নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন ব্লগার হিসাবে সামুর সাথে ২০১৩ সাল থেকে আছি কিন্তু ২০১৪ সালের শেষের দিক থেকে আমার লেখা প্রথম পাতায় যায় না (২০১৫ এর মাঝে ১ মাস বাদে)। আমি কিন্তু আবার একজন সেইফ ব্লগার!!!

রেজওয়ান26

প্রত্যেক মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে । সেটা যে কোন সময়ই হতে পারে ।

রেজওয়ান26 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ত্রিধারায় বিভক্ত গণজাগরণ মঞ্চ, মুখপাত্র কে ?

২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০১

গণজাগরণ মঞ্চের বিতর্ক তুঙ্গে। মূল দাবি থেকে বেরিয়ে অনিয়ম আর মুখপাত্র নিয়ে বিরোধে টালমাটাল আলোচিত এ সংগঠনটি। ইতিমধ্যে দুটি অংশ ইমরান সরকারকে মুখপাত্র পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অভিযোগ অর্থ আত্মসাৎ স্বেচ্ছাচারিতা, একক সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ অসংখ্য। এতদিন যারা মঞ্চের আন্দোলনের মূল কান্ডারী ছিলেন তারাই এখন ইমরানের বিষোদগারে ব্যস্ত। ইমরানের কাছের মানুষগুলো এখন বহু দূরে। তিন ধারায় বিভক্ত মঞ্চের নেতাকর্মীরা। দিশেহারা গণজাগরণ মঞ্চের সূচনা থেকে মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসা ইমরান এইচ সরকার।



সুনির্দিষ্ট ছয় দফা দাবি নিয়ে গত বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে উদ্ভব গণজাগরণ মঞ্চের। ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের (বোয়ান) ব্যানারে এ আন্দোলন শুরু হয়। মুখপাত্রের দায়িত্ব পান ইমরান এইচ সরকার। প্রথম কয়েক দিন সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও ধীরে ধীরে তার মূল চিত্র বেরিয়ে আসতে শুরু করে। প্রকাশ পায় সরকার দলীয় সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগ এবং তাদের সমর্থক বাম ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী এবং জাসদ ছাত্রলীগের মতো সংগঠনগুলোর প্রভাব। পরে ছাত্রলীগও মঞ্চ থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয়।



জানা যায়, প্রথম থেকেই জাসদ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি হোসাইন আহমেদ তাফসীর আন্দোলনে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে অজানা কারণে কয়েক মাস পরেই তিনি মঞ্চ থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। এছাড়া বাপ্পাদিত্য বসু, তানভীর রুসমত, শামসুল ইসলাম সুমনসহ ব্লগার মাহমুদুর হক মুন্সী বাঁধন, উন্মেষ, মারুফ রসূল, অনিমেষ রহমান প্রমুখ ইমরানকে সমর্থন দিয়ে গেছেন দীর্ঘদিন। বেশ কয়েকবার মঞ্চের ওপর ছোটখাটো অভিযোগের ঝড় গেলেও তারা সরে যাননি। মঞ্চের আন্দোলন শুরুর ১৫-২০ দিনের মধ্যে কিছু অনিয়মের গুঞ্জন উঠলেও তা কখনো হালে পানি পায়নি। সাইবার জগতের কিছু পোস্টের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল।



তবে দিন যাওয়ার সাথে সাথে গণজাগরণ মঞ্চের সমর্থনও কমতে থাকে। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলামের উত্থান, পর পর দুটি সমাবেশ এর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মঞ্চের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাস্তিকতার অভিযোগে হেফাজতের উত্থান গণজাগরণ মঞ্চের জনসমর্থন কমার পেছনে পালন করে বড় ভূমিকা। বিশেষ করে ৫ মের শাপলা চত্বরের সমাবেশ যেদিনকে অনেকে ‘শাপলা ট্রাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করেন। এরপর গণজাগরণ মঞ্চের জনসমর্থনে ধ্বস নেমে গুটিকয়েক মানুষের আন্দোলনে পরিণত হয় বলে অভিমত অনেকের।



এভাবেই গত প্রায় এক বছর ঢিমেতালে চলেছে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন। তবে চলতি বছরের ২৬ মার্চের নাটকীয় একটি ঘটনার মাধ্যমে আবারো আলোচনায় গণজাগরণ মঞ্চ। এটিকে মঞ্চের ভাঙ্গনের সুত্রপাত বলেও মনে করছেন অনেকে। ২৬ মার্চ শাহবাগে সমাবেশ করার জন্য মঞ্চ তৈরি করে গণজাগরণ মঞ্চ। যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিয়ে আসে খোদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে গণজাগরণ মঞ্চের পতাকা অবমাননার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা এবং শাহবাগে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। যার নেতৃত্বে ছাত্রলীগেরই কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখা যায়। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন করে ইমরানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ নিয়ে আসেন বৈশাখ উদযাপন কমিটিতে থাকা ওই নেতাকর্মীরা।



তবে গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইমরান এইচ সরকার গণমাধ্যমের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীরা বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে আসেন। যা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ৫ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ ইমরানকে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান। এমনটি ইমরান অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে ছাত্রলীগ জাতীয় প্রেসকাবের সামনে গিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। যদিও পরে কাউকেই ক্ষমা চাইতে দেখা যায়নি।



একই দিন দুপুরে ইমরান এবং তার সঙ্গীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সংবাদ সম্মেলন করে। ওই দিন তারা ৩ এবং ৪ এপ্রিল তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং মামলার জন্য ইমরানকে দায়ী করেন।



