নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বনমুরগী পোষ মানে না.......
একজন দক্ষ সেলসম্যানকে ক্রেতার বডি লেঙ্গুয়েজ দেখেই সব বুঝে ফেলতে হয়, তার চোখ মুখের ভাব ভঙ্গি দেখে বুঝতে হয় তিনি কি চান- ক্রেতারও মনে আসার আগে তার দরকারী জিনিসটি তার হাতে তুলে দিতে হয়।দেখেই যেন তিনি বলেন - আরে একি ! এটাই তো আমি খুঁজছিলাম! এসবই একজন দক্ষ সেলসম্যানের গুন।
দরকারে তো বটেই, দারুন মোহনীয় হাসি দিয়ে , কথার বাণে মুগ্ধ করে , তেলপানি দরকারমত ঢেলে, ছলে বলে কৌশলে যেভাবে পারেন পাবলিক কে জিনিস গছান- যা তার দরকার তা তার হাতের কাছে এনে দিন, যা তার দরকার নেই গছিয়ে দেন তা-ও।বোঝান যে ওটাও আসলে তার কতটা দরকার ছিল এতকাল- ভাবটা এমন- এই অতি জরুরী জিনিসটাও তো দেখি আপনার বাড়িতে নেই। হায়! আপনি এতদিন চলেছেন কিভাবে এই দারুন প্রয়োজনীয় বস্তুটি ছাড়া?এ-ই-ই তো আমাদের কাজ বলেন আর বলেন ধান্ধা।
এইত যে জিনিসটি ছাড়া আপনি দিব্যি বেঁচে বর্তে আছেন এমনকি বিশ ত্রিশ চল্লিশ বছর তা যে কত অভাবী, কতটা কষ্টদায়ক বেঁচে থাকা -তা আমি এক লমহায় আপনাকে বেশ বুঝিয়ে দেব -আমাদের শোরুমে আসা জীবনকে আরো সহজ করে দেবার উদ্দেশ্য নিয়ে আসা কোন একটি .........এই যেমন ধরুন গোসলখানার ঝুলানোর মত একটা মাল্টিপারপাস র্যাক কিংবা ধরুন এমন একটা বাক্স যাতে সাবান রাখলেও তা ধার চুইয়ে কখনো পানি পড়বে না, সুগন্ধি থাকবে অটুট। অথবা একটি শাওয়ার ক্যাপ যা নাকি আপনার চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে । এইসব হাবি জাবি যার অভাব আপনি কালে ভদ্রে কখনো করেছেন কিনা সন্দেহ।চটকদার কথায় কিনে নিয়ে তো যাবেন ঠিকই কিন্তু ফেলে রাখবেন ঘরের এক কোনে।
কিন্তু দোকানে আপনার মনে হতে বাধ্য এইসব ছাড়া এতদিন আপনার পরিচ্ছন্নতার এই অপরিহার্য ধাপটি সম্পাদিত হচ্ছিল কিভাবে?এত ধরুন যতসামান্য এক গোসলখানারই কথা । তারপর আরও কত কিছুই তো আছে।মানুষের জীবনে যেমন কাজের শেষ নেই তেমনই কারনে অকারনে উদ্ভাবন আবিষ্কারেরও শেষ নেই। আর তাই আমাদের মত সেলসম্যানের চমকদারিত্বেরও শেষ নেই।এটা আসলে একধরনের আর্ট বিশেষ। বিক্রি কর, কেবল করেই যাও, কাস্টমারের ইহজীবনেও তা কাজে লাগুক আর নাই লাগুক, কিছু যায় আসে না। কোম্পানির মুনাফাতেই আমাদের তরক্কি।
তা যাক, সেলসম্যান হওয়ায় আমি আবার এখটু বেশীই কথা বলি, কি কথায় কি কথা চলে আসে তার নেই ঠিক, কি করবো বলুন ,অভ্যাসের দোষ। লোক পটাতে কথা বলতেই হয় যে! যে গম্ভীর বয়স্ক টাকার কুমীর লোককে ছেলে ছোকরাদের চকরাবকরা একটা শার্ট গায়ে ক্লাউন ক্লাউন লাগে , দেখলেই হাসি পায় তাকেও বলি আরে স্যার আপনাকে শার্টটা যে কি মানিয়েছে না, বয়স বিশ বছরেরও কম লাগছে, ইয়ংম্যান একদম!
