নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পৃথিবী

এভাবেই ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে যায়..

রোদেলা

আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।

রোদেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নজরুল জীবনে নার্গিস উপাখ্যান //

২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২৯

কবি কাজি নজরুল ইসলামকে মূলত আমরা দেখেছি বিদ্রোহী রূপেই।তার শক্তিমান কবিতা এবং কালজয়ী গান সর্বদা বাঙ্গালীদের উদ্যোমী করে তুলেছে বিভিন্ন কর্মকান্ডে।কিন্তু এই দ্রোহের ভেতরেও যে প্রেম লুকায়িত ছিল সে ইতিহাস আমরা কয়জনই বা জানি।
নজরুলের জীবনে নারীর প্রতি প্রেম মূলত তিনবার এসেছিল । প্রথম নার্গিস আসার খানম, দ্বিতীয় তার স্ত্রী প্রমিলা দেবী এবং তৃতীয় বেগম ফজিলাতুন্নেসা। মানবপ্রেমে আকৃষ্ট হয়ে নজরুল যেমন লিখেছিলেন বিদ্রোহের কবিতা তেমনি প্রকৃতি ও নারী প্রেমে আকৃষ্ট হয়ে নিজেকে সমর্পন করেছেন করুন ভাবে ।তাইতো কবি নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন এই ভাবে –

আমি কবি হতে আসিনি,
আমি নেতা হতে আসিনি ;
আমি প্রেম পেতে এসেছিলাম,
আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম।

১৯২১ সালের মার্চ কি এপ্রিল মাসে কবি নজরুলের সাথে কুমিল্লার দৌলতপুরে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় সৈয়দা আসার খানমের সঙ্গে। প্রেমের ছোঁয়ায় দুজনের মন উদ্ভাসিত হয়। ইরানি এক সাদা গুল্মপুষ্পের নামে কবি তার নাম দিলেন নার্গিস। নজরুল দৌলতপুরে বসেই ১৬০টি গান এবং ১২০টি কবিতা রচনা করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবিতাগুলো হলো ‘বেদনা-অভিমান’, ‘অবেলা’, ‘অনাদৃতা’, ‘পথিক প্রিয়া’, ‘বিদায় বেলা’ প্রভৃতি।
দীর্ঘ দু’মাসের আবেগঘন প্রেমের পর নার্গিসের সাথে পরিণয়ের রাতেই এক অভিমানে কবি তাকে ত্যাগ করে চলে যান। তবে কবির মানসলোকে তিনি ছিলেন দীর্ঘকাল। ১৯৩৭ সালে কলকাতার চিৎপুর থেকে কবি লিখেছিলেন, ‘তোমার উপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করিনা –এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি । আমার অন্তর্যামী জানেন তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কি গভীর ক্ষত, কি অসীম বেদনা ! কিন্তু সে বেদনার আগুনে আমিই পুড়েছি—তা দিয়ে তোমায় কোনোদিন দগ্ধ করতে চাইনি । তুমি এই আগুনের পরশ মানিক না দিলে আমি ‘অগ্নিবীণা’ বাজাতে পারতাম না—আমি ধুমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে পারতাম না । তোমার যে কল্যান রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথম দেখেছিলাম, যে রূপকে আমার জীবনের সর্বপ্রথম ভালবাসার অঞ্জলি দিয়েছিলাম, সে রূপ আজো স্বর্গের পারিজাত-মন্দীরের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে । অন্তরের সে আগুন- বাইরের সে ফুলহারকে স্পর্শ করতে পারেনি ।’

মাত্র দুই মাসের প্রেম ও এক দিনের পরিণয়ের স্মৃতি নিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছরের দুঃসহ অপেক্ষার রাত কেটেছে নার্গিসের। ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নজরুল নার্গিসকে আরো একটি চিঠি লেখেন। এর প্রায় বছর খানেক আগেই শিয়ালদহতে নার্গিস ও নজরুলের উপস্থিতিতে উভয়ের আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। ১৭ বছর পর ১৯৩৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় কবি আজিজুল হাকিমের সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিয়ে হয় নার্গিস খানমের। বিয়ের সংবাদ শুনে নজরুল ‘পথ চলিতে যদি চকিতে কভু দেখা হয় পরানপ্রিয়’ গানটি লিখে পাঠিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল একটি চিরকুট, তাতে লেখা ছিল, ‘জীবনে তোমাকে পেয়ে হারালাম, তাই মরণে পাব এই বিশ্বাস ও সান্ত্বনা নিয়ে বেঁচে থাকব।’
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
কবির প্রেমেও যেমন অপরিসীম টান রয়েছে,অভিমানেও বুঝি অতিমাত্রায় অনুরাগ মেশানো ছিল ,তাইতো কবি নার্গিসকে অপেক্ষায় রেখেছিলেন দীর্ঘ ১৭ বছর।কেবল পাওয়ার আগ্রহটা দুমড়ে কেঁদে গেছে বুকের কোন এক গহীনে।যার সন্ধান আমাদের মতোন সাধারন কোন দিন পাবেনা।


