নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজেট অধিবেশন বিষয়ক ‘বিশেষ’ সম্পাদকীয়।

০৭ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৫০





গত ৬ জুন ২০১৪ ইং তারিখে মহান সংসদে ২০১৪-২০১৫ সালের বাজেট পেশ করা হয়েছে। আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত সাহেব এবারের বাজেটকে ‘কালো মেঘের আড়ালে সোনালী রেখা হিসেবে অভিহিত করেছেন। বাজেট আলোচনা করা আমার সাধ্যি নয়। তাই ওদিকে যাচ্ছিও না। শুধু এটুকুই চাওয়া দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিপথ যেন সাবলিল থাকে। এবারের বাজেট অধিবেশন একদম নিরুত্তাপ ও বাদ-প্রতিবাদহীনভাবে এগিয়ে চলছে। হতেই হবে। কারণ বিরোধী দল তো সংসদে নেই। আমার কথায় যদি কেউ দ্বিমত পোষণ করেন তাহলে তাদের জন্য দু’টি সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন করি। ১। বর্তমান সংসদের মাননীয় বিরোধী দলের নেত্রী কে? ২. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের নাম কি?



যাক, গত বছর বাজেট অধিবেশনের সময়ে সরকারী-বিরোধীদলের কতিপয় সদস্যদের নানা ধরনের হাস্যরসাত্বক ও বিতর্কিত আলোচনা যুগপতভাবে সাধারণ মানুষের মাঝে বেশ আনন্দ ও গোস্বার উদ্রেক করেছিল। এগুলো নিয়ে আমি তখন একটা লেখা দিয়েছিলাম। তখন আমি অবশ্য আঁতুড় ঘরেই মানে ‘Watch’ নামক গুয়ানতানামো বে-তে বন্দি অবস্থায় ছিলাম। আবার এসেছে বাজেট অদিবেশন। প্রাসঙ্গিক বিবেচনা করে আপনাদের সাথে আবার শেয়ার করলাম।



আর একটা কথা। এটি নিতান্তই একটি ফান পোস্ট। সিরিয়াসলি নেয়ার কোন কারণ নেই। তবু কারো মনে আঘাত দিয়ে থাকলে আমি দুঃখিত। আর একটা কথা, সাধু-চলিত ভাষার মিশ্রণ দোষনীয়। অনিচ্ছাসত্তেও তা হয়ে থাকলে ‘কালো টাকা সাদা করার’ মত বেমালুম হজম করে ফেলবেন।




সকলেই অবগত আছেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন চলিতেছে। গত ৬ই জুন ২০১৩ ইং তারিখে আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত সাহেব মাথার ঘাম পায়ে ফেলাইয়া, জিহবাকে কড়িকাঠ বানাইয়া, কতক সময় দাঁড়াইয়া, কতক সময় বসিয়া (মাননীয় স্পীকার সাহেবার অনুতিক্রমে) কয়েক ঘন্টা ধরিয়া বহু কস্ট স্বীকার করিয়া ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের বাজেট মহান জাতীয় সংসদে পেশ করিয়াছেন। ইহা খুবই আশার কথা যে, বিরোধীদল সকল দ্বিধা ভুলিয়া (সমালোচকগণ কহেন, সংসদ সদস্যপদ বহাল রাখিবার নিমিত্তে) তাহার সংসদে যোগদান করিয়াছেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকিবার পরে যে কোন কারণেই হউক তাহারা মহান সংসদে যোগদান করিয়াছেন এই জন্য সবসময়ের জন্য ক্ষমাশীল ‘ম্যাঙ্গো পিপল’ তাহাদের আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাইয়াছেন। যাহাই হউক, ইহার নামই যেহেতু বাজেট অধিবেশন তাই বাজেট-কেন্দ্রিক আলোচনা হইবে ইহাই সমীচীন। প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় আলোচনায় আসিবে ইহা দোষের কিছু নহে। মাননীয় মাল সাহেবসহ গোটা দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল বাজেটের নানাদিক নিয়ে বিজ্ঞ সাংসদগণ আলোচনা-সমালোচনা এবং নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়া সংসদকে প্রাণবন্ত করিয়া তুলিবেন এবং এতে করিয়া বাজেট বাস্তবায়নে সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর হইবে। কিন্তু কিসের কি? মহান সংসদে বাজেট অধিবেশনে আমরা ইহা কি শুনিতেছি? অবস্থাদৃষ্টে মনে হইতেছে ইহা বাজেট অধিবেশন না হইয়া গালাগালি অধিবেশনে পরিণত হইয়াছে। একদিকে সরকারী দল বিরোধীদল কে ‘বিশেষ পাড়ার ভাষায় কথা বলে’ বলিয়া কটাক্ষ করিতেছেন। অন্যদিকে বিরোধীদলও কম যান না। তাহারা দাঁতমুখ খিচাইয়া ‘চুতমারানী’ বলিয়া গালি দিচ্ছেন। এবং আরও এমন সব অশিস্ট, অশ্লিল ভাষা সেখানে ব্যবহার করা হইতেছে যাহা মনুষ্য সমাজে উচ্চারণযোগ্য নহে। রসিক মানুষগণ বলিতেছেন, সংসদ আধিবেশন চলাকালীন সময়ে ইহার চারিপাশে চলিয়া যাওয়া রাস্তায় চলমান গাড়ির যাত্রীগণ কানে আঙ্গুল দিয়া উক্ত জায়গা পার হইতেছেন, যাহাতে তাহাদের কানে কোন অশ্লিল গালাগালি না প্রবেশ করে।



