নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এলোমেলো ধাঁচের পাগলাটে একজন মানুষ আমি। অনেকে বলে কল্পনা প্রবণ। একটু বোকা ধরণের হলেও সচেতন, নিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক, বিপ্লব মনা, তর্ক প্রবণ, মধ্যবিত্ত ঘরের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির একজন বাংলাদেশী নাগরিক আমি, যে দেশকে অন্য সব কিছুর থেকে বেশি ভালোবাসে। ভালোবাসা আমার মৌলিক বৈশিষ্ট্য গুলোর একটি এবং আমার সব কর্মকাণ্ডের অনুপ্রেরক। সব কিছুর মত আমিও আপেক্ষিক। আজ হয়তো এমন আছি, কাল বদলেও যেতে পারি!!
১.
আচ্ছা বল, বার্থ ডে উইশ কি?
- বলবো?
হুম, বল...
- যা চাইবো, দিবা তো?
উমমম... সাধ্যের মধ্যে থাকেলে তো দিবোই?
- তুমি চাইলেই পারবা।
কি? বল......
মুঠোফোনের ওপাশের কণ্ঠটি কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলে উঠলো,
- আমাকে জাস্ট ফ্রেন্ড হিসাবে দেখতে হবে।
হঠাৎ করে বুকের বাম দিকে একটা চিন চিন করে ব্যাথা উঠলো। ও কেন বার বার এটা বলে? ও কি বুঝে না আমি পারবো না? ও কি জানে না আমি ওকে আমার সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসি? তাহলে কেন বার বার শুধু বন্ধুত্বের মধ্যে বেধে রাখতে চায় এটাকে? আর আজকেই চাইতে হবে? আজকে না ওর জন্মদিন! আজকের ওর কোন চাওয়া যে আমি ফেলতে পারবো না। কেন এভাবে আমাকে বাউন্ড করতেছো?
অনেক্ষন ছুপ থেকে বুকের ব্যাথাটাকে সামলে নিয়ে বললাম, "একটু সময় দাও... আমি একটু চেষ্টা করি। যদি পারি, অবশ্যই দিবো। তোমার বার্থ ডে উইশ, তুমি যদি এতে হ্যাপি হও, আমি তো শুধু তোমার হ্যাপিনেস চাই। একটু সময় দাও।"
২.
মাথায় শুধু ওই কথাটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। মাঝে মাঝেই বুকের বাম পাশে একটা অদ্ভুত ব্যাথা হয়। কি আজব! জানি এই ব্যাথার কোন ঔষুধ নেই। তাহলে কি করা যায়? নাহ্! এভাবে থাকা যাবে না! থাক না, বলেই দেই! মিথ্যাই হোক! মনে মনে আবেগের সুনামি হয়ে গেলেও আর কখনো ওকে বলবো না ভালোবাসি। কখনো দেখাবোও না। শুধু বন্ধুর মতই দেখবো। হুম, এখন থেকে ও আমার শুধুই বন্ধু। একটুও বেশী কিছু না।
দু'-তিন দিন বিছানায় এপাশ অপাশ করে অবশেষে মন শক্ত করলাম। হুম, এখন বলে দেব ওর 'উইশ' পূরণ করবো। ভালোবেসে যদি একটা 'উইশ' পূরণ করতে না পারলাম তাহলে কেমন ভালোবাসা?... আজকেই বলবো! কিন্তু সাহস যে হচ্ছে না! যদি বলতে যায়ে আবার দুর্বল হয়ে যাই? আচ্ছা, আর একটা দিন অপেক্ষা করি কাল তো ঘুরতে যাবো। তারপর না হয় বলি...
৩.
৩ ঘণ্টার জার্নি আর তারপর রিক্সায় করে বন্ধুর চাচার বাসায়। নতুন শহরে এসেই অনেকটা ভালো লাগতেছে। ডাক্তাররা হাওয়া পানি বদলের উপদেশ কেন দেয় বুঝতে পারলাম। ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিচ্ছি। মনটাও অনেক ফ্রেশ। খুশি খুশি লাগতেছে।
বিকালের দিকে ওর কল আসলো,
- কি খবর? কেমন ইঞ্জয় করতেছেন?
এই তো, রেস্ট নিচ্ছি। বের হব একটু পরে শহর ভ্রমণে।
- হুম, হুম! ঘুরো ঘুরো! তোমাদেরই তো দিন!
হুম, শুনো... লাস্ট পর্যন্ত ডিসাইড করেই ফেললাম!
- কি ডিসাইড করে ফেললা?
ওই যে, যেটা উইশ করছিলা।
- কি?
এখন থেকে তোমাকে শুধু 'ফ্রেন্ড'-এর মত দেখবো। নো লাভ, অনলি ফ্রেন্ড!
- অনলি ফ্রেন্ড?!
হুম, কিন্তু ফ্লার্ট করা কিন্তু ছাড়তে পারবো না!
