নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের ক্রিকেটঃ সমস্যা ও সম্ভাবনা ২

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩

খুব নিরপেক্ষ ও নির্মোহ দৃষ্টিতে পুরো ব্যাপারটি পর্যালোচনা করার চেস্টা করেছি। এখানে প্রচলিত কারণ যেমন আছে; তেমনি কিছু অপ্রচলিত কারণও আছে। যা পড়ে অনেকেই বলতে পারেন, ধুর মিয়া, কিসব আবোল-তাবোল বকছেন”। তবে আমি খুব সিরিয়াস এ ব্যাপারে। এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা। এ ব্যাপারে। আপনাদের মতামত কামনা করছি। আজকে আলোচনা হলো এর শেষ পর্ব।



প্রথম পর্বঃ বাংলাদেশের ক্রিকেটঃ সমস্যা ও সম্ভাবনা



ভৌগলিক কারণঃ কেউ কেউ হয়ত আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকাচ্ছেন। এটা কিন্তু ফ্যাক্ট। ভৌগলিক কারণেও আমরা পিছিয়ে পরছি। কিভাবে? চলুন ব্যাখ্যা করি। তার আগে বলুন ৩০ প্লাস ক্রিকেটার আমাদের দলে কয়জন আছে? মাত্র একজন- মাশরাফি। ওর বয়স ৩০ বছর ১৭৭ দিন। এবার বলুন, কেন আমরা ৩০ বছর পরে তেমন খেলতে পারিনা? উত্তর হলো ভৌগলিক কারণ। আমাদের ছেলেদের পিক আওয়ার হলো ১৮-২৭। এই সময়ে আমরা ফিটনেসের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভাল অবস্থায় থাকি। যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। সাকিব ২৭ পেরিয়েছে। আমি নিশ্চিত আর বছর তিনেক পরে সাকিব পেছন দিকে ফিরতে শুরু করবে। মুমিনুলের পথচলা অসাধারণ হয়েছে। আল্লাহই জানে কতদিন ও আমাদের সেবা দিতে পারবে!

এবার অন্য দলের দিকে তাকান। প্রতিটি দলে ৩৫উর্ধ্ব একাধিক খেলোয়ার আছে। মিসবাহ-সাঙ্গা-জয়া ওদের দিকে তাকান। এই ৩৮-৪০ বছরেও কি খেলাটাই না খেলছে ওরা। শচীন ৪০ বছর বয়সে অবসরে গেল। তাহলে আমরা কেন পারছি না? ঐ যে ভৌগলিক কারণ। আমরা শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল। নাসিরের একটা কথা মনে পরছে। সে বলেছিল, ‘শহীদ আফ্রিদি হাফ শক্তি দিয়ে পিটালেও যেটা ছয় হয়ে যায়, আমাদের সেটা ক্যাচ হয়ে যায়”। আমাদের দেশের চেয়ে দুর্বল শারীরিক কাঠামো আর কারো নেই। এমনকি শ্রী লঙ্কার খেলোয়াররাও বেশ শক্তিশালী। বাকী সবাই ত তাগরা তাগরা একেক জন। এখন অনেকেই বলতে পারেন, ‘স্কিলই আর ‘টেকনিকই’ আসল’। তা ঠিক। তবে শক্তিশালী একজন খেলোয়ারের যদি এই দু’টো গুণই থাকে তবে তা কি অধিকতর ভাল নয়?



আসলে বাংলাদেশের মাটি সোনার মাটি এবং তা খুব নরম। এজন্য খুব নরম স্বভাবের হই আমরা। মনের সাথে সাথে শরীররও অনেক নরম। আমাদের এই এলাকায় অল্প বয়সে শরীর-মনে পরিবর্তন আসে। আবার তারাতারি চলেও যায়। নিয়মিত ব্যায়াম করে শরীর ফিট রাখা সম্ভব। তবে আমরা ব্যায়ামে খুব একটা অভ্যস্ত নই। রাস্তা-ঘাটে বের হলেই এটা বোঝা যায়। ৩৫ বছর পার হলেই বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষের শরীর ছেড়ে দেয়। ‘মেদ ভূড়ি কি করি’ রোগে ভোগেন বেশীরভাগ মানুষ। তাদের স্ট্যামিনা থাকে না। ক্রিকেটারগণ এই হিসেবের বাইরে থাকেন কি করে?



