নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেড়াই-পড়ি-লিখি.....

সজল জাহিদ

সজল জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি ও কক্সবাজার...(ভ্রমণ ভাবনা)

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০১


সবাই বলে শীতকাল বা শুকনো মৌসুম নাকি কক্সবাজার ভ্রমণের আদর্শ সময়। গরমে নাকি বীচে যাওয়া যায়না, বালুর উত্তাপে দাড়িয়ে থাকা দায়, সমুদ্র উপভোগ তো দূরের কথা! আর বৃষ্টিতে নাকি কক্সবাজারের অফ সিজন!

আমি সব মৌসুমেই কক্সবাজারের গিয়েছি। আমার কাছে শীতে কক্সবাজারকে মনে হয়েছে বস্তি! মানুষের ভিড়ে হাটা যায়না, একদণ্ড কোথাও চুপচাপ বসা যায়না, মন খুলে ঘুরে-বেড়ানো যায়না, চারদিকে মানুষের গিজগিজ আর গিজগিজ। শীতকাল তাই কক্সবাজার উপভোগের জন্য কিছুতেই আদর্শ হতে পারে বলে আমার মনে হয়নি কখনোই!

আর গরমে কক্সবাজার? সে অন্তত শীতের চেয়ে ভালো! লোকজন কম থাকে, হোটেল-মোটেল আর খাওয়ার খরচও কমে যায় অনেক অনেক, নির্দ্বিধায় আর নির্জনে সমুদ্রকে দেখা যায়, যায় দূর থেকে ওর গর্জন শুনে ওকে অনুভব করা, তাই গরমে কক্সবাজার যাওয়া কিছুতেই নিরুৎসাহিত করার বা হবার মত কোন কারণ হতে পারে বলে মনে হয়না। আর বীচর তপ্ত বালুর কথা ভাবছেন? উত্তপ্ত রোদে কমনীয় ত্বকের পুড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত?

তবে খুব ভোরে বীচে যান, স্নিগ্ধ সকালের নির্মল বাতাস গায়ে মেখে উপভোগ করুন উচ্ছ্বসিত সমুদ্র, ওর অবিরাম আছড়ে পরা ঢেউয়ের মাতলামি-পাগলামি, পা ছোঁয়ান নরম আর ভেজা বালুতে, অনুভব করে দেখুন ওর শীতলতা? দেখবেন শিহরণ জাগবে মনে আর প্রানে! মাতাল হবেন, হবেন আকুল ওর এমন আহ্বানে! এরপর আবাসে ফিরে যদি থাকে সুইমিং পুল আপনার হোটেল বা মোটেলে, নিজেকে সপে দিন পুলের মায়াবী নীল নীল জলে! আর কান পেতে শুনুন, উপভগ করুন অদূরে অবিরাম গর্জন তোলা সুমুদ্রের সাতকাহন!


তারপর খেয়েদেয়ে বিশ্রাম নিয়ে, হেলে-দুলে সময় গনগনে দুপুরটাকে কাটিয়ে আবারও বেরিয়ে পড়ুন সমুদ্রের আশে পাশে ছায়া ঘেরা নির্জনতায়, অপেক্ষা করুন হেলে পরা সূর্যের। রোদ কমে নরম হলে, আবারো চলে যাওয়া যাবে সমুদ্রের একদম কাছে, ঢেউয়ে ভাষা দুরত্তে! উজাড় করেদিন নিজেকে গোধূলির মায়াবীটানে। উপভোগ করুন উত্তাপহীন বীচের, কোমলতা আর বর্ণিল সন্ধার কমনীয়তা! যতক্ষণ খুশি, ততক্ষণ, হেটে-বসে বা ভিজে ভিজে!

এসবের চেয়েও আমার কাছে সমুদ্র দেখা, উপভোগ করা আর মনের মত করে সমুদ্রকে পাওয়া মনে হয় বৃষ্টিতে, মেঘলা দুপুরে, ঝড় ওঠা বিকেলে, দমকা হাওয়ায় উড়িয়ে নেয়া সন্ধায়, আকাশ ভেঙে নামা বৃষ্টিতে অথবা অঝোর ধারায় ঝরতে থাকা নিকষ কালো রাতে! সমুদ্রের এইসব সময়ের রূপ আসলেই অপরূপ! রোমাঞ্চকর, গা ছমছমে আর ভয়ংকর সুন্দরের অবিরাম আশীর্বাদ!

