নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মীয়তার সম্পর্ক

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

আত্মী্যতা মূলত নির্ভর করে আর্থিক সংগতির উপর।এখনে ক্লাসটাই মুখ্য।ক্লাসে ক্লাসে আত্মীয়তা হয়। চার ভাই। দুই ভাই অনেক উপরে উঠে গেছে , বাকি দুই ভাই তুলনামূলক খারাপ অবস্থানে। এখানে আসলে দুইটা গ্রুপ সৃষ্টি হয়ে গেছে।চাচাত ভাই বোনেরাও এই গ্রুপ মেইনটেইন করে। ধনী ভাইয়ের ছেলে ধনী ভাইয়ের ছেলের সাথে মেশে। যে দুই ভাই দরিদ্র সে দুই ভাইয়ের ছেলে মেয়েরা তাদের চোখে খ্যাত। এমনিতে সামনে বসে ভালো , পেছনে ফিসফাস হয় ..ছোট আঙ্কেলের মেয়েটা আছেনা , গ্রাম থেকে এসেছে কি খ্যাত........
একদিন গ্রাম থেকে শহরে আসে ছেলে। ঢাকায় চাচার বিরাট অবস্থা। বিশাল ফ্ল্যাট। দরাজ গলায় চাচা বলছে , আরে আমার ভাতিজা মেসে কেন থাকবে ! ও আমার বাসায় থাকবে,আমি কি মরে গেছি !ওই পর্যন্তই। চাচী নাক সিঁটকায়। গ্রাম থেকে কারে ধইরা আনছে। এ আবার কোন উত্পাত । স্মার্ট শহুরে কাজিনরা বিরক্ত হয়। এ আবার কেমন উটকো ঝামেলা গ্রাম থেকে আসল। ধীরে ধীরে ভালো খাবারটা ফ্রিজে ঢুকিয়ে , দুইদিনের বাসি খবরটা দেয়া হয়। আবার ঘরের কাজও করান হয় তাকে দিয়ে ...রীতিমত কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূর্চী আরকি :-)

বড়লোক আত্মীয় স্বজনরা এমনি হয়। আবার গরীব আত্মীয় স্বজনদের সামর্থ্য না থাকলেও,ভালোবাসাটা থাকে খাঁটি , এক্কেবারে একশো একশো। বড়লোকদের ধনের মত মনটা অত বড় না।
ছোট ভাইর স্ত্রীর অবস্থা খারাপ। ছোট ভাই আর্থিকভাবে অত সামর্থ্যবান না। বড় ভাই সপ্তাহে একবার ফোন দিয়ে দায়িত্ব সম্পাদন করে। তাও ফোনে , অজুহাতটা কিন্তু সেইরকম হয় ....
- কিরে কি অবস্থা , এখন শরীর কেমন ? আরে পরশু দিন রওনা দিয়েছিলাম ওকে দেখব বলে ,হঠাৎ জরুরী এক কাজ পড়ে গেল .........................................।
অনেকটে আসি আসি করে বন্ধু আর এলোনা টাইপ আর কি।
চাচাতো ভাইবোনরাতো আবার এক ধাপ এগিয়ে ,আই মিন ক্লিয়ারলি অ্যাহেড। এক একজন বিদেশ থাকে ,বাড়ি টারি কিনে বিশাল অবস্থা। এদিকে খবরই নাই , দেশে তাদেরই একজন ভাই অসুস্থ মা কে নিয়ে বিপদে আছি। সে মা টা আবার তাদের চাচীর কিংবা মামী। ঘটনার ছয় মাস পড়ে খবর হয়। হুট করে জিজ্ঞেস করে ,কি ব্যাপার চাচী নাকি অসুস্থ ছিল ? আমি তো জানিই না ! জানবেন ক্যামনে ,আমনেরা বড় বড় মানুষ আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়া ভাবতেহয় , লোকাল আত্মীয় স্বজনের খবর রাখার টাইম কই?
মৃত্যুর পর অবশ্য ভিন্ন অবস্থা। মরার পড়ে কেন জানি আবার সেই আত্মীয় স্বজনদের ভালোবাসা চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে যায়। মরা বাড়িতে শোকের মাতম চলে। সে ভাইএর আজকে হুট করে কোনো ইম্পোর্টেন্ট কাজ পড়েনা। আজকের ইম্পর্টেন্ট কাজ এটাই ,ফর্মালিটি মেইনটেইন বলে একটা কথা আছে না ! ভাই ভাইয়েরে জড়ায় ধইরা সাহস দেয় ,ভেঙ্গে পড়িস না আমরা আছি না। বড় কইরা কুলখানি হবে। বাড়ির মান ইজ্জতের একটা ব্যাপার আছে। বড় জা কাদতে কাদতে বলে "ওর হাতেই আমি চালতার আচার বানান শিখছিলাম" প্রবাসী কাজিনরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে আহারে চাচী আমাদের কত আদর করত ! এই হল আত্মীয়তা ,এরা হল আত্মীয়। বড় বড় লেভেলের মামা চাচা হলে যা হয় আরকি। সুপার স্মার্ট চাচাতো ভাই বোন

ভাইয়ে ভাইয়ে ক্লাস আইসোলেশন। কাজিনে কাজিনে ,ড্যুড কাজিন ভার্সেস খ্যাত কাজিন। স্মার্ট চাচী চাচী। ডার্টি বাসা ছোট আঙ্কেলদের। মেঝ আঙ্কেলের বাসায় এসি আছে , প্লে স্টেশন আছে। এত্তমজা........।
সব আপন আপন হয়নারে পাগলা। হিসাবটা আজকাল রক্তে নয় অর্থে চলে। রক্তের সম্পর্কের চাইতে বড় সম্পর্ক হইল অর্থের সম্পর্ক ...
কথায় আছে পুত্রশোক ভোলা যায় কিন্তু অর্থশোক ভোলা যায় না...........

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:০৫

পড়শী বলেছেন: অনেক সময় বাস্তব, গল্পের চেয়েও নির্মম হয়। যে ভাই-বোন দের সাথে ছোটবেলায় কত খুনসুটি, মান-অভিমান, তারা যদি বিপদে, পাশে এসে না দাঁড়ায়, সেটা মেনে নেয়া খুব কষ্টের।

তবে, গরীব আত্মীয়ের হীনমন্যতাও অনেক সময়, ধনী আত্মীয় কে দূরে ঠেলে দিতে বাধ্য করে।

লেখায় ++

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩

কলমের কালি শেষ বলেছেন: কথাগুলো নির্মম সত্য । :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.