নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বনমুরগী পোষ মানে না.......
অবশেষে আমি তাহাকে পাইলাম-একজন চলনসই ড্রাইভার। চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই অক্লান্ত উদ্যমে দীর্ঘসঞ্চিত টাকায় দীর্ঘ লালিত স্বপ্নটা পূরণ করে ফেললাম-একটা সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ির আমি এখন গর্বিত মালিক।কিন্তু,কি বলব ভাই,তখন কি আর জানতাম আমার ভোগান্তি মাত্র হলো শুরু।এই দেশে একজন ভালো ড্র্রাইভার পাওয়া যে কি কঠিন তা যাদের নসীবে একটি গাড়ি লাভের "সৌভাগ্য" হয়েছে শুধু তারাই ভালো জানেন। কেনার পর থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই আমাকে ড্রাইভার পাল্টাতে হয়েছে কেননা শুধু মাত্র "গরু ছাগলের তফাত" বোঝা ছাড়াও বাদবাকি অন্যন্য কিছু গুণাগুণও একজন ড্রাইভারের পক্ষে দরকারী বলে আমি মনে করি।
প্রথমটি ছিল পাড় মাতাল।হাইওয়েতে লাল পানি খেয়ে উদ্দাম ট্রাক চালানোর ট্র্যাক রেকর্ড ছিলো তার। আমার মারুতি গাড়ি চালানোর সময় সে প্রায়শই পুরানো সোনালী দিনগুলোর মত বেপরোয়া হয়ে উঠতো। বললে বিশ্বাস হবে না,আমি একসপ্তায় তিনোটি কেস খেয়ে গেলাম। ওগুলোতে গচ্চা গেল হাজার চল্লিশেক টাকা।দিলাম প্রথমজনকে পত্রপাঠ বিদায় করে।দ্বিতীয়টির আবার ছিলো ঘুমের বাতিক। কাজের অবসরে ড্রাইভারদের ঘুমাবার প্রতিভা সর্বজনস্বীকৃত,কিন্তু এপথেঘাটে একটু সিগন্যাল পড়লেই সে ঘুমিয়ে কাদা হয়ে যেত।তার এই ক্ষমতা দেখলে ঘোড়ার পিঠে ঘুমাতে সক্ষম নেপোলিয়নও ঈর্ষান্বিত হতেন নির্ঘাত।অবশেষে আমি যখন আবিষ্কার করলাম যে ইনি এমনকি গাড়ির সচল অবস্থাতেও ঘুমিয়ে পড়েন তখন আর রাখতে ভরসা হলো না। তৃতীয়টি বাদ পড়ল একদিন পরপর নানা বাহানায় ছুটি নেবার কারনে।ঐ নরাধম দুসপ্তাহে দ্বিতীয়বার মায়ের মৃত্যুর কথা বলে যখন ছুটি নিতে এল তখন আর সহ্য হলনা,দিলাম ছাটাই করে।
শেষেরজন বজলু মিয়াকে আমার মোটের উপর ভালোই মনে হল। সকালে অফিসে যাবার পথে রাস্তা চিনতে একটু ভুল হলেও নতুন জায়গায় প্রথম দিন ভেবে এক্সকিউজ করে দিলাম।রাতে ফেরার পথে লাগলো গোলমাল। বেশ গাড়ি চলছে আমি পেছনে বসে ঝিমাচ্ছি।হঠাৎ এক সজোরে ব্রেক করে গাড়ি থামলো আর আমার তন্দ্রা ছুটে গেল। আমি গটগট করে নামলাম আবার সাথেই গাড়িতে ব্যাক করলাম।
"এটা কোন জায়গায় গাড়ি নিয়ে এসেছ?" কাচুমাচু বজলু মিয়া জানালো সে বাস্তা হারিয়ে ফেলেছে।
জায়গাটা থেকে বের হয়ে চেনা রাস্তায় ফিরতে ঘাম ছুটলো আমাদের। রাস্তাবিষয়ক ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদে অধিকাংশই বলে চেনেনা ।একজন বলে ডানে যান তো অপরজন বামে।এক ভীষন কনফিডেন্ট ছেলর রাস্তা নির্দেশনা মেনে মেইন রোডের বদলে আমরা সামনে একটা বিশাল পুকুর আবিষ্কার করলাম,সাথে সাথে ব্রেক ।অল্পের জন্য ওটাতে পড়িনি আমরা।
বর্তমানে আমার ড্রাইভারের একমাত্র কাজ ঢাকার বিভিন্ন রাসতাঘাট চেনা। কাজ কেমন আগাচ্ছে কে জানে কিন্তু যত যাই বলুন আশা করি আপনিও একমত হবেন যে একজন ভালো ড্রাইভার জোগাড় করা দুনিয়ার কঠিনতম কাজগুলোর একটি।
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: এটা জাস্ট উত্তম পুরুষে বর্ণিত একটা রম্যগল্প মাত্র।সকল চরিত্র কাল্পনিক।@ শার্লক।
৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৫
শিব্বির আহমেদ বলেছেন: গুগল ম্যাপস
৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
শার্লক বলেছেন: ও আমি তো মনে করেছিলাম আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা। শিরোনামটা খেয়াল করি নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০১
শার্লক বলেছেন: হুম ভালই অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনার। রাস্তা হারিয়ে গেলে মোবাইলে ম্যাপস ব্যবহার করতে পারতেন।