নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেড়াই-পড়ি-লিখি.....

সজল জাহিদ

সজল জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কেন ব্লগার হলাম? (হৃদয়ের দুঃখ গাঁথা!)

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬

অনেককে চিনি বা জানি বা শুনেছি যারা আগে ব্লগার ছিলেন কিন্তু এই ফেসবুক আসার পরে তারা ব্লগিং ছেড়ে দিয়েছেন বা একটু কমিয়ে দিয়ে ফেসবুকে সক্রিয় হয়েছেন, কারণ হিসেবে আমার যেটা মনে হল, সেটা হল ফেসবুকে পাঠকের সাথে লেখকের যোগাযোগটা সরাসরি হয় বা লেখার ভালো-মন্দটা তাৎক্ষণিক জানা যায়, সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ যেটা সেটা হল, একটি লেখাকে কোন পাঠক কোন দৃষ্টিতে দেখছেন সেটা উপলব্ধি করা যায় অনেকটাই, যেটা ব্লগে একটু কম!

সে যাইহোক, আমি ফেসবুকেই একটু-আধটু লিখতাম নিজের ভাবনা গুলো আর মনের মাঝে জমে থাকা কিছু গল্পর মত করে, অবশ্যই অসংখ ভুল বানান আর অগোছালো শব্দ কথায় আর ফালতু উপমায়। তো এইসব লেখালেখির এক পর্যায় একটা গল্প লিখলাম মনের মাধুরী মিশিয়ে বেশ রোমান্টিক ধরনের নাম “হঠাৎ করেই প্রেমে পড়া” তো সেই গল্পটি আমার কোন এক ফেসবুক বন্ধুর (মেয়ে) প্রোফাইল ফটোর সাথে হুবহু মিলে যাওয়াতে তিনি আসলেই অনেকটা প্রেমে পড়ে গেলেন! (অবশ্যই লেখাটার, আমার নয়!) অন্তত সেই গল্প পড়ে তার কমেন্ট তেমনই ছিল!

সেই গল্প এবং তার কমেন্ট পড়ে আমার বউয়ের মাথা নষ্ট, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ, অফিসে আর যায়না, সারাদিন-রাত শুধু কাঁদে আর কাঁদে! মনে করেছে আমি বোধয় আসলেই সেই বন্ধুর প্রেমে পড়েছি এবং সেও আমার! আসলে কিছুই না, সত্যিই কিছুনা, শুধুই বন্ধু তাও এই ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ কারণ সেই বন্ধু বাংলাদেশেই থাকেনা! সে যাই হোক এরপর ফেসবুক Deactivated করতে হল, সেই বন্ধুকে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে বাদ দিতে হল আর আমাকে লেখা-লেখি ছাড়তে হল!

কিন্তু ইদানিং এই লেখালেখি আমার অন্যতম ভালোলাগা বা ভালোবাসা হয়ে উঠেছে সেটা আমার বউকে কিভাবে বোঝাই? কিছু মনের ভাবনা বা জমে থাকা গল্প গুলো লিখতে না পারলে হাঁসফাঁস লাগে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে, কারো সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারিনা, সব সময় একটা চাপা কস্ট বুকের ভেতর বয়ে বেড়ানো! কারণ আজ থেকে ১৫ বছর আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে বা জীবন চালাবার মত যোগ্য করে তারপর লেখালেখিটা শুরু করবো, কারণ লেখা-লেখি দিয়ে মনের তৃষ্ণা মেটে ঠিক-ই কিন্তু পেটের বা জীবন-যাপনের প্রয়োজন তো আর মেটেনা! তো সেই লালিত স্বপ্ন মিলিয়ে যাবে? লিখতে পারবোনা? এই ভেবে-ভেবে নিঃশেষ!

অবশেষে এক ফেসবুক বন্ধু আমাকে ব্লগের ঠিকানা দিল আর আমি লিখতে শুরু করলাম... এখন বেশ ভালো আছি, অনেকটা আরাম পাচ্ছি আর আমার নতুন ভালোবাসা এই লেখালেখি সেটাও করতে পারছি, নিজের মত করে...... ও হ্যাঁ যে গল্পটার কারণে এতো কথা, সেই গল্পটা পাঠককে পড়াতে চাই, যদি আপনাদের সময় থাকে.........

হঠাৎ করেই প্রেমে পড়া......!!

