত অভাব ? কিন্তু দিন শেষে মানতে বাধ্য হয়েছি - ফারুক হোসেন কাজটা করেছে দুর্দান্ত। সেই থেকে আমি তার ভক্ত। সুযোগ হলেই তার নটক দেখি।
সেই নাট্যকার ফারুক হোসেন আর নেই। ১৯ তারিখ সাগরে নেমেছেন, আর উঠেন নি। এটা শোনার পর থেকে কিচ্ছু ভাল লাগছে না। এটা কেন হবে ? এখন তো তার যাবার সময় না। আর স্রষ্টাই বা তাকে এত তাড়াতাড়ি নিয়ে যাবেন কেন ? আর যদি নিয়েই যাবেন, তাহলে এত প্রতিভা দিয়ে পাঠিয়ে ছিলেন কেন ?
জানি স্রষ্টার কাজে কোন ভুল নেই, কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে এটা ঠিক হলো না, একদম ঠিক হলো না।
আমি দুই হাজার সাল থেকে নাটক লেখি, যে চায়, তাকেই স্ক্রিপ্ট দেই। এক সময় দেখলাম আমার একাধিক স্ক্রিপ্ট একটু এদিক সেদিক করে কয়েকজনই নাটক বানিয়েছে। ( এদের কয়েকজন নাট্যঙ্গনের বিখ্যাত ব্যাক্তি ) অবাক হয়ে সেসব নাটক প্রচারিত হতেও দেখেছি। আর তিন বছর আগে এক প্রডিউসির আমার স্ক্রিপ্টে নাটক বানিয়ে চ্যানেলে জমা দিলে; চ্যানেল থেকে ফিরিয়ে দেয়, এই নাটক আগের বছর প্রচার হয়েছে বলে। সেই প্রডিউসার এখনও নাটকটা বিক্রি করতে পারে নি।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, স্রষ্টা সেই সব কপিবাজ চোর প্ররিচালক বা রাইটারদের কি দেখতে পান না ? ফারুক হোসেনকেই দেখতে পেলেন !
ফারুক হোসেন - তোমার এই চলে যাওয়া কোন মতে মেনে নিতে পারছি না। কিছুতেই না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.