এ থেকে উত্তরণের পথ কি?!? নিয়মিত জিম করা, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা, সকল অনিয়ম থেকে নিজেকে বিরত রাখা ইত্যাদি।



আচরণগত ও পারিবারিক কারণঃ এটা বড় একটা সমস্যা। এবার বিশ্বকাপের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। ব্যাপার হলো, কয়েকটা ম্যাচ ভাল খেলেই আমরা সবাই ‘হিরু’ হয়ে যাই। এই বিজ্ঞাপন, সেই বিজ্ঞাপন’ আরো কত কি। মডেল হওয়া খারাপ না। তবে কথা হলো ক্রিকেট ও মডেলিং-এ দু’টোর মধ্যে সমন্বয়সাধন সবাই ভালভাবে করতে পারে না। কিছু নগদ নারায়ণ হাতে পেয়ে অনেকেই ভাবেন ‘এইবার বিয়ে-থা করে বাকীজীবন কাটিয়ে দেই”। এভাবে আরাম-আয়েশে থাকতে থাকতে আমরা আসল জিনিষ ভুলে যাই। এর ভুঁড়িভুঁড়ি উদাহরণ আছে। শাহরিয়ার নাফিস, আফতাব, নাঈম এরকম আরো অনেক নাম নেয়া যেতে পারে যারা ২৬-২৮ এর মধ্যে ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে। অথচ নাফিসকে ধরা হচ্ছিল বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান। বেশীরভাগই অল্প বয়সে বিয়ে করেন। বিয়ে করা দোষের কিছু না। বিয়ের পরেই বেশীরভাগ ছেলেকে আর ‘তেজী’ হিসেবে পাওয়া যায় না। বিশ্বাস না হলে বিবাহিতদের জিজ্ঞেস করুন।



অন্যদিকে কোহলি-র দিকে তাকান। সে মডেলিং ত করছেই সাথে প্রেমও ভালই চালাচ্ছে। ওর নাকি ঘন ঘন মাথা আচড়ানো এবং আয়নায় নিজের চেহারা দেখার (ভারতের এক সাংবাদিকের লেখায় পড়লাম)স্বভাব। তাই বলে খেলার মান কি পড়েছে? বিপক্ষ দলের বোলারকে জিজ্ঞেস করলেই এর উত্তর পাওয়া যাবে।



আর বিবাহিতদের আছে বৌপ্রীতি (আসলে ভীতি)। “বাজার করে দিয়ে কোথায় মরবে মরগে” এ জাতীয় কথা তারা শোনেন না তাই বা বলি কি করে। আর যারা দলে অনিয়মিত তারা পেটের ধান্ধায় থাকেন। তখন খেলা লাটে উঠে।



এর একটাই সমাধান, আমাদের ক্রিকেটারদের চরম পেশাদারিত্ব অর্জন করতে হবে। একটা দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে এ জন্য। ক্রিকেটারদের নিজের ভুমিকা এক্ষেত্রে অত্যধিক; নিজের ভালটা তাদের বুঝতে হবে আগে। তাদের পাশে থাকতে হবে ক্রিকেটবোর্ড থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শককে।