পরে গত ৮ এপ্রিল গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের অগণতান্ত্রিক এবং অনৈতিক অবস্থানের কারণে গণজাগরণ মঞ্চে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ৫ বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনটি করা হয়। সংগঠনগুলো হল- ছাত্রমৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ঐক্য ফোরাম এবং ছাত্র সমিতি। ঐদিন ইমরানের সাথে সবচেয়ে ঘনিষ্ট বলে পরিচিত ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তবে আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। ঐদিন জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মনজুর রহমান মিঠু, ছাত্র ঐক্য ফোরামের আহ্বায়ক সোহান সোবহান, ছাত্র সমিতির আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান খান প্রমুখের মতো মঞ্চের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে এ পর্যন্ত গণজাগরণ মঞ্চে ভাঙ্গন দেখা যায়নি।



এরপর গত ১২ এপ্রিল অনেকটা আকস্মিকভাবেই ইমরানকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় মঞ্চের একাংশ। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে অব্যাহতির ঘোষণা দেয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও প্রজন্ম একাত্তর নামের দুটি সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের অন্যতম সংগঠক কামাল পাশা চৌধুরী বলেন, আমরা গণজাগরণ মঞ্চের শুরু থেকেই ছিলাম। কিন্তু ইমরান এইচ সরকার একচেটিয়াভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গণজাগরণ মঞ্চকে বিতর্কিত করেছে। এরপর বেশ কয়েকটি কর্মসূচীতে তাকে ওই অংশের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।



গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করে ইমরান এবং পাশাপন্থী গণজাগরণ মঞ্চের দুই অংশ। একই সময়ে আলাদা দাবিতে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচী পালন করায় মঞ্চের উভয় পক্ষ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীর কারণে সঙ্ঘাতের আশঙ্কায় পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উভয় পক্ষের কর্মসূচীর কোনো অনুমতি ছিল না প্রশাসনের। তবে তারা কর্মসূচী পালনের সময় পুলিশ তাদেরকে তেমন কোনো বাধা দেয়নি।

প্রায় এক মাস ধরে গণজাগরণ মঞ্চের নাটকীয় ঘটনা প্রবাহের সর্বশেষ সংযোজন ইমরানকে মঞ্চের মুখপাত্রের পদ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো অব্যাহতি দেয়া। এবার অব্যাহতি দেয় আন্দোলনের সূচনাকারী ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক (বোয়ান)। গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।



সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে ব্লগার অনিমেষ রহমান বলেন, মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে এবং বোয়ানের আহবায়ক হিসেবে ইমরান তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। এই মুহূর্তে গণজাগরণ মঞ্চ কার্যকর নেই। তিনি মঞ্চকে পুনর্গঠন করা হবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেন, ব্যক্তি ইমরান গণজাগরণ মঞ্চের বক্তব্যকে আলাদা করতে পারেনি। এ সুযোগে মতলববাজ গোষ্ঠী তার মুখ থেকে বিভ্রান্ত ও গোপন এজেন্ডার পক্ষে কথা বলিয়ে নিতে পারছে। এটা মঞ্চের ছয় দফা দাবির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে তিনি অভিযোগ করেন। তারা গণজাগরণের কোন খণ্ডিত অংশের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না বলে জানান।



ওইদিন সংবাদ সম্মেলনে আকলিমা সুলতানা, সুপ্রীতি ধর, ড. রাশিদুল হাসান, প্রীতম আহমেদ, মোরসালিন মিজান প্রমুখসহ শীর্ষ ব্লগার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে অবশ্য এ অংশকে কোন কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেখা যায়নি।



এক বছর আগের সারা বিশ্বের তুমুল আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চ এখন তিন ধারায় বিভক্ত। তবে তিন অংশেরই কর্মী সংখ্যা খুবই নগন্য। সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। মঞ্চের প্রতিষ্ঠাকালীন মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের কাছের লোকেরাই এখন আর তার সাথে নেই। শুধুমাত্র ছাত্র ইউনিয়নসহ দু‘একটি বাম ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী এবং হাতে গোনা কয়েকজন ব্লগার নিয়ে তাকে সর্বশেষ কর্মসূচীগুলো পালন করতে দেখা গেছে। অনেকে তাদের বিরুদ্ধে মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।



তবে মুখপাত্রের পদ থেকে কারো সরিয়ে দেয়ার এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেছে ইমরান। তার বিরুদ্ধে আনীত আর্থিক অনিয়মসহ সকল অভিযোগও বিভিন্ন সময়ে অস্বীকার করে আসছেন। তিন ধারায় বিভক্ত গণজাগরণ মঞ্চের ভবিষ্যত নিয়ে এখন সন্দিহান অনেকেই। অনেকে মনে করছেন মঞ্চের পতন এখন সময়ে ব্যাপার মাত্র। একের পর এক ধেয়ে আসা সমালোচনার বাণে বিদ্ধ ইমরান সরকার এখন দিশেহারা। তার এক সময়ের কাছের মানুষ গুলোই তার বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ নিয়ে আসছেন। এ অভিযোগ, সমালোচনা সহ্য করে তিনি কী করেন বা মঞ্চ নিয়ে পরে আর কী কী নাটকীয়তা অপেক্ষা করছে তা দেখার অপেক্ষায় সবাই।



(তথ্য সূত্র: দৈনিক নয়া দিগন্ত আনলাইন ২১/০৪/২০১৪)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০৫

ইসপাত কঠিন বলেছেন: বিভিন্ন জায়গায় যা আসছে সেগুলো সত্যি হলে তো মুখপাত্র মানে দাড়াবে যে পাত্রের মুখ আছে। (এখানে পাত্র ক্লীব লিংগ এবং মুখ অর্থ-বিত্ত ঢুকানোর জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.