নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাগল, মাতাল নাকি সদ্য নেশাগ্রস্থ!
তাই তো? এমন হাস্যকর, উদ্ভট আর অবাস্তব কথা বললে তো মানুষ তাই-ই বলবে।
আচ্ছা, সে যে-যা বলবেন বলুন, সেটা আপনার ব্যাপার, যার-যার ভাবনা, কারো ভাবনাকে তো আর কেউ আটকাতে পারবেনা।
তাই আমার ভাবনাটাও আমার, শুধু লিখে প্রকাশ করা এই যা।
চলুন, এই অযৌক্তিক আর উদ্ভট ভাবনাটার সাথে যৌক্তিক কয়েকটা কারণ দেখি? কি বলেন?
আমাদের সময়, এই ধরেন ২০০০ সাল বা এর আশে-পাশে এসএসসি আর এইচএসসি তে দুটি ২য় বিভাগ পেয়েও আমাদের অনেকে দেশের সবচেয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
হ্যাঁ হয়তো তাকে প্রচুর খাটতে হয়েছে, সেই ভর্তি যুদ্ধে সফল হয়ে, গৌরবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য। তার মা-বাবাকেও হয়তো করতে হয়েছে অনেক-অনেক কষ্ট। তবে শেষ পর্যন্ত ছেলে বা মেয়ে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়াতে মা-বাবার সেই কষ্ট অবশেষে সার্থক হয়েছে। সমাজ ও মানুষের কাছে মাথা উঁচু হয়েছে তাদের, বেড়েছে সামাজিক মর্যাদা আর সম্মান!
কারণ কিন্তু তেমন কিছুইনা, শুধু মাত্র সেই মা-বাবার ছেলে বা মেয়ে শুধুমাত্র কোন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে! এই এতটুকুতেই।
আর আজকাল? অনেক মা-বাবাই ছেলে-মেয়ের একই রকম কৃতিত্তে আগের মত আর সম্মানিত হননা, বাড়েনা সামাজিক মর্যাদা, মাথা হয়না উঁচু সমাজ ও সমাজের মানুষের কাছে! বরংচ কোন কোন ক্ষেত্রে মাথা নিচু হতে শুরু করেছে! হেয় ভাবতে শুরু করেছে নিজেকে, কখনো-কখনো অসম্মানিত হতেও দেখা গেছে!
কি অদ্ভুত, একই রকম সফলতা অথচ একেবারেই ভিন্ন রকম অনুভূতি আর অবস্থান কিভাবে হয় বা হতে পারে?
তবে চলুন একটু সময় নষ্ট করে কয়েকটা ঘটনা দেখে আসি, কেন আর কোন কারণে সফলতার এমন অস্বাভাবিক অনুভূতির প্রকাশ ঘটছে?
