নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভীষণ একলা থাকা মানুষ আমি ভীষণ আমার ভেতর থাকি!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর

জীবন জুড়ে থাকা পরাজয়, হয়েছে ম্লান চিরকাল!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মামলা যদি কেউ করতে আসে সেইটা যেন আমার বিরুদ্ধে হয়- বঙ্গবন্ধু

০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৪৩



বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহনের পর একটা ভঙ্গুর দেশকে জোড়া লাগানোর কাজটাতে নেমে পড়েন। দেশের অর্থনীতি তখন তলানীতে। স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা ভয়াবহ রকমের খারাপ। তখন দেশে সেইভাবে ওষুধ কোম্পানীগুলো বিস্তার লাভ করেনি। ওষুদের দাম ছিল তখন মানুষের নাগালের বাইরে। বঙ্গবন্ধু তখন তার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ও জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ নুরুল ইসলামকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলেন -
'আমাদের এইখানে ওষুধের দাম এত বেশী কেন?'

ডাঃ নুরুল ইসলাম তাকে জানালেন ' স্যার কিছু করার নাই। জেনেরিক প্যাটেন্ট এর জন্যে ওদেরকে ফি দিতে হয়'

বঙ্গবন্ধু বললেন- 'আমরা গরীব দেশ। আমার দেশের মানুষ ওষুধ আর চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছে। আমি এইসব প্যাটেন্ট-ফ্যাটেন্ট মানিনা। যদি কোন দেশীয় কোম্পানি আমাদের এইখানে বিদেশী ওষুধ উৎপাদন করতে চান তাহলে ওদেরকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করেন। ওদেরকে সবার আগে প্রাইয়োরিটি দেন।'

তখন নুরুল ইসলাম স্যার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবেরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। তারা বঙ্গবন্ধুকে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে - স্যার এটা করলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাবে, বড় অংকের জরিমানা হবে, তখন সামাল দেয়া কষ্ট হয়ে যাবে। এম্নিতেই আমরা নতুন দেশ- আমরা কি এই জায়ান্টদেরকে সামলাতে পারবো?

তখন বঙ্গবন্ধু সকলের সামনে বলেছিলেন- মানুষের ভাতের অধিকার আর ভোটের অধিকার- এই দুইটা অধিকার আদায়ের জন্যে সারাটা জীবন লড়াই করছি। জেলেই তো ছিলাম সারাটা জীবন। না হয় আর কয়টা দিন একটু বেশীই জেল খাটবো। আমার এই দেশের মানুষের জন্যে আরো কিছুদিন আমি জেল খাটতে রাজি আছি। তোমাদের যা নির্দেশ দিছি তোমরা সেইটা পালন করো। কোন ঝামেলা হইলে তোমরা আমাকে দেখায়া দিবা। বলবা যে- ওনি আদেশ দিছেন। কেউ মামলা করতে আসলে আমাকে দেখায়া দিবা- মামলা যদি কেউ করতে আসে সেইটা যেন আমার বিরুদ্ধে হয়।

এই বলে বঙ্গবন্ধু তার নিজের সাক্ষরিত প্রাইম মিনিস্টার অফিসের একটা কাগজ তাদেরকে দিয়ে দেন।
তারপর সেই অনুসারেই কাজ শুরু হয় । সেদিনের ১৫০ কোটি টাকার ওষুদের বাজার বর্তমানে ১৭ হাজার কোটি টাকার উপরে এসে দাড়িয়েছে। কিন্তু সেদিনের ওষুদের দাম আর এখনকার ওষুদের দাম এখনো প্রায় সেইম। যে সেফ্রাডিন আমাদের বাজারে ৩৫ টাকা দেশের বাইরে এইটার দামই ২৫০ টাকা!
বড় বাঁচা বাঁচায়ে দিয়েছেন তিনি। এইজন্যেই তিনি জাতির জনক।

এই গল্পটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক আবম ফারুক স্যারের কাছ থেকে শোনা। কিছুদিন আগে আমি স্যারের একটা সাক্ষাতকার নিতে স্যারের অফিসে যাই। বাংলাদেশে ওষুধের জেনেরিক প্যাটেন্ট ফি মওকুফ করার বিষয়ে কথা বলছিলেন তিনি। আমি গল্পটা শুনে ইমোশনাল হয়ে পড়ি। আরেকবার শ্রদ্ধায় মাথা নত হয় আমার।
ভালো থাকবেন আপনি

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফি না দিয়ে, জেনেরিকগুলোর ফর্মুলা পেলো কোথায়, উৎপাদন হলো কোথায়? ঔষধ উৎপাদনের জন্য বিশেষ প্রসেসের দরকার হয়।

০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২৮

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: তখন বেশী কোম্পানীগুলো আমাদের দেশেই উৎপাদন করতো। সো, সবই ছিল এইখানে। ছিলোনা শুধু দেশীয় কোম্পানীর বিস্তার। যা পরবর্তিতে সম্ভব হয়েছে।

২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:১৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
তখন বেসরকারি ফার্মা ছিল KDH, ফার্মাদেশ, গ্যাকো,স্কোয়ার, গণস্বাস্থ্য।
সরকারি - এসেন্সিয়াল ফার্মাসুটিক্যাল।

৩| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:৩৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: জানতাম না।
সত্যিই এলোকের কথা শুনলে মাথা আপনা থেকেই নত হয়ে আসে

০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২৮

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: জ্বি। বরাবরই :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.