নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুমি৯৯

আমি রুমি

রুমি৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাত্র রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ...............

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৬

৯৬ এ আওয়ামি লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদে একটি মন্তব্য করেছিলেন ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে।তিনি বলেছিলেন যে "এই দেশে ছাত্ররাজনীতির দরকার নেই!বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্ররাজনীতি বিলুপ্ত করা হোক।"
এখনে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে আমাদের দেশে বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি,ছাত্রদের রাজনীতি নয়।সেই সময় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে ছিল যদি ও কিন্তু।যদি টা ছিল-অন্য সংগঠনগুলোকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।আর ‘কিন্তু’ টা ছিল ছাত্রলীগ তো আওয়ামি লীগের অংগ সংগঠন নয়!অর্থাৎ তিনি বাইরে বাইরে বেশ একটা ভাব দেখিয়েছিলেন কিন্তু তিনি আসলে জানতেন যেহেতু ‘যদি’ হবেনা তাই তাঁর কোন সমস্যা নেই।আর ‘যদি’ হলেও ‘কিন্তু’ দেখিয়ে তিনি বলতে পারবেন ছাত্রলীগের দায়ভার আমাদের না!যাই হোক,কেন সেই সময় ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে কথা উঠেছিল?কারণ ৯০ পরবর্তী সেই অস্থির সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রত্যক্ষ করছিল সেই ছাত্র রাজনীতির নোংরামি।ছাত্ররা মারামারি করছে,জীবন যাচ্ছে অনেক ছাত্রের।এর পিছনে ছিলনা কোন আদর্শ,ছিল কেবল দলীয় স্বার্থ আর দলীয় আধিপত্য বিস্তার।মূলত এই প্রেক্ষিতেই সে সময় ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা নিয়ে কথা উঠেছিল কারণ সে সময় টেন্ডারবাজী,চাঁদাবাজি,হল দখল,মারামারি ইত্যাদি ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।এখনও এগুলো বহাল তবিয়তেই আছে,তবে প্রতিপক্ষ দুর্বল বলে আধিপত্য বিস্তারের ব্যাপারটি এখন নেই।এখন নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ!ছাত্ররাজনীতির সাম্প্রতিক বলি সুমন নামের একটি ছাত্র।কিন্তু কি নির্মম পরিহাস,ছাত্রলীগ সভাপতি তাকে নিজে দলের কর্মী বলেই অস্বীকার করল।প্রশ্ন জাগে সুমনরা ঠিক কি কারণে মারা যায়?কোন আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে?কিসের ভিত্তিতে?প্রশ্ন আসে বর্তমানে ছাত্র সংগঠনগুলো ঠিক কি কি কাজে আসছে?আসুন প্রথমে আমরা সবগুলো ছাত্র সংঠনে একটু নজর বুলিয়ে নেই।প্রথমেই আসি ছাত্রলীগ এর কথায়।ছাত্রলীগ আওয়ামি লীগের রিজার্ভ ফোর্স,লাঠিয়াল বাহিনী কিংবা আওয়ামি সেনাবাহিনী হিসেবে কাজ করে এটা বললে কি ভুল হবে?ছাত্রলীগের একমাত্র কাজ যেখানে সরকারের বিরূদ্ধে কোন আন্দোলন বা কথা বলা হবে সেখানে গিয়ে তাদের ‘শিক্ষা’ দিয়ে আসা।সাম্প্রতিক উদাহরণ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারধোর,শহীদ মিনারে জুতা মিছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।হল দখল,চাঁদাবাজি এগুলো তো সাধারণ ঘটনা।ছাত্রলীগে যারা যোগ দেয় তারা মূলত দুই ধরনের
(১)বাধ্য হয়ে যোগ দেয়,হলে সিট পাওয়া,নিরাপদে থাকা ইত্যাদির জন্য এবং
( ২)ধান্দাবাজী করার জন্য,বিশেষ সুযোগ সুবিধা নেয়ার জন্য।সর্বপরি,ক্ষমতা ভোগ/উপভোগ করার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের ক্ষমতা শিক্ষকদের থেকেও কয়েক হাজার গুণে বেশি।কোন প্রতিপক্ষ না থাকাতে এখন তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে।কোন আদর্শের জন্য নয়,নেহাতই পদপ্রাপ্তি আর ভাগ বাটোয়ারার জন্য।ছাত্রলীগ বর্তমানে ছাত্রদের কোন উপকারে আসছে জানালে কৃতার্থ হতাম।তবে দয়া করে ইতিহাস টেনে আনবেন না।অতীতে কি হয়েছে সেগুলো নিয়ে কথা অতীতের হিরোদের আত্মত্যাগ কে অপমান করবেন না দয়া করে।
ছাত্রশিবিরকে ছাত্র সংগঠন হিসেবে গণ্য করার উপায় নেই।সেটি একটি উগ্র জঙ্গি সংগঠন।এটি একটি বিশেষ ধর্মান্ধ,উগ্র সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে,ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করেনা।আর ছাত্রদল তো এখন বিলুপ্ত প্রায় সংগঠন।ছাত্রদলে এখন কোন ছাত্র নেই,সেটি এখন আব্বা দল এ পরিণত হয়েছে।বাকি থাকে বাম সংগঠন গুলো।বাংলাদেশে একমাত্র তারাই আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করে,একটি আদর্শ সামনে রেখে সেটির জন্য নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে,সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্ন দাবীর পক্ষে কথা বলে কিন্তু…

