নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেড়াই-পড়ি-লিখি.....

সজল জাহিদ

সজল জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গা ইস্যু ও আমার ভাবনা......

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

বেশ কিছুদিন থেকে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক আর প্রিন্ট মিডিয়াতে রোহিঙ্গা ও তাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নানা রকম কথা, খবর আর ছবি দেখা যাচ্ছে। আমি সব সময় এইসব ছবি, খবর বা ফেসবুকের যে কোন পোস্ট খুব সচেতনভাবে এড়িয়ে যাই।

শুনতে খারাপ বা অমানবিক লাগলেও এটাই সত্য, এটাই বাস্তবতা। কারণ,

প্রথমতঃ আমি কোনভাবেই ওদেরকে কোন সাহায্য করতে পারবোনা।

দ্বিতীয়তঃ যেহেতু কোন রকম সহোযোগিতা করা আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়, তাই এসব ছবি দেখে আর খবর পড়ে আমি আমার মন খারাপ করতে চাইনা।

বিশেষত এই দুটি কারণে আমি ওইসব খবর আর ছবি এড়িয়ে চলি সব সময়।
কিন্তু কি লিখি না লিখি জানিনা, যেহেতু লিখতে ভালোবাসি আর কম-বেশী লিখি নিজের ফেসবুক ওয়ালটাকে ডিজিটাল ডাইরির মত বানিয়ে, তাই দুই-একজন সেই লেখা পড়েন। কখনো কখনো কারো হয়তো একটু আধটু ভালো লাগে বা লেগে থাকতে পারে।

সেই আন্তরিকতা থেকে আমাকে বেশ কয়েকজন ইনবক্সে, কোন গল্পের কমেন্ট বক্সে আর কথা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমি তো পাহাড়-সমুদ্র-অরণ্য-মেঘ-আকাশ আর বরফ নিয়ে এতো আবেগের কথা লিখছি, তবে এই রোহিঙ্গাদের বর্তমান অমানবিক অবস্থা নিয়ে কেন লিখছিনা? না কোন কৈফিয়ত চায়নি কেউ, জাস্ট তাদের মনের জিজ্ঞাসাটা প্রকাশ করেছে মাত্র।

তাই প্রথমে আমার না লেখার দুটি কারণ তো উল্লেখ করলাম।

এরপর আর একটি অন্যতম কারণ হল, বেশ কয়েকমাস আগে মেয়েদের আজকালকার আধুনিক নয় ঠিক, অতি-আধুনিক পোশাক নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। আর সেই লেখার তীব্র সমালোচনা আমি হজম করতে পারিনি। অনেক অনেক মানুষের রোষানলে পড়েছিলাম। কারণ আমি যাই লিখিনা কেন, সেটা অনেক আবেগ দিয়ে, নিজের ভালোলাগা আর একান্ত অনুভূতি দিয়ে লিখি।

তাই এই বর্তমান অনামবিক পরিস্থিতি নিয়ে লিখলে সেটা খুব খারাপ ভাষায়, বেশী কুরুচিপূর্ণ লেখা হয়ে যেতে পারে, যেটা ওদের কতটা সাহায্য করবে জানিনা তবে তা নিশ্চিতভাবেই আমার কিছু না কিছু ক্ষতি করবে বা করতে পারে। যেটা আগের লেখাটার অভিজ্ঞতা থেকে পেয়েছি। আর তাই সেদিন থেকে কোন রকম সচেতনতা মূলক লেখা থেকে নিজেকে খুব যত্নে দূরে রাখি বা চেষ্টা করি।

এইতো গেল কেন লিখিনি ওদের নিয়ে, সেই আত্ন-জবাবদিহিতা। এবার তবে ওই প্রসঙ্গে কিছু বলি? চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব ক্ষোভহীন শব্দে লিখতে, কতটা পারবো জানিনা।
যারা এই বিষয় নিয়ে সোচ্চার তাদের কাছে আমার প্রথম প্রশ্ন, আপনি-আমি বা আমরা যারা মুসলমান মুসলমান ভাই-ভাই দাবী করি, তারা কি সত্যি-ই সেটা মানি?

আপনি আপনার নিজের বিবেকের কাছে জিজ্ঞাসা করুন না?

আপনার পাশের একজন দরিদ্র-অসহায়-অভাবি আর রাস্তার শিশুকে কি আপনি-আমি আমাদের মন থেকে, ওদের সত্যি কারের ভালোর জন্য, উন্নয়নের জন্য, একটু ভালো করে বেঁচে থাকার জন্য কোন কাজ করছি?