এইদিকে নানা রকমের গবেষণা কার্যক্রম শেষে আমাদের বিশেষজ্ঞগণ সম্প্রতি জানাইতেছেন যে, ‘চুদুরবুদুর’ শব্দটি অশ্লিল নয় এবং ‘চুদুরবুদুর’ চলিবে!!! সব মিলাইয়া অবস্থা বড়ই বেগতিক মনে হউতেছে। এইসব নানা অসামাজিক বক্তব্যের ফলে মাল সাহেব একেবারে বেসামাল হইয়া পড়িয়াছেন। তাহার এত কস্টের বাজেট আলোচনা মিছমার হইবার উপক্রম দেখিয়া তাহার গোস্বা চরমে পৌঁছাইয়াছে। এক নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে জানা যাইতেছে যে, এইরকম অসংসদীয় ভাষায় আলোচনা যদি চলিতেই থাকে তবে তিনিও তাহার যাদুর ঝাঁপি খুলিয়া দিবেন। অর্থাৎ তিনিও যাহাকে ইচ্ছে তাহাকে ‘রাবিশ’ বা ‘ফালতু’ বলিয়া গালি দিবেন বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন। কেননা তাহার ধারণা জনগণকে নানান রঙের কথা বলিয়া হাসানোর অধিকার একমাত্র তাহার। কোথাকার কোন হেনা বা রানু আসিয়া তাহার নিজের চোখের সামনে তাহার এতদিনের ‘সুনাম’ (?) বিনস্ট করিবে ইহা কোনমতেই তিনি সহ্য করিবেন না। এই ব্যাপারে আমাদের সকল কাজের কাজী প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকাও বলিহারি। গুটিকয়েক ‘অসামাজিক সাংসদ’ ব্যতিরেকে বাকী সাংসদগণ নানারকম গঠনমূলক আলোচনা যাহা করিতেছেন তাহা মিডিয়ার কল্যাণে তেমনভাবে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিগোচর হইতেছে না। তাহারা বাছিয়া বাছিয়া ‘বিশেষ পাড়ার’ ‘চুতমারানী’ বা ‘চুদুরবুদুর’ শব্দ নিয়াই পড়িয়া আছেন। ধিক তাহাদের সাংবাদিক নীতিমালার প্রতি! আমরা এ ব্যাপারে মাননীয়া স্পীকার সাহেবার দুর্বলতা এড়াইয়া যাইতে পারি না। শুধুমাত্র সকল ক্লাশে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়াটাই যে জরুরী নহে ইহা আবারও প্রমাণীত হইল। আমাদের সোজা বক্তব্য, তাহাকে আরও কঠোর হইতে হইবে। তাহাকে অতিদ্রুত অভিজ্ঞতা অর্জন করিতে হইবে। অন্যদিকে সংসদ নেতা ও বিরোধী নেতৃবৃন্দকেও জনগণ তাহাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাইয়াছেন। ম্যাঙ্গো পাবলিক ভাবিতেছেন, নেতৃবৃন্দগণ তাহাদের পোষা মানুষদেরকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলাইয়া দিয়া নিজেরা মজা লুটিতেছেন। এই অভিযোগ হইতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাহাদের বাহির হইয়া আসিতে হইবে। এইজন্য যাহারা অসাংবিধানিক ভাষায় কথা বলিয়া মহান সংসদের ভাবমূর্তির বারোটা বাজাইতেছেন এবং জনগণের কস্টের টাকার শ্রাদ্ধ করিতেছেন তাহাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।



আমরা প্রত্যাশা করি জাতীয় সংসদ হইবে জাতির সকল আশা আকাংক্ষার প্রতীক । আমরা ইহাও আশা করি মাননীয় সাংসদ্গণ জনহিতকর, জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিয়া জাতীয় সংসদে প্রাণবন্ত আলোচনা করিবেন। সাংসদগণ তথা রাজনীতিবিদদের জনগণের স্বার্থ নিয়া আর কোন চুদুরবদুর বরদাশত করা হইবে না এ ব্যাপারে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।





ছবি সুত্রঃ প্রথম আলো

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: মজা পেলুম।

০৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: মজা পেয়েছেন জেনে আনন্দিত হলাম।

২| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩১

হাসান মাহবুব বলেছেন: সরস রচনা।

০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.