মন্তব্য ৩৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: দারুন উপস্থাপনা আপনার এই লেখাটি তে।
শুভকামনা রইল।

২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫

রোদেলা বলেছেন: সবাই কবির দ্রোহের রূপটাই বেশি জানে,কিন্তু তার জীবনে আছে অনেক অজানা প্রেমের উপাখ্যান।আমি কেবল ছোট করে একটি অধ্যায় তুলে আনার চেষ্টা করেছি,ধন্যবাদ তৌফিক।

২| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২

জেন রসি বলেছেন: কবির মাঝে প্রেম এবং দ্রোহের এক অদ্ভুত মিশ্রণ ছিল।

দারুণ পোষ্ট।

২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭

রোদেলা বলেছেন: নজরুলের প্রেমের কবিতার সংখ্যাও অনেক,সঙ্গীতের ভান্ডারো বিশাল।শুভেচ্ছা জানবেন।

৩| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:

"দীর্ঘ দু’মাসের আবেগঘন প্রেমের পর নার্গিসের সাথে পরিণয়ের রাতেই এক অভিমানে কবি তাকে ত্যাগ করে চলে যান। তবে কবির মানসলোকে তিনি ছিলেন দীর্ঘকাল। ১৯৩৭ সালে কলকাতার চিৎপুর থেকে কবি লিখেছিলেন, ‘তোমার উপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করিনা –এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি । "

-কবি বড় ধরণের ভুল ও অন্যায় করেছিলেন নার্গিসের বেলায়।

২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮

রোদেলা বলেছেন: আপনার সাথে পুরোপুরি এক মন।ভারী অন্যায় করেছিলেন কবি নার্গিসের সাথে।নিজের জীবনের অভিমান চাপিয়ে দিয়েছিলেন আর একজনের উপর।বড় বড় কবিদের বড় বড় ব্যাপার।

৪| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:০২

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: অগ্রহ শুরু হতেই পোস্টে শেষ হয়ে গেল।



চাঁদগাজী বলেছেন: -কবি বড় ধরণের ভুল ও অন্যায় করেছিলেন নার্গিসের বেলায়।



ভাল থাকুন নিরন্তন

৫| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯

রোদেলা বলেছেন: ভুল না হয় কবি করেছিলেন,উনি এখন বিগত।কিন্তু আমার পোস্ট কি দোষ করলো ভাই?

৬| ২৫ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: কবিরাও ভুল করেন, নজরুল তার উর্ধে ছিলেননা। ভাল লিখেছেন।

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

রোদেলা বলেছেন: কবিদের আবেগ বোঝা বড় কঠিন।

৭| ২৫ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: কবির প্রেম সম্পর্কে জানলাম । ভাল লেগেছে ।

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

রোদেলা বলেছেন: ধন্যবাদ কলমের কালি শেষ।

৮| ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:০৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কবি নার্গিসের প্রতি এই অবিচার না করলেই পারতেন! শুধু শুধু বেচারিকে অপেক্ষায় রেখেছেন । তালাক দিয়ে দিলেই হতো! যাহোক, ভালোই লিখেছেন ।

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩

রোদেলা বলেছেন: বৈষয়িক অনেক কিছুই কবিদের স্পর্শ করে না,তারা থাকেন আবেগের চরম মাত্রায়।কবি কাজি নজরুল তার বাইরে কেউ ছিলেন না।

৯| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৪৭

উর্বি বলেছেন: সবাই ই কি হয় এমন ??? :( আগে মনে এই প্রশ্ন ছিল। এখন দেখছি তাই।
ভালো লেগেছে