শুনতে খারাপ শুনালেও যখন ছাত্ররাজনীতির কথা বলা হয় তখন এই সকল বাম দল গুলোকে কেউ ‘গোনায়’ ধরেনা!এবং এটাই রূঢ় বাস্তবতা।কারণ স্বাধীনতার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাম দলগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন জায়গা করে নিতে পারেনি।হাল আমলে শাহবাগ আন্দোলনের পর বাম ছাত্র সংগঠনগুলো কিঞ্চিৎ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এবং কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্যতার একটা জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল,কিন্তু তাও পরবর্তিতে.............।তাই এখনও সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ছাত্রলীগের সহিংস মূর্তির বিপরীতে বাম সংগঠন গুলোর প্রতি কোন আবেদন তৈরি হয়নি।কিন্তু কেন?
আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে যেটা মনে হয়েছে বাংলাদেশে বাম রাজনীতির কোন ধারা নেই বলেই বাম রাজনীতি চর্চা করা ছাত্র সংগঠনগুলোও দুর্বল।অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূল বাম দলগুলোর থেকে তাদের ছাত্র সংগঠন তুলনামূলক ভাবে বেশি শক্তিশালী! সংগঠনগুলো তাত্ত্বিকতার বেড়াজালে বেশি বন্দী,তাদের কর্মীদেরকেও তারা উচ্চ স্তরের তাত্ত্বিক শিক্ষা দিতেই বেশি তৎপর।একটি ছাত্র সংগঠনতো কর্মীরা কি কি বই পড়তে পারবে সেটার সিলেবাসও তৈরি করে দিয়েছে।যে ছেলেটা আদর্শকে বুকে নিয়ে স্বেচ্ছায় কোন বাম দলে যোগদান করতে আসে সে প্রথমেই বিভ্রান্ত হয়ে যায়,এত এত দল দেখে!একাধিক দল থাকা দোষের কিছু না,তবে মূল সমস্যাটা অন্য খানে।একই নামে একাধিক দল!এবং উভয়েরই দাবি তারাই প্রকৃত,অপরটি ভুয়া।এবং এই যে বিভাজন এর মূল কারণ তাত্ত্বিক মতাদর্শগত বিরোধ!যার সাথে সাধারণ ছাত্রদের কোন সম্পর্কই নেই।
বেশিরভাগ ছাত্র বিরোধে জড়াতে চায়না,তারা মনে করে ক্যাম্পাসে আসব,আড্ডা দিব,ঘুরব ফিরব এই তো বেশ।আবার অনেকের মধ্যেই থাকে সমাজকে,দেশকে ইতিবাচক দিকে বদলে দেয়ার আকাংক্ষা।তারা আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে বাম দলগুলোতে যোগ দেয় কিন্তু আদর্শের তাত্ত্বিক কচকচানি,ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে অসংখ্য ইস্যুতে মানববন্ধন,মিছিল আর মধুর ক্যান্টিনে আড্ডা- এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে তার পরিবর্তনের স্বপ্ন।যার সাথে অধিকাংশ সাধারণ ছাত্রছাত্রী বিন্দু মাত্র একাত্বতা বোধ করেনা।
তাহলে ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ কি?ছাত্রলীগকে তো নিষিদ্ধ করা সম্ভব না!এটা চিন্তা করা আর চাঁদের দেশে শপিং মল বানানোর চিন্তা করা একই ধরনের বোকামি।কোন দল আছে যে তার রিজার্ভ ফোর্সকেই নিষিদ্ধ করে দেবে!মোটা দাগে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করলেও বর্তমানে কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া বামপন্থি দল গুলোর অগ্রগতির পথও যে রূদ্ধ হয়ে যাবে!