নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি যখন থেকে ক্রিকেট খেলা দেখা শুরু করি তখন বাংলাদেশ দলের অবস্থা একেবারে যাচ্ছেতাই। প্রতিটি ম্যাচেই আমরা গো-হারা হারতাম। আমাদের ব্যাটসম্যানদের রানগুলো দেখলে মনে হত ‘টেলিফোন ডিজিট’। আর বোলাররা অকৃপণ হাতে রান বিলিয়ে যেত। বাংলাদেশের সাথে খেলা মানে বিপক্ষ দলের জন্য নিশ্চিত পয়েন্ট প্রাপ্তি কিংবা কিছু রেকর্ড। একটা জয় দেখার আশায় আমাদের বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হত। সিরিজ জয় তো, ‘দিল্লি বহুত দূর’। মোটকথা, বাংলাদেশ ছিল অন্য ক্রিকেট পরাশক্তির জন্য ‘পিকনিক স্পট’ এর মত। ওরা প্রাণভরে ‘উপভোগ’ করত আমাদের। সে সময় আমরা যারা সাপোর্টার ছিলাম তাদের অবস্থা ছিল ‘একাধারে ফেল করে যাওয়া এক নচ্ছার ছাত্রের’ অভিভাবকের মত। কাজেই ‘ফেল যেখানে নিশ্চিত তা উপভোগ করা শ্রেয়’।
দিন গড়ানোর সাথে সাথে আমরাও একটু একটু করে এগিয়ে যেতে লাগলাম। বাংলাদেশের ক্রিকেট বাগানে নতুন নতুন ‘ফুল’ ফুটতে লাগল। এর সুবাস পৌছে যেতে লাগল বিশ্বের নানা প্রান্তে। এইরকম প্রথম ফুল ছিল ‘আশরাফুল’ নামের এক ‘নিউক্লিয়াস’। আশরাফুলই প্রথম ব্যাটসম্যান যার ক্ষমতা ছিল যেকোন দলের কব্জা থেকে ম্যাচ বের করে আনতে। বহুবার সে এর প্রমাণ দিয়েছে। সে সময় আরো একঝাক নতুন ফুল বাগানে আসে। মাশরাফি বিন মর্তুজা ওরফে ‘পাগলা’ তাদের অন্যতম।
এরপরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘সাকিব আল হাসান’ নামের এক মাস্টারপিসের আগমন। আমার মতে সাকিবের আবির্ভাবই বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘টার্নি পয়েন্ট’। বাংলাদেশে কোন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার জন্ম নিবে এই বিশ্বাসই এক সময় অমুলক ছিল। কিন্তু সাকিব এটাকে মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে। সাকিবকে দেখে গোটা টীম উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। একে একে দলে আসে জিনিয়াস সব ক্রিকেটার। তখন থেকেই ছোট-বড় সব দলের বিপক্ষে জয় পাওয়া শুরু করি আমরা। জয় অভ্যাসে পরিণত হয়। তবু বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ জয় অধরাই থেকে যাচ্ছিল।
এমন সময় ধুমকেতুর মত আবির্ভাব ঘটে ‘মুস্তাফিজুর রহমান’ নামের এক মারণাস্ত্রের। যার বিষাক্ততায় একে একে নীল হয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মত ক্রিকেট পরাশক্তিগুলো। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান, আয়ারল্যাণ্ডের মত দলগুলোর জন্য আমরা হয়ে উঠলাম এক আতংক একই সাথে রোল মডেলও।
এক লম্বা সময় পেরিয়ে আজ আমরা এক ক্রিকেট উন্মাদ জাতিতে পরিণত হয়েছি। আমাদের আবেগ-অনুভূতির সবটুকু ঢেলে দেই ক্রিকেটে। বাংলাদেশ হারলে গোটা দেশ নিস্তব্ধ হয়ে যায়। আর জয় পেলে গোটা দেশে আবেগে ভেসে যায়। যাদের এত আবেগ, যারা ক্রিকেটকে এত ভালবাসে তাদের কেউ ‘দাবায়ে রাখতে পারবে না’
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বিঃদ্রঃ ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে নেয়া।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:০৭
ইছামতির তী্রে বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। বোঝাই যাচ্ছে খুব গভীরভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলা দেখেন এবং খবর রাখেন। আপনার মতামতের সাথে একমত। জিম্বাবুয়ে কিন্তু প্রায় বড় দল হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে ফ্লাওয়ার ভাইদ্বয় যখন খেলত। কিন্তু সরকারের নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে ওরা হারিয়ে গেল। কেনিয়াও এক সময় ভাল খেলত। কিন্তু প্রায় একই কারণে ওরাও হারিয়ে গেল। তবে বাংলাদেশ সত্যি ব্লতে কি, সব সময় ট্র্যাকে ছিল। ফলে আমরা আজকের বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি।
রিয়াদের উত্থান সত্যি অবাক করার মত। আসলে বিশ্বকাপ ওর গতিপথ চিরতরে বদলে দিয়েছে। ইংলিশরা বিশেষ করে ওকে খুব লাইক করে।
যাইহোক, আপনার অসাধারণ মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ব্লগে খেলা পাগল লোকজন কম বোধহয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:২৫
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
টেলিফোন ডিজিটের স্কোরকার্ড - আহা, কী সেইসব দিন!!
আসলেই তখন বড় বড় দলেরা ঘুরতে আসতো, নতুন খেলোয়ারকে নামাতো পরখ করে দেখার জন্য - আর আমরা আমাদের সেরা দল। অসম এক লড়াই।
আশরাফুল-মাশরাফি-রফিকই ছিল যা প্রতিপক্ষের মাথার কারণ। তবে, ঐসময় রফিককেই বেশি ভয় পেত। আশরাফুল ধারাবাহিক না, মাশরাফি চোটাগ্রস্ত হতে হতে আত্নবিশ্বাসশূণ্য। এদের সামলানোও সহজই ছিল। এই কয়জন আর কী করবে?
তবে, সাথে হুট করে সাকিব, ফরহাদ রেজা(এখন ইতিহাস), মুশফিক, তামিম, তার কিছুদিন পর রিয়াদ এবং দুর্বল জিম্বাবুয়ে যোগ দেওয়ায় দলটা অনেক পরিবর্তিত হতে শুরু করে। যে যাই বলুক - আমার কাছে মনে হয় - জিম্বাবুয়ের তৎকালীন দুর্বল দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা না থাকলে বাংলাদেশ উন্নতি এতটা করতে পারতো না। ঐ জিম্বাবুয়েকে ক্লোজ কিছু ম্যাচে হারানোর আত্নবিশ্বাসেই বড় দলগুলোকে ধরা খাইয়ে দিতে পেরেছিলাম আমরা।
এরপরই মূলত খেলার উন্নতিটা শুরু হয়। আর সাকিব বিশ্বসেরা মানের খেলা খেলে বিশ্বাসটা আরো জোরদার করে। পরে মাশরাফির অধিনায়কত্বে উন্নতি পূর্ণতা পেয়েছে।
তখন যে সব খেলোয়ার দলে অভিষেক করতো - তারা সবাই ই ছিল সাময়িক। এখন যারা আসছে এরা সবাই ক্লাস প্লেয়ার। বিশেষ করে মুস্তাফিজ তো ওয়ার্ল্ড-ক্লাস।
সেই সাথে সাধারণ মানের খেলোয়ার থেকে ডার্ক নাইট হয়ে উঠা রিয়াদ ভাইও।
পোস্টটা ভাল লাগলো। তাই প্যাচাল পারলাম কতক্ষন।