আমরা এক অস্থির জাতিঃ আমাদের দেশের মানুষ আচার-আচরণের দিক দিয়ে বেশ অস্থির প্রকৃতির। আমাদের কোন খেলোয়ার যদি পরপর কয়েকটা ম্যাচ খারাপ খেলে সাথে সাথে গোটা দেশ তার উপর হামলে পড়ে। টিম থেকে বাদ পরতে পারে-এই নিয়ে তারা খুব ভয়ে থাকে। ফলে তাদের খেলার মান পড়ে যায়। এটা কম বেশী সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এটা গোটা টীমের উপর প্রভাব ফেলে। এ জন্য তারা ব্যক্তিগত পারফরমেন্স নিয়ে বেশী ভাবে, পরে টীম। আপনারাই বলুন এভাবে একটা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ভাল করা সম্ভব? আশরাফুলকে খুব খারাপভাবে বাদ দেয়া হয়েছিল। এরকম উদাহরণ আরো আছে।



যাইহোক, আমরা এক অদ্ভুত জাতি। আমাদের দেশের সকল সিস্টেম কলাপস করলেও কারো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু ক্রিকেটাররা খারাপ করতে পারবে না!! অনেকটা ঐ কৌতুকটার মতঃ সব বিদেশী হলে সমস্যা নেই; তবে মুরগি দেশী হতেই হবে। এই মানসিকতা থেকে অতিদ্রুত আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তাদের সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা আমাদের বুঝতে হবে। অন্তত বোঝার চেস্টা করতে হবে।



ক্রিকেটারদের জীবন-যাপন ও খাদ্যভ্যাসঃ বাংলাদেশ সিংহভাগ মানুষ গরীব। আমাদের ক্রিকেটারগণ এর বাইরে নয়। আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের পারিবারিক আর্থিক অবস্থান বিবেচনা করেন। শতকরা কতজন ধনী পরিবার থেকে এসেছেন? অনেক টানাপোড়েন মোকাবেলা করে তারা ক্রিকেট খেলেন। এজন্য মাঝে মাঝে তাদের খেলায় মনোনিবেশ করা কস্টসাধ্য হয়ে পরে। আর্থিক অনটন আছে বিধায় তাদের খাদ্যের মানও উন্নতমানের নয়। অথচ তাদের এটা দরকার। আর আমাদের দেশের খাদ্য মানে ১০০% ভেজাল। এইসব পচা মাল খেয়ে ভাল ফল উগরে দেবেন এটা হয় না। মনে রাখতে হবে যেকোন খেলাই কুশলাতার সাথে সাথে শক্তিরও খেলা। আমাদের ক্রিকেটারদের দিকে তাকান একবার। বেশীরভাগেরই জীর্ণ শীর্ণ মলিন চেহারা। আমাদের দলে পেশীবহুল কোন খেলোয়ার আছে? এগুলোর সাথে মানি প্রবলেম জড়িত। ওদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কি আমরা দিচ্ছি? অথচ ওদের দেখাশোনা করার জন্য যেসব চন্ডাল আছেন মানে কর্মকর্তাদের গায়ে কিন্তু অনেক চর্বি জমে গেছে। জানি বিসিবি খেলোয়ারদের ক্যাটাগরি অনুযায়ী বেতন-ভাতা দেয়। কিন্তু এগুলো পর্যাপ্ত নয়। নিজেদের দিকে তাকালেই আমরা সহজে বুঝতে পারব।



যারা বিসিবি-র কোন ক্যাটাগরিতেই না থাকেন তার অবস্থা কি হবে। তার ইনকাম লেভেল অনেক পড়ে যাবে। এটা তাকে আরো দিশেহারা করে ফেলবে।



এক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের জন্য বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর ব্যবস্থা করা যায়। মানে তাদের আর্থিক নিশ্চয়তা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তারা বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে। এটা তাদের অধিকার। এতে তারা খেলায় ভালভাবে মনোনিবেশ করতে পারবে।

