নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভীষণ একলা থাকা মানুষ আমি ভীষণ আমার ভেতর থাকি!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর

জীবন জুড়ে থাকা পরাজয়, হয়েছে ম্লান চিরকাল!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা যারা "90\'s Kid

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৭



আমরা যারা "90's Kid [ মোটামুটি যাদের জন্ম ১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ এর মধ্যে] আমরা হচ্ছি পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান প্রজন্ম। আমি প্রায়ই অবশ্য আমাদেরকে 'গত প্রজন্মের শেষ বংশধর' বলে থাকি। পৃথিবীর বিশাল বিশাল অগ্রগতিগুলোর চাক্ষুস সাক্ষী আমরা।
আমাদের ঘরে মায়ের হাতে বানানো হাতপাখা ছিলো। মেলা থেকে কেনা রঙ্গিন তালপাতার পাখাও ছিলো। আমাদের প্রিয় চকলেটের নাম -মিমি চকলেট। লজেন্স বলতে নীল রঙের পলিথিনে মোড়ানো নাবিস্কো লজেন্স। ১ টাকায় চারটি পাওয়া যেত। পঞ্চাশ পয়সা করে যেগুলোর দাম ছিলো সেগুলোর স্বাদ ছিলো ঝাল। ডোরাকাটা কালো পলিথিনে মোড়ানো থাকতো।


ছবিঃ গোল্লাছুট খেলার একটি দৃশ্য

আমাদের শৈশবে আমাদের প্রিয় খেলা ছিলো গোল্লাছুট, দায়রাবন্দে আর কাঁনামাছি। আমাদের বড় হওয়ার সাথে সাথে বড় হয়েছে টেকনোলজি। পৃথিবীতে 'Technology revolution'-এর সবচেয়ে বড় সাক্ষী আমাদের প্রজন্ম। তখনো কম্পিউটার গেমস আসেনি... জন্মদিনে আমাদের সবচেয়ে উপহার হতো ভিডিও গেমস। প্রিন্স হয়ে ড্রাগনকে মারতে পারাই তখন জীবনের ব্রত হয়ে দাড়াতো।
আমাদের শৈশবটা সাদাকালো নিপপন টিভি'র সাথে এন্টেনা ঘুরিয়ে কেটেছে। অনুষ্ঠান যাইহোক টিভি পেলেই সামনে বসে পরতাম। লুকাস ব্যাটারি তখন শুধু গাড়ির ব্যাটারি ছিলোনা। রাত আটটার বাংলা সংবাদ দেখার জন্যে আব্বার জন্যে ব্যাটারীতে চার্জ রাখতে হতো। তারপর বিটিভি'র সাথে ইটিভি পেয়ে যেন মনে হলো - পরিবারে নতুন কোন সদস্য এসেছে! শুক্রবার তিনটা বিশে দেখানো বাংলা মুভির জন্যে কত শুক্রবার যে দুপুরের ঘুমকে হারাম করে বকা শুনেছি হিসেব নেই। ছবির প্রেম রোমান্স না বুঝলেও শেষ দৃশ্যে যে একটা 'লাস্ট মাইর' থাকতো এটার জন্যেই ছিলোই অধির আগ্রহে বসে থাকা। সব সময় নায়কের পক্ষে থাকতাম। আর নায়কেরাও হতাশ করতো না...সকল মুভিতেই 'তামা পাহাড়ে চলে আয়' টাইপের একটা দৃশ্য থাকতো এবং নায়কই জিততো।


ছবিঃ নায়ক আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন ছিলেন তখনকার একমাত্র একশন হিরো

পুরো এলাকা জুড়ে তখন শুধু একটা রঙ্গিন টিভি থাকতো- যাদেরকে আমরা বনিয়াদি ঘর বলতাম! তাদের পরিবারের একজন সদস্য নিশ্চিত ভাবে বিদেশে থাকবে।
আমাদের প্রত্যেকের বাসায় টেলিভিশন থাকুক আর না থাকুক প্রতেকের বাসায় অন্তত একটা করে রেডিও থাকতো। ঢাকা ক বা খ'র তিব্বত ঘামাচি পাউডার অনুরোধের আসরের দ্বরাজ গলার উপস্থাপকের কণ্ঠ শুনার জন্যে প্রতিদিন অপেক্ষা করতাম। 'হক ব্যাটারি হক ব্যাটারি- সাতশ ছিয়াশি' কিংবা 'আলো আলো বেশী আলো, শব্দে শব্দে মন মাতালো'র বিজ্ঞাপন শুনে আমাদের মন মাততো। আমাদের স্কুল ব্যাগে কাঠের রংপেন্সিলের সাথে সানলাইটের নষ্ট ব্যাটারিগুলোও থাকতো।



