নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌরভ দাস

সৌরভ দাস ১৯৯৫

চলুন, সবাই কথা বলি

সৌরভ দাস ১৯৯৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প - আইয়ূব মামা .......

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯

সকাল থেকেই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিলো। থামার কোনো নাম গন্ধ নেই। আকাশটাও কেমন যেনো বিটকেলে ভঙ্গিতে চেয়ে আছে। তার চাহনির মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ আজকের দিনটা ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এরকম দিনে নাক ডাকিয়ে গড়গড় শব্দে ঘুমানোর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোনো কিছু হতে পারে বলে অন্তত আমার কাছে মনে হয় না। ইচ্ছাকৃতভাবেই একটানা বারোটা পর্যন্ত ঘুমালাম। সকালের নাস্তার সময় পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। এই অসময়ে নাস্তার প্রসঙ্গ তুলে মায়ের বকুনি খাওয়ার ইচ্ছেও করছে না।
বিছানা থেকে উঠে বসলাম। চোখ গেলো বালিশের পাশে জগজম্প হয়ে পড়ে থাকা বইটির দিকে। গতকাল রাতে বালিশের বিকল্প হিসেবে বইটির উপর বেশ ভালোই ধকল গেছে সেটা খুব স্পষ্ট। বইয়ের প্রতিটি পাতা যেনো চিৎপটায় শুয়ে হিংস্র চোখে তাকাচ্ছিলো আমার দিকে। বইটার প্রতি খুব দরদ জমে গেলো মনের ভেতর। হাতে নিয়ে পাতাগুলো একটু ঠিকঠাক করে শেলফের মধ্যে রেখে দিলাম।
বেশি ঘুমের ফলে মাথা একটু ঝিমঝিম করছিলো। ইচ্ছে করছিলো আরো কিছুক্ষণ ঘুমাই। কিন্তু মায়ের চেঁচামেচির ভয়ে সে সাহসটা আর করিনি। উঠে পড়লাম। বাইরে বৃষ্টির শব্দ এখনো শোনা যাচ্ছে সুস্পষ্টভাবে। টিপটিপ থেকে এবার ঝমঝম। বৃষ্টির বেগ অনেক বেড়েছে। প্রকৃতি এরকম স্বার্থপরের মতো আচরণ করলে এক অজানা যন্ত্রণা নিজের মনটা খুব খারাপ করে দেয়। মাথার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়, চোখদুটি কেবল দুলতে থাকে, শরীরটাকে কোনো বৃদ্ধ মানুষের শরীর বলে মনে হয়।
বৃষ্টি থামলো দুপুরের একটু পরে। বাইরের হালকা হালকা রোদ বৃষ্টির প্রভাবকে আস্তে আস্তে শুষে নিচ্ছিলো তখন।
বিকেলে বের হলাম বাসা থেকে। আমাদের একটা ছোটখাটো পার্টি অফিস আছে। তবে এটা কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস নয়। আমাদের কিছু বন্ধুর আড্ডার একটা জায়গা- একটা টি স্টল। সিলেটের ৮ নং আর্মড পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ঠিক বিপরীতে এর অবস্থান। পাবলিকের হাঁটার রাস্তা এক প্রকার দখল করেই টি স্টলটি গড়ে উঠেছে। রাস্তার পাশ ঘেঁষেই ব্যবস্থা করা হয়েছে চা পিপাসুদের বসার জন্য লম্বা লম্বা দু’খানা ব্রেঞ্চ। অনেক রিকশাওয়ালাও চা খেতে ভিড় করে এখানে। রিকশাটা একটু সাইড করে চা খেতে খেতে রেস্ট