অনেকে সমাধান হিসেবে বলতে পারেন ডাকসুসহ অন্যান্য ছাত্র সংসদ গুলোর নির্বাচন দেয়ার কথা।কিন্তু আমি এটাকে কোন সমাধান মনে করিনা।যেখানে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে পর্যন্ত আওয়ামি লীগ গণহারে ভোট দিয়ে ভোটারবিহীন নির্বাচনে ৭০-৮০ ভাগ ভোট পাচ্ছে,হল থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত যেখানে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রনে সেখানে ‘স্বচ্ছ নির্বাচনের’ আশা আবারও সেই চাঁদের শপিং মলের মতই!সেখানে ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠা তো হবেই না বরং ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিনষ্ট হবে।হলে হলে আবার আগ্নেয়াস্ত্র জমা হবে,সাধারণ ছাত্ররা মারা পরবে,ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে,সেশন জট তৈরি হবে আবার!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোন সেশন জট নেই।দীর্ঘ দিন ধরে কোন অনাকাংক্ষিত ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়না,নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হয়-হরতাল থাকলেও।কোন সাধারণ ছাত্রই চাইবে না এই অবস্থার ব্যতয় ঘটুক।আবার ছাত্র রাজনীতিও বন্ধ হবেনা।তাহলে কি করা যায়?এভাবেই চলবে ?এবং মেরুদন্ডহীন প্রজন্ম বের হবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে?এমতাবস্থায় জরুরি সাংস্কৃতিক আন্দোলন।সাংস্কৃতিক চেতনা এবং বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলা যেন শিক্ষার্থীরা মেরুদন্ডহীন হয়ে না পড়ে।দরকার মাথা উচু করে বাঁচার শিক্ষাটুকু অর্জন করা।আমি এখানে পড়াশুনা করতে এসেছি কোন দলের লেজুড়বৃত্তি করতে আসিনি,আমার ইচ্ছা হলে আমি কোন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যাব,ইচ্ছা না হলে যাবনা।দলীয় অপদার্থ বড় ভাই দের তোয়াজ করে চলতে আমি বাধ্য নই।আমি কি করব সেটার সিদ্ধান্ত আমার।দরকার এই শিক্ষাটুকু অর্জন।আর সেটা সম্ভব কেবলমাত্র সাংস্কৃতিক আন্দোলন,পাঠচক্র গড়ে তোলা,বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার মাধ্যমেই।
নোটঃ বিভিন্ন ব্লগ থেকে সহায়তা নিয়ে লেখা

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৮

খেলাঘর বলেছেন:

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হলে যুদ্ধ করতে হবে। সেই যু্দ্ধ হবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামাতের বিপক্ষে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪০

রুমি৯৯ বলেছেন: ভালো বলেছেন

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৯

খেলাঘর বলেছেন:

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামাত ছাত্ররাজনীতির নামে ডাকাত পুষছে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৯

রুমি৯৯ বলেছেন: সম্পূর্ণ সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.