আজ থেকে ১৫-১৬ বা ২০ বছর আগে স্কুল বা কলেজের সনদ প্রাপ্তির পরীক্ষায় ১ম শ্রেণী পাওয়াই ছিল একটা বিশাল উৎসবের মত ব্যাপার। যে পরিবারের, বাড়ির বা গ্রামের কোন শিক্ষার্থী ১ম শ্রেণী পেয়ে পাশ করতো তাকে মাথায় তুলে রাখা হত। কারণ সে আসলেই যথেষ্ট ভালো শিক্ষার্থী ছিল, সে ব্যাপারে তেমন কোন সন্দেহ ছিলোনা বা থাকতোনা।
কারণ তাকে কষ্ট করে পড়ে, জেনে আর লিখেই সেই ডিগ্রী অর্জন করতে হত। যার পরবর্তী প্রভাব হত, নতুন প্রেরণা, আরও কঠিন অধ্যাবসায়, পরিশ্রম আর পরিশেষে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ। যেটার ফলাফল আরও সুদুর প্রসারী ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরোনোর পরে কষ্ট করে হলেও কোন চাকুরী বা বৃত্তি, ভালো উপার্জন, সবার মুখে আলো ফোটানোর পাশাপাশি দেশের জন্যও ইতিবাচক ফলাফল বয়ে নিয়ে আসতো, প্রত্যক্ষ বা পরোখ্য ভাবে। তাই কোন শিক্ষার্থীর ভালো ফলাফল আর ভালো যায়গায় ভর্তির সুযোগ মানেই একটা মহা সফলতার গল্প। দুই একটি ব্যাতিক্রমি উদাহারন ছাড়া।
আর সেইসব শিক্ষার্থীদের পেয়ে, সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আনন্দিত হতেন। তাদেরকে পড়িয়ে, কারণ তারা সত্যি কারের পড়তে, জানতে আর শিখতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতো। এবং সেটাই করতো। যারা বাউন্দুলে ছিল, তাদের কথা আলাদা। কিন্তু যারা পড়তে আসতো তারা ঠিক-ঠিক পড়তোই।
আর আজকাল, শুধু পাশ-ই করে, ভালো-ভালো (!!) জিপিএ-ই পায়, জানেনা কিছুই! (কিছু সত্যিকারের পরিশ্রমী, সৎ ও প্রকৃত মেধাবী ছাড়া) যার ফলাফল স্বরূপ কোন বিশ্ববিদ্যালয়য়েই আর সুযোগ হয়না তাদের!
অথচ দুই দুইটা গোল্ডেন! জিপিএ ৫! ওয়াও, তবুও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলেনা কেন?
কারণ আজকালকার জিপিএ ৫ বা গোল্ডেন তো আর পরিশ্রম করে, রাতজেগে, কষ্ট করে পড়ে পেতে হয়না! ওটা আজকাল পরীক্ষায় বসলেই পাওয়া যায়!
তাই যদি না হবে তবে কেন ভালো বা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাবেনা?
তার মানে সোজা হিসেব, তারা কিছুই জানেনা, পড়েনি, পরিশ্রম করেনি, আসলে সেখেনি কিছুই!
শিখবে কিভাবে, বা কষ্ট করে পড়ে কি করবে? সব তো আজকাল পরীক্ষার আগেই পাওয়া যায়! প্রশ্নপত্র, তার উত্তর! সমাপনি থেকে শুরু করে বিসিএস পর্যন্ত-ই!
তাই তোমাদের বলি কি, গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে লাভ নেই, ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্ছ্বাস কর। তার আগে নয়!
আর অনেকে তাই ভাবে, শুধু-শুধু কষ্ট করে কি হবে? অত জেনে, খেটে-খুটে কি হবে? যে খাটবে সেতো আর কিছু পাবেনা, কারণ সে পরীক্ষায় যে নম্বর পাবে, যে পড়বেনা সে পরীক্ষার আগের দিন অসদুপায় পাওয়া প্রশ্নপত্র সমাধান করে অনেক-অনেক ভালো স্কোর করবে! সাথে সংবাদ মাধ্যম, সমাজ আর পরিবারের কাছেই সেই অসৎ জনই ভালো বলে বিবেচিত হবে! আর যে পরিশ্রম করবে, সে হবে খারাপ এবং মেধাহীন হিসেবে বিবেচিত!
তাই এসব দেখে-দেখে কিছুটা সৎ ও পরিশ্রমীরাও আর সততায় বা পরিশ্রমে বিশ্বাসী থাকতে পারছেনা, তারাও ধীরে-ধীরে হয়ে উঠছে অসৎ, অসদুপায় অবলম্বনকারী এবং সুবিধাবাদী।
যার প্রভাব পড়ছে সব জায়গায়তেই। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত!
যে কারণে সেদিন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে বড় আক্ষেপ করে বলতে শুনলাম,
“কি সব ছাত্র যে আসছে আজকাল, কিছুই জানেনা! কোন ব্যাসিক-ই নেই ওদের!”