খেলা পরবর্তী সময়ে মনিটরিং করাঃ সিজনে তারা সবাই ফিট থাকার চেস্টা করেন। কিন্তু অফ সিজনে তারা কি করছেন এ ব্যাপারে সজাগ থাকা জরুরি। আমরা জানি সকল বিখ্যাত ক্রিকেটারগণ অফ সিজনে নেটে, জিমে সময় কাটান। তারা ঘন্টার পর ঘন্টা নেটে নক করেন। বোলাররা একই ভাবে প্রাক্টিসে থাকেন। তারা নিয়মিত জিম করে শরীরটাকে ফিট রাখেন। তালিকা অনু্যায়ী খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলেন। এরফলে তাদের খেলায় বিরতির ছাপ পড়ে না। তারা চনমনে, ফুরফুরে মেজাজে মাঠে নামেন। এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের খেলোয়ারগণ কি করেন? করলেও কতটুকু করেন? তাদের শারিরীক ভাষাই বলে দেয় এগুলো সামান্যই করে থাকেন তারা। এগুলো কড়াভাবে নজরদারী করতে হবে। এসব দৃশ্যমান কিছু মনে না হলেও সফলতার অন্যতম নিয়ামক।



জাতীগত সফলতার অভাবঃ আমরা বড়ই হতভাগা জাতি। যেকোন ব্যাপারেই বিশ্ব দরবারে নজরকাড়া সাফল্য আমাদের কম। গত ৪৩ বছরে খেলাধুলার জগতে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য কোনটা? তালিকা করলে ৫টির বেশী হবে না। সেগুলোও আঞ্চলিক সাফল্য। এগুলো মানসিক গঠনে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখে। নেদারল্যান্ডের দিকে তাকান। বিশ্ব ফুটবলে ওরা অন্যতম সৃষ্টিশীল ক্রীড়ানৈপূণ্য প্রদর্শন করে থাকে। এজন্য ক্রিকেটারদের মানসিক জোড় থাকে যে “আমরাও পারব”। আমার মনে হয় ওরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সবার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আপনার বাবা যদি এলাকার চেয়ারম্যান হয় তবে আপনি কিন্তু অন্যরকম ‘ভাব’ নিয়ে এলাকায় চলাফেরা করবেন। আর গ্রামের একজন গরীব, নিরীহ লোকের ছেলেও সিংহভাগ ক্ষেত্রে তদ্রুপই হয়ে থাকে।



ছোটবেলা থেকেই সবার বিশেষত বিদেশীদের মুখে শুনে আসছি ‘বাংলাদেশ এক অপার সম্ভাবনার দেশ’ বা ‘আগামীর টাইগার’ ইত্যাদি নানা উত্সাহব্যঞ্জক, উদ্দীপনামূলক কথা। কিন্তু বাস্তবে কি আসলেই তা আমরা অর্জন করতে পেরেছি? পারিনি। কোথায় যেন শক্তিশালী এক গেঁড়ো আছে। ফলে আমরা ডানা মেলতে ব্যর্থ হচ্ছি বারবার। ক্রিকেটেও সেই গেঁড়ো বিদ্যমান। অনেক সম্ভাবনা আছে; কিন্তু হচ্ছে না কেন???



বিশ্বজয়ী হওয়ার জন্য তীব্র মানসিক, শারীরিক শক্তি ও দক্ষতা লাগে। অল্প কয়দিনে এসব গুণাবলী আয়ত্ত করা যায় না। যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী লাগে এই গূণাবলী অর্জন করতে। ক্রিকেটই হতে পারে আমাদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম মাধ্যম।



অবকাঠামোগত অসুবিধাঃ এদিক দিয়েও কিছুটা পিছিয়ে আছি আমরা। সারা দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে খেলার মাঠ নেই। যেগুলো আছে সেগুলো অযত্নে, অবহেলায় বেহাল অবস্থায় আছে। ওখানেই ক্রিকেট-ফুটবল খেলা যেমন চলে তেমনি মেলার সময় মেলা; যাত্রা পালা, গান-বাজনার আসর, ইসলামী জালসাসহ সকল কাজেই ব্যবহৃত হয়। এভাবে কি ভাল কিছু হয়? ফলে উঠতি খেলোয়ারগণের তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় বা ছোট-খাটো খোলা জায়গায় হাতেখড়ি হয়। সাকিব এক সাক্ষাতকারে বলল যে, সে ছোটবেলায় যে জায়গায় প্রাকটিস করত সেখানে অনসাইডে মারার জায়গা ছিল না জন্য শুধু অফসাইডে মারত। ওর মতে এজন্য অনসাইডে সে উইক। বোঝেন অবস্থা! অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে। তবে এটাই বাস্তবতা। ছোটবেলায় যে অভ্যাস গড়ে ওঠে তা ত্যাগ করা বড়ই কঠিন।



