এটা পরীমণির গল্প নয়

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:১৯

-তুমি পরীমণির হট ছবি দেখে মাস্টারবেট করো, তাই না রোহান?
থতমত খেয়ে গেল রোহান। একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টি পিউ জানল কীভাবে! দেখে ফেলেছে নাকি। কিন্তু দেখার তো কথা না। দেখুক আর না না দেখুক, অত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অস্বীকার করতে হবে।

- কি বলছ এসব? মাথা ঠিক আছে তো? তুমি তো ভালো জানো ওই থার্ডক্লাস মেয়েটিকে কতোটা ঘৃণা করি!

- খবরদার মিথ্যা বলবে না। তুমি যদি তাকে ঘৃণাই করো তাহলে মোবাইলে পরীমণির ছবি রেখেছো কেন? প্রত্যেকটা ছবিই ভালগার। এই সত্যিকরে বলোতো, বিয়ের আগে তুমি কি ব্রোথেলে যেতে?

- এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় তুমি মানসিক সমস্যায় ভুগছো।

- আমি না। তুমি ভুগছো। যে পুরুষ বউ থাকার পরও বাথরুমে গিয়ে মাস্টারবেট করে, সে মানসিকভাবে সুস্থ হতে পারে না। তোমার সঙ্গে সংসার করা হবে না। বেটার হয়, আমরা আলাদা থাকি।

পিউ আর কোনো কথা না বলে পাশের ঘরে চলে গেল। রোহান এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টা পিউ কীভাবে জানল সেটা বুঝতে পারছে না। এমনিতে পরীমণিকে মোটেই পছন্দ করে না রোহান। তবে তার সৌন্দর্যের কাছে পরাস্ত সে। তার মতে, খালেদা জিয়ার পর এ তল্লাটে পরীমণিই সবথেকে বেশি সুন্দরী। তার ছবি দেখে একটু আধটু মাস্টারবেট করেনি, এমনটা না। তবে তা তো পিউয়ের জানার কথা না। ওয়াশরুমে সিসিটিভি লাগালো নাতো!

রোহান দৌড়ে ওয়াশরুমে গেল। দরজা বন্ধ করে ভালোভাবে খুঁজে দেখল, নাহ কোনো সিসিটিভি নাই। তার দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে গেল। পিউ এক কথার মানুষ। একবার বাবার বাড়ি চলে গেলে, আর ফিরবে না। ডিভোর্সটা হয়েই যাবে। যে করেই হোক পিউকে বোঝাতে হবে। তার আগে মোবাইল থেকে পরীমণির ছবিগুলো ডিলিট করে দিলো রোহান।

ঝড়ের বেগে ব্যাগ গোছাচ্ছে পিউ। ভয়ে ভয়ে পাশে গিয়ে বসলো রোহান। যে করেই হোক পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তবে কীভাবে শুরু করবে সেটা বুঝতে পারছে না। কিছু সময় চুপ থেকে কথা গুছিয়ে নিয়ে বললো,

- তুমি আমাকে ভুল বুঝছো। আমি ওরকম ছেলে নই। আর ওই বদঅভ্যাসও আমার নেই। বিশ্বাস করো।

পিউ চুপচাপ। কোনো কথা বলছে না। সহজে রাগ পানি হয় না তার। এটা রোহান ভালো করে জানে। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছে সে।

- কি ব্যাপার কথা বলছো না কেন? এটা কিন্তু ভালো হচ্ছে না। শুধু শুধু তুমি আমাকে ব্লেইম করছো।

খপ করে পিউয়ের হাত ধরলো রোহান। হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। তবুও কোনো কথা বলছে না সে।

- যতক্ষন না কথা বলছো ততক্ষন হাত ছাড়ব না। কথা তোমাকেই বলতে হবে।

- তোমার সাথে কথা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে। এক ছাদের নিচে থাকার তো প্রশ্নই আসে না।

- আচ্ছা থেকো না। তবে বলোতো, আমার সম্পর্কে এমন ধারণা কেনো হলো তোমার?

- হাত ছাড়ো। বাইরে উবার দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে যেতে হবে।

- গুল্লি মারি তোমার উবারের। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।

এবার রোহান রেগে গেল। খুব সহজে সে রাগে না। একবার রাগলে থামানো কঠিন। কখনও কখনও ঘরের জিনিসপত্র পর্যন্ত ভেঙে ফেলে। তখন আবার পিউ ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু আজকে কেউ ঠান্ডা হচ্ছে না।

একটা সময় ধস্তাধস্তি শুরু হলো দুজনের ভেতর। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। হঠাৎ করে দুজন দুদিকে ছিটকে পড়লো। পিউ নিজেকে সামলে নিতে পারলেও রোহান ধাক্কা খেলো আলামারির সাথে। মাথা ফেটে অঝোরে রক্ত পড়ছে। ধীরে ধীরে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল সে। পিউ গড়িয়ে পড়া রক্তের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।


(চলবে)

৪ টি +০/-০