নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভীষণ একলা থাকা মানুষ আমি ভীষণ আমার ভেতর থাকি!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর

জীবন জুড়ে থাকা পরাজয়, হয়েছে ম্লান চিরকাল!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধ কি বৈষম্য বাড়ানোর জন্য হয়েছিল?

২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩২

চাকরি ও মেধা নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা হোক!

মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা – কোটার নামে বৈষম্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
মুক্তিযুদ্ধ কি বৈষম্য বাড়ানোর জন্য হয়েছিল?

বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন হয়েছি রাষ্ট্র ভাষা বাংলা করার দাবীতে। তখন পাকিস্তানীরা রাষ্ট্রভাষা উর্দু (যদিও উর্দু পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষুদ্র একটি অংশের ভাষা) করার চেষ্টা করলো। কারণ রাষ্ট্রভাষা যদি উর্দু হয় তাহলে 'বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বাঙালি' ও 'মাঠে কাজ করা বাঙালি' এক শ্রেণিতে নেমে যাবে। কারণ দুইজনই উর্দু পারে না। ফলে পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের চাকরি হতো খুবই কম সেখানে শিক্ষিত বাঙালি চাকরি পেতে আরও বেশি বেগ পেতে হবে। অনেকগুলা কারণের মধ্যে এই বৈষম্যের কারনটিও একটি। ফলে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা বাঙলা চাই আন্দোলন।
এই ইতিহাসটা এখানে বলার কারণ মধ্যবিত্ত স্বার্থের সাথে বিসিএস চাকরি জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মধ্যবিত্তরাই বিসিএস চাকরিতে বেশি প্রবেশ করতে চায়। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে এসে যখন দেখে কোটা পদ্ধতির নামে এমন রাষ্ট্রীয় বৈষম্য তখন কোটা প্রতি এক গুমোট ক্ষোভের জন্ম নেওয়া কি অস্বাভাবিক?

জানা যায়, ২৯তম বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারের ৪১২ জনের মধ্যে ২১১ জন কোটায় আর ২০১ জন মেধায় নিয়োগ পেয়েছে। ২৮তম বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে মোট ৬৫৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিলো যার মধ্যে ৩৪৭ জনই নিয়োগ পেয়েছে বিভিন্ন কোটায়!

অথচ আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিশেষ সুবিধা পাওয়ার আশায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও কিছু স্বঘোষিত সুশীলরা সম্পূর্ণ আবেগ ও অযৌক্তিক কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না কমানোর দাবি করছেন।
সমাজের যেকোনো শ্রেণীর মানুষকে বিশেষ সুযোগ দেয়ার প্রয়োজনটা যেকোনো সমাজের জন্য অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেটা কখনো ৫০ শতাংশ বা ৫৫ শতাংশ হতে পারে না। আর প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তো অবশ্যই নয়। কারণ গাড়ির চালকের আসনে কোনো হেলপারকে বসানোর পরিণতি কী হতে পারে তা আমাদের প্রশাসনের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। কোনো সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীকে যেখানে সহযোগিতা করার অনেক উপায় রয়েছে সেখানে অসংখ্য মেধাবীকে বাদ রেখে কম মেধাবীদের সুযোগ ড্রাইভার রেখে হেলপারকে চালকের আসনে বসানোর নামান্তর মাত্র।

আমি মনে করি, যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, যারা এ দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন, তারা এ ধরনের কোটা ব্যবস্থা সমর্থন করেন না। অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন এখনও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছেন। যাদের কর্মসংস্থান নেই, আশ্রয় নেই, যুদ্ধাহত_ এই কোটা ব্যবস্থা তাদের সমর্থন করে না। যারা অসহায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, সরকারের উচিত তাদের সাহায্য করা। মুক্তিযোদ্ধা নাম ব্যবহার করে আজ অনেকেই এর ফল ভোগ করছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ অন্য সব কোটা পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

এই প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল স্যার কিছু কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছেন-
''সরকারের দমননীতি ও কোটাকেন্দ্রিক বৈষম্যকে যৌক্তিকতা প্রদানের জন্য কোটা বাতিলের আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইতিপূর্বে শেয়ারবাজারের লুটপাট, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি কিংবা ভারতের প্রতি নতজানুমূলক আচরণসহ সরকারের বিভিন্ন অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদেরও একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার অপচেষ্টা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এমন সুবিধাবাদী ব্যাখ্যা বহু বছর ধরে চলছে সমাজে। অথচ নির্মোহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই বরং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা। ঢালাও কোটার নামে অনাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ।