যা হোক এতক্ষণ যা বললাম তা ছিল ভূমিকামাত্র, কি করবো বলুন- সেলসম্যান হবারও আগে আমি আবার সেলসরিপ্রেজেনটেটিভও ছিলাম কিছুদিন, তাই সেরের উপর সোয়া সের, ভূমিকাটা বোধহয় একটু বেশীই লম্বা হয়ে গেল তাই না?
আসলে এত কথা বলার কারনটা হল আমার সামনে দাঁড়ানো মক্কেলটা- আমার কাস্টমার। ভারি বিভ্রান্ত , কি কিনবে কি পছন্দ করবে কিছুই যেন বুঝে উঠতে পারছে না, দিশেহারা দিশেহারা ভাব তার চোখে মুখে। হবারই কথা - নিজে সেলসম্যান বলে বলছি না , আমাদের স্টোরটা সত্যিই অনেক দারুন। কোনটা রেখে কোনটা নেব এরকম অবস্থা অনেকেরই হয়।রীতিমত পশ একটা শপ,সবাই এমনকি ঢোকারও সাহস করে না এখানে যদি না মানিব্যাগটা থুরি ব্যাংক কার্ডটা সেরকম ওজনদার না হয়।
নিজের ট্যাকের তো তিন অবস্থা কিন্তু এই খানে যতক্ষন কাজ করতে হয় ততক্ষন এখানের দামি দামি আসবাবপত্র, পোশাক ,হীরের গহনা ইত্যাদির গরবে নিজেই গরবিত বোধ করি-যেন ওগুলো আমারই জিনিস, আমি যেন আর ২ নং কলমিবাজার থেকে উঠে আসা আবদুর রহিম নই, নই এখানের বিকৃত ফিরিঙ্গি উচ্চারনে মিঃ র্যায়িম-নগন্য সাধারন এক মাটি কামড়ে পড়ে থাকা অভিবাসী ।
যেন ঔ যে রূপসী ধবধবে সাদা মেয়েটি তার ব্যালেন্সে পরিপূর্ন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে একটা বহুমূল্য রত্নখচিত নেকলেসটা কিনতে পে করছে ও আমিও পারি , ঝকঝকে ইউনিফর্মে এখানের সব পন্যের সাথে আমাকেও বেশ মানানসই মনে হয়। যদিও বাড়িতে পরনে থাকে বছর দু আগে দেশ থেকে পাড়াতো ভাইয়ের সংগে আনা বারোয়ারী লুঙ্গি। তখনকার আমি আবার এখানের র্যায়িম থেকে একেবারে ভিন্ন এক গ্রহের প্রাণী।কিন্তু এখানে আমার ওসব কিছু মনেই থাকে না।
যা বলছিলাম-সামনে দাঁড়ানো মক্কেলকে দেখতেই আমার মনে হল আজ আমার কিসমত খুলেছে। দেখতে বেশ শাঁশালো মনে হয়-মালকড়ি আছে পকেটে আই মিন ব্যাংকে আরকি। বেশ দ্বিধাগ্রস্ত ভাব চোখেমুখে। এধরনের কাস্টমারগুলো মাঝে মাঝে বেশ ভালো হয়, দ্বিধাগ্রস্ত থাকে বলেই কোনটা ঠিক হবে না হবে বাছাবাছি করতে পারে না, সহজেই পাম মেরে বেশী দামিটা গছিয়ে দেয়া যায়, এমনকি অনেক সময় একাধিক পছন্দ করা জিনিসও ,কপাল তেমন ভালো থাকলে। অবশ্য সেই সাথে পকেটের জোরটাও থাকলে- বলাই বাহুল্য।