করছিনা। তাই যদি করতাম তাহলে এই দেশে একটি পথশিশুও থাকার কথা নয়। তাই যদি করতাম তাহলে এই দেশে কোন অসহায়, দরিদ্র মানুষ থাকার কথা না, তাই যদি করতাম তাহলে আপনার-আমার দরিদ্র আর অসহায় আত্মীয়-স্বজন এতোদিন দরিদ্র আর অসহায় থাকতোনা।

আমাদের নিজেদের মধ্যেই তো সত্যিকারের কোন দেশপ্রেম নেই, সেখানে ফেসবুকে অন্য দেশের জন্য দেশ আর জাতির জন্য প্রেম দেখিয়ে কি বোঝাতে পারবো? যদি আমাদের দেশপ্রেম আসলেই থাকতো তাহলে ভাঙা রাস্তা ভাঙা রেখেই, ভালো রাস্তাকে আরও ভালো আর উন্নত করার চেষ্টা করতামনা। যার প্রমাণ ঢাকা শহরের গুলশানের রাস্তা বারবার উন্নত করা হয়, নতুন-নতুন টাইলস বসানো হয়, কিন্তু একটু ভিতরের রাস্তা যা বছরের পর বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী সেইসব রাস্তার কোন উন্নতি হয়না। আজব!

আমরা নিজের দেশের মানুষের পাশেই ঠিক মত দাড়াতে পারিনা, চাইনা, সেখানে অন্য দেশের মানুষ নিয়ে ফেসবুকে মানবিকতা দেখাই। তার মানে এই নয় যে ওদের জন্য সমবেদনা নেই। অবশ্যই আছে, অবশ্যই ব্যাথিত। আগে নিজের চারপাশের অসহায় মানুষের ভালো করতে শুরু করি।

একে-একে আপনার-আমার দেখা-দেখি অন্যরাও সেটা করতে শুরু করলে দেখবেন এই দেশে আর কোন অসহায়, দরিদ্র আর রাস্তায় মানুষ দেখা যাবেনা। তখন ওদের জন্যও আপনার-আমার এক আওয়াজে আর হাত তোলার সাথে-সাথে লক্ষ-লক্ষ হাত উঠে যাবে পৃথিবীর সকল দুস্থ আর অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে।

এরপর আমরা যারা নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবী করি, তারা আসলেই কতটা মুসলমান হতে পেরেছি? কতটা পেরেছি আমাদের ধর্মকে ধারন করতে? কিছুই পারিনি। তাই যদি পারতাম তবে কেন এতো মারামারি-কাটাকাটি-রেষারেষি-খুনখুনি? আমরা সকল মুসলিম দেশ যদি শুধু ঐক্যবদ্ধ হতে পারতাম তাহলে মুসলমানদের উপরে আজ এমন নিপীড়নে দুঃসাহস ওরা পেতনা। ।

কই আমাদের তো কারো জন্য কারো কোন সত্যিকারের আবেগ নাই, কোন টান নাই। যদি থেকে থাকতো তাহলে ইরাক-ইরান-তুরস্ক-আফগানিস্থান-সিরিয়া সহ আরও অনেক অনেক দেশে এতো এতো অস্থিতিশীলতা কেন? সেটা তো হবার কথা ছিলোনা। আমরা এক হলে কি কেউ পারতো? এভাবে আপনার আমার ভাই-বোনের উপরে এমন অমানবিক আর পশুর মত আচরণ করতে? পারতোনা।

আসলে আমরা, আপনি-আমি কেউই নিজের স্বার্থের আগে কিছু ভাবিনা। ভাবতে পারিনা, সেই শিক্ষা আমাদেরকে পরিবার-সমাজ-দেশ আর সরকার কেউই দেয়নি। কারণ তারাও সেভাবে ভাবতে পারেনা। সবাই যার যার স্বার্থ-সুখ-স্বচ্ছন্দ আর সুবিধা নিয়ে আছে।

এরপর আছে নোবেল বিতর্ক!

আরে শুধু নোবেল কেন, কোন পুরস্কার বা সম্মাননা কি রাজনীতি-সুপারিশ-আর পারস্পারিক বোঝাপড়া ছাড়া হয়েছে না হয়? জাতিসংঘ কেন কিছু করছেনা, ওআইসি নামে কি যেন একটা আছে সেটা কোথায় গেল? মানবাধিকাররের কতশত আন্তর্জাতিক সংগঠন রয়েছে তারা কেন চুপ করে আছে?

