নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেড়াই-পড়ি-লিখি.....

সজল জাহিদ

সজল জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ জীবন কিসের জন্য......?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৭


বন্ধুদের সাথে গাড়িতে করে বেশ মজা হই হই করতে করতে বেড়াতে যাচ্ছিল শামুক। ঢাকার যানজট, ব্যাস্ততা, ধুলোবালি আর নিত্য ব্যাস্ততাকে ছুটি দিয়ে। কোন এক সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। বন্ধুর নিজের গাড়ি। তার অফিসের ড্রাইভার চালাচ্ছে। সাথে আরও চারজন বন্ধু। সবাই কর্মজীবী এবং বেশ ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান আর সেসবের বেশ বড় কর্মকর্তা এক একজন।

একজনের তো নিজের গাড়িই আছে। একজনের মিরপুরে নিজের দুটো ফ্ল্যাট, একটিতে নিজে থাকে আর একটি ভারা দেয়া।। নিজের ভাড়ার টাকা আর বাসা ভাড়া দিয়ে পাওয়া টাকায় বেশ পরিশোধ হয়ে যাচ্ছে লোণ মাসে মাসে। স্যালারির টাকাটা তাই, সংসার খরচ, একটু আরাম আয়েশ আর কিছুটা বিলাসিতা কিছু জমিয়ে রাখার জন্য। এক বন্ধুর নিজের ব্যাবসা আর একজন বড়লোক শ্বশুর দেখে বিয়ে করেছে। তেমন কিছু করেনা, শুধু শশুরের অফিসে বা বিভিন্ন কাজে সহয়তা করে, ঘুরে-ফিরেই কাটিয়ে দিচ্ছে জীবন। বেশ আরামছে।

কিন্তু শামুকের দিন আনি দিন খাই না হলেও, মাসের শেষে ধাঁর করতে হয় প্রায়ই। আর এই নিয়ে বাসায় প্রায় নিত্য মনোমালিন্য। তার উপর শামুকের রয়েছে আবার হুটহাট যেখানে সেখানে বেরিয়ে পরার বাতিক। কখনো পাহাড়ে, কখনো জঙ্গলে বা কখনো কোন সমুদ্রে। এই নিয়েও বাসায়, বন্ধু মহলে আর আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে শুনতে হয় নানা কথা, নিয়মিত। এমনিতেই সে ছোট একটা কেরানীর চাকুরী করে, সংসার চালাতে হিমশিম খায়, তার উপর কিভাবে আবার কদিন পরপর এদিক-সেদিক বেড়াতে যায়? ভেবে কুল পায়না কেউ। কোথায় দুই পয়সা জমাবে তা নয়, বনে জঙ্গলে, পাহাড়ে, সমুদ্রে উল্টো টাকা পয়সা উড়িয়ে বেড়ায়!জত্তসব।

নানা রকম, মজা, কথাবার্তা, একে অন্যকে পচানোর মধ্য দিয়েই ওরা ছুটে চলছিল নিরিবিলি আর শান্ত সবুজ কোন জায়গার উদ্দ্যেশে। কুড়িল ফ্লাইওভার পেরিয়ে ওদের গাড়ি ৩০০ ফুট রাস্তায় উঠলো। বেশ ঝকঝকে, চাওড়া আর ফাঁকা রাস্তা পেয়ে ওদের গাড়ি ছুটতে শুরু করলো দুর্বার গতিতে। বসুন্ধারা এলাকা পেরিয়ে যেতেই শামুকের চোখ গেল বাইরের বিস্তীর্ণ ভূমির দিকে। যেখানে মাইলের পর মেইল শুধু প্লট আকারে জমি আর জমি। মাঝে মাঝে বিদ্যুতের পুল বসানো, কোথাও কোন ফসল বা এমন কোন আয়োজন নেই। নেই কোন শিল্প কারখানা বা কোন বাড়ি-ঘর।

এসব দেখে শামুকের বেশ অবাক লাগলো। এতো এতো জমি ফাঁকা পরে আছে, অথচ কেউ কিছু করছেনা কেন? নিজের ভাবনার কথা জিজ্ঞাসাই করে ফেলল পাশে থাকা বন্ধুদেরকে? এটা কোন জায়গা? এক বন্ধু বলল, ওরে তুই চিনবিনা রে, এটা হল খনি খনি, সোনার খনি এটা পূর্বাচল রে পাগলা...!