এই যেমন ধরুন একটা পাশাপাশি পার্লের সেট আর একটা ডায়মন্ডের,কোনটা নেবে কিছুতেই বুঝে না উঠতে পারলে সেরকম জোর বরাত থাকলে চাপা মেরে আপনি হয়ত দুটোই পুরে দিতে পারবেন ক্রেতার ঝুলিব্যাগে, ম্যাম দুটোতেই আপনাকে যা দারুন মানিয়েছে! যেন আপনার জন্যেই ওগুলো তৈরী হয়েছে, আসলে মনে মনে ভাবছেন তৈরী হয়েছে না ছাই, এ জিনিস আমার রানু ছাড়া আর কার গলাতেই বা এত মানাবে?নেহায়েত সাধ আছে সাধ্য নেই তাই............দীর্র্ঘনিঃশ্বাসটা গোপন করে যান নিজের কাছেও।
মে আই হেল্প ইউ ম্যাম ? বলে বাঙালি মিশকালো মুখটাকে হাসিতে যতখানি পারি উজ্ঝ্বল করে মহিলার দিকে তাকাই ।
আমার কর্নারটা নানা রকমারী বেডশীটে পরিপূর্ণ। এই বিলাসবহুল শপের সবজায়গাতেই যেমন প্রাচূর্য তেমনি এখানটাতেও । রংবেরং এর দারুন দারুন সব বেডশীটে সাজানো। সবগুলোই মাথা ঘুরিয়ে দেবার মত সুন্দর। মহিলাকে বেশ সিদ্ধান্তহীন দেখলাম।চোখে মুখে দিশেহারা ভাব। তাই আমিই সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায়্য করবো।
কোনটা চাই ম্যাম?
উমম,আচ্ছা..বে...।
ওহ ! বেগুনী রংয়ের চাইছেন? আচ্ছা........, বেগুনী রংয়ের নানা ধরনের শীট আমাদের আছে। শেডই ম্যাডাম এতগুলো যে গুনে শেষ করতে পারবেন না। কোনটা নেবেন, এই যে দেখাচ্ছি , দেখেন এই যে আমাদের লেটেস্ট ডিজাইনগুলো। বলে ডানে বায়ে উপর নিচে জেট প্লেনের গতিতে দশ বারোটা হরেক ডিজাইনের বেগুনী রংয়ের বেডশীট নামিয়ে ফেললাম। বাহ! দেখতে নিজেরই ভালো লাগছে। একেকটা কি দারুন দেখতে , কি মোলায়েম ধরতে! জানি নিজের করে নিজের হাতে এই ব্রান্ডেড জিনিস আমার নসীবে কখখনো নেই , এই খানে ছুঁয়ে দেখতে পেরেই যতটুকু সুখ।
আমি সগর্বে সামনে দাঁড়ানো ক্রেতার দিকে তাকালাম।কিন্তু তার প্রতিক্রিয়া দেখে কিঞ্চিত বিভ্রান্ত হলাম। কেমন যেন ভাবসাব। বুঝলাম একে সন্তুষ্ট করা একটু মুশকিল হবে। কিছু কিছু ক্রেতারা আছে এমন- বেশ জ্বালায়। এও মনে হচ্ছে সেরকম। যাই হোক আমাদের দোকানে আসবে আর কিছু পছন্দমতো পাবে না এ তো হতেই পারেনা। এ যে আমার কাছে চ্যালেঞ্জের মত। আমি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৈরী হলাম।
আমার সপ্রশ্ন দৃষ্টি দেখে মহিলা ক্রেতা একটু বুঝি উৎসাহিত হলেন। আমি বল..
