নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিটি ঘরই মসজিদ!

০৭ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:০৬



চার সপ্তাহের বেশী হলো শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গেছিলাম। সে সময় থেকেই মসজিদ বন্ধ করে দেয়ার কথা বেশ জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছিলো। নিঃসন্দেহে সেদিনের সমবেত মুসল্লীদের কানেও এই সংবাদ পৌঁছে থাকবে। তাই সবাই বিষন্ন ছিল। সাধারণত মোনাজাত সব সময় ফরজ নামাজের পরেই হয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেদিন ঈমাম সাহেব বাংলা বয়ানের পরই বিশেষ মোনাজাত ধরলেন। ঈমাম সাহেবের মনটাও ভীষণ খারাপ ছিল। তিনি গভীর দুঃখভারাক্রান্ত মনে কান্নাজড়িত কন্ঠে আল্লাহর দরবারে দু'হাত তুলে ফরিয়াদ করতে লাগলেন। ঈমাম সাহেবের অন্তর্ভেদী কথাগুলো সমবেত মুসল্লিগণের মাঝে তীব্র আলোড়ন সৃস্টি করলো। মুসল্লিগণ নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। হাউমাউ করে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করতে লাগলেন সবাই। সে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ। আমার মনে হলো এই কান্নায়, এই আহাজারিতে, এই আবেগে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠবে যেন। আমারও বুক ফেটে কান্না আসছিল। মসজিদের দেয়াল ধরে ভীষণ কষ্ট নিয়ে বললাম, "হে আল্লাহ! তোমার ঘরও বন্ধ হয়ে যাবে!!"

আমাদের দেশে এখনো মসজিদগুলো খোলাই আছে। কিন্তু যখনই শুনি মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হবে তখনই মনের মধ্যে গভীর কষ্ট অনুভব করি। ইতিমধ্যে সারাবিশ্বের অনেক দেশেই মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। না, কোন বহিঃশত্রুর ভয়ে বা তাদের দ্বারা নয়, বরং আমরা নিজেরাই বন্ধ করে দিয়েছি। মহামারি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সাবধানতামূলক ব্যবস্থার ফলস্বরূপ আমরা নিজেরাই মসজিদগুলি বন্ধ করে দিয়েছি।



ইতিমধ্যে সৌদি আরবের সকল মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি মক্কা এবং মদিনা শরীফে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বায়তুল্লাহ শরীফ আজ বন্ধ! যেখানে সারাক্ষণ "লাব্বাইক" শব্দের ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হয় তা আজ বন্ধ! সারা পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে যেখানে মুসলিমগণ তাওয়াফ করতে যেতেন, তা আজ বন্ধ! সুবহান আল্লাহ! সুবহান আল্লাহ! এ এক নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু এটাই চরম সত্যি। শুধুমাত্র মক্কা এবং মদিনা নয়; এই তালিকায় আরও বহু দেশ আছে যথা কাতার, কুয়েত, মরক্কো, তুরস্ক, মালয়েশিয়াসহ আরও অনেক অনেক।

পরিস্থিতি বিবেচনায় মসজিদ বন্ধ করা খুব অপরিহার্য ছিল। কমনসেন্স এবং শরিয়াহ উভয় দিক থেকেই এটা যৌক্তিক। মহামারীর বিস্তার রোধে এছাড়া কোন বিকল্প ছিল না। কিন্তু মানুষের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, তাহলো আবেগ এবং ভালবাসা। সেই দৃস্টিকোণ থেকে মসজিদ বন্ধ করাটা মন সায় দেয় না। মসজিদ- দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তম স্থান সেটা বন্ধ! মসজিদে নামাজ, জিকর, অন্যান্য ইবাদত বন্দেগি সব বন্ধ! ও আল্লাহ! এটা কিভাবে মানা সম্ভব!?



কিন্তু বাস্তবতা আমাদের মানতেই হবে। তবে মসজিদ বন্ধ হলেও ইবাদত বন্দেগি বন্ধ হবে না কিছুতেই। আমাদের ঘরগুলোই এখন থেকে মসজিদ। নামাজ কালাম, জিকির আযকার, কুরআন, হাদিস পড়াসহ সকল ইবাদত বন্দেগি ঘরেই হবে। যতদিন পরিস্থিতির উন্নতি না হচ্ছে ততদিন অবধি প্রতিটি ঘরই মসজিদে রূপান্তরিত হবে। মহানবী ﷺ বলেন, "কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীর (সমস্ত জায়গাই) মসজিদ (নামায ও সিজদার স্থান)"।

কাজেই দুনিয়া উল্টে যাক, মহামারি আমাদের সবাইকে নিয়ে যাক, কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আল্লাহর নাম নেয়া কোনক্রমেই বন্ধ হবে না, চলতেই থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত।

তবেই একই সঙ্গে আশা এবং বিপদের কথা হলো সরকার সীমিত পরিসরে মসজি খুলে দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ যোহর থেকে বেশ কিছু কন্ডিশন মেনে মসজিদে জনসাধারণের নামাজ পড়া শুরু হয়েছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।

হে আল্লাহ! আমরা পাপী, আমাদের ক্ষমা করো; আমরা সীমালঙ্ঘনকারী, আমাদের ক্ষমা করো ; আমরা আপাদমস্তক ভুলে ভরা, আমাদের ক্ষমা করো; সংশোধন করো, আমরা তোমাকে ডাকি না, আমাদের ক্ষমা করো, তৌফিক দাও; আমরা ভুল পথে চলি, আমাদের সঠিক পথ দেখাও।

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের মাওলা। আমাদের ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৪০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অবস্থা খুবই ভয়ংকর । সবেতো আরম্ভ

০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আল্লাহ রহম করো।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহর ঘর আল্লাহ যথাসময়ে খোলার ব্যবস্থা করে দিবেন।

০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: অবশ্যই। আল্লাহর হুকুম ছাড়া কিছু হয় না।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

মা.হাসান বলেছেন: আল্লাহর ইচ্ছা সকলের জন্য বোঝা মুশকিল। তওবা করা দরকার। লক্ষ লক্ষ লোক আছেন, বিশেষত মুসলিমরা যে দেশ গুলোতে সংখ্যায় কম এমন দেশ গুলোতে, যাদের পক্ষে মসজিদে নিয়মিত যাওয়া সম্ভব হয় না। মসজিদে যেতে পারাটাও একটা নেয়ামত। সময় থাকতে সকলে শুকরিয়া আদায় করিনি। বিশেষ পরিস্থিতিতে ঘরে নামাজ আদায় করলে আল্লাহ নিশ্চয়ই কবুল করবেন। আপনার লেখার আকুতি মন ছুয়ে গেল। দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাদের মার্জনা করেন।

০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন। এটাই মানুষ সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ কিঞ্চিত ঝাঁকুনি দিয়েছেন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০৭ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: প্রতিদিন সরকারী হিসেবেই করোনা সনাক্তের হার ৭০০ জনের উপরে। বেসরকারি সংখ্যা যে কত কে জানে ! তারপরেও একেএকে গার্মেন্টস , শপিংমল , মসজিদ খুলে দেয়া হচ্ছে।!!মৃত্যূর মিছিল দেখতে কি আমরা ব্যকুল হয়ে পড়েছি?

০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আল্লাহ জানেন আমাদের কপালে কি রেখেছেন। আল্লাহ রহম করো।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.