নেয় তারা। এই সুযোগে আমরা ব্রেঞ্চের পরিবর্তে রিকশাগুলোতে বসে বসে আড্ডা দিই। আড্ডা চলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, আস্তিকতা, নাস্তিকতা কোনো কিছুই বাদ যায় না। রাস্তা দিয়ে ভিক্ষা করতে করতে কোনো ভিক্ষুক হেঁটে যাক, কোনো সুন্দরী মেয়ে হেঁটে যাক, কোনো গাঞ্জাখোর কিংবা পলিটিশিয়ান সবাইকে টেনে এনে কয়েক দফা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে তারপর আলোচনা থেকে বাদ দেয়া হয়।
আমি গিয়ে সোহাগ আর আকাশকে বসাই পেলাম। আড্ডা ইতোমধ্যে জমিয়ে তুলেছে দুজনেই। সোহাগ তো একাই একশো। যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় তোলপাড় শুরু করে দিতে পারে। এক কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে আমিও যোগ দিয়ে দিলাম তাদের সাথে। আড্ডা চলছিল তিস্তা চুক্তি নিয়ে।
এই আলোচনার মাঝেই হঠাৎ একটা লোককে লক্ষ্য করলাম। দেখতে বেশ খাঁটো, পরনে বেশ আঁট-সাঁট শার্ট প্যান্ট, চুলগুলো সর্ষের তেলে লেপ্টে রয়েছে। কালো কুঁচকুঁচে দেহের রং। সোহাগ দেদারসে কতা বলছে আর লোকটি মুচকি মুচকি হাসছে। বুঝতে পারলাম লোকটি সোহাগকে আগে থেকেই চিনে।
লোকটির চোখে চোখ পড়তেই থেমে যায় সোহাগ। দু’হাত দিয়ে সজোরে একটা তালি বাজিয়ে বললো, “আরে আইয়ূব মামা, আপনি কোত্থেকে?”
আইয়ূব মামা একে একে আমাদের সবার সাথে হাত মেলাতে মেলাতে বললো, “আমি আর কোত্থেকে আসবো মামা, মণিকা থেকেই আসলাম। আপনার কোনো দেখা পাই না যে। কোথায় থাকেন?”
সোহাগ বললো, “আমি তো এখানেই থাকি। আপনি আসেন না এটা বলেন।”
আইয়ূব মামা কিছু না বলে মুচকি মুচকি হাসছে। সোহাগ জিজ্ঞেস করলো, “তো মোবাইল কিনেছেন?”
“আরে রাখেন আপনার মোবাইল। মোবাইল দিয়ে আমি কী করবো?”
সোহাগের কথাটাকে একেবারে গুরুত্বহীন বানিয়ে আইয়ূব মামা যেভাবে চিবুক নাড়িয়ে কথাটা বললো তাতে মনে হলো আইয়ূব মামার চিবুকটা ধারালো অস্ত্রের মতো চকচক করছে।
সোহাগসহ আমরা সবাই আইয়ূব মামার এই চিবুকখানার ভাবভঙ্গি দেখে একটু হেসে নিলাম। সোহাগ বললো, “আরে কিনে ফেলেন আইয়ূব মামা।এই যে আপনি বললেন আমার কোনো দেখা আপনি পান না, মোবাইল একটা থাকলে তো এই সমস্যাটা হতো না। তাছাড়া মোবাইল তো আর এখন ঐরকম দামি কিছু না। অনেক সস্তা হয়ে গেছে।”
টাকার কথাটা আইয়ূব মামার মনে খুব লেগেছে এটা বুঝা যাচ্ছে। আইয়ূব মামা বললো, “এটা কী বললেন, টাকার জন্য আমি মোবাইল কিনি না?”
বলে আইয়ূব মামা তার প্যান্টের পকেট থেকে পলিথিনে মোড়া একটা টাকার বান্ডিল দেখিয়ে বললো, “টাকা কোনো ব্যাপার না মামা, আসলে ওসব আমার কাছে নিষ্প্রয়োজনীয় মনে হয়। তাই কিনতে আগ্রহ বোধ করি না।”
টাকাগুলো সোহাগের হাতে তুলে দিয়ে আইয়ূব মামা বললো, “এগুলো আজকের ইনকাম। এখনো গোনা হয় নাই। দেখুন তো কত আছে?”