আচ্ছা শুধু হাতের মেহেদী দেখে বা চোখের চাহুনিতেই কারো প্রেমে পড়া যায়! অথবা কপালের ছোট্ট একটি টিপ দেখে! বা অগোছালো, এলোমেলো চুল দেখে! কি জানি? এভাবেতো ভাবিনি কখনো।

চেনা জানা তো সেই কবে থেকেই! কখনও প্রেমে পড়ার মত মনে হয়নি, বা সেভাবে আকর্ষণ করেনি, তবে হ্যাঁ তার ভদ্রতা, মিষ্টতা, কণ্ঠের মিহিতা ছিল চোখে পড়ার মত, তারপরও প্রেমে পড়ার মত নয়, আদৌ নয়।

চেনা জানাও তো বেশী দিনের নয়, এই চার বা ছয় মাসের, কথা বার্তাও তেমন নয়, দুই-একটা টুকটাক, একেবারেই প্রয়োজন না হলেই নয়, সেও সপ্তাহে দুই বা একদিন। তার আর আমার ব্যাক্তিগত স্ট্যাটাসও একই রকম, সুতরাং প্রেম বা অন্যকিছুর প্রশ্নও কখনো উদিত হয়নি, তার চেয়েও গুরুত্তপূর্ণ হল, শেষ মেশ সেও বহু দূরে আর আমিও, যোগাযোগ আর কথোপকথন এই আজকালকার প্রচলিত ফেসবুকে, সেও কদাচিৎ এবং খুবই ক্ষীণ বা নগন্য। সে যাই হোক, প্রেমে পড়াতে ফিরে আসি!

শুধু মাত্র চোখের চাহুনিতেও যে মনের মাঝে এমন ঝড় উঠতে পারে, হৃদয়ে বয়ে যেতে পারে মাতাল হাওয়া, চোখ হয়ে যেতে পারে ছানাবড়া বা চোখের পলক ঘোরানো হয়ে পারে এতো দুঃসহ! কখনই ভাবিনি! মনে হল পৃথিবীতে আর কিছু না দেখলেও চলবে, শুধু ওই চোখের চাহুনিতে চোখ রেখেই মিটে যাবে সব তৃষ্ণা, ঘুচে যাবে সব হাহাকার, মুছে যাবে সব কষ্ট, মিটে যাবে সব আকুলতা, কেটে যাবে এই জীবন, আর কিছু না থাকলেও চলবে, শুধু থাকুক ওই চোখের ওই চাহুনি, আমার দিকে তাকিয়ে, এভাবেই, অনন্তকাল ধরে......

আর কপালের মাঝে ছোট্ট লাল টিপ, সে যেন আমার রক্ত বিন্দু দিয়ে আঁকা তার সাঁজ ও সুন্দরের অনুষঙ্গ! যেন তার চাওয়া একফোঁটা রক্ত বিন্দু, আমার হৃদয়ে আঁচড় দিয়ে তুলে নেয়া তার অনিন্দ সুন্দর নখের আঁচড়ে! সেও এক সুখ! ভিন্ন আবেশ, আঁচড় না যেন আলতো ছোঁয়া, রক্ত না যেন, তার জন্য জমে থাকা ব্যাকুলতা! যা শুধু তার আঁচড়ের অপেক্ষাতেই ছিল, বহু কাল ধরে, অধীর অপেক্ষায়, তার আঁচড় আর আদর মাখা ছোঁয়ার! হোক, তাই হোক, সে সাজুক, খুশি হোক, উচ্ছ্বসিত হয়ে সুখের ডানা মেলুক, সেজে আমার রক্ত বিন্দু দিয়ে! এ সুখ একান্তই আমার, কেউ বুঝবেনা...! বোঝাবার নয়ই যে!! এ এক অপার্থিবতা, আমার পার্থিবতায়!

তার ঝলমলে অগোছালো চুলে যেন, আমার আবাস! বুক ভরে নেয়া নিঃশ্বাস! নিজেকে খুঁজে ফেরা, তার দীঘর কালো চুলের অরণ্যে! গন্ধে মাতাল হওয়া! ইচ্ছে করেই হারিয়ে যাওয়া! হাত দিয়ে গালে ছোঁয়াই, মুখে ছোঁয়াই, চোখে ছোঁয়াই! চুল তো নয় যেন রেশম পালক! শুধু ছুঁয়ে আর গন্ধ নিয়েই নিঃশেষ হয়ে যাই! হারিয়ে যাই অনিঃশেষিত সুখের আরন্যে!

তার মেহেদী রাঙা হাত আজ সেজেছে আমার আনন্দ হয়ে, প্রাপ্তি আর পূর্ণতা হয়ে, মেহেদীর প্রতিটি আঁচড় যেন আমার কথা বলে, আমায় কাছে টানে, আমার মাঝে বিলিন হবার একান্ত বাসনার কথা বলে! মেহেদীর এক-একটি বাঁক যেন আমার ভালোবাসার এক-একটি ক্ষণ-মুহূর্ত-দিন-সপ্তাহ-মাস! এক একটি ফুল যেন আমার ঠোঁটের আলতো ছোঁয়ার শতসহস্র মুহূর্ত! তার হাতে সে যেন এঁকে রেখেছে আমায়! মেহেদীর রঙে রাঙিয়ে! যখন খুশি তখন দেখবে বলে! আর ছোঁয়াবে তার গালে, আলতো করে, আমার ছোঁয়া পেতে!