আমাদের শৈশবের নায়ক বলতে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান কিংবা হাসিবুল হোসাইন শান্ত। ৯৯ এর বিশ্বকাপে পত্রিকায় ছাপানো ১৮ জনের স্কোয়াডকে পত্রিকা থেকে কেটে পড়ার টিবেলি আঠা দিয়ে লাগিয়ে রেখেছিলাম। ওনাদেরকে একদিন বাস্তবে দেখার স্বপ্ন দেখতাম প্রতিনিয়ত। হারলে কেঁদে দিতাম... পাকিস্তানের সাথে জিতার পর না বুঝেই কেঁদে দিছিলাম।

ছবিঃ বিশ্বকাপ স্কোয়াড ১৯৯৯ইংরেজি

দু'হাজারের দিকে গ্রামীন ফোন আসলো। বাসায় একটা মোবাইল আসলো। জিরো ওয়ান সেভেন সিরিজের। তখন একঘরের মধ্যে পাঁচটা মোবাইল ছিলোনা...বরং পাঁচ ঘর মিলে ছিলো একটা টেলিফোন নাম্বার। বাবা-মা'রা নিজের ঘরে টিএন্ডটি নাম্বার না থাকলে বাচ্চাদেরকে আশে-পাশের কারো বাড়ির নাম্বার মুখস্ত করাতো। যেন বাচ্চা হারিয়ে গেলে খুঁজে পাওয়া যায় সহজেই।
তখনো কোন প্রিয়ার সাথে দেখা না পেলেও আসিফের 'ও প্রিয়া তুমি কোথায়' এলবামের সবগুলা গান মুখস্ত ছিলো। ঘরে ঘরে ক্যাসেট প্লেয়ার ছিলো। আঙ্গুল কিংবা পেন্সিল দিয়ে এলবামের ফিতা ঘুরিয়ে একই গান বারবার শোনার প্রচলন ছিলো। বিদেশীর বউ'রা জামাইয়ের কাছে ফিতাওয়ালা ক্যাসেডের রেকর্ড করে পাঠাতো।



ছবিঃ ক্যাসেড প্লেয়ার

২০০২ সালের দিক ঘরে কম্পিউটার আসলো। বন্ধুরা বিকেলে বাসায় চলে আসতো গেইম খেলতে। Dx Ball 2 , Road Rash কিংবা হাউজ অব ডেড ছিলো সবচেয়ে জনপ্রিয় গেইম। স্কুল ফাঁকি দিয়ে ভিডিও গেইমের দোকানে খেলার কথা আর নাই'বা বলি। ভিডিও গেইমসের দোকানে ধরা পরে বাসায় বকুনি খাইনি এমন ছেলে খুঁজে পাওয়া প্রায় দুষ্কর।

ছবিঃ রোডর‍্যাশ গেইমসের এই ছবি আপনাকে নস্টালজিক হবেন নিশ্চিত

তারপর আমরা আরেকটু বড় হলাম! হটাৎ করে পৃথিবীর যেন কি হলো। সবকিছু দ্রুত বদলাতে থাকলো। এতো দ্রুত বদলালো যে আমাদের আবেগের জায়গা বলে কিছু আছে এমনটা খুঁজে পেতেই কষ্ট হয়ে যায়। তারপরও আমরা ভাগ্যবান যে আমরা দুইটা প্রজন্মকেই একসাথে দেখেছি। সাদাকালো পাঞ্জাবি পরা প্রজন্ম এবং 'ইয়ো ইয়ো' টাইপের মাল্টিকালারের প্রজন্ম।
আমরা "90's kid...আমাদের পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান প্রজন্ম :) and we proud to be a 90's kid।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৮

অবনি মণি বলেছেন: আমি আছি আপনার সাথে.।.।.।.।।।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০০

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: মিলে গেলো তো!