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

রোদেলা বলেছেন: কে কেমন হয় জানিনা,তবে কবি কাজি নজরুল যে খুব অভিমানী ছিলেন তা বোঝা যায়।ধন্যবাদ উর্বি।

১০| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৪৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: নার্গিসকে পরিত্যাগের বাপারটি নজরুলকে কালিমালিপ্ত করেছে বেশ অনেকখানিই।। ন্যায়-অনাচার কে কিভাবে নেন,তার উপর নির্ভর করে।।

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

রোদেলা বলেছেন: মন থেকে কবি নার্গিসকে কোন দিনো পরিত্যাগ করেননি,কতো কবিতায় যে তার প্রকাশ ঘটেছে তার ইয়ত্তা নেই।

১১| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১:০৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: খুব সুন্দর লিখছেন আপা। এ ঘটনা জানতামনা।

অভিমান খুব খারাপ জিনিস, খুব খুব খারাপ জিনিস।

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯

রোদেলা বলেছেন: কবিদের অভিমান আরো বেশি খারাপ জিনিস।কষ্ট কেবল নার্গিসের জন্য।কি রকম প্রতীক্ষা নিয়ে ১৭ টি বছর কাটিয়ে দিলেন।ধন্যবাদ শতদ্রু একটি নদ।

১২| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১:১০

নীলসাধু বলেছেন: view this link


ইতালীর মহা কবি, লেখক দান্তে ( Dante Alighieri ) তাঁর একটি কবিতার বাংলা অনুবাদের একটি লাইন। ” অন্তত প্রতিটি মানুষের জীবনে একবার প্রেম আসে বিরাট এক দর্পিত দাবি নিয়ে।”

নার্গিস, একটি ফার্সি শব্দ। ফার্সি ভাষায় ও ইরানের বাগানের ফুল। তীব্র সুগন্ধ, সাদা পাপড়ি ও পাপড়ির উপর লাল প্রান্তযুক্ত বলয় যুক্ত বিশেষ। নার্গিস ফুল, কাজী নজরুলের জীবনে একটি প্রেমের ফুল হয়ে এসেছিল, প্রেমের বিরাট এক দর্পিত দাবি নিয়ে।

নার্গিস, আমাদের জাতীয় কবির জীবনে এসেছিল ক্ষণ কালের জন্যে কিন্তু তা আজ তা চির কালের জন্যে, অনন্ত কালের জন্যে। নার্গিস নজরুলের জীবনে একটি বেদনার ফুল হয়ে, কষ্টের ফুলের নাম হয়ে এসেছিলেন, থেকেছেন। থাকবেন। নার্গিস ফুল কবিকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন এক মহান প্রেমিক হিসাবে। নানান গানে কবিতায় জীবন্ত হয়ে আছেন।

কত গানে, কত কবিতায়, কত লেখায় কবি নার্গিসকে এক দর্পিত প্রেম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, অনেক গবেষক তা আজ তাঁদের গবেষণার বিষয়ে অন্তর্ভূক্ত করেছেন।

নার্গিস ফুল বা নার্গিস বা নার্গিসের মূল নাম ” নার্গিস আসার খানম।”

কবির সাথে ১৯২১ সালে নার্গিসের প্রথম দেখা হয়, কবি অনেক লেখায় নার্গিসকে উল্ল্যেখ করেছেন বালা বা পল্লী বালিকা হিসাবে, আর বিশেষ কারণে কবি লিখেছেন-

‘‘… তুমি কি বুঝিবে, বালা,
যে আঘাত করে বুকের প্রিয়ারে, তার বুকে কত জ্বালা!

ব্যথা যে দিয়াছে– সম্মুখে ভাসে নিষ্ঠুর তার কায়া,
দেখিলে না তব পশ্চাতে তারি অশ্রু-কাতর ছায়া!…
অপরাধ শুধু মনে আজে তার, মনে নাই কিছু আর?
মনে নাই, তুমি দলেছো দু’পায়ে কবে কার ফুলহার?