সোহাগ ভালোভাবে গুণে দেখলো পুরো ৯৫১ টাকা আছে। দুই টাকা, পাঁচ টাকা, দশ টাকা, একশো টাকা সব ধরনের নোট আছে।
আইয়ূব মামা বাচ্চাদের মতো করে হি হি একটা হাসি ছেড়ে বললো, “টাকা নেই এটা বলতে পারবেন না মামা। অন্য সব রিকশাওয়ালার চেয়ে আমার কামাই ঢের বেশি আছে।”
সোহাগ একটা শয়তানি হাসি হেসে বললো, “কামাই করলে কি হবে। তুমি তো সব উল্টাপাল্টা জায়গায় গিয়ে উড়িয়ে আসো।”
“কমলার বনবাস মামা।”
কথাটা বলেই চারপাশ হাসিতে মুখরিত করে তুললো আ্ইয়ূব মামা।
সোহাগ আমাদের উদ্দেশ্য করে বললো, “জানিস, মামা কিন্তু শাহজালালের মাজার থেকে মাল নিয়ে আসে মাঝে মাঝে। একেবারে অচেনা অজানা মেয়েকে ঘরেও তুলে নেয়। এক মাসের মতো হয়ে গেলে চেঞ্জ করে নতুন আরেকটা নিয়ে আসে।”
সোহাগ এবারে বদমায়েশী দৃষ্টিতে আইয়ূব মামার দিকে তাকালো, “আরে আইয়ূব মামা, বলেন না ঘটনাটা, সবাই শুনুক।”
আইয়ূব মামা তার শার্টের পকেট থেকে একটা আকিজ বিড়ি বের করে আগুন ধরালো। বেশ ভাবের সাথে নাক মুখ ভর্তি করে ধোঁয়া ছাড়লো। তারপর বলতে শুরু করলো, “শাহজালালের মাজারে একবার যেতে পারলেই মনে করবেন যে আপনি একেবারে সেন্টার পয়েন্টে চলে এসেছেন। তবে শর্ত আছে। যেতে হবে রাত দশটার পর। সেখানে গেলে আপনি নিজেই আগাগোড়া সব বুঝতে পারবেন।……..”
বলতে থাকে আইয়ূব মামা। তার সত্য মিথ্যা কথার আড়ালে ফুটে ওঠে এক নিষ্ঠুর বাস্তবতার ছবি।যে বাস্তবতা প্রশ্নবিদ্ধ করে পুরো বাংলাদেশকে। যে বাস্তবতা আমাদের আঙুল তুলে বলে দেয় এক অন্ধকারে বসে গুটিসুটি মেরে ঘঙঘঙ কাশছে এই বাংলাদেশ।
আইয়ূব মামার ভাষ্য মতে, শাহজালালের মাজারের আশপাশ পতিতাবৃত্তির জন্য একেবারে নিরাপদ একটি জায়গা। এখানে পুলিশও খুব একটা ঝামেলা করে না। উল্টো মাঝে মধ্যে অনেক পুলিশ তার বাড়িতে ফেলে আসা বউয়ের অনুপস্থিত উত্তেজনায়, অনেক পুলিশ তার টসটসে যৌবনের খায়েশ মেটাতে এই আইয়ূব মামার মতো লোকদের ডাক দেয়। তাদের কাছে মাল মশলা চায়।
আইয়ূব মামা প্রায়ই রিকশা নিয়ে শাহজালালের মাজারের দিকে যায়। তবে রাত দশটার আগে নয়, দশটার পরে। যখন রাস্তায় লোক চলাচল কমে যায়, যখন দোকানপাট একটা একটা করে বন্ধ হওয়া শুরু করে, যখন মাজার শরীফের ভক্তরা নিজ নিজ আবাসস্থলে ফিরে যান। আইয়ূব মামা তার দু’চোখের আণুবীক্ষণিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ধরে নিতে পারে মাজারের সামনের পিছনের রাস্তাগুলোতে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটতে থাকা সুন্দরী কিংবা কুৎসিত মেয়েদের আসল অভিপ্রায়। আইয়ূব মামা তার চোখের দৃষ্টি পরিবর্তন করতে থাকে। তার দু’চোখ তখন কামের জ্বালায় লাফাতে থাকে। আশেপাশে হাঁটতে থাকা মেয়েদের এই নিশপিশ ভঙ্গি বুঝতে বেশি সময় লাগে না। তাদের মধ্যে কেউ কেউ একটু উচ্চ স্বরে ডাকে, “এই ড্রাইভার, যাবে?”