ইয়্যুটিউবে গিয়ে পুরাতন বিজ্ঞাপন গুলা দেখলে আরো নস্টালজিক হবেন নিশ্চিত।

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৯

ব্রতশুদ্ধ বলেছেন: পাঁচ পয়সা, দশ পয়সা, পঁচিশ পয়সা। একদম শৈশবে নিয়ে গেলেন ভাই ।। সত্যিই আমরা খুব ভাগ্যবান। বেশ ভাল পোস্ট।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৩

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: দাদা, আমরা হচ্ছি গত প্রজন্মের শেষ বংশধর :)

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৫

সুমন কর বলেছেন: সবই পেয়েছি......দিলেন তো সব মনে করে !!

ধন্যবাদ।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৫

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: ইয়্যুটিউবে গিয়ে পুরাতন টিভিসি গুলা দেখতে ভুলবেন না! ঐ বিজ্ঞাপনগুলা আমাকে একদমই ঐ বাচ্চা সময়টাতে নিয়ে গেছিলো।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২৫

প্রবাসী পাঠক বলেছেন:




২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: কত যে মাইর খেয়েছি এই গেইম খেলতে যেয়ে!

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৫

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: দুইটা জিনিস বাদ পড়েছে। সালমান শাহ আর সাউন্ডটেক।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: জ্বি জ্বি! সালমানশাহ আর সাউন্ডটেক বাদ পড়ে গেছে!

'সেলিম খান প্রেজেন্টস' কথাটাও বাদ পড়ছে

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২০

উম্মে সায়মা বলেছেন: আহ! আসলেই আমরা ভাগ্যবান। ওইসব দিনগুলো খুব মিস করি...

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: আমরা পৃথিবী বদলের সবচেয়ে বড় সাক্ষী!

৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৬

প্রামানিক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। তখন ন্যাচারাল লাইফ উপভোগ করার মত ছিল।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৬

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: জ্বি দাদা, তখন আমরা মানুষ ছিলাম, এখন কৃত্রিম মানুষ!

৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

এডওয়ার্ড মায়া বলেছেন: প্রাউড টু বি নান্টিস কিড :)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: উই প্রাউড :)

৯| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮

কাছের-মানুষ বলেছেন: আহা কি সুন্দর ছিল সেই সময়টা ! মোস্তফা গেইম অনেক প্রিয় ছিল আমার , এটা খেলার অন্য শাস্তি ও পেতে হয়েছে বাসায় । আলিফ লায়লা , রোবট, মিসটেরিয়াস আইল্যান্ড মন দিয়ে দেখতাম ।
আবার মনে করিয়ে দিলেন সবকিছু !

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৯

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: মোস্তফা গেইম খেলে কেউ শাস্তি পাইনি, এমন কেউ কি আছে?

সে ছিলো এক নেশা, বড় অদ্ভূত নেশা!

১০| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৯

ডার্ক ম্যান বলেছেন: অনেক কিছুই মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
বাংলাদেশের বিজয়ে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। তখন আমি পাকিস্তানের ভক্ত ছিলাম।
আমি গেমস পছন্দ করতাম না। তাই roadrash ছাড়া আর কোন গেম খেলি নাই।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩০

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের খেলাতে বাংলাদেশ জিতলে আপনি কষ্ট পান কোন হিসাবে ভাই!!???

১১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১২

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: অাহা! অাগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৪

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: গানটা আমাদের সাথে খুব যায়!

১২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৭

কাঠমিস্ত্রি বলেছেন: সকাল সকাল নস্টালজিক হয়ে গেলাম। অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। :(

১৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫২

রাসেল ০০৭ বলেছেন: আহ নস্টালজিয়া!
সুপার বিস্কিট, বেলা বিস্কিট এগুলার কথা কথা ভুলে গেলেন ?
সবচেয়ে বেশী মিস করি বাংলা ব্যান্ডের স্বর্ণালী সময়টাকে । এমন কালজয়ী গান বুঝি আর কখনও হবেনা ! হলেও হয়তো এখন আর সেই আবেদন থাকবেনা ।
হুমম পৃথিবী বড় দ্রুত বদলাচ্ছে। সময়টা বড় অস্থির।

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৩৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: জ্বি ভাই। বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.