নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অতীত আর ভবিষ্যত নিয়ে কখনো ভাবি না। অতীত নিয়ে ভেবে কোন লাভ নেই কারণ সেটা আর ফিরে আসবে না আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবি না কারণ সেটা আমার জীবনে আসবে কিনা তা কেউ জানে না, তাই যা করবো আজই। সর্বদা যা করবো বর্তমান পরিস্থিতি দেখে।
কাল রাতে এলাকায় একটা ছেলে মারা যায়। কারখানায় কাজ করতো৷ বৈদ্যুতিক তার লিক ছিলো সেখানে পা পড়ে। বাসার পাশের বাড়ির ম্যানেজার সাহেব সেই নিয়ে কি কথা! এতো ছোট বয়সে কেউ সন্তানকে কাজে দেয়। সে মনে হয় জানতো না ওই পিচ্চির মা প্যারালাইসিস আর বাবা অনেক আগেই মারা গেছে। একটা বোন আছে ক্লাস অন-এ পড়ে৷ ওর ছেলের উপার্জনের সামান্য টাকা দিয়েই চলে ওর মায়ের ঔষধ খরচ আর বোনের স্কুলের খরচ আর বাসা ভাড়া তো আছেই। এখন ছেলেটার পরিবারে কেউ নেই যে কিনা ওই প্যারালাইসড মায়ের ঔষধ খরচ চালাবে আর বোনের স্কুলের টাকা দেবে। এখন হয়তো ওই ছেলেটার মতো মেয়েটাও কোন কাজে লেগে যাবে তার মাকে খাওয়ার দেওয়ার জন্য। এভাবেই চক্রাকারে চলে আমাদের পৃথিবী। সবাই খুব মোটিভেশনাল কথা বলে অন্যের খারাপ সময়ে। কিন্তু হয়তো ছেলেটা আজ বেঁচে থাকতো আর কোন একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়ে পারতো তাহলে ছেলেটিও হয়তো এমন মোটিভেশনাল কথা বলতে পারতো।
আসলে মোটিভেশন স্পিস শুনে কোন লাভ হয় না যদি সেটার প্রতিফলন বাস্তব জীবনে করতে পারে। মোটিভেশন স্পিস আসে কোথা'থেকে?
যখন একটি মানুষ কঠোর বাস্তবতার সম্মুখিন হয় এবংং যেকোন ভাবে সেই বাস্তবতা কাটিয়ে উঠে সফল হয় তখন প্রত্যেকটি পরিস্থিতি সম্মুখীন মানুষই হয়ে যায় একজন মোটিভেশনাল স্পিকার।
কাল রাতে হাল্কা চিন্তা করে ঘুমে পড়ি। সকালে মা খুব ডাকাডাকি শুরু করে তাড়াতাড়ি ওঠার জন্য আর কুরআন শরীফ পড়ার জন্য। বুঝতে পারলাম না এতদিন পর হঠাৎ সকাল বেলাই কেমন। যাইহোক উঠলাম। আম্মুর কাছে শুনলাম পাশের বাসার কে একজন মারা গেছে কিন্তু কুরআন শরীফ পড়ার মতো কেউ নাই। শুনে খুব অবাক হলাম পরিবারে কেউ নাই যে কুরআন শরীফ পড়তে পারে? আমি গেলাম যেয়ে দেখি প্রচুর লোকজন। আমি লাশের কাছে যাই। মৃত ব্যক্তি নিয়ে কোন ভয় না থাকায় নিজ হাতেই লাশের মুখের কাপড় সরাই। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গেলাম দেখে। আরে এই তো সেই ম্যানেজার যে কাল রাতে আমার সাথে কথা বলল। কিন্তু ভাগ্যের লেখনে আজ সে খাটিয়ায় শোয়া।
কুরআন শরীফ একলা পড়লে পারতাম না তাই এক ফ্রেন্ড কেও আসতে বলি। তারপর দু'জনে মিলে পড়লাম। তারপর লোকটার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে জানতে পারি সকালে মেয়েকে শশুড়বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে দিয়ে এসে। খাটে বসে পান চেলো তারপর তার স্ত্রী অন্য রুম থেকে পান আনতে গেলে কিন্তু এর মধ্যেই আজরাইল তার দায়িত্ব মানে জান কবজ করে ফেলে।
ভাবা যায় এতটুকু সময়ের মধ্যেই কোন রোগ বা কোন প্রকার সংকেত ছাড়াই কিভাবে একজন সুস্থ মানুষ মারা গেলেন। কার মৃত্যু কখন আসে তা কেউই বলতে পারে না। তাই সব সময়ই উচিত ভালো কাজ করা, দ্বীনের পথে থাকা। আমি প্রথমে শুনে অবাক হয়ে ছিলাম যে তার পরিবারে কেউই কুরআন পড়তে পারে না। তাই ভেবেছিলাম হয়তো লেখাপড়া করেনি। কিন্তু তা না সবাই খুব ভালো শিক্ষিত। এক ছেলে ইউনিভার্সিটি পড়ে অন্য জন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। আর মেয়ে এইচএসসি পাশ কিন্তু বিবাহিত। আমাদের সবারই উচিত কুরআন শরীফ পাঠ করা শেখা যাতে আমরা আমাদের আপন জনের মৃত্যুতে কুরআন শরীফ পাঠ করে তার রূহের প্রতি মাগহেতার কামনা করতে পারি।
আল্লাহ তাকে জান্নাত বাসী করুক। আমিন।
©somewhere in net ltd.