নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেবার কলকাতা গেলাম ট্রেনে করে। ভারত যাবার নতুন স্বাদ নিতে। তো পথে যেতে যেতেই অম্ল-মধুর ভ্রমণ নিম তেতো হয়ে গেল! গরম-ঘাম আর নিরন্তর জ্যামে। মানে ট্রেনের সিগন্যাল আর এক এক জায়গায় অসীম সময়ের জন্য দাড়িয়ে থাকার নিদারুণ যন্ত্রণায়!
যে কারণে লক্ষ্য ছিল কলকাতা থেকে ট্রেনে করে শিলং যাবার সেটা বাতিল করতে হয়েছিল, পুরো উদ্যম এক যাত্রাতেই শেষ হবার কারণে। সেই সাথে জুন-জুলাইয়ের কলকাতার গরম! উহ মামা, সেই চামড়া পোড়ানো রোদের উত্তাপ যে বা যারা গাঁয়ে মাখেনি তারা বুঝবেনা।
সেই নিদারুণ গরমের অসহ্য আর অনুউপভোগ্য কলকাতার একমাত্র সস্থি ছিল, রাস্তার মোড়ে মোড়ে হরেক রকম ফলের সালাদ! অন্তত ১০ রকম ফল তো হবেই এক একটা সালাদের প্লেটে! দারুণ স্বাদের আর ভীষণ মন ভোলানো রঙের বর্ণিল আয়োজন! আর দাম? সেই নিতান্তই কম। ১০ রুপীতেও পাওয়া যায় আর ২০ রুপীতেও! স্বভাবতই আমরা ১০ রুপীর দলে। প্রয়োজনে আবার খাব, তাই প্রতিবার ওই ১০ রুপীই ঢের!
প্রচণ্ড সেই ভ্যাঁপসা গরমে দূরে কোথাও যাবার চিন্তা তখন বিলুপ্ত। কাছে পিঠে কোথায় যাওয়া যায় সেটা নিয়ে কিছুটা ভাবিত ছিলাম। হুট করে মনে পড়লো। আরে এতোবার কলকাতা এসেছি গিয়েছি কিন্তু অনেক নান্দনিক আর প্রাচীন ঐতিহ্যের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তো দেখা হয়নি কখনো! যে ভাবনা সেই কাজ।
কোন যুক্তি তর্কে না গিয়েই ঘোষণা করা হল বিকেলে তবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরে দেখা হবে, ধীরে ধীরে আর আয়েশ করে। যেহেতু অন্য কোথাও যাবার কোন তাড়া বা চাপ নেই। সেটাই হল নির্ধারণ। বিকেলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
বিকেলের আগে, শেষ দুপুরে, কলকাতার চিপচিপে গরমে, হোটেল থেকে ধীর লয়ে নামছি। বেশ খানিকটা ফরেনার বেশে! নীল হাফ প্যান্ট-লাল টি শার্ট-হলুদ ক্যাপ-খয়েরি সাইড ব্যাগ-কালো চশমা আর বাদামী আমি! বেশ এক কিংভুতকিমাকার অবস্থা!
নিজের কাছে নিজেই! সুখের সান্ত্বনা বলতে এখানেতো আর পরিচিতজন কেউ নেই যে টিপ্পনী কাটবে! পিছন থেকে ধিক্কারমূলক উক্তি ছুড়ে দেবে বা পচানোর জন্য দল পাকাবে। তাই ডোন্ট কেয়ার মনোভাব নিয়ে ঝলমলে রোদের মাঝে এক রঙিন বাংলাদেশী বাদামী ফরেনারের হেটে চলা!
হোটেলের নিচে নামতে না নামতেই সঙ্গীর আবদার “ট্যাক্সি ধর!” আরে বলে কি? যাবো হেলে-দুলে, হেটে -হেটে, দেখে-শুনে, আর ইনি বলেন কিনা ট্যাক্সি নিতে! ট্যাক্সিতে গেলে তুই যা, আমি যাবনা। আর আমি গেলেও কোন টাকা ভাগাভাগি করতে পারবোনা। এবার সঙ্গী ক্ষান্ত দিল।
ধীরে-ধীরে হাটি আর মোড়ে মোড়ে ফলের সালাদ খাই। এভাবে একে-ওকে জিজ্ঞাসা করে রাইটার্স বিল্ডিং পর্যন্ত এলাম। আর পা চলেনা। গরমে যান-প্রান ওষ্ঠাগত! যে কারনে বাধ্য হয়েই অবশেষে ৮০ রুপীর বিনিময়ে ট্যাক্সি নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। কয়েক চক্কর দিয়েই ধবধবে সাদা পাথরে গড়া স্বনামে খ্যাত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের গেটে।
এবার টিকেট কাটার পালা। ভারতীয়দের টিকেট ১০ রুপী মাত্র। আর বিদেশী হলে ১০০ রুপী। আমরা যেমন চালবাজ তেমনিই করলাম। ১০ রুপীর টিকেট কেটে এবার ভারতীয় সাজলাম! গেটে আটকালো। কাহা ছে অ্যায়া? কলকাতার আশেপাশের কোন একটা জায়গার নাম বলেছিলাম মেদিনীপুর বা মালদহ হবে হয়তো।
কিন্তু পোশাকে তো আর তা বলেনা! অবশেষে আমার সঙ্গী যিনি কিনা আগেই সাধারন ভারতীয় হিসেবে ঢুঁকে পড়েছেন, তিনি এবার উদ্দার করলেন আমাকে, কারণ এখন তিনি আর “লাল মোহন সাদাটার!!” মত কথা বলেননা। তিনি এখন সচল হয়ে আমাকে উদ্ধার করে ফেললেন! কিভাবে?
