নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিল্প যেভাবে অপমানিত হয় সো-কলড শিল্প সমঝদারদের হাতে

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

ফিল হিউজ যখন বলের আঘাতে মারা গেলেন
তখন ক্রিকেট বিশ্ব থমকে গিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো স্থগিত
হয়ে গিয়েছিল। হিউজ কী ব্রাডম্যান
কিংবা ওয়াহ ভ্রাত্বদ্বয় লেবেলের
ক্রিকেটার ছিলেন। উত্তর না! তাহলে কেন
স্থগিত হয়ে গেল ক্রিকেট ম্যাচগুলো?
ক্রিকেটে ত কাড়িকাড়ি অর্থের
ব্যাপারস্যাপার। সিডিউলড একদিন
খেলা নাই মানে চরম আর্থিক লোকসান।
স্পন্সরেরা চাপ দিতে পারে, ক্রিকেট
বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
প্রফেশোনালিজমের এই
যুগে এভাবে মানবিক
হওয়া কী প্রফেশনালদের মানায়?
বাংলাদেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম
চৌধুরী স্কয়ার নিবেদিত বেঙ্গল
ফাউণ্ডেশোনের বেঙ্গল ক্লাসিক্যাল
মিউজিক
ফেস্টিবালে যা কিনা পল্লীকবি জসিমউদ্দিনকে নিবেদিত
সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন।
তিনি বক্তব্যের পর আবারও সম্পূরক
বক্তব্য দিতে গিয়ে পরবর্তিতে মারা যান
কিন্তু তারপরেও উক্ত অনুষ্ঠান চলেছিল
রাতভর। পোশাকি শোকপ্রকাশ
করা হয়েছে সেখানেও কিন্তু একদিনের
জন্যে অনুষ্ঠান স্থগিত
করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অথচ এই
অনুষ্ঠান ছিল শিল্প আর শিল্পির
সমঝদারদের জন্যে। ক্লাসিক্যাল মিউজিক
ক্লাস এক্ট সন্দেহ নেই কিন্তু
সেটা মানবিকতার উর্ধ্বে যে ছিল
সেটা আগে কখনই খেয়াল করা হয়নি।
অনেককেই বলতে শুনি, অনুষ্ঠান
চালিয়ে আয়োজকেরা শিল্পীর প্রতি সম্মান
জানিয়েছেন। রাতভর সেখানে হারাবার
বেদনা ছিল কী? ছিল উল্লাসের আতিশয্য,
যা বুকে এসে বিঁধে কারণ আমাদের হারাবার
কাল দীর্ঘায়িত হতে চলেছে। শিল্পের
একটা বিশাল মহীরুহ ছেড়েছেন পৃথিবী;
যা অপূরণীয় ক্ষতি বাংলাদেশের।
প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কী হতে যাচ্ছিল
উপস্থিত হাজার চল্লিশেক শ্রোতার
যাদের কেউ গাঁটের পয়সা খরচ
করে ওখানে যায়নি। বিনেপয়সার
টিকেটে স্টেডিয়ামে ঢুকার পর প্রশ্ন
আসে না আর্থিক ক্ষতিবৃদ্ধির। তাছাড়া এই
আয়োজনের শেষ দিনও ছিল না সেদিন। পাঁচ
দিনব্যাপি আয়োজনের চতুর্থ দিন
শেষে আর একটা দিনও ছিল হাতে। হ্যাঁ, এই
দিন অন্য প্রোগ্রামের শিডিউল আছে ঠিক
কিন্তু চাইলেই পারা যেত একদিন দীর্ঘ
করতে। ফলে আর্থিকভাবে কিছুটা হলেও
গচ্ছা দিতে হতো আয়োজকদের। বিদেশ
থেকে আসা শিল্পীদের পেছনে তাদের আরও
বেশি খরচ করতে হতো। শিল্পীদের
প্রতি সম্মান রেখেই বলছি তাদের
ভাড়া করা শিল্পী কারণ তাদের কেউ
বিনেপয়সায় এসেছে বলে এমন কিছু
শোনা যায় নি স্বাভাবিকভাবেই।
ভাড়া করা শিল্পী স্বভাবতই তাচ্ছিল্য নয়-
এটা আয়োজকদের প্রতি উষ্মাবিশেষ!
শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর প্রতি সম্মান
জানিয়ে বেঙ্গল কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান
একদিনের জন্যে স্থগিত
করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ
হতে চায়নি এর মানে এই নয় যে এর
মাধ্যমে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ছোট
হয়ে গেছেন। কিন্তু এর মাধ্যমে ক্লাসিক্যাল
সঙ্গীত আয়োজনের
নামে একটা আয়োজনকারিদের কাছ
থেকে তিনি প্রাপ্য সম্মান
পাননি বলে মনে করছি। এমন ত না অনুষ্ঠান
শিডিউল অনুযায়ি করতে হবে এমন
বাধ্যবাধকতা আছে, খোদ আয়োজকেরাই
যেখানে টিকিটের গায়ে লিখে দিয়েছেন
*Program is subject to change
without prior notice
সেক্ষেত্রে যে হাজার চল্লিশেক দর্শক
নিজেদের
কী হতো ভেবে আহাজারি করতে চাইছেন
তারা আগে থেকেই জানতেন অনুষ্ঠান
চালানো না চালানো আয়োজকদের মর্জির
উপর নির্ভরশীল ছিল। সুতরাং তাদের
আহাজারির কোন মূল্য আছে বলে মনে হয়
না। চাইলেই আয়োজকেরা পারত সম্মান
জানিয়ে স্থগিত করতে কিন্তু
তারা সেটা করেনি।
অনুষ্ঠান স্থগিত করলে কী হতো- মিলাদ
মাহফিল? কেন ফিল হিউজ মারা যাওয়ার পর
মানুষজন কী মিলাদ দিতে বসেছিল? আর
শোকপ্রকাশের একমাত্র উপায় কী মিলাদ?
শিল্প সংস্কৃতির
মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে হয় সঙ্গীত দিয়েই
কিন্তু যখন হাততালি, উল্লাস,
সেলফি কালচার তখন সেটা আর শ্রদ্ধার
পর্যায়ে থাকে না। ক্লাসিক্যাল
মিউজিককে মানুষকে যেখানে বিনীত
হয়ে মানবিক হতে শেখায়
সেখানে হর্ষধ্বনী আর তা যদি হয় একজন
বরেণ্য শিল্পীর মৃত্যুস্থানে তাহলে ত কথাই
নেই!
অনেককে বলতে শুনেছি বেঙ্গলের
সেখানে বাণিজ্যিক চিন্তা ছিল না, টিকিট
থেকে কোন আয়
করেনি তারা তাহলে সেখানে বানিজ্য
আসবে কেন? টিকিটের আয়ই একমাত্র
বাণিজ্য এক রকম চিন্তা কেবল তারাই
করতে জানে যারা হয় অজ্ঞ, না হয়
অজ্ঞতার পথযাত্রি। যদি তাদের কথাই
ধরে নিই বাণিজ্য নাই
তাহলে জানতে ইচ্ছা করে খুব বাণিজ্যিক
প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে মানবিক
হতে চেষ্টা করে সেখানে শিল্প-সঙ্গীতের
জগত হতে বাঁধা কোথায়?
ফিল হিউজকে সম্মান জানাতে পেরেছিল
ক্রিকেট বিশ্ব আর আমাদের বরেণ্য
শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে সম্মান
জানিয়ে একদিনের জন্যে হলেও সঙ্গীতের
এই আয়োজন স্থগিত
করতে পারেনি বেঙ্গল কর্তৃপক্ষ আর সো-
কল্ড শিল্পের সমঝদারেরা।
একে লজ্জা দিয়ে দায়সারা গোছের শব্দ
ব্যবহার চাই না ; এটা আতঙ্ক আর
আশঙ্কার!
|সংগৃহীত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৩

