নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যানসারের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪১

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় একটি নতুন ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। এতে ওই মরণব্যাধির বিরুদ্ধে নারীর লড়াইয়ে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পারজেটা নামের ওষুধটি তৈরি করেছে সুইজারল্যান্ডের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রোশ।
ওষুধটির পরীক্ষামূলক ওই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন হসপিটাল সেন্টারের বিজ্ঞানী সান্ড্রা সোয়েন। তিনি স্পেনের মাদ্রিদে ইউরোপিয়ান সোসাইটি ফর মেডিকেল অনকোলজির বার্ষিক সম্মেলনে গতকাল রোববার বলেন, নতুন ওষুধটি প্রয়োগের ফলে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের টিকে থাকার লড়াইয়ে বিশেষ উন্নতি হয়েছে। তাঁরা প্রায় ১৬ মাস পর্যন্ত বেশি সময় পাচ্ছেন। এটি ক্রমেই অবনতির দিকে যাওয়া স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের এক-চতুর্থাংশই যে সমস্যায় ভুগছেন, তার নাম এইচইআর-টু পজিটিভ। গবেষকেরা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রচলিত পুরোনো ওষুধ হারসেপটিন এবং কোমোথেরাপির পাশাপাশি পারজেটা প্রয়োগ করে দেখতে পান, হারসেপটিন ও কেমোথেরাপির চেয়ে এটি বাড়তি কার্যকারিতা দেখাচ্ছে এবং রোগীরা অন্তত ১৫ মাস সাত দিন বেশি বেঁচে থাকতে পারছেন।

ওষুধের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ দুই বছর আগে পারজেটা অনুমোদন করে। রোশের সহায়তায় ওষুধটি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত অন্তত ৮০০ নারীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। স্তন ছাড়িয়ে শরীরের অন্যান্য অংশেও ওই নারীদের ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছিল। পরীক্ষামূলক গবেষণা অনুযায়ী, পারজেটা প্রয়োগের ফলে রোগীরা উন্নতি ছাড়াই বেঁচে থাকেন। মানে, রোগটি আগের চেয়ে খারাপ হয় না। মধ্যবর্তী অবস্থায় রোগীদের বেঁচে থাকার ব্যাপ্তি ৫৬ মাস পাঁচ দিন। আর পারজেটা ছাড়া পুরোনো ওষুধে তাঁরা ৪০ মাস আট দিন বেঁচে থাকতে সমর্থ হন।

বার্সেলোনার ভল দ’এবর্ন ইনস্টিটিউট অব অনকোলজির গবেষক জ্যাভিয়ার কোর্তেস বলেন, গবেষণার ফলাফল উল্লেখযোগ্য এবং এতে এইচইআর-টু পজিটিভ স্তন ক্যানসারের রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসার জন্য পারজেটা প্রয়োগের পক্ষে জোরালো সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে।

কিন্তু সমস্যা হলো পারজেটা খুব দামি ওষুধ। তাই অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে এটি প্রয়োগ করে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অনেক রোগীরই সামর্থ্যের বাইরে থাকবে। হারসেপটিন নামের ওষুধটিও রোশের তৈরি এবং ১৯৯৮ সালে এটি প্রথম অনুমোদন পায়। পারজেটা ও হারসেপটিন—দুটি ওষুধই ক্যানসারের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এইচইআর-টু পজিটিভ হচ্ছে ক্যানসার-সংশ্লিষ্ট জিনের মাধ্যমে উৎপাদিত একধরনের প্রোটিন। পারজেটা ওই প্রোটিনের বিভিন্ন অংশ আবদ্ধ করে বা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এতে হারসেপটিন ও অন্য ওষুধগুলো বাড়তি কার্যকারিতা দেখানোর সুযোগ পায়।

দীর্ঘমেয়াদে পারজেটা ব্যবহারের নিরাপদ বিভিন্ন দিক সম্পর্কে মাদ্রিদের ওই সম্মেলনে ব্যাখ্যা করা হয়। সুইস প্রতিষ্ঠানটি ক্যাডসাইলা নামের আরেকটি ওষুধও সরবরাহ করে থাকে। স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় এটি পারজেটার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রয়োগে সাফল্যের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখছেন গবেষকেরা। কেউ কেউ মনে করছেন, পারজেটার সঙ্গে কার্যকারিতা না দেখাতে পারলে ক্যাডসাইলার চাহিদা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ক্যানসারের চিকিৎসায় প্রতিষেধক ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের হার কম। প্রচলিত অন্যান্য রোগের প্রতিষেধকের চেয়ে ভিন্ন ধরনের কিছু প্রতিষেধক ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ক্যানসার কোষ বা টিউমারের বিস্তার থামিয়ে রাখার চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই প্রচেষ্টা খুব সফল হয়নি। কারণ, প্রতিষেধকগুলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সফল হলেও ক্যানসার কোষগুলোর বিস্তার ঠেকাতে পারেনি। এখন সেই ব্যর্থ প্রতিষেধকগুলো নতুন ওষুধের সঙ্গে সমন্বিতভাবে প্রয়োগ করে ক্যানসারবিরোধী লড়াইয়ে জয়লাভের উপায় খুঁজছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

সূত্র: রয়টার্স।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.