পূর্বাচল কি?


হেহ, তোকে নিয়ে আর পারা গেলনারে... পূর্বাচল হল ঢাকার মধ্যে বা কাছে সোনার খনি। দ্যাখ দ্যাখ কত জমি আর প্লট করা আছে। এখানে যার একটা প্লট আছে সে তো রাজারে, রাজা। এই পূর্বাচলের একটা প্লটের জন্য মানুষ কত কি করছে তুই জানিস না। কে কাকে কত টাকা দিয়ে এখানকার একটা প্লট নিতে পারে তাই নিয়ে কতকিছু করছে লোকে, তুই ওসব বুঝবিনা।

আচ্ছা একটু বুঝিয়ে বলবি যে কিভাবে এটা সোনার খনি হল?

আচ্ছা শোণ, ধর তুই আজকে ৫/১০ লাখ টাকা দিয়ে একটা প্লট কিনলি এখানকার। তুই ভাবতে পারিস ১০ বছর পরে সেই প্লটের দাম কত হবে?

কত হবে?

৫০ লাখ তো হবেই! ১০ বছরে ১০ গুন! শালা সোনার দামও এতো বাড়েনা। একবার একটা প্লট পেলেই রাজা! ওহ আর কোন চিন্তা নাই। কিসের চাকুরী তখন, ফ্ল্যাট উঠবে, ভাড়া তুলবো আর শালা মৌজ মাস্তি করবো।

আচ্ছা বেশ ভালো বুদ্ধিতো! কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা।

কি?

এইধর তোর-আমার বা আমাদের বয়স এখন কত? ৩২/৩৫ বা বা ৩৬ নাকি?

হুম ঠিক, তো?

ধর তোর এখানে একটা জমি হল, আর সেটা নিয়ে তুই উপরের বিলাসী স্বপ্ন দেখছিস, তো সেটার বাস্তবায়ন কিভাবে করবি?

মানে কি বলতে চাইছিস তুই, এটা কোন ব্যাপার হল, জমি কিনে ফেলে রাখবো ব্যাটা, ডেভলপার কদিন পর পিছনে ঘুরবে আর তেল মারবে, প্লট ওদেরকে দেবার জন্য, ফিফটি ফিফটি ফ্ল্যাট, সাথে নগদ টাকা। কোন ইনভেসটমেনট লাগবেনা, একবার শুধু একটা প্লট পেলেই হল! তারপর শুধু ইনকাম আর ইনকাম। ছেলে-মেয়েদের জন্য আর ভাবতে হবেনা। ওদের একটা ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে নিশ্চিন্তে। শালা এই জন্যই বলেছি, এতো প্লট নারে এ হল সোনা সোনা। ও তুই বুঝবিনা। তুমি পাহাড়ে যা, সমুদ্রে ভাস আর জঙ্গলে হারাগে যা।

বন্ধুর এই কথা শুনে শামুক হাসিতে ফেটে পড়লো। হাসি যে থামতেই চাইছেনা। সবাই ওর দিকে তাকিয়ে রইলো অবাক চোখে আর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে। হাসি থামিয়ে ওকে ধরল চার বন্ধু, কিরে এভাবে হাসলি কেন ওর কথা শুনে?

তোদের ভাবনা আর কথা শুনে। হা হা হা... আবারো হাসিতে ফেটে পড়ল শামুক।

এই শালা তুই হাসি থাকা, হাসলি কেন, কি এমন বলেছি যে তুই হেসেই চলেছিস, সেটা আগে বল?

আচ্ছা বলছি শোন, ধর তুই এখানে একটা প্লট পেলি বা কিনলি যাই হোক, তোর হল।

তো সেটা দিয়ে এতোসব করবি কিভাবে ভাবলি?

কেন কেন নয়?

সেটা তো সম্ভব নারে পাগলা...!

কেন বুঝিয়ে বল?

আচ্ছা ধর তোর বয়স এখন ৩৫ ঠিক আছে?

হুম ঠিক আছে, তারপর?