ও আচ্ছা ব্লু কালার বুঝি? মুখের কথা শেষ হবার আগেই ফের আমি বুঝে নিলাম।
মত বদলেছেন মহিলা। হয় এরকম। আমি একগাদা ব্লু কালার এর বেডশিট নামিয়ে ফেললাম। একেকটা একেকটার চেয়ে সুন্দর । নিজের শোরুম বলে বলছিনা, কিন্তু আমার কাছে টাকা থাকলে নির্ঘাত আমি কয়েকটা কিনে ফেলতাম। নীলের প্রতি আমার এমনিতেই একটু বিশেষ দূর্বলতা আছে। বিশেষ করে জ্যামিতিক স্ট্রাইপ দেওয়াটা আর ছোট ছোট ফুলের ডিজাইনের শীটদুটা মারাত্নক সুন্দর, এক্কেবারে জটিল।
কিন্তু আমার নিজের মনোভাব যা-ই হোক না কেন, সামনের কাস্টমারটিকে বেশ বিপদগ্রস্ত মনে হলো আমার। হবে-ই তো। এত্ত সুন্দর সুন্দর ডিজাইন থেকে বেছে নেয়া সোজা কথা!
প্রতিটাই যে নেবার মত।
মহিলা আবার মুখ খুললেন, ল..।
এবারেও আমি বুঝে নিলাম, মত ফের পাল্টেছেন তিনি। লাল রংয়ের চাই তার। আহ! এমন সেকেন্ডে সেকেন্ডে মত পাল্টানো কাস্টমারদের নিয়ে ভারি যন্ত্রণা।
যা হোক এবার একটু বিরস মুখে আমি বেশ কটা লালের শীট নামিয়ে ফেললাম।তারপর সামনে ওঠা জমে বেডশীটের স্তুপের দিকে তাকিয়ে একবার দেখলাম। মহিলা একটাই নেবেন হয়তো, বরাতজোরে দুটো। এর জন্য এই তুজ হয়ে ওঠা একরাশ জিনিস আমাকেই তো গুছিয়ে তুলতে হবে। উফফ! বিরক্তিকর। তবে সবকিছুর পরেও কিছু বিক্রি করতে পারলে আমার বেশ লাগে। কষ্ট সার্থক বলে মনে হয়।আমাদের এমপ্লয়ি স্কোরিংএও কিছু স্কোর যোগ হয় -ওতো আছেই- বাড়তি পাওনা।
এবারেও বেডশীটগুলো নামিয়ে সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে আমি সামনে দাঁড়ানো মহিলার দিকে তাকালাম।কোনটা নেবেন মহিলা?
মহিলা এবার একটু যেন মরিয়া অধৈর্য ।একধাক্কায় গড়গড় করে বলে ফেললেন, আরে ভাই, আমি কতক্ষণ থেকে আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করার চেষ্টা করছি। আমি কি চাই - পুরোপুরি ভাবে না শুনেই আপনি গুচ্ছের জিনিসপত্তর বের করে ফেলেছেন কেন?আগে তো শুনবেন কাস্টমার কি চায়।
আমি স্রেফ বোকা বনে গেলাম।
কেন আপনি যে যে রংয়ের চেয়েছেন ও ই তো বের করে দেখালাম, ম্যাম।বিনীতভাবে বললাম আমি।
তাই বুঝি? বিস্মিত রাগান্বিত দৃষ্টি মহিলার।আমি বোকা বোকা মুখে মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকি।তার ফর্সা মুখে রাগীভাবের লালচে ছোপ পড়েছে।কারনটা আমি বুঝতে পারি না।
আপনাদের এই স্টোর বিশাল বড় বুঝলেন। কয়েকতলা.........।আর পুরোটাই নানান জিনিসে এমনভাবে বোঝাই ..।আমি লিফট দিয়ে উঠে তো ভেতরে ঢুকলাম। একের পরে এক সেকশান দেখে দেখে এবার বের হবার সময় বেরুবার রাস্তা আর খুঁজে পাচ্ছি না। কোনদিক দিয়ে যে ঢুকলাম .......পুরো গুলিয়ে ফেলেছি। যেদিকটাই বেরুবার রাস্তা বলে মনে হল বার কয়েক কাছে গিয়ে ধোঁকা খেয়েছি- ওগুলোতো আসলে কাচ দিয়ে ঘেরা বিশাল আকারের উইন্ডো ।