কালো হয়ে আসা মেঘের সাথে হালকা বৃষ্টি আর একটু ঝড়ো হাওয়ায় সমুদ্রের যে উত্তাল রূপ! যা শিহরণ জাগায় সমস্ত সত্তায়, শেষ বকেলের ঝড়ো হাওয়ায় ওর ভয়াল গর্জন মনে ভঁয় জাগাবে ঠিকই কিন্তু আপনাকে আটকে রাখবে চুম্বকের মত ওর কাছে। ভঁয়ে ভঁয়ে পিছিয়ে যাবেন কিন্তু মন যেতে চাইবেনা কিছুতেই ওকে ছেড়ে! ওর অদ্ভুত বীভৎস সুন্দর! রূপ দেখে!


আর আকাশ ভেঙে অঝোর ধারায় ঝরতে থাকা বৃষ্টি দেবে আপনাকে অন্য আনন্দ। হোটেলের বেলকনিতে বসে-বসে, গা এলিয়ে দিয়ে, চেয়ে থাকা উত্তাল ঢেউয়ের আছড়ে পরা সমুদ্রের দিকে, কান ফাটানো গর্জনের সাথে দরাজ গলায় গেয়ে ওঠা খুব খুব খুব প্রিয় কোন গান! নিজের অজান্তেই? ডান হাতে ধোঁয়া ওঠা গরম কফির মগ! বাম হাতে প্রিয়জনের নিশ্চিত আর নিখাদ ভালোবাসার হাত! সে হতে পারে ছেলে-মেয়ে-বন্ধু, প্রিয় কেউ বা প্রেয়সীর সাথে কাটানো অপার্থিব মুহূর্তগুলো?

যা সারাজীবন আপনার মনের কোনে জ্বলজ্বল করবে সুখের শুকতারা হয়ে! শত দুঃখ-কষ্ট আর বেদনাতেও হবেনা মলিন বা বিলীন এতটুকু! তাই চলুন শীত বা অসহ্য গরমে নয়, এবার আমরা সমুদ্র উপভোগ করবো ঢেকে যাওয়া কালো মেঘে, দমকা হাওয়াতে, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে আর রাতভর ঝরতে থাকা অঝোর ধারায় সমুদ্রের অবিরাম গর্জনের কান ফাটানো সৈকতে!

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৮

মহা সমন্বয় বলেছেন: আমার কাছে শীতে কক্সবাজারকে মনে হয়েছে বস্তি! মানুষের ভিড়ে হাটা যায়না, একদণ্ড কোথাও চুপচাপ বসা যায়না, মন খুলে ঘুরে-বেড়ানো যায়না, চারদিকে মানুষের গিজগিজ আর গিজগিজ। শীতকাল তাই কক্সবাজার উপভোগের জন্য কিছুতেই আদর্শ হতে পারে বলে আমার মনে হয়নি কখনোই!

খারাপ বলেননি, আমিও অফ সিজনে সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার,গিয়েছি কুয়াকাটাও গিয়েছি তিনবার সবই অফ সিজনে সে এক অন্যরকম মজা অন্য রকম ফিলংস। নিখাদ প্রকৃতির অপরুপ শোভা উপোভোগ করা যায়।
আমার মনে হয় যারা সত্যিকারের এ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় তারা যেন- ঝড় বৃষ্টির দিনে, উত্তাল সাগরে সেন্ট মার্টিন,সুন্দরবন বা কোন দ্বীপ ভ্রমন করবে। যদিও তাতে দুর্ঘটনার সম্ভবনা আছ তবুও বলব এর প্রতি পরতে পরতে রয়েছে এ্যাডভেঞ্চার আর রোমঞ্চকর সব অনুভূতি। যে অনুভূতি টাকা দিয়ে কিনতে পাওয়া যাবে না। B-))

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৮

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, একেবারেই ঠিক। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১০

আমি এ আর বলছি বলেছেন: some days ago i was visited that place

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১১

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: যতবার গিয়েছি কখনো খারাপ লাগেনি। সময় পেলেই যাই
ধন্যবাদ,ভাল থাকুন।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮

সজল জাহিদ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮

প্রািন্ত বলেছেন: আমি গত ২০১৫ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে কক্সবাজারে গিয়েছি। খুব ভাল লেগেছে। সকাল ৬ টায় সমুদ্রে গোসল করেছি, সন্ধ্যা ৬ টাতে সমুদ্রে গোসল করেছি। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। খুব ভাল লেগেছে। মনে হয় এবছর গরমে আবারও চলে যাই। অধিক ভীরে ঠাসা জায়গা মানুষের প্রকৃত বিনোদন স্থান হতে পারে না। তাই মানসিক প্রশান্তির জন্য গরমকালে কক্সবাজার ভ্রমনের আদর্শ স্থান।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