তাহলে সূচীর নোবেল কেন এখনো প্রত্যাহার হয়না? বারাক ওবামা কিভাবে কোন যুক্তিতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায়? বব ডিলান কিভাবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পায়? জীবনানন্দ দাস কেন সাহিত্যে নোবেল পায়না? এমন হাজারো প্রশ্ন করা যায় যার উত্তর কেউ দেবেনা! দেবার কেউ নেই যে।

কারণ এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে কোন ডলার আসবেনা, এটা নিয়ে আন্দোলনের জন্য এখনো আন্তর্জাতিক বরাদ্দ হয়নি, এসব থেকে লিখলে বা সংবাদ প্রকাশ করে সোচ্চার হলে কেউ আপনাকে পুরস্কার আর সম্মাননা দেবার কথা দেয়নি, পাবেনা কোন মোটা অংকের সম্মানি। তাই সবাই চুপচাপ আছে, যে যার মত।

আর আপনার-আমার মত যারা মূর্খ, কোন লাভ লোকসান বা কোন প্রাপ্তির আশায় কিছু করিনা, নিজেদের দায়িত্ববোধ আর বিবেকের বাঁধায় কিছু বলি বা করি, তাদের কথা কেউ শোনেনা, শোনার কেউ নেইও যে।

তাই এসব নিয়ে কিছু বলিনা, বলতে চাইনা, ইচ্ছা করেনা, তাকাইনা, ছবি দেখিনা, খবর পড়িনা আর লিখিওনা।

কি হবে এসব পড়ে, ছবি দেখে, মন খারাপ করে, আর ফালতু লেখা লিখে লাইক কমেন্ট কামিয়ে......??

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১২

বিজন রয় বলেছেন: আমরা সকল মুসলিম দেশ যদি শুধু ঐক্যবদ্ধ হতে পারতাম তাহলে পুরো বিশ্ব আমাদের ইশারায় চলত, বাধ্য হত।[/sb

আপনার এই কথাগুলি আমার ভাল লাগেনি, সমস্যাটি ঠিক এই মানসিকতার।

ওই বিষয়টি আরো অর্থপূর্ণ বা যুক্তিগ্রাহ্য করে বরা যেত।

আর ............. সমালোচনার ভয়ে আপনি লিখবেন না, এটা মানতে পারছি না।
তাহলে খারাপদের জন্য স্পেস দিয়ে চলে যাবেন?

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬

সজল জাহিদ বলেছেন: আমি কিন্তু কাউকে আঘাত দিতে চাইনি, বা তেমন কিছু বলতে চাইনি। দুঃখিত জাস্ট একটা উদাহারন দিলাম। আর সমালোচনা আমি ভয় পাইনা, ভয় পাই নোংরা মানসিকতা। আমরা তো সমালচান শুধু করিনা, আমরা অন্যকে কালো তালিকায় ফেলে সুযোগ বুঝে নিঃশেষ করে দেই। সেটার জন্য লিখতে চাইনা। ধন্যবাদ। আবারো দুঃখিত যদি কিছু মনে করে থাকেন।

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০

বিজন রয় বলেছেন: আমি আপনাকে চিনি, জানি। তাই আমার জন্য বোঝা সহজ যে আপনি কি বলতে চেয়েছেন। কিন্তু লাইনটি পড়লে একটু দাম্ভিকতা ফুটে উঠবেই। যেটা ধর্মীয় উগ্রবাদীরা করে থাকে, বলে থাকে।

যে যাই বলুক না কেন, সবাই একসঙ্গে বেঁচে থাকবো এই মানসিকতা যতদিন না আসবে ততদিন শান্তি শুধুই মরীচিকা।

ধন্যবাদ জাহিদ।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

সজল জাহিদ বলেছেন: Sorry for that sentence, edited, thanks

৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪২

কুহুক বলেছেন: আমরা সকল মুসলিম দেশ যদি শুধু ঐক্যবদ্ধ হতে পারতাম তাহলে পুরো বিশ্ব আমাদের ইশারায় চলত, বাধ্য হত আপনার এই কথার মাধ্যমেই সাম্প্রদায়িকটা ফুটে উঠছে

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

সজল জাহিদ বলেছেন: Sorry for that, i edited, thanks

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯

কুহুক বলেছেন: কয়েকশো রোহিঙ্গা মারার জন্য যদি বারমা দূতাবাস ঘেরাও হয় তাহলে ৩০ লাখ মানুষ মারার জন্য পাকিদের বেশ্যালয় ঘেরাও হবে না কেন? জিহাদি ভাইরা জবাব দেন!!!!! সামনে ডিসেম্বর, বাংলাদেশের কিছু শ্রেণীর মানুষের কুত্তা পাগল হবার মাস। বালির বস্তা রেডি রাখা হোক 'গুল্কাশান কাহ কাশান' এর সামনে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.