সংক্ষিপ্ত ভাবে লিখলে বলা যায় ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বন্ধু আলী আকবর খানের সঙ্গে কুমিল্লার দৌলতপুরে আসেন। সেখানে অবস্থানকালে কবি তাঁর বন্ধুর বোনের মেয়ে সৈয়দা খাতুনের সঙ্গে পরিচিত হন। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তাঁদের মধ্যে ভালোলাগা, প্রেম বাসা বাঁধে। কাজী নজরুল, সৈয়দা খাতুনের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘নার্গিস আসার খানম’। বিভিন্ন লেখা থেকে পাওয়া যায় ওই বছরের ১৭ জুন তাঁদের বিয়ে হয় (বাংলা ৩ আষাঢ়, ১৩২৭)। কিন্তু বিপত্তি ঘটে বিয়ের রাতে থেকেই নানান কারণে। বিয়ের শর্তে।

নজরুল কাউকে কিছু না বলে কুমিল্লা শহরে চলে আসেন। এরপর আর কখনো নার্গিসের সঙ্গে কবির দেখা হয়নি কিংবা কবি দেখা করেননি। তবে একবার দেখা হয়েছিল ১৫ বছর হয়তো। ওই বিয়ের তিন বছরের মধ্যে কবি ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ এপ্রিল কুমিল্লা শহরের প্রমীলা দেবীকে বিয়ে করেন।

গানে, কবিতায়, লেখায় নার্গিস আসার খানম আজও জীবন্ত। আমাদের গানে, কবিতায় লেখায় নার্গিস আসার খানম। নার্গিসও বিয়ে করেন এক কবিকে।

হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া কবির কিছু গানে, কবিতায়, লেখায় নার্গিস আসার খানমকে নিয়ে লেখা তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্যে। দৌলতপুরে নার্গিস ফুলকে নিয়ে দেখার প্রথম দিনগুলিতে লিখেছিলেন

” রেশমী চুরির ঝিঞ্জিনীতে
রিমঝিমিয়ে মরম কথা
পথের মাঝে চমকে কে গো
থমকে যায় ঐ শরম লতা। “

কবি অভিমান করে লিখেছেন।
” আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশ, বেনী যাবে যবে খুলিতে।
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন, ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে ।
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।।”

আবারো অভিমানের সুরে লিখেছেন।

” ভীরু এ মনের কলি
ফোটালে না কেন ফোটালে না-
জয় করে কেন নিলে না আমারে,
কেন তুমি গেলে চলি।।
ভাঙ্গিয়া দিলে না কেন মোর ভয়,
কেন ফিরে গেলে শুনি অনুনয়;
কেন সে বেদনা বুঝিতে পার না
মুখে যাহা নাহি বলি।।”

আবার লিখেছেন তাঁর গানে –
মোরে ভালোবাসায় ভুলিও না
পাওয়ার আশায় ভুলিও
মোরে আদর দিয়ে তুলিও না
আঘাত দিয়ে তুলিও।।
হে প্রিয় মোর একি মোহ
এ প্রাণ শুধু চায় বিরহ
তুমি কঠিন সুরে বেঁধে আমায়
সুরের লহর দুলিও।।

নার্গিস ফুল উল্ল্যেখ করে লিখেছেন –

” ………….
মজনু! তোমার কাঁদন শুনিয়া মরু-নদী পর্বতে
বন্দিনী আজ ভেঙেছে পিঞ্জর বাহির হয়েছে পথে।
আজি দখিনা বাতাস বহে অনুকূল,
ফুটেছে গোলাপ নার্গিস ফুল,”

আবারো নার্গিস ফুল উল্ল্যেখ করে লিখেছেন –

“নূরজাহান! নূরজাহান!
সিন্ধু নদীতে ভেসে,
এলে মেঘলামতীর দেশে
ইরানী গুলিস্তান।।
নার্গিস লালা গোলাপ আঙ্গুর-লতা
শিরিঁ ফরহাঁদ সিরাজের উপকথা”

কবির চির বালিকাকে লিখেছেন-

” মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী,
দেব খোঁপায় তারার ফুল।
কর্ণে দোলাব তৃতীয়া তিথির,
চৈতী চাঁদের দুল।।
কন্ঠে তোমার পরাবো বালিকা,
হংস-সারির দুলানো মালিকা।”

অভিমান করে লিখেছেন —
” আমার গানের মালা
আমি করব কারে দান।
মালার ফুলে জড়িয়ে আছে
করুণ অভিমান।”

কবি অভিশাপ দিয়ে লিখেছেন-

” যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুঁছবে বুঝবে সেদিন বুঝবে।
ছবি আমার বুকে বেধে পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে ফিরবে মরু কানন গিরি সাগর আকাশ বাতাশ চিরি
সেদিন আমায় খুজবে বুঝবে সেদিন বুঝবে।”

