নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা সবাই করোনা যোদ্ধা।

১৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭

মানুষ বহুদিন যাবত ৩য় বিশ্বযুদ্ধের আশংকায় ছিল। আদতে ছয় মাস আগে থেকে চীনের উহান থেকে মহাযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। যুদ্ধের ক্ষেত্র পৃথিবীব্যাপী। এক দিকে পৃথিবীর সাতশো কোটি মানুষ; অন্যদিকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক ভাইরাস। আমি নিজেও এই মহাযুদ্ধের একজন লড়াকু যোদ্ধা।

প্রতিদিন প্রতি মুহুর্তে আমরা যুদ্ধে লিপ্ত আছি। শত্রুকে চোখে দেখা যায় না। এ যেন হাওয়ার সাথে যুদ্ধ। কিন্তু তার ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যায়। এই বুঝি কোন এক ফাঁকে নাক, মুখ, বা চোখ দিয়ে ভাইরাসটি ঢুকে গিয়ে ভেতরের কলকবজা বিকল করে দিল। প্রাণঘাতী এই শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র অতি নগন্য। ঘনঘন হাত ধোয়া, হাত স্যানিটাইজ করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, সকল প্রকার খাবার উত্তমরূপে জীবাণুমুক্ত করা ইত্যাদি। বাজার থেকে কোন খাদ্যদ্রব্য কিনে আনলে মনে হয় করোনা ভাইরাস কিনে নিয়ে এসেছি। সেজন্য সেগুলো কাপড় ধোয়ার মত সাবানের গুড়া দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে এরপর খাই। হায়রে! কি একটা অবস্থা!

অতি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে সে এক এলাহি কান্ডকারখানা। প্রথমে জামা কাপড় প্যান্ট পরো। অবশ্যই ফুল হাতা শার্ট বা গেঞ্জি। মুখে মাস্ক, চোখে সানগ্লাস, হাতে গ্লাভস, মাথায় ক্যাপ, পায়ে জুতা/স্যান্ডেল। অনেক দিন জুতা পরা হয় না। জুতা মনে মনে হয়তো বলে "আমার মালিক মরে গেছে নাকি!" যাইহোক পুরো প্রস্তুত হবার পর নিজেকে যুদ্ধক্ষেত্রের একজন সত্যিকার যোদ্ধা মনে হয়। আর যারা পিপিই পরে তারা তো একেকজন এডুইন অলড্রিন, নীল আর্মস্ট্রং কিংবা মাইকেল কলিন্স; যেন এখুনি চন্দ্রাভিযানে রওনা হচ্ছেন। কিম্ভূতকিমাকার ড্রেসআপ! এই গরমে এমন উদ্ভব সাজ নিয়ে বের হওয়া খুব কষ্টের।

রাস্তায় নেমে আপনি চারিদিকে অসংখ্য করোনা যোদ্ধা দেখবেন। সবাই নিজেকে এবং অন্যকে বাঁচানোর লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে। রাস্তায় ভাইরাসের সাথে প্রতিপক্ষ হিসেবে যোগ হয় এ সকল মানুষও। খুব সাবধানে চলতে হয়। কারো গায়ের সংস্পর্শ যেন না লাগে। অনেকটা যুদ্ধক্ষেত্রের বিপক্ষ দলের সৈন্য থেকে নিজেকে রক্ষা করার মতো ব্যাপার। যাই ধরবেন তাতেই এক অজানা আশংকায় কুকড়ে যাবেন। এই বুঝি করোনা এলো! এ যেন চারিদিকে শত্রু!