“ফিজিক্স এ পড়তে এসেছে, অথচ একটা সাধারণ অংকও পারেনা!”
“পরীক্ষার খাতায় কিসব লেখে, নাম্বার দেবার কোন যায়গা পাইনা খুঁজে খুঁজেও!”
এরা কিছুই শিখে আসেনি, কিছুইনা! পাশ করলো কিভাবে সেটাই ভেবে পাইনা?
তাহলে ফেল করিয়ে দিন, পড়ে-জেনে তারপর ভালো করে পরীক্ষা দেবে?
“ভাই তাহলে তো চাকুরীটাই থাকবেনা!”
কেন কেন? কৌতূহলী জিজ্ঞাসা?
নারে ভাই ছাত্র মূল্যয়নে ভালো নাম্বার না পেলে আজকাল চাকুরী থাকেনা! তাই বাধ্য হয়েই ভালো নাম্বার দিতে হয়!
একটি ইংরেজি বাক্য ঠিকঠাক লিখতে পারেনা! এরাই নাকি পাশ করে বেরিয়ে আবার কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে! হাহ, তখন কিজে হবে, শিক্ষার হাল আর তার পরের প্রজন্মের কে যানে!
বিধাতা রক্ষা কর...
তো এই যদি হয় অবস্থা, প্রাইমারী থেকে শুরু করে, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ সহ, বিসিএস এর মত দেশ ও সমাজের স্বার্থরক্ষাকারী পরীক্ষা ও নির্বাচনী পদ্ধতির তাহলে আর কি-ইবা আশা করতে পারি বলেন?
কে ধরবে এই হাল, কিভাবে পরিবর্তিত হতে পারে এই অরাজকতাময় অবস্থার?
কে আর কিভাবে করবে এই ভয়াবহতা থেকে আমাদেরকে উদ্ধার?
আর এইসব উপায়ে বড় হয়ে, বেড়ে ওঠা ছেলে-মেয়েদের মা-বাবারা কিভাবে পাবে সম্মান সমাজের সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে আর কিভাবে দাঁড়াবে মাথা তুলে সসম্মানে, গর্বিত হয়ে?
আজ তারা লজ্জিত, হেয় আর অসম্মানিত আমাদের চরিত্র আর অসৎ উপায়ের কারণে, সবারকাছে!
তাই এই থেকে পরিত্রাণের একটাই উপায় আছে বলে আমার মনে হয়, আর সেটা হল......
দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আর এর শিক্ষকরা তো অন্তত এমন নয়, তারা তো নিজেরা কষ্ট করে, মেধা খাটিয়ে, পরিশ্রম করে, দিন-রাত পড়াশুনা করে আজকে সমাজ গড়ার কারিগর হয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই এমন পরিস্থিতিতে পড়ে দেশ ও সমাজ ধংস হয়ে যাক চাইবেননা, চাইতে পারেননা।
আর দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সরকারি/বেসরকারি) পাঠক্রম তো সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধারদের কাছেই রক্ষিত, যার পরিবর্তন-পরিমার্জন-পরিবর্ধনদের ক্ষমতাও তাদের কাছেই।
তাই বলেছি, তারা যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমকে ৪ বছর মেয়াদী না করে ৮ করেন, যেখানে চার বছর মেয়াদী বেসিক কোর্স থাকবে, মূল পাঠ্যক্রমের পড়াশুনা শুরু করার পূর্বে!
হ্যাঁ অনেক সময় লাগবে, আর শিক্ষকদের শ্রম আর সময় অনেক নষ্ট হবে, সেটা ঠিক, কিন্তু দেশটা তো বেঁচে যাবে, আমাদের নিজেদের তৈরি করা ভয়াবহ অজ্ঞতার ভূমিকম্প থেকে, ভেবে দেখুন?
তাই বলেছি...... ৪ বছর নয়,
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম ৮ বছর মেয়াদী করা হোক!