তুই এখানে একটা প্লটের মালিক, কিন্তু এখানে এখনই অবকাঠামো নির্মাণ বা বসবাসের মত করে উপযোগী হয়নি। এই জায়গা সাভাবিক বসবাসের উপযোগী হতে কতদিন লাগবে বলে তোর মনে হয়?

১০ বছরের মধ্যেই আশা করছি এই জায়গা বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠবে।

ততদিনে তোর বয়স কত হবে?

কেন, এখন ৩৫ হলে, দশ বছর পরে ৪৫ বছর, সোজা হিসেব।

আচ্ছা বেশ, তো আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ যে পরিমাণ মিথ্যেবাদী আর জোচ্চোর, ধর এই এই প্লট বসবাসের উপযোগী হতে ১৫/২০ বছর লাগলো, তখন তোর বয়স কত হবে?

৫৫ বা ৬০, ওহ মাই গড, তখন তো বুড়ো হয়ে যাবোরে, একদম থুড়থুড়ে! এখনই শরীরের যে অবস্থা, এক যায়গায় বসলে আর উঠতে ইচ্ছা করেনা। চুল তো প্রায় সবই পেকে গেছে! বাইরে বের হলে এখন সবাই আঙ্গেল ডাকে! উহ ভালো লাগেনা রে।

আমাদের বাবা দাদাদের দেখেছি ৬০ বছর বয়সেও চুল পাকেনি সব। আর আমাদের?

অথচ দ্যাখ তুই আর আমি একই বয়সি, আমরা ক্লাসমেট, কিন্তু তোকে সবাই বাইরে আঙ্গেল ডাকে আর আমাকে সবাই এখনো ভাই বলে ডাকে। বললেও কেউ আঙ্গেল ডাকেনা! কেন জানিস?

কেন রে?

দেখ আমার মাথার কোন চুল পাকেনি, আমি বসে থাকিনা, হাটি, দৌড়াই, ইচ্ছামত ঘোরাফেরা করি, পাহাড়ে যাই, সমুদ্রে দুব দেই, জঙ্গলে জঙ্গলে হারিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসি। এইজন্য, এইজন্য আমার বয়স বাড়লেও বোঝা যায়না, চুলে কোন পাক ধরেনি, জীবনটা তোদের মত টাকা, ফ্ল্যাট, গাড়ি, বাড়ি, জমি এসবের চিন্তায় চিন্তায় বিষিয়ে ফেলিনি। হ্যা আমি স্বীকার করছি তোরা অনেক বিবেচক, তোদের সম্পদ আছে, মাথা গোঁজার নিশ্চিন্ত ঠাই আছে, ব্যাংকে টাকা আছে, নিজেদের ইচ্ছেমত বেরিয়ে পরার জন্য গাড়ি আছে। যার কিছুই আমার নেই।

ধর তুই যখন ওই প্লটে ফ্ল্যাট পাবি, ততদিনে তোর ছেলে মেয়ে বড় হয়ে যাবে, লেখাপড়া শেষ করে তারাও চাকুরী করবে, মোট কথা ওরা ততদিনে নিজেদের পায়ে দাঁড়াবে। ওরা ওদের মত করে চলবে। আর তোর তো এমন অবস্থা না যে তুই ওদের উপর নির্ভর করে বেচে থাকবি বা ওরা তোর উপর নির্ভর করে জীবন ধারন করবে। তাই নাকি বল?
হ্যা ঠিক, কিন্তু নিজে যদি থাকতে নাও পারি, ওদের জন্য তো কিছু করে রেখে যেতে হবে নাকি বল, ওদের ভবিষ্যৎ তো দেখতে হবে?

নাহ দোস্ত, আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী নই, একদমই না।

কি রকম?

এই ধর, তুই, আমি বা আমরা কে কার ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া সেখাচ্ছিনা?

সবাই তো তার সাধ্যমত ওদের জীবন গড়ার কাজ করছি নাকি?