তিনি সব কিছু শুনছিলেন দূর থেকে, গেটের কাছে এসে গেট ম্যানকে বললেন, ওনার উৎকৃষ্ট কোর্স করা হিন্দিতে...
“আরে ও আদমি, কলকাত্তাকা ল্যাড়কা, লিকেন দিল্লীছে অ্যায়া!!”
এবার গেটের দারোয়ানের একটু বোধোদয় হল, ও আচ্ছা দিল্লীছে অ্যায়া!
মানে দিল্লীর ছেলেরা এমন উদ্ভট পোশাক পরতেই পারে। তাই আর কোন কথা না বলে আমাদেরকে ঢুকতে দিলেন!
সেই থেকে সেই সংক্ষিপ্ত কলকাতা ট্যুরের নাম হয়ে গিয়েছিল......
“কলকাত্তাকা ল্যাড়কা, দিল্লীছে অ্যায়া!!”
এরপর বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ভ্রমণ-উপভোগ আর অনুভব, তবে সেই গল্পটা খুব একটা শালিনতাময় শব্দে লেখা যাবেনা। তাই ভাবছি লিখবো না...!!! মধ্যে পরবেনা তাই দিতে চাইনা!
কারণ খুব একটা সহজ বা সাধু পাঠ যোগ্য ভাবে সেটা লেখা আমার পক্ষে সম্ভব হবেনা। সেখানকার অবস্থা তেমন নয়, বিশেষ করে দৃষ্টি নন্দন বাগান ও এর আশেপাশের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গেলে, উদ্বেল যৌবনা নারী-পুরুষের একে অন্যকে উপভোগের মত অপাঠ্য বিষয় চলে আসবে।
তাই ওটা বাদ...!
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬
সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, আসলে ওই লেখাটা ঠিক শালীন ভাষায় লেখা যাবেনা বা আমি পারবোনা, বেশ রসালো আর কিছুটা অশালীন হয়ে যেতে পারে তাই লিখবোনা, ইমেজ ফ্যাক্টর!! যাইহোক আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০
প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা। ধন্যবাদ
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও।
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭
সাহসী সন্তান বলেছেন: সমস্যা ছিল নাতো? আমাদের ঢাকার বোটনিক্যাল গার্ডেনে গেলে তো অমন হাজারও ফুলটুস ফুলটসির দেখা মিলবে! শুরুতে ১৮+ ট্যাগ দিয়া ছাইড়া দেবেন, তারপর যেখানে গিয়ে বাঁধে! আপনার ভিক্টোরিয়া ভ্রমনের কাহিনী শোনার প্রতিক্ষায় রইলাম (শেষটাতে কৌতুহল না রাখলে কইতাম না)!
ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য! শুভ কামনা জানবেন!
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬
সজল জাহিদ বলেছেন: যা বলেছেন..., ধন্যবাদ।
৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৫
আমিই মিসির আলী বলেছেন: পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো সাথে মজাও পাইলাম।
ভ্রমন জারি রাখিয়ে....
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৭
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১১
মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার লেখনী ।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৭
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৪
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আপনার ভ্রমণ রম্য ভালো লেগেছে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৮
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪৫
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সরস বর্ণনা। ধন্যবাদ সজল জাহিদ।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫
সজল জাহিদ বলেছেন: Thanks a lot
৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩০
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: ভ্রমণ রম্য ভাল্লাগছে। তয় একটু কৌতুহল থাইকা গেল আরকি!
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪
সজল জাহিদ বলেছেন: Ha ha ha, thanks। lets see what next।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩২
অনর্থদর্শী বলেছেন: রসিকতাটা বেশ সুন্দর করেন আপনি। খুব ভালো লাগলো। তবে "যৌবন উদ্বেল নারী-পুরুষের একে অন্যকে উপভোগ" কে অপাঠ্য বলার মতো বেরসিক মানুষ তো আপনি নন সজলভাই।