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা বর্তমানে একটি দুর্নীতিবান্ধব প্রক্রিয়ায়ও পরিণত হয়েছে। এই কোটার সুযোগে দিনে দিনে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে, তাঁদের একটি অংশ যে ভুয়া, তা নিয়ে সন্দেহ করার কারণ রয়েছে। ২০১১ সালে নিউ এজ-এ মহীউদ্দীন আলমগীরের একটি রিপোর্টে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তালিকা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ৮৩৩ জন, একই বছরে আরেকটি তালিকায় এক লাখ দুই হাজার ৪৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধার কথা বলা হয়। পরে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে একটি তালিকায় দুই লাখ দুই হাজার ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশিত হয়। তাঁদের মধ্যে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন এই মর্মে আপত্তি দাখিল হয় ৬২ হাজারটি। এসব আপত্তি নিষ্পত্তি হয়েছে কি না বা পরবর্তী সময়ে আরও যাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, তাঁরা আদৌ মুক্তিযোদ্ধা কি না, এই সংশয় কখনো দূর হয়নি। বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি আর দলীয়করণের মহোৎসবের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিষ্কলুষ রয়েছে—এটি ভাবারও কোনো কারণ নেই।''

দক্ষিণ এশিয়ায় আলোচিত কোটাবিরোধী আন্দোলন ভারতের মণ্ডল কমিশনকে ঘিরে। এ কমিশনের সুপারিশে সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্মসংস্থান ও শিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ৪৯ দশমিক ৫ ভাগ কোটা সংরক্ষণ করতে গেলে ১৯৮৯ সালে ভারতজুড়ে প্রতিবাদ হয়। ওই আন্দোলন ছিল সেদেশের সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির স্বার্থরক্ষার আন্দোলন। তাদের দাবি ছিল ‘মেধার পরিবর্তে জন্মসূত্রে সুবিধাদান চলবে না।’

আমাদের দেশেও বোধহয় এই সময়টা এসেছে। আন্দোলনে যাবার সময়টা।
আমাদের এই প্রজন্মের বেশীর ভাগ ছেলেমেয়েদের বাবার জন্ম ১৯৬৫ সালের পরে। আমাদের 'মেধা'কে কেন প্রতিযোগীতা করতে হবে মেধাহীন 'কোটা' গোষ্ঠীর সাথে? কেন?

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এমন সুবিধাবাদী ব্যাখ্যা বহু বছর ধরে চলছে সমাজে। অথচ নির্মোহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই বরং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা। ঢালাও কোটার নামে অনাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ।

পাকি শোষক খেদাইছি!!!

এবারের সংগ্রাম দেশি শোষক খেদানোর সংগ্রাম!

২২ পরিবার থেকে শোষন দন্ড ২২ হাজার পরিবারে ট্রান্সফার হইছে মাত্র। আমজনতা সেই কলুর বলদ!!! ভারবাহী-ফলভোগী নহে!

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৬

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: আমাদের আসলে কিছু করার নেই, দেখা ছাড়া!

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬

অনাকাঙ্খিত কেউ বলেছেন: ভাই ভাল বলেছেন।

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: হতাশ আসলে!

৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:১৯

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে । যদি আওয়ামী লীগ সরকার এখনই এই টাকা ফেরত না আনার ব্যবস্থা করে না তাহলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করবে, তারাই এই টাকা পাচার করেছে ।
এই টাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক থেকে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত না আনা পর্য্যন্ত এদেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার আওয়ামী লীগের নেই ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: টাকা ফিরত আসবে না ভাই!

৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:২০

এম এ মুক্তাদির বলেছেন:

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১০

টারজান০০০০৭ বলেছেন: যে লংকায় যায় সেই রাবন হয় ! দলীয় সরকার আর চাই না ! তত্ত্বাবধায়ক সরকার , বার বার দরকার !

৩১ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১১

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: দলীয় সরকার গণতন্ত্রের জন্য দরকার আছে, কিন্তু তারা যদি মানুষের কথা চিন্তা না করে তাহলে কিভাবে হবে!?

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:১৭

বাকরখানি বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধা কোটা দেয়া উচিত ন্যুনতম কৃতজ্ঞতাটুকু দেখানোর জন্য হৈলেও। কিন্তু কিছু মাথামোটা বুর্বাকে এমুনভাবে এই কোটার ব্যবহার কর্সে যে কওনের মত না। এমুনকি এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ব্লগিংও করা যায় সামুতে, সেইখানে আপনে গাইতাসেন পুরান গীত :P

৭| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩০

প্রোলার্ড বলেছেন: কোটা প্রথা দেশকে এগুতে দেবে না ।

৩১ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১২

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: মেধা যাচাই পদ্ধতিতে কোটা প্রথা থাকতে পারেনা, কোন ভাবেই না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.