নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"শৃঙ্খল যেখানে আবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব\"

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ

ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই আমার ছাড়পত্র নিয়ে আমার আগমন

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

IBM এবং Google এর মধ্যে মারামারি।

১০ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৬

ঘটনা গত বছরের। এর মধ্যে বহু জল ঘোলা হয়ে গেছে। তো হুট করে মনে হল লেখা উচিত। তাই লিখছি।

জন প্রেস্কিল নামে এক ক্যালটেক প্রফেসর আছেন যিনি ২০১২ সালে একটা টার্ম উচ্চারণ করেন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু এর একটা কোর্সে। 'কোয়ান্টাম সুপ্রেমেসি' এইটার মানে টা আমি একটু বলি আমাদের হাতে যে ডিভাইসগুলো থাকে এই গুলো কাজ করে হচ্ছে বিট সিস্টেম অনুযায়ী। ২বিট হলে সংখ্যাগুলো হবে ০০, ০১,১০,১১ এই প্রতিটা সংখ্যা আলাদা। অন্যদিকে কোয়ান্টাম মেকানিকস দিয়ে আমি যদি ডিভাইস বানাতে চাই তাহলে আমি ব্যবহার করতে হবে কিউবিট। এই কিউবিট অনুযায়ী ০০,০১,১০,১১ এই সবগুলো সংখ্যা সুপারপজিশনে থাকবে-বলা যেতে পারে একসাথে থাকবে। এখন আমি যদি সাধারণ ক্লাসিকাল সিস্টেম অনুযায়ী ০০ থেকে ১১ এ যেতে চাই তাহলে আমাকে চার ধাপে যেতে হবে- প্রথমে ০০, তারপর ০১ এইভাবে ১১ এ আসতে হবে। অন্যদিকে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং অনুযায়ী আমার একবার হিসেব করলেই হবে-কারন এই চার টা অবস্থা থাকে। এতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং অনুযায়ী হিসেব খুব ফাস্ট হয়- এক্সপনেন্সিয়ালি ফাস্ট হয়। জন প্রেস্কিল ২০১২ সালে বলেছিলেন আমরা যদি কোয়ান্টাম কম্পিউটার আর একটা ক্লাসিকাল কম্পিউটার কে যদি হিসেব করতে দেই তাহলে যদি কোয়ান্টাম কম্পিউটার এক্সপনেন্সিয়ালি ফাস্ট হিসেব করতে পারে তাহলে আমরা বলতে পারব কোয়ান্টাম কম্পিউটার ক্লাসিকাল কম্পিউটারের চেয়ে ভাল কাজ করতে পারে। আমরা যদি এই দক্ষতা অর্জন করতে পারি তাহলে আমরা এইটাকে বলব কোয়ান্টাম সুপ্রেমেসি।

২০১৯ সালের অক্টোবর এর দিকে গুগল নেচার এ একটা পেপার পাবলিশ করল, এই পেপার এর কারণে কি কি হইছে আমি একটু বলি। আইবিএম বেশ কয়েকবছর বছর বুঝতে পারতেছে মুর ল এর দিন মনে হয় শেষ হয়ে আসতেছে। এইজন্য এরা উঠেপড়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানানোর চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ওদের বেশ কয়েকটা কোয়ান্টাম কম্পিউটার আছে-৮ কিউবিট, ১৪ কিউবিট, ৩২ কিউবিট এমন। ওরা আইবিএম কোয়ান্টাম এক্সপেরিএন্স নামে একটা ওপেন প্লাটফরম ও তৈরি করেছে যেখানে আপনি ঘরে বসে সার্কিট বানায়ে দিলে ওরা সেইটা ওদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার এ রান করে আপনাকে রেসাল্ট দিয়ে দিবে। গুগল এই পেপার পাবলিশ করার পর প্রথম আতে ঘা লাগে আইবিএম এর। এক সপ্তাহের মাথায় আইবিএম ব্লগে লিখে গুগল যা দাবি করছে টা পৃথিবীর সবচেয়ে পাওয়ারফুল সুপার কম্পিউটার দিয়ে করা যাবে যদি ঠিকঠাক মত প্রোগ্রাম করে দিতে পারি। এইবার একটু বলি গুগলের এই দাবির পর ইভাঙ্কা ট্রাম্প তার অফিসিয়াল টুইটারে টুইট করেন যে আমেরিকা চায়নার আগে কোয়ান্টাম সুপ্রেমেসি অর্জন করেছে। ইভাঙ্কা ট্রাম্প সুন্দর পিছাই এর সাথে দেখা করেন- স্কাইমর প্রসেসর (৫৪ কিউবিট এর যে সার্কিট দিয়ে গুগল তাদের ফলাফল পাবলিশ করে) দেখে আসেন এবং প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের একটা প্রজেক্ট পাশ করান। চায়না- আমেরিকা তখন বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে- চায়না কিছুদিন আগেই কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন দিয়ে পৃথিবী এবং মহাকাশে বার্তা আদান-প্রধান করে। চায়না সাথে সাথে সমপরিমাণ একটা বাজেট পাশ করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার দেভ্লপের জন্য। পরে সবকিছু ঠাণ্ডা হয়- নেচারের পেপারের একজন রিভিউয়ার স্কট আরন্সনের একটা ব্লগ আর্টিকেলের কারণে- স্কট আরন্সন গুগলের পেপারের একজন রিভিউয়ার ছিলেন।

