নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

Lol সমাচার

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১১

তখন আমি ভার্সিটিতে পড়ি। আমি যে সময়ের কথা বলছি তখন মুঠোফোন এত সস্তা ছিল না। মনে পড়ে ১মিনিট কথা বলতে চাইলে গুনতে হত ১০ টাকা!! তাই খুব অল্প সংখ্যক লোকের কাছেই মোবাইল ছিল। আর ফেসবুক? এটা তখন অবধি জুকার সাহেবের ব্রেইনেও হয়ত আসেনি। তখন চিঠিই ছিল যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। আমিও নিয়মিত চিঠি লিখতাম। আমি চিঠি লিখতে ভালবাসতাম। আমার অভ্যাস ছিল চিঠিতে অনুভূতিসূচক অভিব্যাক্তি প্রকাশ করা। যেমন হাসির কোন কথা লিখলে বাক্যের শেষে ‘হাহা বা হিহি’ ব্যবহার করতাম। এতে লেখাগুলো আরো মজার হয়ে উঠত। আমার উদ্দেশ্য ছিল পাঠকের কাছে চিঠিকে জীবন্ত করে তোলা। যাইহোক, আমি আমার এক কাজিনকে চিঠি লিখতাম। সে তখন মাত্র প্রাইমারী স্কুলে পড়ে। সেও আমাকে লিখত নিয়ম করে। তার কচি হাতের লেখা প্রাণভরে উপভোগ করতাম। পরে বাড়িতে আমার সাথে দেখা হলে সে বলে বসল, ‘ভাইয়া কি সব হাহা হিহি লেখেন বুঝতে পারি না’। আমি তখন তাকে ‘কেন এটা ব্যবহার করি’ তা বুঝানোর চেস্টা করেছিলাম। তবে আমার বোঝানো কতটুকু সফল হয়েছিল তা অবশ্য ওর চেহারাতে স্পস্ট ছিল না।



যাইহোক, এর মধ্যে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে। বুড়িগঙ্গার পানি দূষিত হয়ে কালো রুপ ধারণ করেছে। আমার সেই প্রাইমারী পড়ুয়া ছোট্র কাজিন পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে কাজের পাশাপাশি এখন রীতিমত সংসার করছে। ও এখন স্বামী-সংসার নিয়ে আমেরিকা থাকে। ওর সাথে এখনো যোগাযোগ আছে। আর চিঠি লেখা হয়না। এর দরকারও পরে না। তবে ফেসবুকে ওর অদ্ভুত মজার কমেন্টস বা স্ট্যাটাসগুলো আমি খুব মজা করে পড়ি। আমি তখন ফেসবুকে একেবারে নতুন। এখানে সংক্ষিপ্তাকারে মনের ভাব প্রকাশ করার চল খুব জনপ্রিয়। প্রথম দিকে এর অনেক কিছুই আমি বুঝতাম না। একদিন ঐ কাজিনের সাথে চ্যাট করছি। ও দেখলাম মাঝে মাঝেই lol শব্দটি লিখে আমার কথার রিপ্লাই দিচ্ছে। প্রথম দিকে না বুঝেই কথা চালিয়ে গেলাম। পরে দেখলাম মাঝে মাঝেই সে এটা ব্যবহার করছে। আমি মহা ধন্দে পড়ে গেলাম। আমি তখন মনে মনে ভাবলাম, এই lol আবার কোন শালা!!X( এদিকে জিজ্ঞাসাও করতে পারছি না। ছোট বোনের কাছে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করতে মন সায় দিচ্ছিল না। কিন্তু এক পর্যায়ে আর থাকতে না পেরে ওকে জিজ্ঞাসাই করে বসলাম, ‘আচ্ছা এই lol টা কে?’ সে ত্বরিত রিপ্লাই দিল, ‘lol মানে হলো laughing out loud or laugh out loud সাথে ডবল lol lol. আমি ওর চেহারা দেখতে পাচ্ছিলাম না। তবে বেশ বুঝতে পারছিলাম সে গলা ফাটিয়ে হাসছে। :(



আমার তখন আন্ডা আর অমলেট এর গল্পটি মনে পড়ে গেল। শহরে বহু আশা করে নতুন ধরণের খাবার মনে করে গ্রামের লোকটি অমলেট-র অর্ডার দিয়ে যখন মজা করে খাবার আশায় বসে আছে তখন হোটেল বয় তার সামনে ডিম ভাজা রাখলে সে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে হোটেল বয় তাকে আশ্বস্ত করে যে এটাই সেই অমলেট। স্বাদের অমলেটের নামে ডিম ভাজা দেখে গ্রামের সহজ সরল লোকটি যেমন বলে উঠেছিল, ‘ওরে শালার আন্ডা তুমিই শহরে আইস্যা অমলেট হইয়্যা গ্যাছ’। আমিও মনে মনে ভাবলাম আমার সেই ‘হাহা হিহি’-ই ফেসবুকে এসে ‘lol’ হইয়া গ্যাছে। :((



সেদিন থেকেই এই lol এর পাল্লায় পরেছি। lol lol lol… B-) B-)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.