সজল জাহিদ বলেছেন: হুম, ধন্যবাদ।

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪

পুলহ বলেছেন: আমার খুব ইচ্ছা আছে, বিশেষ কইরা বর্ষাকালে হিমছরি পাহাড়ের উপর থিকা সমুদ্র দেখার!
যথারীতি চমৎকার বর্ণনা। ভালো লাগলো ভাই।
শুভকামনা!

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, অনেক ধন্যবাদ। চলেন যাই একবার?

৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
খুব ভাল্লাগলো পড়তে, দৌড় দিতে ইচ্ছা করতেসে।
আমি মাত্র ১বার গেসি ||

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা। ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। চলে যান, ঘুরে আসুন।

৭| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯

বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।
+++

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮

সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ, ধন্যবাদ

৮| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২৮

আমিই মিসির আলী বলেছেন: যাওয়ার ইচ্ছা পোষন করে আছি।
সময় হৈতাছে না......

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯

সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ। চলে যান, ঘুরে আসুন

৯| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২৯

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আমি যেখানে থাকি তার তিন দিকেই সাগর। সাগর দেখতে দেখতে এখন পুকুরের মতই লাগে ;)

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:০০

সজল জাহিদ বলেছেন: হুম কুয়াকাটা ও আমার কাছে পুকুরের মত লাগে। আর এমন জায়গায় বসবাস হলে এমন লাগতেই পারে স্বাভাবিক ভাবেই। তো আপনি কোথায় থাকেন জানতে পারি কি? অবশ্য যদি আপত্তি না থাকে।

১০| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: বিদেশে সাগর পাড়ে থাকি । অনেক বড় এক বিচে অনেক সুন্দর কয়েক হাজার নিয়ন বাতির লাইটে বিচ যেন বিচই সুন্দর সাগর নয়। তার পরেও মরুর পারের সাগর সপ্তাতে ২ /২ তিন দিন যাই। সখ মাছ ধরা হুইল ফেলে বসে থাকি । মাঝে মধ্যে ২/১ টা মাছ ধরে নিয়ে আসি । তারপরও স্বদেশি সাগর সেই কক্সবাজার ভুলতে পারি না।যতবার দেশে গেলাম ততবার গেছি । সময় বা সিজন বলে কথা নয়।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:০১

সজল জাহিদ বলেছেন: হুম, ভালো বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ।

১১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:০৮

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
সময়-সুযোগ হয়না ভাই ||

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:১২

সজল জাহিদ বলেছেন: সময় করতে হবে ভাই, এক জীবনে যতটুকু সম্ভব পৃথিবীটাকে উপভোগ করতে চাই আমি। সময় বের করতে চাইলেই হবে বলে আমার বিশ্বাস। ভালো থাকুন।

১২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কক্সবাজার কখন্ও যাওয়া হয়নি আপনার এমন বর্ননা শুনে খুব যেতে ইচ্ছে করছে

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২১

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, যান বেরিয়ে আসুন সময় করে। ভালো থাকুন, অনেক ধন্যবাদ।

১৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

প্রািন্ত বলেছেন:


১৬ মে ২০১৫। আমি এবং সহকর্মী সাংবাদিক বন্ধুরা।

১৪| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভাল পোস্ট। +++

২০১০ সালের দিকে সমুদ্রে চার নম্বর বিপদ সংকেতের রাতে সাম্প্রতিক সময়ে সরিয়ে ফেলা সৈকত তীরবর্তী বাঁশের রেস্টুরেন্ট "এঞ্জেল ড্রপ" এ ঝড়ো হাওয়ায় রাত দশটা পর্যন্ত বসে ছিলাম। অসাম অনুভূতি। ভিজেছি বর্ষায় কাট্টলি আর পারকি সমুদ্র সৈকতে। আসলেই অন্যরকম।

ধন্যবাদ এই বিষয়ে পোস্ট দেয়ার জন্য। ভাল থাকুন সবসময়। শুভকামনা রইবে।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৪৬

সজল জাহিদ বলেছেন: হুম, অনেক ধন্যবাদ। আপ ঠিক বলেছেন, আর আমার অনুভূতি? সেতো জানলেনই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.