গুগলের ঐ পেপারটা আসলে কিছুক্ষণ এর জন্য এক অথর ভুলে অনলাইনে ফেলে রাখেন- এর মধ্যেই পেপার টা লিক করে। পেপারে গুগল রেন্ডম নাম্বার জেনারেট করে দেখায়- ৫৪ কিউবিটের এক প্রসেসর নাম স্কাইমর- আসলে ১ কিউবিট কোন কারণে কাজ করছিলনা এই ৫৩ কিউবিট দিয়েই গুগল ফলাফল প্রকাশ করে দেখায় যে এই কাজটা করতে একটা ক্লাসিকাল কম্পিউটারের কয়েক মিলিয়ন বছর লাগবে, সেইখানে স্কাইমরের লেগেছে কয়েক মিনিট। গুগল দাবি করে তারা কোয়ান্টাম সুপ্রেমেসি অর্জন করেছে। আইবিএম এই দাবি ডিবাঙ্ক করে বলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারের এই কাজ করতে লাগবে ২দিন যদি ঠিকঠাক মত প্রোগ্রাম করে দেয়া যায়। স্কট আরন্সন উনার ব্লগ লিখেন গুগল এবং আইবিএম যা বলছে দুইটি সঠিক। উনার যেই মতটা আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগছে টা হচ্ছে এমন- গুগলের কোয়ান্টাম সুপ্রেমিসি দাবি করার মানে এই না যে এইটা বাজারে চলে আসবে এখনো প্র্যাক্তিকাল অনেক কাজে ক্লাসিকাল কম্পিউটার কোয়ান্টাম কম্পিউটারের চেয়ে অনেক ভাল কাজ করে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার নিয়ে আরও কাজ করতে হবে, আরও স্পিড অর্জন করতে হবে।

এইসব কিছুর নাটিগুটি হচ্ছে জন প্রেস্কিল। এই প্রফেসর কয়েক মাস আগে দেখলাম টুইটারে আরেকটা টুইট করছে- কোয়ান্টাম উইন্টার লিখে। উনার দাবিটা কি আমি সেইটাই বুঝলাম না। আট বছর আগের এক টার্ম দিয়ে একমাস কোয়ান্টাম রিসার্চাদের হাত পাগল বানায়ে রাখছিল এখন কি উনি হোয়াইট ওয়াকার নামাতে চাচ্ছে। আর টুইটার জিনিসটা ফেসবুকের চেয়ে বেশ মজার- পিটার শর এক টুইট করলে ডেভিড ডয়েছ সেইখানে রিপ্লাই দেয় বাকি পদার্থবিদরা বসে বসে মজা নেয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৩

এপোলো বলেছেন: খুব ইন্টারেস্টিং লাগল লেখাটা। ভিন্ন একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড হওয়ার কারণে ভালমত উপভোগ করতে পারলাম না।

১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৫

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: ধইন্না পাতা

২| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমার 4 bit O/S এর কম্প্যউটারে আমি ২টি সংখ্যাকে যোগ করছি: ১ম সংখ্যাটি, ১২( 1100 ) এবং সেটি একটি পয়েন্টার, 1010 তে আছে; ২য় সংখ্যা ৫ ( 0101) আরেকটি পয়েন্টার, 0100'এ ষ্টোর করা আছে। কোয়ান্টাম কিভাবে এখানে সময় কমাবে, এখানে কিভাবে ২টি সংখ্যা ও ২টি পয়েন্টারকে কিভাবে "রিপ্রেজেন্ট" করার কারণে সময় কমে আসবে?