২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:১৪
সজল জাহিদ বলেছেন: আমি আপনার সাথে শতভাগ সহমত। ধন্যবাদ আপনার ভাবনা ভাগাভাগি করার জন্য।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪
Tanveer Hossain বলেছেন: রিফাত হাসান ভাইয়ের কথার সাথে একমত প্রকাশ করছি.
২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৩
সজল জাহিদ বলেছেন: জি আমিও, অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৫
রানা আমান বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমকে ৮ বছর মেয়াদী করার কি খুব একটা প্রয়োজন আছে ? বাড়তি চার বছর মেয়াদী বেসিক কোর্সের খরচ ও সময় উভয়পক্ষের জন্যই (বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্র/অভিভাবক ) বোঝা স্বরূপ । এই বেসিক কোর্সের পাঠ্যক্রম তো স্কুল/কলেজেই শেষ হওয়ার কথা । আপনি হয়তো বলবেন তা হচ্ছে কই ! হচ্ছেনা তা আমিও বলছি কিন্তুু বাড়তি চার বছর মেয়াদী বেসিক কোর্সের খুব একটা প্রয়োজন নেই । বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাদের ভর্তি পরীক্ষার মান বজায় রাখুক , যোগ্যতর রাই ভর্তির সুযোগ পাবে , হয়ত সামান্য কিছু আসন খালি থাকতেও পারে , থাকুক । এ সময়েও, এ নিন্মমানের শিক্ষার (হয়ত এটা শুধুই আমার আশংকা) যুগেও , কিছু মেধাবী মানসম্পন্ন ছাত্র অবশ্যই আছে , তাদেরকে নিয়েই চলুক বিশ্ববিদ্যালয় । অবশ্য এটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বেশি । বরং স্কুল কলেজের শিক্ষাদানের মান উন্নয়ন আর অহেতুক নম্বর বাড়িয়ে ভালো ফলাফল দেখানোর কতৃপক্ষীয় চাপ বন্ধ করাটা বেশি দরকার ।
৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:১৫
সজল জাহিদ বলেছেন: কিছুটা সহমত। অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭
রিফাত_হাসান বলেছেন: আমার মতে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরো কমিয়ে আনতে হবে। এবং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সাবজেক্টের আসন সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। একটা দেশ চালানোর জন্য এত শিক্ষিত মানুষের দরকার নেই। কথায় বলে 'অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্ট'। বাংলাদেশে আমরা সবাই উচ্চশিক্ষিত হয়ে সবাই মাতবর হয়ে গেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় কমিয়ে কারিগড়ি শীক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানো উচিত। যেহেতু বাংলাদেশে জনসংখ্যা অত্যাধিক, এই বিশাল জন সংখ্যাকে উচ্চশিক্ষিত মাতবর না করে কম শিক্ষিত টেকনিকেল মানুষ হিসেবে গড়ে তুললে দেশে উন্নতি হবে।
উচ্চশিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য জ্ঞানের বিকাশ। কিন্তু আমাদের দেশে জ্ঞানের বিকাশ এবং যথাস্থানে তা প্রয়োগ প্রায় শুন্যের কাছাকাছি। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য চাকরী। চাকরী করতে এত শিক্ষার দরকার হয়না। চাকুরীর ক্ষেত্রে তিন মাসের ট্রেনিং-এ মানুষ যা শিখে ১৬ বছরের শিক্ষায় তা শেখেনা। আর উচ্চশিক্ষায় চার বছর পড়েও অনেকে চাকরী পায়না। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এরা যদি চার বছর পড়াশোনা করে সময় নষ্ট না করে ব্যবসা করত, এই চার বছরে কোন না কোন ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলত।
(ভাবনাগুলো অবশ্য একান্তই আমার। কোন তথ্যের ভিত্তিতে কথাগুলো বলিনি।)