হুম ঠিক।

তাহলে ওদেরকে কে তো দিচ্ছি আমরা আমাদের সাধ্যমত সবকিছুই, তাই বলে কি সর্বস্ব দিতে হবে নাকি? নিজের জন্য, নিজেদের একটু আনন্দ নিয়ে, ভালোভাবে বেচে থাকার জন্য, জীবনটাকে একটু উপভোগ করে, জন্ম আর বেচে থাকা সার্থক করতে আমরা আমাদের নিজেদের জন্য কি করছি বল? যা করছি সব বাবা-মা, বউ-বাচ্চা, দুঃস্থ আত্মীয়-স্বজন এদের জন্য করছি।

আর দিন শেষে হতাশ হচ্ছি, যখন দেখি, ছেলে-মেয়ে কথা শুনছেনা, বাবা-মা অখুশি, বউ তার প্রত্যাশা মত সবকিছু পাচ্ছেনা এমন আরও শত অভিযোগ আর অভিমানের পাহাড় দারিয়ে যায়, দিন-মাস আর বছর শেষে, যেটা শেষ জীবনে গিয়ে দাঁড়াবে এক অলঙ্ঘনীয় অভিমানের এভারেস্ট হয়ে! তখন একা একাই বলবি...

“ভুল সবই ভুল, এ জীবনের পাতায়, পাতায়!”

যা আজকাল সকল শিক্ষিত, একসময়ের কর্মব্যস্ত, জাঁদরেল কিন্তু যোগ্য ছেলে-মেয়েদের বাবা-মায়েদের বলতে শুনি, প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ, দেখা হলেই বা ফোনে কথা হলে। যারা তাদের জীবনের সকল সুখ, সাচ্ছন্দ, আহ্লাদ, ইচ্ছা, ছোট ছোট হাজারো স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছে। ছেলে-মেয়ের, বাবা-মায়ের, ছোট ভাই-বোন এদের পিছনে। সবকিছু দিয়েও যারা শেষ পর্যন্ত কাউকেই খুসি করতে পারেনি, কারো কাছ থেকেই সঠিক শ্রদ্ধা বা সম্মানটা পায়নি বা কেউই এখন তাদের প্রাপ্য মুল্যয়নটা করেনা। যেটা তাদের পাওয়া উচিৎ ছিল, যেটা তাদের অধিকার আর আগ্রাধিকার ছিল।

সেই তারাই সেই সময়ের অবদানের কথা, আত্নত্যাগের কথা, দুঃখ-কষ্ট আর পরিবারের সকলের জন্য নিজের নিবেদনের কথা ভেবে, আর চরম অবহেলার, অপমান, লাঞ্ছনা আর গঞ্জনা সইতে না পেরে নীরবে চোখের জল ফেলে, কেউ আঁচল আর কেউ মাথার টুপিতে মুখ ঢেকে, কান্না লুকিয়ে যখন বলে...

“ভুল সবই ভুল, এ জীবনের পাতায়, পাতায়” কতটা কষ্টে, কতটা বুক ভাঙা আর্তনাদ, কতটা হাহাকার নিয়ে একজন মা, একজন বাবা, একজন বড় ভাই বা বোন এই কথা বলতে পারে ভেবে দেখেছিস? বল।

তার মানে এই নয় যে, আমি আমার ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু করতে চাইনা, এই নয় যে আমি ওদের জন্য কিছু রেখে যেতে চাইনা, এই নয় যে আমি ওদের নিরাপত্তার কথা ভাবিনা, এই নয় যে আমি সব নিজেই নিজের মত করে ভোগ করে যেতে চাই। না, নাহ দোস্ত না নয় আদৌ। আমার দর্শন একটু আলাদা, আমার ভাবনাটা একটু অন্য রকম যা তোদের সবার সাথে মিলবেনা, কি করবো বল, আমি এমনই। এর চেয়ে অন্যরকম, মানে তোদের মত এতো এতো বৈষয়িক ভাবনা আমি ভাবতে পারিনা, পারবোনা দোস্ত।
তো কি রকম তোর ভাবনাটা বলতো শুনি?

আচ্ছা, একদম সহজ ভাবনা দোস্ত, শোন বলি... আমি আমার সাধ্যমত ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া শেখাবো, সাধ্যমত বাবা-মা আর বউকে খুসি করার চেষ্টা করবো, আমার সাধ্যমত তোদের সাথে সময় কাটাবো, আর আমার সাধ্যমতই মাঝে মাঝে পাহাড়, সমুদ্র বা জঙ্গলে যাবো। মোট কথা আমি নিজে ভালো না থেকে অন্যদের ভালো রাখাতে বিশ্বাসী নই।

আমি চাই ওরাও ভালো থাকুক, সাথে আমিও আমার মত করে একটু ভালো থাকি। আমি ওদেরকেও বঞ্চিত করতে চাইনা আর নিজেকেও না।

তোরা সব দিস, ভালো কথা কিন্তু বন্দী থাকিস ঘরে, বল তাই কিনা?