আমাদের সীমাবদ্ধতা আমরা জানি। তবু যদি সুন্দর একটা পরিকল্পনা মাফিক এগোনো যায় তবে অনেকাংশে এটা দূর করা যাবে।



ম্যানেজমেন্টের সমস্যাঃ কিছুদিন আগেও এই সমস্যা ছিল না। কিন্তু ক্রিকেটে যতই টাকার উড়াউড়ি বেশী হচ্ছে ততই ম্যানেজমেন্ট কমিটি, নিবাচকমন্ডলীতে নিজের নাম লেখানোর জন্য দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। অনেক সময়ই দেখা যায় তাদের আসল দায়িত্ব ছেড়ে ধান্দাবাজিতে মেতে আছেন। কেউ কেউ আবার স্বজনপ্রীতি করে নিজের পছন্দের খেলোয়ারদের দলভুক্ত করছেন। এতে করে শক্তিশালী দল গঠনে সমস্যা হচ্ছে। অনেক মেধাবী ক্রিকেটারগণ ‘মামার জোড় নাই’ বিধায় নানা প্রকার ঘরোয়া লীগ খেলেই ব্যাট-প্যাড তুলে রাখছেন। প্রতিভা অন্নেষ্বণে নিবাচকগণের ভূমিকা অপরিসীম। তাদের চোখ হতে হবে জহুরীর মত।

কাজেই সকল স্বজনপ্রীতি, রাজনীতি, টাকা কামানোর ধান্ধা ইত্যাদি ত্যাগ করে ক্রিকেটের উন্নয়নে, দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে পারে এমন একদল সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ নিবাচকমন্ডলী নিয়োগ করতে হবে।



ক্রিকেট আমাদের জন্য শুধু একটা খেলা বা প্রতিযোগিতা না!! এটা আমাদের কাছে একটি উৎসব এর মতো। যেখানে কোন দলমত নেই। এটা আমাদের জীবন, আমাদের ভালোলাগা, আমাদের ভালবাসা, আবেগ, হাসি, কান্না, দোয়া... আমাদের সব কিছু এই ক্রিকেট এর জন্য। আমরা আমাদের দেশ, আমাদের ক্রিকেটকে অনেক ভালবাসি এবং ভালবাসবো। আমরা বাংলাদেশী, কখনো আশা হারাই না। কাজ ফাকি দিয়ে ইন্টারনেটে, স্কুল কলেজ ফাকি দিয়ে কোন বন্ধুর বাসায়, পথচারীরা রাস্তার ধারে কোন শো-রুমে, যে যার যার স্থান থেকে আবার চিৎকার করে বলবো, সাবাস টাইগার। গর্জে উঠো আরেকবার।



এমন এক আবেগ আমাদের ক্রিকেটকে জড়িয়ে। তবে কঠিন বাস্তবতা হলো, শুধু আবেগ দিয়ে খেলায় জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় না। এটা হয় ভাল খেলা দিয়ে, স্কিল দিয়ে। মনে রাখতে হবে যাদের বিরুদ্ধে খেলছি তাদের ভেতরও এই আবেগ বিদ্যমান।



ক্রিকেট বাংলাদেশের মানুষের মন কেড়েছে; বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করেছে। সকল প্লেয়ারগণ আমাদের আত্বার আত্বীয়। এটাই হতে পারে আমাদের উপরে উঠার ভিত্তিমূল। এই আবেগকে সুচারুরুপে ব্যবহার করতে সক্ষম হলেই আমরা হব বিশ্বজয়ী। বাংলাদেশ একদিন সত্য সত্যই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে এই আশা রেখে এই লেখাটি শেষ করলাম।



সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:২৮

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার এ পর্বের বিশ্লেষণ আরো গভীর। চমৎকার ভাবনার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সাথে পুরাই একমত। আমাদের অহঙ্কারের শেষ নেই। যে কোন কারণেই হোক সাকিবকে দুটি অনুষ্ঠানে দেখার সুযোগ হয়েছে। আমার মনে হয়েছে তাঁর পতনের বীজ তাঁর অহঙ্কারের মধ্যে লুকিয়ে আছে। ফাইনালে সাঙ্গাকারা কী অসাধারণ ইনিংস খেললেন। অথচ বিজয়ের গৌরব দিয়েছেন দলের সবাইকে। হঠাৎ অধিনায়ক মালিঙ্গাকে বোলিংয়ের মতো কথাতেও আগ্রাসী মনে হয়েছে। কিন্তু তিনিও বলেছেন, ভাগ্যের জোরে নয়, আমরা সবাই মিলে কঠিন পরিশ্রম, মেধা আর সাহস দিয়ে জিতেছি।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এত বড় লেখা কস্ট করে পড়েছেন এ জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার ভাবনাগুলো যাদের ভাবার কথা তারাও হয়ত ভাবেন। কিন্তু কাজের বেলায়ই উল্টো ঘটে।

আপনার মন্তব্যের সাথেও একমত। সাকিবের নানা সমালোচনা হরহামেশাই পত্রিকায় দেখছি। আপনি ত সাক্ষী এ ব্যাপারে। কোহলিও নাকি অনেক দাম্ভিক। তবে পারফরমেন্স সব ঢেকে দেয়।
তবু আমার মনে হয়, বাংলাদেশ দলে যদি সাকিবের মত ৫ জন খেলোয়ার থাকত তবে আমরা টপ এইটের মধ্যে যেতে পারতাম। ও অহঙ্কারী হলেও যথেস্ট মেধাবি।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: সাকিবের মেধা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলা অবান্তর। তবে সাকিবের মতো আরো কয়েকজন থাকলে আমরা ৮-এ চলে আসবো এতেও সন্দেহ নেই।
কোহলীও দাম্ভিক। শেবাগও তাই ছিলেন। ভদ্রতার প্রতিমূর্তি ছিলেন শচীন।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:০৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: সাকিব যে কথাগুলো বলে তার বেশীরভাগই কঠিন সত্য কথা। তবে কঠিন সত্য সবাই মেনে নিতে পারে না। সাকিবের সাক্ষাতকার পড়লাম। নিচে লিঙ্ক আছে। পড়তে পারেন।

এই লিঙ্কে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার কেউ নেই: সাকিব

আর ৪/৫জন যদি অভদ্রও হতো কিন্তু খেলত ভাল তবে তাতেও আমরা সাধারণ জনগণ খুশিই হতাম।

আপনাকে আবার ধন্যবাদ।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯

সীমানা ছাড়িয়ে বলেছেন: সিরিজের দুইটা লেখা ঝটপট পড়ে ফেললাম। সুন্দর লেখা এবং বিশ্লেষন। উন্নতি করতে হলে সব দিক থেকেই উন্নতি করতে হবে - স্কিল, মানসিকতা, অধ্যাবসায়, ম্যানেজম্যান্ট, অবকাঠামো। ধন্যবাদ আপনাকে।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এত বড় লেখা কস্ট করে পরেছেন এতেই আমি খুশি। মন্তব্যে বোনাস।

'উন্নতি করতে হলে সব দিক থেকেই উন্নতি করতে হবে - স্কিল, মানসিকতা, অধ্যাবসায়, ম্যানেজম্যান্ট, অবকাঠামো'-এটাই আসল কথা। তার আগে ভাল ফল চাইলে পস্তাতে হবে। সাকিব আসলে হয়ত এগুলোই বলতে চেয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.