নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নায়লা নাঈম , একটি প্রশ্ন ও নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭

নায়লা নাঈম।অনলাইন ও মিডিয়ার এক
আলোচিত নাম।
ফেসবুকে খোলামেলা ছবি দিয়ে যিনি ইতমধ্যে অনেকের
দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।তার
শাড়ী থেকে শুরু করে ব্রার সাইজ সবই যেন
ফেসবুক দুনিয়ার আলোচনার বিষয়বস্তু ।
তার একেকটি ষ্ট্যাটাস
কিংবা সেলফিতে লাইকের ঝড়
বয়ে যায়,তাকে নিয়ে পত্রিকার বিনোদন
বিভাগে নিউজ হয় ।আর যাদের
ধর্মাণুভূতি কিংবা ভদ্রতানূভুতি ক্ষতিগ্রস্থ
হয় তাকে ঘিরে তাদের গালি গালজ
খিস্তিখেঊড়ও চলতে থাকে সমান তালে।
গালি গালজ খিস্তি খেউড় কী ধরনের
ভদ্রতাবোধ, ধর্মবোধের পরিচয় দেয়
তা তারাই ভাল জানে ।
আমরা জানি যে আমাদের এই
বস্তুবাদী সমাজে নারীকে এখনও পণ্য
হিসেবে দেখা হয়। নারী যেন এখনও শুধুই
ভোগের বস্তু। যেহেতু নারী নিজেই
এখনো ভোগ্য পণ্য, পণ্যের
বিজ্ঞাপনে তাই নারীর বাড়তি ব্যবহারও
বেশ লক্ষণীয় । পণ্য কিনার সময় পণ্যের
গুণাগুণের চেয়ে চেয়ে পণ্যের মডেলের
কথা আগে ভাবে এমন অনেক মানুষ
রয়েছে এই সমাজে। কিছু মানুষের এই ধরনের
মনস্তত্বকে কাজে লাগায় বিজ্ঞাপন
দাতারা।পণ্যের বিজ্ঞাপনে তাই সুন্দর
মুখশ্রীর জয়জয়কার থেমে নেই এখনও ।
সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অপূর্ব দান ।সবাই
সে সৌন্দর্য পায় না, পাওয়া উচিতও না ।
নারীর সৌন্দর্য পুরুষের কাছে সবসময়
আকর্ষনীয়।নারীর সৌন্দর্যকে উপজীব্য
করে যুগ যুগ ধরে রচিত হয়েছে বহু শ্রেষ্ঠ
সাহিত্য,আকা হয়েছে বহু মহৎ চিত্রকর্ম ।
নারীর সৌন্দর্য অনেকের জন্য নুতুন
ব্যবসার দ্বারও উন্মুক্ত করে, অনেকের
জন্য তা অর্থ উপার্জনের হাতিয়ারও বটে।
অনেকটা কোন মহান শিল্পীর আকা শ্রেষ্ট
কোন চিত্র কর্ম যা এক সময় তিনি খুব
অল্প দামে বিক্রি করে ছিলেন জীবিকার
প্রয়োজনে কিন্তু আজ
সেটা নিলামে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ
টাকা আয় করছে এর বর্তমান মালিক।
হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন "ক্ষুধা ও
সৌন্দর্যবোধের মধ্যে গভীর সম্পর্ক
রয়েছে। যে-সব দেশে অধিকাংশ মানুষ
অনাহারী, সেখানে মাংসল হওয়া রূপসীর
লক্ষণ; যে-সব দেশে প্রচুর খাদ্য আছে,
সেখানে মেদহীন হওয়া রূপসীর লক্ষণ।
এজন্যেই হিন্দি আর বাঙলা ফিল্মের
নায়িকাদের দেহ থেকে মাংস
চর্বি উপচে পড়ে। ক্ষুধার্ত
দর্শকেরা সিনেমা দেখে না, মাংস ও
চর্বি দেখে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে।" বর্তমান
বাস্তবতায় এই উক্তির
কিছুটা সংশোধনযোগ্য। নব্বই এর দশকের
পর থেকে আমাদের দেশের মানুষের বিশেষ
করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আর্থ
সামাজিক অবস্থার বেশ বড় সড়
একটা পরিবর্তন হয়েছে ।দেশের
অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ,বেড়েছে দারিদ্র
বিমোচনের হার ,গড় আয়ু ইত্যাদী । এর
সুফলের অনেকটাই ভোগ