আপনাকে বেরুনোর রাস্তা জিজ্ঞেস করতে গেলাম, আপনি ব শুনতেই বেগুনি আর ব্লু নামিয়ে ফেললেন। লিফটের দিক জিজ্ঞেস করতে যেতেই লাল! এমন তো কখনো দেখিনি। কিসব লোককে যে এরা এনে জড়ো করেছে।লোকের পুরো কথা মনোযোগ দিয়ে পুরোটা শোনার পর্যন্ত ধৈর্য নেই। আপনার ম্যানেজার কোথায় ডাকুন, কমপ্লেন করবো।
ব্যাপার বেগতিগ। বেচাবিক্রি , পারফর্মেন্স স্কোর বাড়ানো মাথায় থাক, যা অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে আমার চাকরি নিয়ে টানাটানি বেঁধে যাবার জোগাড়। এ অবস্থার কল্পনাও বা কে কবে করেছিল! আমি যে আমি, কাস্টমার হা করলেই তার পেটের খবর পর্যন্ত বুঝে যাই বলে আমার তো বটেই আমার উপরের ম্যানেজারেরও ধারণা, শুধু ধারনা কি বদ্ধমুল বিশ্বাসেই দাঁড়িয়ে গিয়েছে-তা আবার এমন উল্টোরথে বইবে কে জানত?আজ পর্যন্ত আমার চালে এমন বেচাল ফল তো কখনোই হয়নি। সবসময়েই কাস্টমার আমার মুখ ফুটে বলার আগেই বুঝে ফেলার কারনে খুশিই হয়ে এসেছে ,আর আজ এ-কি বিভ্রাট?
কিন্তু এ মহিলাকে তো ঠেকাতেই হবে। কমপ্লেন করলে আর রক্ষা নেই। এর চেয়েও তুচ্ছ কারনে চিয়াং-এর চাকরি গিয়েছিল। কাস্টমারের মতামতকে এরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে নেয়।এখানে চাকরি জোটানো যেমন কঠিন, যাওয়া তেমনই সোজা।আর এই নিয়মিত তুলনায় ভালো পে করা চাকরিটা গেলে যে কি হবে..............নাহ আমি ওটা ভাবতেও পারিনা।
সরি ম্যাম, সরি সরি আই অ্যাম রিয়েলী সরি, বলে বিস্তর মাপ টাপ চাইতে হলো।প্রায় পায়ে ধরতে যা বাকি। প্লিজ ম্যাডাম কমপ্লেন করবেন না, ঘরে ছোট বাচ্চা আছে, ফ্যামিলিম্যান , না খেয়ে মরতে হবে বাল বাচ্চা নিয়ে বলে কতকগুলো বাধা বুলি ঝাড়লাম, যদিও পরিবার বলতে তিরিশ পেরুনো আমার আছে শুধু বাড়িতে বুড়ো বাপ। তাও এসব........ই বলতে হয়। কাস্টমারের বিশেষ করে মহিলাদের ইমোশোনাল ব্লাকমেইলিং -এ এসব আশ্চর্য কাজে লাগে- তা সে দেশেই হোক আর এ সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পেরুনো বিলেতেই হোক। আর আমিও তো নাচার। দেশে বিশাল কোন দায়দ্বায়িত্ব না থাকলেও এখানে পড়াশোনা, থাকাখাওয়া ও খরচ বহনের সাধ্য আমার বুড়ো বাপের নেই। আর......... চাকরি গেলে এজীবনে মারুফাকে পাবার স্বপ্ন স্রেফ স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে..........।
নানা অনুনয় বিনয়ে শেষে কাজ হলো । সঠিক বেরুনোর রাস্তা দেখিয়ে দিলাম আমি। একেবারে নিজে গিয়ে লিফটের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আপদ বিদেই করে এসেছি।ঘুরতেই দেখি...... শ্যোনচক্ষু আর কাকে বলে, ম্যানেজারটাও কিছু একটা গোলমাল নিশ্চয়ই আঁচ করেছিল।ব্যাটার চোখ বাস্তবিক শকুনের মত আর মনে যেন জোড়ার বদলে কয়েকডজন-কিছুই নজরে এড়ায় না। আমার নিজের জায়গা থেকে একেবারে ইউটার্ণ এ স্থানে আমার কিছুতেই এমন সময় থাকার কথা নয়।কতটুকু সময়ই বা লেগেছে ঠিক খেয়াল করেছে যে আমি নিজের জায়গা নেই। অথচ এইত যখন এত কাহিনী হচ্ছিল, সে ছিল ঠিক বিপরীতে যেখান থেকে আমার নিয়মিত বসার জায়গাটা সোজা চোখেও পড়ে না।তাও আমি যেই না নিজের জায়গা থেকে একটু কি নড়লাম ঠিক টের পেয়ে গেছে।