১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: এইখানে ৪ বিট কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে বানাতে হলে- আপনার ঘটনা যেইটা ঘটবে টা হচ্ছে একসাথে ০০০০, ০০০১, ০০০১০,............১১১১ এই পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যেই আপনি যেই সংখ্যাগুলোর কথা বলেছেন টা থাকবে। যেহেতু আলাদা আলাদা করে হিসেব করতে হচ্ছে একসাথে সব হিসেব্ হয়ে যাচ্ছে এইটাই কোয়ান্টাম কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য। ফলে খুব ফাস্ট ক্যাল্কুলেট হয়।

৩| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



গুগলের কোয়ানটাম কম্প্যুটারের ম্যানফেকচারার কে?

১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৫০

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: গুগল ওদের নিজস্ব ল্যাবে এই পরীক্ষা করেছে।

৪| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:২২

রাজীব নুর বলেছেন:

১০ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৫০

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: হয় এইটাই করছিল এরা

৫| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ১১:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, " এইখানে ৪ বিট কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে বানাতে হলে- আপনার ঘটনা যেইটা ঘটবে টা হচ্ছে একসাথে ০০০০, ০০০১, ০০০১০,............১১১১ এই পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যেই আপনি যেই সংখ্যাগুলোর কথা বলেছেন টা থাকবে। যেহেতু আলাদা আলাদা করে হিসেব করতে হচ্ছে একসাথে সব হিসেব্ হয়ে যাচ্ছে এইটাই কোয়ান্টাম কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য। ফলে খুব ফাস্ট ক্যাল্কুলেট হয়। "

-বুঝতে পারিনি, এখানে কোয়ানটামে কয়টা অপরেশান দরকার হবে?

১। আপরেন্ড, ১২( 1100 ) কে বের করে আনতে হবে 1010 এড্রেস হতে, এখানে কি করে, ১৬ এড্রেস থেকে, সে বিনা সার্চে ইহাকে পাবে?
২। ২য় অপারেন্ডকেও ৫ ( 0101), একই পন্হায় খুঁজে আনতে হবে এড্রেস 0100 থেকে।
৩। যোগ করতে হবে
৪। যোগফলকে কোথায় রাখতে হবে।

প্রশ্র: সময় কোথায় বেঁচে যাচ্ছে?

১১ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:০১

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: ১৬ টা এড্রেসের মধ্যে ১১০০ এবং ১০১০, ০১০১, ০১০০ আছে। আমার এখন একটা কোয়ান্টাম সার্কিট বানাতে হবে ৪ টা কিউবিট দিয়ে । এখন ধরেন আমি ১১০০ চাই আমি প্রথম দুইটা কিউবিট কে ১ করে দিবে বাকি দুইটা কিউবিট ০ করে দিব। আবার ১০১০ হলে প্রথম আর তৃতীয় কিউবিট ১ এবং দ্বিতীয় ও চতুর্থ কিউবিট ০ করে দিব। এখন আপনার প্রশ্ন আসতে পারে ০ ১ কেমনে করব। এই সব কোয়ান্টাম সার্কিটে ১ যদি ক্লক অয়াইজ কারেন্ট ফ্ল হয় তাহলে ০ হচ্ছে অ্যান্টি ক্লক অয়াইজ কারেন্ট ফ্লো। তো এইভাবে ০ আর ১ পাব। আমি এইসব পাওয়ার পর এখন যোগ করে দিব। এখন এইটা ফাস্ট হল কিভাবে ১১০০ আর ১০১০ যোগ করব দেখেন এই খানে প্রথম কিউবিট দুই ক্ষেত্রেই ১, আর চতুর্থ কিউবিট দুই ক্ষেত্রেই ০। মাঝের দুইটা কিউবিট একবার ১ একবার ০। আমি একটা কোয়ান্টাম নট গেট দিয়েই এই কাজ করতে পারব। আমি কিন্তু ৪ টা কিউবিত দিয়ে পুরো কাজ করছি আর কারেন্ট কে একবার ক্লক ওয়াইজ ফ্লো করাচ্ছি আরেকবার এন্টি ক্লক ওয়াইজ। আর যোগ করে দিচ্ছে। ক্লাসিকালে আমাকে ০০০০ থেকে ১২ বার খুঁজে ১১০০ তে আশ্বাস লাগছে এইটা কোয়ান্টামে হচ্ছে না। এইটা সময় বাঁচাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.