সে গান শোনাবে কণ্ঠে নয় হাতের চুড়িতে, যেন বিলুপ্ত না হই, কণ্ঠে যে তার এতই মায়া, আদর আর আকুলতা মাখা, সুর যেন নয়, বিলীন হবার বিষ! তাই তো কণ্ঠে নয়, দু হাত ভরা কাঁচের রেশমি চুড়িতে! থাকি যেথায়, যখনই, ছুটে আসি তার চুড়ির ছন্দে, মোহময় আনন্দে, উম্মত্ত আর উন্মাদ হয়ে.........

সবই তো ঠিক ছিল, ছিল স্বাভাবিক, যথাযথ, নিয়মিত আর আমিষ-নিরামিষের মিলমিশ, হঠাৎ একি হল? কোথায় গেল মন আমার, চুরি হল প্রান আমার, বোধ হল নির্বোধ, আমি হলাম উন্মাদ!

শুধুই তোমার চুড়ির ছন্দে? চুলের গন্ধে? টিপের আকর্ষণে আর চোখের চাহুনিতে! এ দায় কার? আমার, আমার চোখের? মনের নাকি তার...! তার সাঁজের, চোখের, টিপের, মেহেদী আর চুড়ির......?

ও হ্যাঁ ব্লগার হওয়ার পুরো গল্পটা কিন্তু এখানেই শেষ নয় মিশে আছে আরও একটি গল্প ও নাম “ঝড় তুলবো হৃদয়ে তোমার” তো এই গল্প পড়ে আসলেই কারো হৃদয়ে ঝড় উঠেছিল! তাই প্রায় ছেড়েই দিতে হল ফেসবুক ও বন্ধুদের! সেই গল্পটা অন্যদিন!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫

মুরাদ খান বলেছেন: সে যাই হোক এরপর ফেসবুক Deactivated করতে হল, সেই বন্ধুকে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে বাদ দিতে হল আর আমাকে লেখা-লেখি ছাড়তে হল!!


আহারে।
ব্লগিং এ স্বাগতম ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯

সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:১৮

প্রামানিক বলেছেন: ভাই সন্দেহ থেকে দাম্পত্য ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে। ফেসবুকে যে সব কমেন্ট থাকে স্বামী স্ত্রী যদি খোলামেলা না হয় উভয়ের মধ্যে বা একজনের ভিতর যদি সন্দেহের বাতিক থাকে তাহলে সর্বনাশ। ঘটনা বাস্তবে কিছুই না অথচ সন্দেহ থেকেই দাম্পত্য অশান্তি শুরু হয়। ফেসবুক থেকে ব্লগ অনেকটা নিরাপদ। আপনার লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২২

সজল জাহিদ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনি ঠিক বলেছেন আর এই নিরাপত্তা এবং লেখালেখির স্বাধীনতার জন্যই ব্লগিংকে আপন করে নেয়া।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: স্বাগতম ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৪

সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩

সুমন কর বলেছেন: আপনার গল্পটি তো সে রকমই ( আপনার স্ত্রীর সন্দেহ ) লাগছে !! =p~ হাহাহাহা.......

শুভ ব্লগিং...........

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮

সজল জাহিদ বলেছেন: হ্যাঁ আমি আমার গল্পটি ভালোভাবে পড়েছি এবং মেনেও নিয়েছি লেখাটি একটু বেশী-ই রোমান্টিক হয়ে গেছে এবং এতে যে কোন নরম মনের আবেগ প্রবণ মেয়েই একটু অন্যরকম ভাববে বা ভাবতে বাধ্য হবে, কিন্তু আমার বউয়ের কাছে আমার যুক্তি ছিল আমি যদি এই গল্পটাকে আড়াল করতে চাইতাম তবে নিশ্চয়ই পাবলিক পোস্ট করতাম না, হয় Customized পোস্ট করতাম অথবা আমার বউকে Invisible রাখতাম, তাইনা? এটা অবশ্য আমার বউ বুঝেছে বা মেনে নিয়েছে, তারপরও কথা রয়ে গেছে.........!! হা হা হা। তবে হ্যাঁ আপনাকে ধন্যবাদ।

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: লেখা জন্য ফেসবুক থেকে ব্লগ অনেক ভালো। নিরাপদই শুধু নয়, এখানকার মন্তব্য ফেসবুকের মতো, "জটিল হইছে বস", "যা লিখছেন", "কেম্নে পারেন" টাইপের নয়, যেগুলো আপনার লেখাকে উন্নত করবে আরও। আর মিথস্ক্রিয়ার ব্যাপার আছে- অনেক লেখকের মাঝে জায়গা করে নেয়ার ব্যাপার আছে, সব মিলিয়ে ফেসবুকের চেয়ে ব্লগ হাজার গুন ভালো

১২ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:১৭

সজল জাহিদ বলেছেন: সহমত ভাই, অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.