কি হয়েছে, এনি প্রবলেম র্যায়ান?ম্যানেজারের প্রশ্নে শঙ্কিত আমি বাইরে সেই ভাবটা চেপে যাই।
নিচে প্রস্থানরত লিফটের দিকে আড়চোখে একবার তাকিয়ে স্বস্তি্র একটা নিঃশ্বাস ফেলি গোপনে।আজ বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছি ।জোরে জোরে মাথা নেড়ে ম্যানেজারকে জবাব দিই , না না স্যার কোন প্রবলেম নেই।একেবারে নো প্রবলেম স্যার।
রেজওয়ানা আলী তনিমা
২৯/১২/১৩ ইং।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ফালতু বালক ভাইয়া।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:২৪
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
হাহাহ, বেশ মজা পাইসি !
শুধু দোকানের ঠিকানাটা দেয়া বাকী রাখসেন আর কি ||
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মুন , কেমন আছেন?
মজা লাগলেই কষ্ট সার্থক।
দোকানের নাম জানি না, তবে একবার নিজে এক বিশাল শোরুমে ঘুরতে গিয়ে আসলেই প্রায় হারিয়ে গিয়েছিলাম, ঐখান থেকেই গল্পের আইডিয়াটা মাথায় আসলো।
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪
কালীদাস বলেছেন: সেরকম হৈছে
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ- নেক ধন্যবাদ কালীদাস ভাই।
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৮
মামুন রশিদ বলেছেন: প্রথমদিকে ভূমিকা একটু স্লথ ছিল, পরে আস্তে আস্তে গল্পে গতি এসেছে । আর গল্প শেষের অনুভূতি- চমৎকার!
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মামুন ভাইয়া কেমন আছেন? আপনার মতামত সবসময়েই বিশ্লেশনধর্মী হয়, একধরনের অপেক্ষাই কাজ করে কেমন কমেন্ট পাব আপনার কাছ থেকে। সুন্দর মতামতের জন্যে অ-নেক অ-নেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩২
না পারভীন বলেছেন: গল্প পড়ে পুরো মুগ্ধ যেন আপনি নিজেই সেলসম্যান ,নিজেদের গন্ডির ভিতর থেকে বেরিয়ে লেখালেখি অনেক গুনের ব্যাপার
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: না পারভীন আপু, অ-নেক ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য ।আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো। কারো ভালো লাগলেই কীবোর্ডের অর্থহীন টেপাটেপির একটা মানে খুঁজে পাই।
ভালো থাকবেন।
৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪
সুমন কর বলেছেন: ভাল লাগল না। আমার মতে, অহেতুক টেনে লম্বা করা হয়েছে। অগোছানো !!