বাসায় ফিরে আসামাত্র আপনি অচ্ছুৎ কিংবা কুষ্ঠ রোগী টাইপ কিছু হয়ে যাবেন। কেউ আপনার ধারে কাছে ঘেঁষবে না। বাসায় ঢোকার পর আপনার স্থান হবে কোথাও না বসে সোজা বাথরুম। যা যা গায়ে দিয়ে বের হয়েছিলেন সেগুলো গুড়া সাবান এবং ডেটল মিশ্রিত গরম পানির মধ্যে চুবিয়ে রাখবেন। আর নিজে উত্তমরূপে জীবাণুমুক্ত হতে গোসল করবেন। তার আগে লক এন্ড কি স্যানিটাইজ করবেন। কি অবস্থা!

এভাবে করোনা সারাবিশ্বের প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রা আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে।

গত প্রায় দুইমাস ধরে এক অদৃশ্য কিন্তু শক্তিধর শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে করতে আমি সত্যিই ভীষণ ক্লান্ত। একে তো ঘরে বসে থাকা। তার উপর প্রতিটি মিনিট শংকা। এভাবে আর কতদিন চলবে আল্লাহ জানেন। ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হওয়া চরম দরকার। ধারণা করা হচ্ছে নেক্সট জানুয়ারি ভ্যাকসিন বাজারে আসতে পারে। কিন্তু কোন গ্যারান্টি নেই। কমবেশি ঊনিশটি ভ্যাকসিনের কথা শোনা যাচ্ছে। সবাই চেস্টা করছে। আল্লাহ ভরসা।

মানুষ দিন দিন অস্থির হয়ে উঠছে। আমার আশংকা আর কিছুদিন মানুষ দেখবে। এরপর তারা বের হয়ে যাবে। যা হবার হবে এমন একটা মানসিকতা তৈরি হয়ে যাবার আশংকা করি। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সে লক্ষ্মণ পরিস্ফুট। আমাদের দেশে সত্যিকারের লকডাউন হয়ইনি। একে একে কলকারখানা, শপিংমল সব খুলে দেয়া হচ্ছে। লকডাউন শেষ। এখন নাকি ইমিউনিটি এর উপর নির্ভর করতে হবে। যাকে বলে বিপদ একেবারে মাথার উপর।

সত্যি কথা বলতে, মানুষ এভাবে কখনো ঘরে বসে থাকেনি। এতে সে অভ্যস্ত নয়। এই পরিস্থিতি আসার আগেই আল্লাহ করোনা নামক এক অত্যাশ্চর্য ভাইরাস তুলে নিক। আল্লাহ দয়া করুক।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:০১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: যে জীবানুকে খালি চোখে দেখা যায় না, এমন কি সাধারণ মাইক্রোস্কোপের সাহায্যেও দেখা যায় না, ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপের দরকার হয়, তাকে দেহে প্রবেশ করা ঠেকাবে কিভাবে? মাস্কের যে ছিদ্রগুলো দিয়ে আমরা নিঃশ্বাস নিই, সেগুলো কী করোনা ভাইরাসের চেয়ে ছোট? তাহলে তো আমরা নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেতাম।

আবোল তাবোল পরামর্শ আর মহামারির সুযোগে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ধান্ধা।

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন। এত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের সাথে কিভাবে পারবে মানুষ। তবুও সোস্যাল ডিসট্যান্সিং, ঘনঘন হাত ধোয়া, মাস্ক, গ্লাভস পড়াসহ অন্যান্য স্বাস্থবিধি মেনে চলা ছাড়া আর তো উপায় নেই। প্রতিরোধমূলক ব্যবহারই এখন একমাত্র ভরসা। মাস্ক ১০০% জীবাণু আটকাতে পারে না। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছেযে অন্তত ৯০% এর উপর কাজ কর।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:২৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দেশের মানুষ করোনার চেয়ে ঈদে নতুন কাপড় কিনা নিয়ে চিন্তিত

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: হুম, অনেকের কাছে করোনার চেয়ে ঈদের নতুন পোশাক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে। আল্লাহ এদের সুবদ্ধি দান করুন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৩:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষেরধারনা কম।

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: পাশাপাশি জাতিগতভাবে আমরা যে কোন কিছুর তেমন গুরুত্ব দেই না।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.