আইয়ূব মামার কলিজায় যেনো কারেন্ট প্রবাহিত হয়। সে ঘাড় ঘুরিয়ে জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট দুটি মুচতে মুচতে বলে, “যাওয়ার জন্যই তো এসেছি। কাউকে না নিয়ে যাই কিভাবে? উঠে পড়ো।”
এরপর মিনিট পাঁচেক আইয়ূব মামা একেবারেই নিশ্চুপ। এক নেশায় রিকশার প্যাডেল মারেন শুধু। মিনিট পাঁচেক পর আইয়ূব মামা জিজ্ঞেস করে, “যাবে কোথায়?”
এরকম প্রশ্নে রিকশায় বসে থাকা মেয়েটি একটু বিরক্ত হয়, “যাবে কোথায় মানে? তুমি কি আমাকে না জেনে রিকশায় তুলেছো?”
আইয়ূব মামা এবারে তার গলার স্বর অনেক নিচে নামিয়ে নিয়ে আসে, “আরে উত্তেজিত হচ্ছো কেনো? আমি তোমায় জেনেই তুলেছি। তোমার বিয়ে টিয়ে হয়েছে নাকি?”
হ্যাঁ, না যেকোনো জবাবেই আইয়ূব মামা খুশি হয়। বলে, “কোনো সমস্যা নেই।”
রিকশায় থাকা মেয়েটি একটু আপত্তি জানায়, “সমস্যা নেই মানে?”
আইয়ূব মামা এবারে আসল কথায় চলে আসে, “না বলছিলাম আমার পরিচিত এক কাজী সাহেব আছেন বাগবাড়ীতে। উনাকে দুই-তিন শ’ টাকা দিলে উনি সব ব্যবস্থা করে দেন। আর একটা বিষয়, আল্লাহ তো সবই মাফ করেন, ওসব নিয়ে তুমি টেনশন করো না। তুমি তোমার মতো থাকবে, আমি আমার মতো থাকলাম। সংসারেও দু’চার টাকা আয় হলো, আমাকে এরকম সারারাত মাজারের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে হলো না, আর তুমিও একখানা ঘর পেলে। যখন ভালো লাগবে না শুয়ে শুয়ে আরাম করলে। ভালো লাগলে আমিই না হয় খোঁজ-টোঁজ করে কিছু মালদার লন্ডনী খদ্দরের ব্যবস্থা করলাম।”
এবারে আর কোনো প্রশ্ন আসে না। আইয়ূব মামাও কিছু বলে না। সে বুঝে গেছে মেয়েটা কী বলতে চাইছে। আইয়ূব মামা প্যাডেলের গতি বাড়ায়। খুব দ্রুত ঘুরতে থাকে রিকশার চাকা। আইয়ূব মামার চোখে মুখে উচ্ছ্বাস।
আড্ডায় ইতোমধ্যে আমার অন্য বন্ধুরাও চলে এসেছে। কেউ কিছু না বলে সোজাসুজি আইয়ূব মামার কথার জালে আটকা পড়ে গিয়েছিলো। কারো মুখ থেকে কোনো শব্দ বেরুয় নি। আইয়ূব মামা গল্পের শেষে আমাদের লক্ষ্য করে বলে, “এভাবেই মালগুলোকে লাইনে নিয়ে আসি। আর কিছু পাংকু ছেলে তো পরিচিত আছেই। মেয়েদের কথা বললেই বানরের মতো লাফাতে শুরু করে। মাঝে মাঝে দু’একটা বোর্ডিং এ ও পাঠাই। ওসব জায়গায় ভালো টাকা পয়সা পাওয়া যায়। তবে টাকা মামা আমি আগেই নিয়ে নিই। নইলে আরাম পেয়ে গেলে মাথায় ধান্দা ঢুকে যায়। তখন এক আনাও দিবে না।”