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন:
ভালো না লাগার দায় সম্পূর্ণই আমার। সম্ববত একটু বেশীই লম্বা হয়ে গেছে।আমার আগের অনেক লেখাতেই তাড়াহুড়ো করে ছোট বানানোর চেষ্টা করার একটা বদনাম ছিল, তাই ওটা দূর করার একটা প্রচেষ্টা হিসেবে এটা আবার দীর্ঘসূত্রীতা দোষে পড়ে গেছে। তাও ধৈর্য ধরে পড়ে মতামত দেবার জন্যে ভাইয়া আপনাকে অ-সংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সেলস ম্যানের কনসেপ্ট টা ভালো লেগেছে , আর গল্পের মাঝে বিস্তর বড় বড় স্পেস একটু দৃষ্টিকটু লাগলো !
শুভকামনা সব সময়ের !
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ-নেক ধন্যবাদ অভি ভাইয়া। কেমন আছেন? সুন্দর মতামতের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। স্পেসটা আসলেই একটু বেশী হয়ে গেছে।
আপনার প্রতিও আন্তরিক শুভকামনা ।
৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬
উদাস কিশোর বলেছেন: মোটামুটি লাগছে ।
তবে অনেক বেশী ফাক ফোকর আছে ।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: স্বাগতম আমার ব্লগভুবনে। মতামতের জন্যে অ-নেক ধন্যবাদ উদাস কিশোর ।
ভবিষ্যতে দোষত্রুটিগুলো শুধরে নেবার প্রচেষ্টা থাকবে।
ভালো থাকবেন।
৯| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮
একজন আরমান বলেছেন:
মনে হচ্ছিল আমার সাথেই কোন সেলসম্যান কথা বলছে !
ভালো লেগেছে আপু।
প্রতিটি প্যারার মাঝে অনেকখানি স্ক্রল করতে হয়, ব্যাপারটা কেমন যেন !
শুভকামনা।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আরমান ভাইয়া কেমন আছেন? বহুদিন পরে আমার ব্লগে আপনার দেখা পেলাম।
ভালো লেগেছে জেনে খুউব ভালো লাগলো।
প্যারাগুলোতে স্পেস বেশী দিয়ে ফেলেছি। লেখার আয়তনও বেশ বড় হয়ে গিয়েছিল। তাও ধৈর্য ধরে পড়ে সুন্দর মতামত দেবার জন্যে অ-নেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা আপনাকেও।
১০| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩
মুরাদ-ইচছামানুষ বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগছে। আপনার লেখা ভাল।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ-নেক ধন্যবাদ মুরাদ ভাইয়া। আপনার মন্তব্য পড়ে অনুপ্রেরণা পেলাম। ভালো থাকবেন।
১১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১০
মোস্তাক_আহমেদ বলেছেন: গল্পটা ভাল লাগল। লেখার ভঙ্গিটা মজার। ধন্যবাদ আপু। শুভকামনা।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: শুরুতেই স্বাগতম আমার ব্লগে।ধন্যবাদ মোস্তাক ভাইয়া। গল্প ভালো লেগেছে জেনে দারুন আনন্দিত হলাম।
আপনার প্রতিও অনেক শুভকামনা থাকলো।
১২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: মোটামুটি লাগলো
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মতামতের জন্য অ-নেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক দিন পরে দেখা আপনার সাথে, ভালো আছেন তো?
শুভকামনা রইলো।
১৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৪
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ভালো লাগল। +
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ-নেক ধন্যবাদ কাভা ভাইয়া। কেমন আছেন? ভালো লেগেছে জেনে খুব আনন্দ পেলাম। ভালো থাকবেন।
১৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৩
এক্স রে বলেছেন: প্রথম দিকে একটু খাপছাড়া মনে হচ্ছিল। শেষদিকে এসে মজা পেয়েছি। দুইটা প্যারার মাঝে স্পেস গুলো একটু বেশি হয়ে গেছে মনে হয়। আপনি এডিট করে স্পেস গুলো কমিয়ে ফেলতে পারেন। সেই ফাকে পঞ্চম প্যারার প্রথম লাইনের সেলসম্যান বানান টাও ঠিক করে নিতে পারেন। ভিন্নধারার গল্প ভালো লেগেছে। ভালো থাকবেন :-)
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এক্স রে ভাইয়া। ভুলগুলো জানাবার জন্যে এক্সট্রা ধন্যবাদ। স্পেস নিয়ে অনেকেই বলেছেন-বেশী রেখে ফেলেছি। এডিট করে কমিয়ে দিলাম, সেলসম্যান বানানটাও।
ভালো থাকবেন আপনিও।
১৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: সুলিখিত সরস গল্প।
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ হাসান ভাইয়া । কেমন আছেন? শুভকামনা রইলো।
১৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮
একজন আরমান বলেছেন:
আছি আলহামদুলিল্লাহ্।
আশা করি আপনিও ভালো আছেন।
ব্যাস্ততার কারণে ব্লগে কম আসা হয়। কিন্তু সময় পেলে প্রিয় ব্লগারদের পোষ্ট পড়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করি না।
১৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: এই তো ভালো। আপনার কি খবর?
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আল্লাহ্র রহমতে ভালোই আছি।
১৮| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বাব্বা ! এত বড় গল্প , আধা ঘণ্টা সময় লাগলেও পুষিয়ে গেছে ।
লিখায় প্লাস , ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা নিন ।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ-নেক ধন্যবাদ গিয়াসলিটন ভাইয়া।
এত বড় একটা গল্প কষ্ট করে পড়ার জন্য বাড়তি ধন্যবাদ ।
আসলেই একটু বেশীই বড় হয়ে গেছে
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো আপনাকেও।
১৯| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:২২
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: বাহ !! বাহ !! দারুণ লিখেছেন !! চমৎকার লাগল। বিশেষ করে সেলসম্যানের চিন্তাধারাটা দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
ভাল থাকুন। নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অ-নেক ধন্যবাদ মহামহোপাধ্যায় ভাইয়া।
ভালো লেগেছে জেনে দারুন আনন্দিত হলাম।
শুভ নববর্ষ।
২০| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯
মুনেম আহমেদ বলেছেন: না পারভীন বলেছেন: গল্প পড়ে পুরো মুগ্ধ যেন আপনি নিজেই সেলসম্যান ,নিজেদের গন্ডির ভিতর থেকে বেরিয়ে লেখালেখি অনেক গুনের ব্যাপার।
আমারও এরকমই মনে হয়েছে। অনেক ভাল লেগেছে
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:০০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মুনেম ভাইয়া।
ভালো থাকবেন, নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো।
২১| ০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:৩৮
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
গল্পের বর্ণনার ধরণটা প্রথম দিকে কেমন যেন লাগলেও শেষে এসে ভাল লাগল ৷ আপনি লেখা টানতে পারেন ভালই ৷ বিশেষ করে মনঃবিশ্লেষণগুলো ও চরিত্রের অভিজ্ঞতা চমৎকার করে এনেছেন ৷ সময় হলে মাঝে মাঝে পুরোনো লেখাগুলো রিভিশন দেই ৷
ভাল থাকবেন ৷
০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আলজাহাঙ্গীর ভাইয়া। অনেক পুরনো একটা লেখায় আপনার সুন্দর মতামতে অপ্রত্যাশিত আনন্দ পেলাম। ভালো থাকবেন আপনিও।
২২| ২৫ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ভাল লেগেছে । আশা করছি আপানার লেখা নিয়মিত পড়বো । অনেক শুভ কামনা ।
২৫ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ লিলিয়ান আপু। সাথে থাকার আমন্ত্রণ রইলো। অজস্র শুভকামনা আপনার প্রতিও।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৩
ফালতু বালক বলেছেন: ভালো লাগছে।
++++ দিয়া গেলাম, আপু।