নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্মদিন যে তাই - যা ইচ্ছে হলো তাই

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৩

-‘লেপ-তোষক বানাইবেন, লেপ-তোষক ? এ-ই-ই-ই লেপ-তোষক !’
সাত্তার মিয়া দোতালার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ধোনকারের দিকে তাকিয়ে আছে। এক মাসও হয়নি তিনি এ মেসে ওঠেছেন, এখনও বিছানাপত্র কেনা হয় নি। এ কারণেই হয়তো ধোনকারকে দেখছেন।
-‘এ-ই-ই-ই লেপ-তো..’ হঠাৎই ধোনকারের সাথে সাত্তার মিয়ার চোখাচোখি হয়ে যায়। ‘স্যার তোষক বানাইবেন ? তোষক ? ভাল তুলা আছে ? বানাইবেন ?’
সাত্তার মিয়া একটু ভেবে উপরে আসতে বলে।
ধোনকার উপরে এসে জানতে চায়,‘কয় হাত বানাইবেন? স্টেন্ডার সাইজ বানান - সাত ফুট, পাঁচ ফিুট ?’
-‘বানাও ।’
-‘তুলা দেখেন, ধোনকার ঝোলা থেকে তুলার স্যাম্পল বের করে সাত্তার মিয়াকে দেখায়,‘এইটা গার্মেন্টসের ঝুটের তুলা, আর এইটা সব থিকা ভাল, কার্পাস তুলা, এইটা দেই ?’
-‘দেও।’
তারপর ধোনকার তুলা এনে ধুনচি দিয়ে তুলা ধোনে আড়াই ঘন্টা লাগিয়ে তোষক বানিয়ে সাত্তার মিয়াকে জিজ্ঞেস করে,‘স্যার কোন খাটে বিছাইবেন ? বিছাইয়া দিয়া যাই ।’
-‘আমার তো খাট নাই,’ সাত্তার মিয়া নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলেন।
-‘খাট নাই ?’
-‘না।’
-‘তাইলে তোষক বানাইলেন যে ?’
-‘তুমি বললা, তাছাড়া ভাবলাম - তোষক যখন দিতাছ, খাটও দিবার পারবা !’
-‘খাট দিবার পারমু ? কি কন ? স্যার, আমি তোষক বানাই, তোষক। খাট না ?’
-‘আমিও তো তাই বলছি, তোষক যখন বানাও তখন একটা খাট বানায়ে দিলে কী হয় ?’
-‘খাট বানাইয়া....! আরে ! কাঠ কি আমি মাথায় নিয়া ঘুরুম ? মাবুদ ! আইজ কার মুখ দেইখা বার হইছি ?’ কার মুখ?’ হঠাৎ ধোনকারের মাথায় বুদ্ধি আসে,‘আচ্ছা আপনে কোন রুমে থাকেন ? এই রুমে ?’ সাত্তার মিয়া মাথা ঝাঁকায়, ‘এক কাজ করেন, আরও কিছু টাকা দেন, তুলা আনি, আইনা এই রুমের মাপে একটা তোষক বানাইয়া দেই, আপন দরজা থিকা জুতা খুইলা বিছানায় উঠবেন, বিছানায় বইয়া বইয়াই ট্রাংক, আলমারি খুলবেন, কাপড়-চোপড় পরবেন, মাথা আচঁড়াইবেন। সবচেয়ে বড় কথা আপনের রুম ঝাড়ু দেওন, মোছনের কোন দরকার নাই।’
-‘বুদ্ধিতো ভাল ! তাহলে তাই দেও, কি দরকার আলাদা খাটের ? সারা ঘরটাই বিছানা। হাত-পা ছড়ায়ে গড়াগড়ি করে ঘুমালেও সমস্যা নাই। বানাও, রুমের মাপে তোষকই বানাও।’
ধোনকার আবার টাকা নিয়ে নতুন করে আরও তুলা এনে সদ্য বানানো তোষক খুলে সব তুলা ধোনে রুমের মাপে তোষক বানিয়ে সাত্তার মিয়ার রুমে বছিয়ে দেয়,‘নেন আপনের ঘর মাপের তোষক বানাইয়া দিলাম, এইবার চেয়ার-টেবিল, আলমিরা, ট্রাংক সব রাখেন এইটার উপর, তারপর বিছনায় বইসা বইসাই সব করবেন।’
-‘গুড, ভেরি গুড, এবার তাহলে একটা আলমারির ব্যবস্থা করো ।’
-‘আলমারি .... ? আ-আ-আপনের আলমারি নাই ?’ সাত্তার মিয়া মাথা এপাশওপাশ করে। ধোনকার এবার থেমে থেমে জিজ্ঞেস করে,‘ট্রাংক ?’ সাত্তার মিয়া আবার মাথা এপাশওপাশ করে।
-‘না, তোষকের উপর রাখার মত আমার কিচ্ছু নাই,’ সাত্তার মিয়ার সরল স্বীকারোক্তি। দেও, দুই একটা ব্যবস্থা করে...’
সাত্তার মিয়া কথা শেষ করতে পারে না, ধোনকারের হঠাৎ এক টানে ধুনচির তার ছিঁড়ে ফেলে, তারপর ফ্লোরে দুই বারি দিয়ে ধুনচিটা ভেঙে ভাঙা ধুনচির উপর লাফাতে থাকে । ‘কার মুখ দেইখা উঠছস আইজ, কার মুখ ? হ্যাঁ ? লেপ-তোষকের কারবার আর করবি ? আর ? হালার লেপ-তোষকের ..... মারি না। লেপ-তোষকের মায়রে ......’ বলতে বলতে ভাঙা ধুনচি, ঝোলা ফেলে ধোনকার বেরিয়ে যায়। সাত্তার মিয়া রুম-বিছানায় দাঁড়িয়ে হ্যাঁ হয়ে থাকে।
আজ আমার জন্মদিন যে তাই, লিখলাম যা ইচ্ছে হলো তাই। সবাই ভাল থাকুন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৯

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: শুভ জন্মদিন। শুধু এই দিন না, সব সময়েই যা মন চায় লিখুন। লেখার আনন্দটাই আসল।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: শুভ জন্মদিন
লেখা ভালো হয়েছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.