তিক্তভাষী বলেছেন: কাইয়ুম চৌধুরী আমাদের বরেন্য চিত্রশিল্পী। তার মৃত্যু দুঃখজনক। একদিক থেকে তাঁকে বরং আমি ভাগ্যবানই বলবো। জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত তিনি যা পছন্দ করেন সেই শিল্প-সংস্কৃতির মঞ্চে তিনি উপস্থিত থাকতে পেরেছেন, উপভোগ করতে পেরেছেন। তার মৃত্যুর সংবাদ পাবার পর শিল্পীরা যা করতে পারেন, সেখানের শিল্পীরা সেটাই করেছেন। নিজেদের পরিবেশনা, সংগীতসন্ধ্যাটি তাঁকে উৎসর্গ করেছেন। সেটাই তো সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা!

হিউজ ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বলের আঘাতে মারা গেছেন। ক্রিকেট বিশ্ব তার স্মৃতিতে খেলা বন্ধ রেখেছে। ভালোকথা। কিন্তু উচ্চাঙ্গ সংগীতের আঘাতে তো কারো মারা যাওয়ার কথা নয়। তুলনাটা ঠিক বুঝলাম না।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:১৯

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: নামাজ পড়তে গিয়া হুজুর মারা গেলে কি নামাজ বন্ধ? আরে যে যেই লাইনের সেই লাইনের কাম কায়েম থাকাতেই তার দুনিয়াবী স্বার্থকতা।

আচ্ছা প্রোগ্রাম বন্ধ কইরা দিলে কি উনার আত্মা শান্তি পাইয়া ফালাইত।

হ্যা যদি এটা করা যেত যে তিনি মারা যাওয়ায় সবাই প্রোগ্রাম বন্ধ কইরা তার জন্য দোয়া দরুদ পইড়া দোয়া করত তাইলে একটা কথা ছিল। এইটা কি আদৌ বাস্তবে সম্ভব ছিল। উত্তর, না।

তাইলে আর কোন কথা নাই। চলছে চলবে।

আমি হারাম কাজ সমর্থন করিনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.