কথা গুলো খুব সাবলীল ভাবে বললাম। বলার সময় কিছুটা এক্সাইটমেন্ট থাকলেও খুব স্বাভাবিক ভাবে বেরিয়ে আসলো। তিন দিনের মাইন্ড সেট আর একটা নতুন জায়গা অবশেষে আমাকে সাহস দিল বলে ফেলার। খুব সহজে আবেগকে ভুলে যাওয়া যায়। হুম, ভালোবাসাটা শুধুই আবেগ ছিল। যেটাকে বলে 'ইনফেচুয়েশন' হয়তো সেটাই ছিল। যাক, এখন থেকে ও আমার শুধুই 'ফ্রেন্ড'।
৪.
প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলার পর বের হলাম। এখানে আসার মূল উদ্দেশ্যই মার্কেটিং। তাহলে মিশন শুরু... নতুন জায়গা, সাথে প্রিয় বন্ধু আর মার্কেট! ইয়েস, আই অ্যাম ব্যাক ফোকস! 3
সবে মাত্র মার্কেটে ঘুরতেছি। একটা প্যান্ট পছন্দ হইছে, কিনা হয় নি। তখন প্রায় সাড়ে সাতটা। বাসার ল্যান্ড লাইন থেকে কল করলো ও...
কি ব্যাপার ম্যাডাম?
-আব্বু-আম্মু বাইরে গেছে। ভাবলাম এই সুযোগে একটু টাইম পাস করা যাক!
হুম! সুযোগের সদ্ব্যবহার করা হচ্ছে, না?
- কি করতেছেন আপনারা?
এই তো......... তারপর একাধারে দীর্ঘ ২ ঘণ্টার ফোনালাপ! শহর ঘুরতেছি, আর এই দিকে বক বক চলতেই আছে! কি যে এত কথা! কি ভাবেই বা আসে বুঝি না!
বন্ধুর চাচার বাসায় ফিরলাম ১০টায়। সারাদিনে জার্নি, ঘোরাঘুরি সব মিলায় যথেষ্ট টায়ার্ড। খাওয়া করে ফ্রেশ হয়ে এখন ঘুমানোর পালা। ১১টা পার হয়েছে। দেখি একটা মিস কল দিয়ে!... হুম, ব্যাক আসছে, তার মানে কল করা যাবে।
- ক্যামন ঘুরলা?...... আবার দিন দুনিয়ার যত কথা। আমার বন্ধু বলে তোরা পারিসও! ১২টা বাজতে না বাজতে বেচারা বেঘোরে ঘুম। আর এদিকে আমাদের ডরেমোনের পকেট থেকে কথা বেরুতেই আছে! কথা বলতে বলতে আমি কখনো সোফায়, কখনো ফ্লোরে; কখনো বারান্দায়, কখনো জানালায়; কখনো বেডের পাশে, কখনো আলমারির পাশে; কখনো বসে, কখনো শুয়ে; কখনো হেলান দিয়ে, কখনো দাঁড়ায়; কখনো আধা বসে আধা শুয়ে, কখনো মাথা নিচে পা উপরে!
৫.
- আচ্ছা?!! আমাকে শুধু ফ্রেন্ডের মত দেখতে পারবা?
এই প্রশ্ন করতেছো ক্যান?
- বল না! দেখতে পারবা?
তুমি চাইছো, না দেখে কি পারি?
- সত্যিই দেখতে পারবা?...
একটু চুপ থাকলাম। বার বার এই প্রশ্নটা আমার অনুভূতিগুলো বন্দি রাখার দেয়ালের গাঁয়ে একটা ফাটল ধরিয়ে দিল। না, আর জোর করে লুকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। কিন্তু আবেগে ভেসে গেলে যে হবে না!
চেষ্টা করবো। চেষ্টা করলে তো সব পারা যায়। আমিও পারবো তোমাকে ফ্রেন্ডের মত দেখতে।
- এত সহজে ভুলে যাইতে পারবা? একটুও কষ্ট হবে না?
সেইটা হয়তো হবে। বাট, তোমার উইশ পূরণ করতে যে হবে...
- নিজেকে হার্ট করে হইলেও আমার উইশ পূরণ করবা?
আমার কাছে তো ইম্পোর্ট্যান্ট তোমার হ্যাপি হওয়া। আমি তোমাকে 'জাস্ট ফ্রেন্ড' হিসাবে দেখলেই যদি তুমি হ্যাপি হও, তাহলে আমি দেখবো।
- আমার হ্যাপিনেসটা এত ইম্পোর্ট্যান্ট কেন?
জানি না, শুধু জানি তুমি যদি হ্যাপি হও তাহলে আমিও হ্যাপি। তুমি কষ্ট পাইলে আমার অনেক বেশী কষ্ট হয়।
- মন থেকে মানতে পারবা?
হয়তো পারবো না। কিন্তু তোমাকে কখনো বুঝতে দিবো না।
- যদি খুব ইচ্ছা করে!
লুকায় নিবো।
- কষ্ট হবে না?
তুমি তো হ্যাপি থাকবা। আর তো কিছু লাগবে না। আমি শুধু তোমার মুখে হাসি দেখতে চাই।
- কেন এত লাভ করো?