করে গড়ে উঠেছে একটি মডারেট মধ্যবিত্ত
শ্রেনী।সেই সঙ্গে গড়ে উঠেছে ফেসবুক
ভিত্তিক একটা নুতুন প্রজন্ম যাদের
কাছে পরীক্ষার খবর , দেশের খবর ,
বিনোদনের খবর সব কিছুর উৎস যেন
ফেসবুক।বিনোদন মাধ্যমের প্রুতি মানুষের
রুচিরও বেশ বড়সড় একটা পরিবর্তন
হয়েছে।মানুষ এখন চর্বি ওয়ালা মডেল-
নায়িকা থেকে জিরো ফিগারের মডেল-
নায়িকাদেরকে বেশী পছন্দ করে।কোন স্থুল
নায়িকার ভেজা শরীরের নাচ থেকে স্লিম
ফিগারের মডেলের ক্যাট ওয়ার্ক এখন
অনেক বেশী আকর্ষনীয় ,অনেক
বেশী আবেদনময় ।বলা যায় যে পুরুষের
চাহিদা বিবর্তিত হয়েছে কিন্তু নারীর
প্রুতি পুরুষের দৃষ্টি ভঙ্গি রয়ে গেছে সেই
আগের জায়গায় । কিছু মানুষের এই ধরনের
চাহিদাকে পুজি করে নায়লা নাঈমেরা আলোচনায়
আসে।সস্তা প্রচারের আশায় নিজেকে বস্তু
হিসেবে তুলে ধরে ।সেই সঙ্গে কিছু
প্রুতিষ্ঠানও এই ধরনের
চাহিদাকে কাজে লাগায়।কিছু দিন
আগে লাক্স চ্যানেল আই সুপারষ্টার
প্রুতিযোগীতায় অংশ নিতে আগ্রহী এক
প্রুতিযোগীর সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম।
সেখানে সে বলেছিল যে সে এই
প্রুতিযোগীতায় অংশ নিতে চায় কারন এই
প্রুতিযোগীতা নারীর
ক্ষমতায়নকে উৎসাহিত করে। আমার
সামান্য বিদ্যাবুদ্ধিতে মাথায়
ঢুকেনি যে কি করে এই ধরনের
প্রুতিযোগিতা নারীর
ক্ষমতায়নকে উৎসাহিত করে । এই ধরনের
প্রুতিযোগিতায় খুব অল্প কয়েক জন নারীই
প্রুতিষ্ঠা পায় এবং তাদের প্রুতিষ্ঠার
পিছনে অভিনয় বা নাচের দক্ষতার
চেয়ে তাদের সুন্দর মুখশ্রীর ভূমিকা অনেক
বেশী। যে প্রুতিযোগীতা সুন্দর মুখশ্রীর
স্বল্প কিছু নারী কে প্রোমট
করে সে প্রুতিযোগীতা কী করে নিজেকে নারীর
ক্ষমতায়ন বা নারীকে বস্তু পিন্ড
হিসেবে হিসেবে তুলে ধরার বিপক্ষে নিজের
প্রচারনা চালায় তা আমি বুঝি না । যূগের
প্রয়োজনে নুতুন শিল্পীর প্রয়োজন।
নুতুন অভিনয় শিল্পী ,কন্ঠ
শিল্পী তুলে আনার প্রয়োজনে তাই
ট্যালেণ্ট হান্ট প্রুতিযোগিতার আয়োজন
হতেই পারে কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যায়
যে এই ধরনের প্রুতিযোগীতা প্রায়
প্রুতি বছর আয়োজন করা হয় ,প্রায়
প্রুতি বছর সেরা ১০-২০ জন কে নিয়ে মূল্
পর্ব আয়োজন করা হয় ।এদের সবাই চায়
মিডিয়ায় প্রুতিষ্ঠা পেতে কিন্তু প্রশ্ন হল
প্রুতি বছর এত মডেল অভিনেত্রীকে স্থান
দেওয়ার মত জায়গা কি আমাদের দেশের
মিডিয়ার আছে? এদের
মধ্যে যারা সত্যিকারের ভাল
অভিনেত্রী তারা শেষ পর্যন্ত টিকে যায়।
কেউ কেউ কিছুদিন ষ্ট্রাগল করে শেষ
পর্যন্ত প্রবাসী কিংবা দেশীয় কোন
কোটিপতি কে বিয়ে করে মিডিয়া থেকে দুরে সরে যায়।
কেউবা আবার খ্যাতির
লোভে কিংবা টিকে থাকার
প্রয়োজনে পা বাড়ায় অন্ধকার পথে। এই
ধরনের উচ্চাভিলাষী নারীদের ব্যবহার
করে নিজের আখের গুছিয়ে নেয় এই সমাজেই
লুকিয়ে থাকা ভদ্রবেশী এক দল পুরুষ।
বস্তুত এই ধরনের পুরুষেরা আমার
কাছে কোন পতিতাপল্লীর দালালের
সমতুল্য । আর ঐ ধরনের
উচ্চাভিলাষী নারীদের চেয়ে রাস্তার
