নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ এর ব্লগ

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ

আমি অক্সিজেনকে ভালবাসি, তাই বলে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে ঘৃণা করতে পারিনা। কারণ আমি যার কাছ থেকে আমার ভালবাসাকে পাই সে তো কার্বন ডাই- অক্সাইডকেই ভালবাসে।

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটাকেই খুন করেছেন অঞ্জন দত্ত

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১৮



সমবেত সকলের মতো অঞ্জন দত্তের গান আমার প্রিয়। সিনেমাও তাই। তবে তার প্রথম ওয়েব সিরিজ আমার পছন্দের তালিকায় নাম লেখাতে পারল না। কেন পারল না—সে বিষয়ে আলোকপাত করা যাক। তার আগে একবার কাহিনির ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলি চলেন।

ওয়েব সিরিজটির নাম— মার্ডার ইন দ্য হিলস। নাম শুনে যে কেউ আন্দাজ করে নেবেন যে, পাহাড়ে খুন-খারাপির কোনো গল্প নিয়ে এটির কাহিনি ডালপালা গজিয়েছে। এজন্য কাউকে খুব বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। একটি খুনকে কেন্দ্র করে ওয়েব সিরিজটিতে যে রহস্যের জাল বোনার চেষ্টা করা হয়েছে তা পুরোপুরি ব্যর্থ বলা চলে নির্দ্বিধায়। একটু বাড়িয়ে বলা যায়, পাহাড়ে খুন দেখাতে গিয়ে নিজেই সিরিজটির গল্পকে খুন করেছেন পরিচালক।

ত্রিশ বছর আগের ঘটনা। টোনি রায়—বাংলা সিনেমার সুপারস্টার। যৌবনকালে নানা অপকর্ম করে বেড়িয়েছেন তিনি। সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ করিয়ে দেওয়ার কথা দিয়ে অরুণা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয়। সেই প্রেম এতটাই গভীর হয় যে, অরুণা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু টোনি রায় সন্তানের দায়িত্ব নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। গর্ভেই সন্তানকে নষ্ট করার চাপ দেন। সেজন্য বড় অঙ্কের টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয় অরুণার ভাইকে। তিনি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনবে বলে জানান। ফলাফল খুন করা হয় তাদের সবাইকে।

ত্রিশ বছর পর টোনি রায়ের দার্জিলিংয়ের বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে তিনি যাদের আমন্ত্রণ জানান তারা সবাই ওই খুন হওয়া মানুষদের সন্তান ও ভাই। যদিও টোনি রায় তাদের চিনতেন না। সেই অনুষ্ঠানে একজন সাংবাদিক উপস্থিত থাকেন। তিনি স্বতন্ত্র চরিত্র। তো ওই জন্মদিনের পার্টিতে কেক খেয়ে মারা যান টোনি রায়। মূলত, ওরা সবাই মিলে প্রিয়জন হত্যার প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে খুন করেন টোনি রায়কে (এটা দেখানো হয় সিরিজের শেষে)। সাংবাদিক অমিতাভ ধারণা করেন, এটা খুন। তিনি শুরু করেন গোয়েন্দাগিরি।

এই হলো সংক্ষেপে সিরিজটির কাহিনি। অপ্রিয় হলেও সত্য, প্রতিটি পর্বের কোথাও টুইস্ট দিতে পারেননি পরিচালক। এমনকি শেষে যে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সেটাও ঠিকঠাক পারেননি। টোনি রায় খুনের সব ক্লু-ই যেন সহজে পেয়ে যাচ্ছিলেন অমিতাভ। খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি তাকে। গোয়েন্দা ক্লু খুঁজবে, অথচ সেখানে বেগ পেতে হবে না; তা কি মেনে নেবে দর্শক? মোটেই না। শুধু তাই নয়, ফেলুদা, ব্যোমকেশ বক্সি কিংবা শার্লক হোমসের মতো মোটেই মাথা খাটাতে হয়নি তাকে।
শেষে বলা হয়ছে, খুনিরাই তার হাতে ক্লু পৌঁছে দিয়েছেন। যেন তারা সন্দেহের বাইরে থাকেন। কিন্তু এটা তো দুর্বল গাঁথুনি। এতে করে গল্পটি আরও মার খেয়ে গেছে।

এখানে চরিত্রগুলোর মধ্যে আছেন—ফুটবলার, নেপালি টিচার, সাহিত্যিক, পুলিশ অফিসার, বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথ আশ্রম চালানো ব্যক্তি। ছিলেন নারী চিকিৎসকও। অথচ তাদের চরিত্রগুলো স্ট্যাবলিশ করার মতো কোনো দৃশ্যই ছিল না পুরো সিরিজ জুড়ে। এমনকি মুখে না বললে জানাই যেত না অমিতাভ একজন সাংবাদিক।

সবথেকে বড় অসঙ্গতি হলো, সুপারস্টার টোনি রায় মারা গেলেন। কিন্তু সেখানে কোনো টিভি চ্যানেল যায়নি। অমিতাভ ছাড়া আর কোনো পত্রিকার সাংবাদিককে দেখা যায়নি। এত বড় একজন অভিনেতা মারা যাওয়ার পর কোনো সংবাদমাধ্যম নড়েচড়ে বসেনি, ভাবা যায়! তার মানে সিরিজটি নড়বড়ে একটি গল্পে নির্মিত হয়েছে।

এই সিরিজে অনেক বড় তারকা অভিনয় করেছেন। তারা কেউ-ই তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। কেমন যেন খেই হারিয়ে ফেলেছেন তারা।

সিরিজ ভালো না লাগলেও দার্জিলিংয়ের অপরূপ দৃশ্য ভালো লেগেছে। দেখতে দেখতে ওখানে যাওয়ার মনবাসনা জেগে ওঠে। করোনাকাল কেটে গেলে অবশ্যই দার্জিলিং থেকে ঘুরে আসব। তখন যদি অঞ্জন দত্তের কোনো ছবি মুক্তি পায় সেটাও সিনেমা হলে বসে দেখে আসব। কারণ, আমি যে তার ভক্ত।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: ভাল লাগল ওয়েব সিরিজটা নিয়ে আপনার আলোচনা!
অন্য সবার মত অঞ্জন দত্ত আমারও প্রিয় শিল্প অভিনেতা ও পরিচালক!
তিনি মনে হয় এখন আর এসব করে আনন্দ পাচ্ছে না! করতে হয় তাই করেছেন।

* লেখাটা দুবার এসেছে

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৪২

রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৪৪

হাবিব বলেছেন: আলোচনা পড়ে সিরিজটি দেখার আগ্রহ মরে গেল।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২২

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: হইচই'র সিরিজ জোর করে টেনে বড় করে

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: এই রিভিউ পড়লে পরিচালক আপনার নামে মামলা করে দিবে । :D

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার কাছে খুব একটা খারাপ লাগে নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.