জানি না। হয়তো অনেক কারণ আছে, হয়তো কুনো কারণ নাই!
- এত লাভ করার পরেও আমাকে শুধু বন্ধুর মত দেখবা, কষ্ট হইলেও শো করবা না?
উঁহু... হবে না কষ্ট। তোমাকে হাসতে দেখবো। আর ভালোবাসা মানে তো শুধু পাওয়া না, ভালোবাসার মানে তার জন্য স্যাক্রিফাইস করাও। কিন্তু আমি তো স্যাক্রিফাইস করতেছি না। তোমার স্মাইল পাবো, আর কি লাগে?
- উফ্ফ্!!...
বুঝতে পারছিলাম ওপাশে ও কাঁদছে। আমিও... ছেলেদের নাকি কাঁদতে হয় না! কিন্তু কি করবো? বুকের বাঁ দিকের ব্যাথাটা আবার হচ্ছে! আমার গাল বেয়ে পানি। হয়তো এতে ব্যাথাটা কিছুটা কমবে। ওরও কি এমন করে ব্যাথা হচ্ছে? তাহলে ও কেন কাঁদছে? এখন খুব করে বলতে ইচ্ছা হচ্ছে "আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। প্লীজ, বলিও না তোমাকে শুধু ফ্রেন্ডের মত দেখতে।" কিন্তু কিভাবে বলবো? ও যে আমার কাছে উইশ করছে!
- পাঁচ মিনিট পর ফোন দাও তো!
কেন?
- দাও না, প্লীজ!
পাঁচ মিনিট কিভাবে কাটবে?... কাটাইতে হবে! তোমাকে ছাড়া সার জীবন থাকতে হবে এটা তো পাঁচ মিনিট! থাকি না...
৬.
সারাদিনের ক্লান্তি এক সাথে ভর করলো। কখন যে চোখ বন্ধ করে ফেলছি!
ভাইব্রেশনে ঘুম ভাংলো।
হ্যালো...
- SMS দেখছো?
কুন SMS?!
- উফ্! SMS দেখো জলদী! দেখে ফোন দাও!
ঘুম ঘুম চোখে স্ক্রিনটা চোখের সামনে ধরলাম... সাথে সাথে সব ঘুম কোথায় যে গেলো! বিশ্বাস হচ্ছিলো না কি দেখলাম! এটা কি সত্যি? উঠে বসলাম। আবার দেখি তো! একবার করে চোখ ঘোষি। ঘুমের ঘরে ভুল দেখলাম নাকি? বাঁ হাতে একটা চিমটি কাটলাম... না, স্বপ্ন না একদম সত্যি! কি বলবো, কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না! কল চলে আসলো...
- দেখছো?
এইটা কি সত্যি?
- কি মনে হয়?
বল না।
- সত্যি নাহলে কি লিখতাম?
তাহলে একটা কিস দাও...
- কি?
একটা কিস দাও!
- তুমি তো এইটা বলতে পারতা যেইটা লিখছি ওইটা বল, এইটা কেমন কথা হইলো?
পরীক্ষায় যদি ১০০ টার্গেট করা হয় তাহলে অন্ততঃ ৮০ তো পাওয়া যায়!
- মানে কি?
মানে, যদি কিসের টার্গেট করি তাহলে অন্ততঃ যেটা লিখছ ওইটা তো শুনতে পারবো। আর ১০০ পাইলে তো কথাই নাই!
- তুমি এত শয়তান জানতাম না তো!
এই তো শুরু হইলো!
হুম, এইতো শুরু হইলো... সেদিন যে SMS টা আসছিলো, আমার একা জীবনে যে সময় থেকে একজন সাথী হল, সেই যে সেদিন ১০ মে ২০১০, ভোর রাত ৫টা ৪ মিনিটে। তাতে লেখা ছিল... "লাইফে ফার্স্ট টাইম কাউকে কথাটা বলতেছি, আর কখনো কাউকে বলবো না। এন্ড দেট ইস, আই লাভ ইউ"।
এভাবেই শুরু পথচলা!!
১১ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৩
রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: :v
২| ১১ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৭
সোজা কথা বলেছেন: পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এটা নিজের জীবন থেকে নেওয়া???
১১ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:৪৭
রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার জীবনের সেই অসাধারণ সময়টিকে শব্দ বন্দি করেছি। চার বছরের ব্যবধানে কিছুটা হারিয়েছে স্মৃতির পাতা থেকে। তবে এটা আমার জীবনের সত্য।
৩| ১১ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৮
সোজা কথা বলেছেন: পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এটা নিজের জীবন থেকে নেওয়া???
৪| ১২ ই মে, ২০১৪ ভোর ৫:২০
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। কিন্তু বানানের ব্যাপারে অনুগ্রহপূর্বক একটু দৃষ্টিপাত করুন। শুভ কামনা রইল।
১২ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪
রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: ধন্যবাদ।
সংলাপের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় ইচ্ছাকৃত বিকৃতি রাখছি। পারসোনাল ন্যারেশনে ভুল বানানের জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। বানানের প্রতি অবশ্যই সজাগ হব।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫
মদন বলেছেন: