নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলমান রাজনৈতিক সংকট: একটি নির্বাচনী বিশ্লেষণ

১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

এখন তো আড্ডার বিষয় একটাই, সর্বশেষ রাজনৈতিক কীর্তিকলাপ।বিরোধী দলের হরতাল, নাশকতা, সরকারের দমননীতি, সংলাপ-সমঝোতার আশাবাদ, অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানসহ নানা প্রসঙ্গ। এমন আড্ডায় শুধু আমরা নই, প্রায় প্রত্যেকেই বসেন। চায়ের দোকান, গাড়ির ভেতর, অফিসের অলস সময়- কোথায় না চলছে এমন আড্ডা।

সারা দেশের মানুষ চায় দুই নেত্রী আলোচনায় বসে একটি সমঝোতায় আসুক এবং সবাই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাক। দেশে শান্তি আসুক। তার পরও সংলাপের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা কেউ হতাশ, কেউ বিস্ময় প্রকাশ করছি, কেউ বা বিশেষ কোনো দলের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমার বিশ্লেষন হলো প্রকৃত অর্থে আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউই নির্বাচন চায় না।

কেউই প্রকৃত অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় না। কারণ সম্প্রতি পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবির কারণে আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে, ভোটারদের মতিগতি কোন দিকে। অর্থাৎ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফলাফল কী হবে, তা তাদের বুঝতে বাকি নেই। তাই তারা সঠিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। সংলাপে বসে, ছাড় দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো আগ্রহই তাদের নেই। তার চেয়ে গোলেমালে বিএনপিহীন নির্বাচন করে কোনো রকমে ক্ষমতায় টিকে যেতে পারলেই ল্যাঠা চুকে যায়- এমন একটা মনোভাব নিয়ে আছে তারা। আর যদি সেই একতরফা নির্বাচনের পর বিরোধী দলের সর্বাত্মক আন্দোলনের মুখে একান্তই টিকে থাকা না যায়, তখনকার পরিস্থিতি তখন ভাবা যাবে।'



আর বিএনপি কেন নির্বাচনে যাবে না? 'তাদের মধ্যে এমন কিছু নেতা আছেন, যাঁদের মস্তিষ্ক যথেষ্ট উর্বর। তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন, এখন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে যদি হেরেও যায়, তাহলেও কাছাকাছি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তারা যদি একতরফা নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় যায়, তাহলে ১৯৯৬ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর বিএনপির যে অবস্থা হয়েছিল, সে রকমই অবস্থা হবে। তাতে তারা এমন পচন পচবে যে তার পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রীতিমতো গো-হারা হারবে। সে জন্য বিএনপিকে যদি আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয় তাও ভালো। তার আরেকটি বড় সুবিধাও আছে।'তাতে

'বিএনপি একটি বিরাট বড় গ্লানির বোঝা মাথায় নেওয়া থেকে রক্ষা পাবে।' ধরে নিলাম জানুয়ারিতে নির্বাচন হলো। বিএনপি ক্ষমতায় চলে এলো। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে জামায়াতের যেসব নেতা মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন, হয় তাঁদের দণ্ড কার্যকর করতে হবে, না হয় তাদের মুক্ত করে দিতে হবে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গাঁটছড়া এখন যে পর্যায়ে, তাতে তাদের নেতাদের ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় আছে বলে মনে হয় না। না ছাড়লে জামায়াত তাদের আস্ত রাখবে না। এমনিতেই বিএনপির বিরুদ্ধে একটি অপবাদ রয়েছে যে দলটি মূলত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী সাবেক পাকিস্তান মুসলিম লীগের পরিবর্তিত রূপ বা বাংলাদেশি সংস্করণ। তার ওপর যদি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেই অপবাদটি চিরস্থায়ী হবে কিংবা আরো শক্তিশালী হবে। দলের অভ্যন্তরে থাকা সাবেক বাম ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দুর্বল অংশটির পক্ষে তা মেনে নেওয়াটাও কঠিন হতে পারে। ফলে যুদ্ধাপরাধীদের না ছাড়লেও দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আবার ছেড়ে দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার চেয়ে যদি আরো কয়েকটা মাস পার করে দেওয়া যায়, তাহলে দুদিক থেকেই লাভ। এর মধ্যে দণ্ডিতদের যা হওয়ার তা হয়ে যাবে।'

আর কয়েক মাসের মধ্যে যদি সেই রায় বাস্তবায়িত না হয় তাহলে !!!



আওয়ামী লীগ চেষ্টা করবে মুলা ঝুলিয়ে রাখার মতো এই বিষয়টিকেও ঝুলিয়ে রাখতে । আর বিএনপিও এটাই চায়। কারণ যারা মনেপ্রাণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছিল, তারা ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়বে এবং আওয়ামী লীগের পেছন থেকে সরে যাবে।'

বিএনপি অনেক দিন ধরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছে। এবার সেই আন্দোলনের শুরুর দিকটাতে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সর্বোচ্চ আদালত রায় দিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। কিন্তু পর্যবেক্ষণে বললেন, সংসদ চাইলে আগামী দুটি নির্বাচন এই ব্যবস্থায় করা যেতে পারে। তাহলে সেই ফয়সালাটা সংসদেই করার প্রয়োজন ছিল কিংবা এখনো প্রয়োজন। তখন সংসদীয় কমিটি হলো। বিএনপিকে বারবার ডাকা হলো সংসদে এসে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য। এমনও বলা হলো, আওয়ামী লীগ যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না, তাই তারা সংসদে প্রস্তাব করে কোনো দায় নিতে চায় না। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে সংসদে এসে প্রস্তাব করুক। কিন্তু বিএনপি গিয়েছিল কি? যায়নি। কোনো প্রস্তাবও দেয়নি। অবশ্য পরে একবার গিয়ে প্রস্তাব দিয়েও তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাহলে কিভাবে বলব যে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়? বরং বিএনপি আগাগোড়া একে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটি হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করে আসছে এবং এখনো করছে। সংসদের চলতি অধিবেশনই শেষ অধিবেশন, যা এখন বর্ধিত মেয়াদে রয়েছে। এই অধিবেশনেও বিএনপি এক দিন গিয়েই বেরিয়ে এসেছে। মাঝখানে তাদের একজন সংসদ সদস্য প্রস্তাব দিয়েও পরে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের রাজনীতি করার পরও সংসদে না গিয়ে এই সমস্যার সমাধান তারা কিভাবে করতে চায় তা কি কেঊ বলতে পারবেন? সারা দেশ অচল করে দিলেই কি এই সমস্যার সমাধান হবে? আর এখন সংলাপের যে কথা হচ্ছে, তাতে দুই নেত্রীর কারো কোনো আন্তরিকতা আছে কি? মনে আছে, মতিঝিলের সমাবেশে দাঁড়িয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংলাপকে কিভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন? সরকার নাকি সংলাপের নাটক করতে চায়। বলেছিলেন, এসব ছাড়ুন, ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম, এর মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নিন। সাম্প্রতিক সময়েও প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিলে বিএনপি নেত্রী নির্দলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়ে বলেছিলেন, নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিলেই কেবল আলোচনা হতে পারে। বিএনপি থেকে শেষ পর্যন্ত একই কথা বলা হয়েছে। সর্বদলীয় সরকার নিয়ে তারা কোনো আলোচনায় যাবে না। এটা কি সংলাপের প্রতি সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ? দাবি যদি মেনেই নেওয়া হয়, তাহলে আর সংলাপের প্রয়োজন কী? সংলাপের নিয়ম কী? সংলাপের জন্য খোলামনে আগে এক জায়গায় বসতে হবে। যার যার প্রস্তাব তুলে ধরতে হবে। উভয় পক্ষ কিছু ছাড় দিয়ে একটি সমঝোতায় আসবে। কিন্তু এ পর্যন্ত কারো কথায় বা আচরণে সেই সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটেছে কি?'



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩০

বিজন শররমা বলেছেন: জামাতকে নিয়ে হয়েছে এখন মহা সমস্যা । তাদের ভোটার সংখ্যা বেশী নয় । বি এন পির যে জনসমর্থন আছে তাতে জামাতের ভোট ছাড়াই তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জিতে যাবে । তবে জামাতের আছে জঙ্গী কর্মী, যারা কোন কোন কাজে লাগে । আবার জামাত বি এন পির জন্য যা করেছে তাতে তাদের ছেড়ে দেয়াও বি এন পির জন্য হবে অমানবিক । কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হলো, বি এন পি জামাতকে বাদ দেবার সাথে সাথে আওয়ামী লীগ লিখিত বা অলিখিত ভাবে তাদের সাথে নিয়ে নেবে । তিন বছর কোন দলের সদস্য থাকার বাধ্য বাধকতা বাদ দেবার এটিও অন্যতম উদ্দেশ্য ।

বিষ বৃক্ষের ফল কোন দিন ভালো হতে পারে না । আওয়ামী লীগ যে এদেশের অমুসলিমদেরকে নিশ্চয়তা দেবার মতন শক্তি বা ইচ্ছে রাখে না তারা তাদের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে । এবার যদি বি এন পি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে ২০০১ সালের কথা মনে রেখে কোন অমুসলিমের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া উচিত হবে না ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এই নির্বাচনে বি এন পির জেতার সম্ভাবনা । এরপর বি এন পি জামাতকে নিয়ে কি করবে সেটা তাদের বিবেক । তবে জামাতের উপর আন্তর্জাতিক চাপ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে । বি এন পি জিতলে (০১) বাংলার মানুষ আগামীতে নতুন দলকে নির্বাচনের সুযোগ পাবে, আওয়ামী লীগ দলীয় ভাবে নির্বাচন করলে আর তা পাবে না । (০২) আওয়ামী লীগ এদেশে বিষবৃক্ষ রোপন করেছে দেশ তার অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে, আওয়ামী লীগ জিতলে তা আর হবে না ।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০০

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নিলেও আলোচনা করতে হবে । বরং বেশী করে করতে হবে । আদালত এ ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে । ফলে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনলে কনটেম্ট টু কোর্ট হবে । আর কোন এক পক্ষ এককভাবে তা কাধে নেবে না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.