এভাবে ১৫-২০ দিনে ৩০-৪০ হাজার টাকার মতো হয়ে যায়। তারপর মেয়েটাকে কিছু দিয়ে বাকিটা মেরে দিয়ে মেয়েটাকে তার বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দেয় আইয়ূব মামা। অনেক সময় বাসের টিকেটটা পর্যন্ত কেটে দেয়।
আইয়ূব মামাকে আমি একটা প্রশ্ন করলাম, “আপনি যে এসব নিয়ে আসেন আপনার আশেপাশের কেউ জানে না?”
আইয়ূব মামা বললো, “জানবে না কেনো? রিকশার গ্যারেজ বলতে মামা একটা কথা বলি, জায়গাটা ভালো না। একটা অপরাধ জগত। আমরা রিকশার ড্রাইভাররা যেসব জায়গায় থাকি সেখানে এগুলো কোনো সমস্যা না। সেখানে একেক জনের ধান্দাই একেক রকম। সবাই সবার ধান্দা নিয়ে থাকে, কেউ কাউকে ঘাঁটায় না।
তবে এটা সত্য, আমাদের থেকে আপনারা এটা বেশি পারবেন। কিন্তু পারেন না আপনাদের লজ্জ্বা-শরম বেশি। আমি তো মামা একজন রিকশার ড্রাইভার। আমার কোনো লজ্জ্বা শরম নেই। তবে যেহেতু আমি আইয়ূব মামা আছি আপনাদের বিন্দু মাত্র চিন্তা করার দরকার নেই।”
আইয়ূব মামাকে আরেকটা প্রশ্ন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো, “আইয়ূব মামা, আপনার বাড়ি জানি কোথায়?”
আইয়ূব মামা জবাব দিলো, “বাড়ি মামা ঐ ছাতকের দিকে।”
“আপনি বাড়িতে যান না?”
আইয়ূব মামা আবারো বাচ্চাদের মতো হি হি হাসি ছাড়লো। বললো, “বাড়িতে? যাই, তবে খুব কম। বছরে এক দু’বার। তাও এক দিনের জন্য। ওখানে আমার মা বাবা থাকেন। আপনাদের আরেক মামীও আছেন। একটা মেয়েও হয়েছে শুনলাম।”
আ্ইয়ূব মামার উত্তরটা শুনে চমকে উঠি আমি। একটি পরিপূর্ণ সংসার আছে আইয়ূব মামার! সবাই হয়তো এক কঠোর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছে। আর আইয়ূব বাবা জীবন সংগ্রামকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেছে নিয়েছে বেঁচে থাকার এক অদ্ভুত কৌশল।
এরপর যত বারই আইয়ূব মামার সাথে দেখা হত, আমি জিজ্ঞেস করতাম, “কেমন আছেন?”
আইয়ূব মামা তার কোদালের মতো দাঁত বের করে হেসে হেসে জবাব দিত, “আছি মামা, খুব ভালো আছি।”
আইয়ূব মামা কি আদৌ ভালো আছে? নাকি এক অন্ধকারে নিজেকে পেঁচিয়ে ফেলেছে?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫২

সৌরভ দাস ১৯৯৫ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.