এমনি অনেক গান কবিতায় নার্গিস হয়ে আছেন অমর।

জেল খানায় বসে কবি লিখেন এক অমর চিঠি, যেখানে তিনি উল্ল্যেখ করেছিলেন তিনি আর বেশি দিন বাঁচবেন না। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া চিঠির কিছুটা অংশ উল্ল্যেখ করা হলো।

” জ্বর হয়েছিল, বহু সাধনার পর আমার তৃষিত দুটি কর তার শুভ্র সুন্দর ললাট স্পর্শ করতে পেরেছিল; তার সেই তপ্ত ললাটের স্পর্শ যেন আজও অনুভব করতে পারি। সে কি চেয়ে দেখেছিল? আমার চোখে ছিল জল, হাতে সেবা করার আকুল স্পৃহা, অন্তরে শ্রী বিধাতার চরণে তার আরোগ্য লাভের জন্য করুণ……………। “

নার্গিস ফুল। নার্গিস। নার্গিস আসার খানম।

পরে কবি আজিজুল হাকিমের সাথে নার্গিসের বিয়ে সম্পন্ন হয়। অনেক পড়ে, সঠিক দিন ক্ষণ মনে নেই, খুব সম্ভবত আশির দশের শেষের দিকে একটি জাতীয় পত্রিকায় পড়ে ছিলাম লন্ডনে আমাদের জাতীয় কবির গানের কথার, কবিতার কথার নানান লেখার নার্গিস আসার খানম শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

থেকে গেলেন, থেকে যাবেন অনন্ত কাল ধরে আমাদের জাতীয় কবির লেখায়, সুরে।
” আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশ, বেনী যাবে যবে খুলিতে।
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।”

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

রোদেলা বলেছেন: আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশ, বেনী যাবে যবে খুলিতে।
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে ।

দূরে চলে যাবে ,কিন্তু ভুলতে দেবে না।কি যে অবস্থা।কবির প্রেম বোঝা বড় দায়।

১৩| ২৬ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:০৯

Shah Burhanuddin Saadi বলেছেন: তথাকথিত প্রেমিক/প্রেমিকাদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ "প্রেম কাহাকে বলে"

২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

রোদেলা বলেছেন: প্রেম যে কাহাকে বলে-তা বোঝা দূঃসাধ্য।ধন্যবাদ সাদি।

১৪| ২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: হ্যাঁ ভাল লিখেছেন। তবে তথ্যগত কিছু ভুল আছে। নার্গিসের সাথে নজরুলের বিয়ে হয়নি।বিয়ের কথা হয়েছিল। সব ঠিকঠাক ছিল। শর্তগত কারনে বিয়ের রাতেই নজরুল কুমিল্লা ত্যাগ করেন।

২৬ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৭

রোদেলা বলেছেন: তখন বিয়ে এতো রেজিষ্ট্রেশন করে হতোনা।শর্ত দেওয়াতেই কবির অভিমান হয়,তারপর তিনি ভোরেই সেখান থেকে প্রস্থান করেন।ধন্যবাদ তথ্যটি তোলার জন্যে।

১৫| ২৬ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৯

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: ভালো পোষ্ট। আমারো মনে হয় নয়ন ভাইয়ের মন্তব্য ঠিক

২৬ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৭

রোদেলা বলেছেন: ধন্যবাদ মায়াবী।

১৬| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৩৮

তুষার কাব্য বলেছেন: প্রেমের,দ্রোহের আরও কত পরিচয় একজন কবির হতে পারে।নজরুল কে আমরা আরও অনেক রুপেই পাই।অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার পোস্টের জন্য।

২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪১

রোদেলা বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন তুষার কাব্য।

১৭| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: তেমন কিছু জানা ছিলো না এই ব্যাপারে। ভালো লাগলো লেখাটি।

১৮| ২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২২

রোদেলা বলেছেন:
নজরুল জীবনে প্রেম হয়ে অনেকেই এসেছিলেন,কিন্তু নার্গিস এমনি এক ফুলের নাম যাকে বুকের মধ্যে আগলে রেখে কবি ধারন করেছিলেন শত শত গান ও কবিতা।ধন্যবাদ হাসান ভাই।

১৯| ৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.