মোড়ে কাষ্টমারের খোজে দাড়ানো কোন
পতিতাকে আমার বেশি অনেক বেশি মহৎ
বলে মনে হয় ।পতিতারা নিজের
দেহকে ব্যবহার করে বেচে থাকার
প্রয়োজনে,দুমুঠো ভাতের লোভে ।তাদের
অনেকের জন্মই
পতিতাপল্লীতে,কেটেছে শৈশব, প্রথম
যৌবন এমন কি বার্ধক্যের শেষ দিন গুলিও
। তাদের একটু আলোকের ষ্পর্শে আনার
জন্য কিছুই করেনি এই সমাজ।কাজেই
পতিতাবৃত্তি যদি লজ্জাজনক হয় তবে এই
লজ্জার সবচেয়ে বড় দায়ভার আমাদের এই
সমাজের। বিপরীত
দিকে নায়লা নাইমেরা নার্সিসিজমে ভুগে নিজের
দেহকে ব্যবহার করে শুধুমাত্র কিছু
টিভিসি আর ঈদের কিছু নাটকের লোভে।
অভিনয়ের সীমাবদ্ধতা তারা ঢাকতে চায়
শরীর দেখিয়ে । বিখ্যাত হবার অদম্য
বাসনায় তারা ভুলে যায় নিজেকে ,নিজের
আত্ব মর্যাদাকে।
নায়লা নাঈম কি পোশাক পরবে তা তার
একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার
তা নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই।কিন্তু
যখন সে নিজের দেহ কে ব্যবহার
করে সস্তা প্রচারের আলোয় আসতে চায়
তখনই প্রশ্নটা তৈরী হয়।
আমরা সমাজে নারীর অধিকার
নিয়ে কথা বলি, বলি যে একজন নারীকে বস্তু
বা মাংস পিন্ড
হিসেবে বিবেচনা না করে প্রকৃত মানুষ
হিসেবে বিবেচনা করতে হবে কিন্তু
নায়লা নাঈমের মত কেউ যখন জনপ্রিয়তার
আশায় খোদ নিজেকে মাংস পিন্ড
হিসেবে তুলে ধরে তখন এর
প্রুতিবাদে যারা নারীর অধিকার নিয়ে কাজ
করেন তাদের কাউকে দেখা যায় না কেন ?
তবে নায়লা নাঈমের সমালোচনার আগে সব
পুরুষের আত্বউপলব্ধির বড় প্রয়োজন।
নায়লা নাইম কে গালি দেয়ার আগে তাই
ভেবে দেখুন আপনি একজন
নারীকে কি হিসেবে দেখেন,বস্তু
হিসেবে নাকি মানুষ হিসেবে ।যদি বস্তু
হিসেবে দেখে থাকেন তাহলে বলব একজন
নারীকে চর্বিযুক্ত কিংবা চর্বিছাড়া মাংস
পিন্ড হিসেবে না দেখে একজন মানুষ
হিসেবে দেখুুন না কেন
নায়লা নাইমেরা কোথায় হারিয়ে যায় ? নারীর
অধিকার প্রুতিষ্ঠার পূর্বে তাই সবার
আগে প্রয়োজন নারীর প্রুতি আমাদের
দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তনের।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৫৭

সেজুতি_শিপু বলেছেন: ভাল লিখেছেন ।
ধন্যবাদ । একটা সঠিক দৃষ্টিভঙঘীর বড় অভাব ।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৫৯

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর লেখনী

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:০১

ইমরুল_কায়েস বলেছেন: বস্তু নিষ্ঠ পোষ্ট। একই পোষ্ট তিনটি দেখতে পাচ্ছি।

নায়লা নাইমেরা নার্সিসিজমে ভুগে নিজের দেহকে ব্যবহার করে শুধুমাত্র কিছু টিভিসি আর ঈদের কিছু নাটকের লোভে। অভিনয়ের সীমাবদ্ধতা তারা ঢাকতে চায় শরীর দেখিয়ে ।

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২৩

আমি তুমি আমরা বলেছেন: শতভাগ না হলেও অনেকটাই একমত।

৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫

রুমি৯৯ বলেছেন: Thanx to all

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.