নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যবিত্ত ... স্বপ্ন ... জীবন ... গল্প

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৩

মায়ের আচল
ধরে বাচ্চা ছেলেটা শপিং মলে
গেলে খেলনার
দোকান দেখলে থমকে দাড়ায়।
একটা ঢোক
গিলে একবার
খেলনা রিমোট. কন্ট্রোল লাল
গাড়িটার
দিকে তাকায়। আরেকবার আড়চোখে
মায়ের দিকে তাকায়।
মা হাটতে গিয়ে আচলে টান পড়ে।
তখন ছেলেটার দৃষ্টি আকর্ষন
করে দোকানের
দিকে তাকিয়ে মায়ের
বুকটা ধ্বক করে ওঠে।
তারপরও সাহস
করে দোকানের দিকে এগিয়ে যায়।
ভয়ে ভয়ে গাড়ির দাম জিজ্ঞেস
করে।
ছেলের বায়না মেটানোর মত
সামর্থ্য মায়ের থাকেনা। একসময়
মা ছেলেটাকে জোর ধমক লাগায়।
ছেলেটা ভয়ে কুঁকড়ে যায়। চোখের
কোনে পানি জমতে থাকে।
মা তখন উপায় না দেখে ছোট
স্টীলের
একটা গাড়ি ছেলের
হাতে গুঁজে দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে সামনে আগায়।
.
# বাচ্চা মেয়েটার অনেকদিনেরর শখ
একটা বারবি ডলের। পাশের বাসার
মেয়েটার একটা বারবি ডলের সেট
আছে।
ওর বাবা ওর জন্য বিদেশ
থেকে পাঠিয়েছে। কি যে সুন্দর
দেখলেই
বুকে জড়িয়ে ধরে আদর
করতে ইচ্ছে করে।
বাচ্চা মেয়েটা বাবার
কাছে একটা বারবি ডলের
বায়না ধরে। বাবা মেয়ের মুখের
দিকে তাকিয়ে না করতে পারেনা।
মেয়েকে কথা দেয় রেজাল্ট
ভালো করলে তাকেও তেমন
একটা বারবি ডল
কিনে দিবে। মেয়েটা পরীক্ষায়
ফাস্ট হয়ে বাবার
সামনে গিয়ে দাড়ায়।
বাবাকে আবারো বারবি ডলের
কথা মনে করিয়ে দেয় সে।
বাবা মেয়ের মুখের
দিকে তাকাতে পারেনা। মেয়ের
সামনে ভুলে যাবার অভিনয় করে। মুখ
অন্যদিকে ঘুরিয়ে মেয়েকে কথা দেয়,
সামনের মাসে টাকা পেলেই
তাকে বারবি ডল কিনে দিবে।
মেয়েটা তার বাবার কথা বিশ্বাস
করে খুশিমনে ঘুমুতে যায়। সামনের
মাস আসে, চলে যায়। এমন অনেক মাস
এসে চলে যায় কিন্তু
বাবা মেয়েকে দেয়া কথা রাখতে পারেনা।
দেখতে দেখতে একদিন মেয়েটাও
বড়
হয়ে যায়। বারবি ডল নিয়ে তখন আর
তার
খেলার বয়স থাকেনা।
.
# এই ছেলে মেয়েগুলা একসময় বড় হয়।
ততদিনে ওরা বাস্তবতার
ধাক্কা খেয়ে বুঝতে শিখে যায়
ছোটবেলায়
কেন ওদের বেশিরভাগ
শখ অপূর্ন ছিল।
.
বন্ধুরা যখন নিত্য নতুন ইলেক্ট্রনিক
গ্যাজেটে হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে ওরা তখন
পকেটে থাকা অল ইন ওয়ান
নোকিয়া ফোনটা স্পর্শ করে।
ছবি তোলা, গান শোনা,
ফেসবুকিং সব এই
এক ফোন দিয়েই চলে।
.
বন্ধুরা যখন পাচ/ছয় ইঞ্চি স্ক্রীনের
স্মার্টফোনে ফেসবুকিং করে সে ছেলে মেয়েগুলি তখন
অনেকদিনের পুরনো দেড়/দুই ইঞ্চির
ঘোলা স্ক্রীনের
নোকিয়া ফোনে সে আনন্দ
খুঁজে নেয়।
.
বন্ধুরা যখন ডিএসএলআর এ
তোলা ছবি ফেসবুকে আপলোড
দিয়ে ফটো কার্টেসি দেয়। ওরা তখন
দুই
মেগাপিক্সেলে তোলা ছবি আপলোড
করে। সে ছবিতে কোন
ফটো কার্টেসি থাকেনা।
ফটো কার্টেসি ওদের জন্য না। ওদের
জন্য
এসব বেমানান। ওরা এসব
করলে বন্ধুরা ওদের
নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবে।
.
বন্ধুরা যখন বড় বড়
রেস্টুরেন্টে গিয়ে চেক
ইন দিয়ে পার্টি করে বেড়ায়
ওরা তখন
টাকা বাঁচানোর জন্য
বাসে ঝুলে যাতায়াত
করে।
.
বন্ধুরা যখন
টিফিনে পিজ্জা কিংবা বার্গারে কামড়
বসায় ওরা তখন একটা সিঙ্গারার
সাথে দুই
গ্লাস পানি পেটে চালান
করে তৃপ্তির
ঢেঁকুর তুলে।
.
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম
নেয়া ছেলে মেয়েদের জন্য
জীবনটা কখনো অভিশাপের। আবার
কখনো সংগ্রামের। ওরা ওদের
জীবনে বেশিরভাগ সময়ই
অপূর্নতা নিয়ে,
অভাব নিয়ে বড় হয়। কোন জিনিস পছন্দ
হয়ে যাবার পর প্রাইস
ট্যাগ দেখে একটা ঢোক
গিলে সামনে আগায়। যাবার
বেলায়
দোকানদারের দিকে তাকিয়ে এমন
একটা ভাব করে যেন জিনিসটা এমন
আহামরি কিছুই না। এটা তার
না কিনলেও চলবে।
.
শত অপূর্নতার মাঝেও মধ্যবিত্ত
পরিবারের ছেলে মেয়েগুলি ভীষন
সুখী। কারন ওরা আশা নিয়ে বাঁচে।
একদিন
ওদের সব শখ পূরন হবে।
.
চাইলেই যে মানুষটা হাতের
নাগালে সবকিছু পেয়ে যায় দু'দিন
যেতেই
সে জিনিসটা তার
ভালো লাগেনা।
চাইলেই যে সবকিছু পেয়ে যায় তার
মূল্য
সে কোনদিন বুঝেনা।
.
বহু দিনের প্রতীক্ষা শেষে পছন্দের
কোন
জিনিস যখন হাতে এসে পড়ে তখন
সে মানুষটার মুখে যে নিখাদ
হাসি ফুটে ওঠে তার সাথে দু
কোন কিছুর তুলনা চলেনা। পছন্দের
কোন জিনিস পাওয়ার
আনন্দটা শুধুমাত্র তারা
প্রকৃতপক্ষে উপলবব্ধি করতে পারে।
পাওয়ার আনন্দে শুধুমাত্র তারাই মন
খুলে হাসতে পারে... আবার
খুশ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.