নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেড়াই-পড়ি-লিখি.....

সজল জাহিদ

সজল জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি রাম ছাগল বা বলদের আত্ন-কাহিনী..!!!

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪


অনেক গল্পই তো বলা হল বিভিন্ন রঙ ও ঢঙের। আজ একেবারেই একটি ভিন্ন ধরনের গল্প বলি...?

বলদ, সাধারনত অফিস শেষে বাজারে যেতে পছন্দ করেনা, যদিনা বাসার বিশেষ কোন প্রয়োজন না থাকে, আর যেদিন সে ফরমাল পোশাকে অফিসে যায়!

কারন, ফরমাল পোশাকে অফিসে গেলে আর সেই পোশাকেই বাজারে গেলে যেটা হয়....

আয়রন করা জামা-প্যান্ট ঘামে ভিজে চুপচুপে হয়ে যায়, মাছের পানি ছিটে আসে, বস্তার নোংরা গায়ে ঘেসে যায়, ঠেকাতে পারেনা শত চেস্টাতেও! সেই জামা-প্যান্ট পরদিন আর অফিসে পরে জাওয়া যায়না কিছুতেই।

উহ, আজকাল আয়রনের যা দাম নিচ্ছে, ৭ টাকা পিছ! তার মানে জামা আর প্যান্ট মিলিয়ে ১৪ টাকা! ভাবাই যায়না। তাই একটা জামা-প্যান্ট বলদ দুদিন পরে, ঠিক দুদিন। কিন্তু বাজারে গেলে এক জামা-প্যান্ট আর দুদিন পরা যায়না।

জামা আর প্যান্ট নাহয় মানতে পারে সে, কিন্তু চকচকে পলিশ করা জুতায় কাদা লাগবে, মাছের আস্টে গন্ধ পানি পড়বে, অন্যরা সেই চকচকে জুতোয় নিজের মনে করে ইচ্ছেমত মাড়িয়ে যাবে, সে কিছুতেই মানতে পারেনা বলদ, জামা-প্যান্ট নাহয় ৭+৭=১৪ টাকায় হয়ে যায় কিন্তু জুতো পলিশ করতে আজকাল ৩০ টাকা লাগে যে!! যেটা অবিস্বাশ্য লাগে বলদের কাছে।

তাই খুব চেস্টা করে বলদ যতটা কম ফরমাল পোশাকে অফিসে যেতে পারা যায়।
আর বাজার করার কথা থাকলে তো পারলে সেদিন অফিসে যায় টি-শার্ট আর জিন্স!

কিন্তু আজ? বাসার কোন দরকার ছিলোনা, তোমন কোন কাজও ছিলোনা, তবুও কেন যেন বাসার গেটে না নেমে, বেশ দুরে বাজারের কাছে নেমে পড়লো অফিসের গাড়ি থেকে...!

একটু বাজারে যাবে বলে! অথচ বলদ আজ পুরো ফরমাল পোশাকে অফিসে গিয়েছিলো...!

গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে শুরু হলো টিপটিপ বর্ষা। তাই বাজারে না গিয়ে দাড়িয়ে রইলো এক দোকানের পাশে। যে দোকানের পানি গড়িয়ে পড়ছে বলদের আয়রন করা জামা-প্যান্ট আর পলিশ করা চকচকে জুতোয়! রাস্তা থেকে ছিটে আসা কাদায় মাখামাখি হতে লাগলো সবকিছু!

তাই বলত আর দেরি না করে বাসার পথ ধরলো....

কিন্তু ওইযে বলদ বলেছি, সেটি শতভাগ প্রমাণ করতে তাই সে, রিক্সা না নিয়ে পায়ে হাটা শুরু করলো অফিসের ব্যাগ মাথায় দিয়ে কিন্তু ভিজে ভিজেই! ২০ টাকা বাচাতে.....!

এরপর কাদা মাড়িয়ে, হোচট খেয়ে, পিছলে পড়ে, রিক্সা আর গাড়ির ধাক্কা খেয়ে, জুতো জোড়াকে কোন মতে পানিতে ডুবতে না দিয়ে এগিয়ে চলেছে বাসার দিকে।

কিন্তু সোজা রাস্তায় না গিয়ে শর্ট কাট পথ ধরলো গলি ঘুপচির মধ্য দিয়ে, সে যে বলদ বা একটা রাম ছাগল সেটা প্রমান করতে....!

কারন কিছুদুর এসেই সামনে পড়লো বিশাল এক ড্রেন, যেটার স্রোত নরমাল সময়ই বেশ ভয়ংকর আর সব রকমের মল মূত্র বা আবর্জনা তো অতি স্বাভাবিক ভাবেই প্রবাহমান।

আর বেশ অনেহ্মন থেকেই বয়ে চলা ঝড় ব্রিস্টির পানিতে ড্রেন এখন উত্তাল! কিন্তু উপায় নেই আর এখান থেকেই যেতে হবে।

অতি সন্তোর্পনে পা বাড়াতে বাড়াতে প্রথমে জুতো ডুবে গেল মলের জলে! ইটের খোচায় হুমড়ি খেয়ে পড়লো মহাগন্ধ যুক্ত কালো পানিতে, এতোহ্মনে নিজেকে নিজে গাল দিতে লাগলো, মাথায় চাটি মারলো কয়েকটা আর থাপ্পর বসালো নিজের গালেই নিজে....!

কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আবার কোন রকমে সেই পচা, গন্ধযুক্ত পানি থেকে উঠে পা বাড়াতেই পিছলে পড়লো গভীর ড্রেনে...!!

এরপর কি হতে পারে আপনারাই ভাবুন.....?

রাগে গজ্রে নতুন মোজা খুলে ছুড়ে মারলো সেই ড্রেনে, জামা-প্যান্ট দিতে হল লন্ডিতে, সাধের পলিশ করা চকচকে জুতো ঠিক করে কালি করে দিতে মুচির কাছে! আর গায়ে মাথায় সাবান-শ্যাম্পু ঘসতে হল বহুবার আর সময় ধরে.....!

সব মিলে গচ্চা, একটি সুন্দর সন্ধা, বাসায় করে রাখা মচমচে পিয়াজুর স্বাদ, ধোয়া ওঠা কফি, প্রিয় নজরুল সঙ্গিত আর প্রায় ৫০০ টাকা....!!!

তা একে বলদ বা রাম ছাগল না বলে আর কি বলা যায়......??

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩০

মোঃ আক্তারুজ্জামান ভূঞা বলেছেন: মাঝে মাঝে বলদ হয়ে থাকা ভালো।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৫৫

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, ভাালো বলেচেন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.