কিভাবে?

এই যে বউ বাড়ি গেলেই ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিস, আহ স্বাধীন! মুক্ত, বাধাহীন! এসবের মানে কি? তুই বা তোরা সত্যিকারের সুখি না, বাঁধা থাকিস, বন্দী থাকিস, পয়সা উপার্জনের জন্য বাইরে বেরস আর বাসায় ফিরে হাঁসফাঁস করিস! নইলে বউ বাড়ি গেলে কেন স্বাধীন, মুক্ত আর নিজেকে হালকা লাগবে! বল?

আমাকে কখনো দেখেছিস এমন স্ট্যাটাস দিতে?

বউ নাই আরাম! স্বাধীন বা মুক্ত আর হালকা লাগছে? আমার তো ঝগড়া, মনোমালিন্য আর মান-অভিমান যতই হোক, রাতে বাসায় ফিরে বউয়ের তুলে দেয়া ভাত, গ্লাসে ঢেলে দেয়া পানি, জোর করে দেয়া মাছের ঝোল, পোড়া বেগুনভাজির কাড়াকাড়ি আর বিছানায় গিয়ে একটু ঝগড়া না করলেই বরং ভালো লাগেনা, হাঁসফাঁস লাগে, ফাঁকা লাগে, নিঃস্ব লাগে বড় নিজেকে।

সে আমাকে যতই কথা শোনাক আমার বাইরে যাওয়া নিয়ে, বেড়ানো নিয়ে আর সাধ্যের স্বল্পতা নিয়ে, শোনাক। আমি এভাবেই আমি, এভাবেই থাকবো আর এভাবেই ভবঘুরে, অল্প চাওয়া আর অপ্ল পাওয়াতেই সুখ খুঁজে নেব দোস্ত। আমার দরকার নাই ওই পয়সা, ফ্ল্যাট, গাড়ি, বাড়ির পিছনে ছুটে ছুটে জীবনকে বিষাক্ত করে তোলার। তোরা তোদের মত আর আমি আমার মত।

এই কথা শেষ করা মাত্র, শামুকের তিন বন্ধু বলে উঠলো, দোস্ত তোর পা দুইটা দে?

কেন দোস্ত গাড়ি থেকে নামিয়ে দিবি?

ধুর শালা, তোর পায়ের ধুলা নেব, তোকে সালাম করবো, তোর সাথে পাহাড়ে যাবো! নিয়ে চল দোস্ত নিয়ে চল! কবে যাবি বল, পাহাড়ে-সমুদ্রে বা কোন গভীর জঙ্গলে?

এই আজ থেকে আর কোন সম্পদের পিছনে ছুটবোনা কথা দিলাম দোস্ত। যা আছে তাই থাক, আর সময়ের সাথে সাথে যদি কিছু হয় সেটা হোক, কিন্তু জীবনকে উপভোগের বাইরে রেখে, শেষ জীবনে হাপিত্যেশ করার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাই। টাকা পয়সা হলে, হবে ভাগ্যে থাকলে, আগে তোর মত করে জীবনটাকে উপভোগ করে নেই।

গুলিমারি অফিসের, ব্যাবসা আর শ্বশুরবাড়ির ফালতু আরামের। চল যাই পাহাড়ে-সমুদ্রে বা কোন জঙ্গলে...

চল জীবনটাকে আজথেকে উপভোগ করি...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:২৭

কালীদাস বলেছেন: আমি ভাবছিলাম শামুক তার বন্ধু ঝিনুক আর চিংড়ির সাথে পূর্বাচলে জমি কিনে যৌথভাবে একটা খামার বাড়ি বানাবে যেখানে তারা বছরে একবার হলেও ঘুরতে যাবে। ভুল ভাঙল পুরাটা পড়ার পর :(

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:২০

সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, যাক ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.