নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু দেশের জন্য

জীবন অতি সংক্ষিপ্ত

গ. ম. ছাকলাইন

আমি একজন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ

গ. ম. ছাকলাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসুন সংযমের মাসে সংযত হই আর সাধারন মানুষের কষ্ট লাঘব করি, যদিও লেখাগুলো অনেকেরই পছন্দ হবে না শুধু পেশাগত কারনে

২৮ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬



সংযমের মাস বলেই কিছু কথা বিশেষভাবে লিখার ইচ্ছে হলো। রোজার মাসকেই মূলত সংযমের মাস বলা হয় । এই রোজাকে সামনে রেখেই কিছু লিখে জনসচেতনতা বাড়াতে চাই। এর ফলে সারা বছরের ১২ মাসের মধ্যে কমপক্ষে একমাস আমরা ভাল থাকতে পারি। যদিও লেখা গুলো অনেকের পছন্দ হবে না পেশাগত কারনে। তার পরও বিষয় গুলো জেনে রাখা ভাল । কারন এবিষয় গুলোর মাধ্যমে আমিসহ সকল সাধারন মানুষের প্রতি কিছু দায়ীত্ব পালন হবে বলে আমি মনেকরি । আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া সংযমের (যদি আজ চাঁদ দেখা যায়) মাসে আমারা একটু আলাদা থাকতে চাই ।



এই আলাদা থাকার জন্য কিছু পরিবর্তন দরকার । এই পরিবর্তন গুলো নিয়ে নিচে কিছু বিষয় তুলে ধরছি ।



১. চাকুরীর ক্ষেত্রে সংযম: হ্যা চাকুরীর ক্ষেত্রে আবার সংযম কিসের? এ প্রশ্ন অনেকেই করতে পারে । চাকুরীর ক্ষেত্রে সংযম মানে অফিস সময় ৯-৫ থেকে ৯-৩ টা নয়। বিশেষ করে সরকারী চাকুরী যারা করেন তাদের মধ্যে যারা ঘুষ খেতে খুব পছন্দ করেন তারা ঘুষ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেন।



তাতে যে উপকারটা হবে তা হলো, হয়তো নিজের সম্পর্কে বুঝতে পারবেন যে সারা বছর ঘুষ খেয়ে নিজের ও দেশ-জাতির কিভাবে ক্ষতি করছেন। ফলে নিজেকে শোধরানোর একটা সুযোগ পাবেন। কেউ যদি আমাকে কোন কাজে সরকারী অফিসে যেতে বলে তখন আমার ভিতরে একটা অজানা অস্থিরতা কাজ করে।

আমার কাছে সরকারী অফিসে যাওয়াটা একটা অনেক বড় সাহসের বিষয় মনে হয় কারন একটা ধারনা চিরস্থায়ী ভাবে মনে দানা বেধে গেছে যে সরকারী অফিসে ঘুষ না দিলে কোন কাজ হয় না । তবে সত্যি কথা এই যে সরকারী অফিসে অনেক ভাল মানুষ আছেন যারা ঘুষ খাননা বা তা পছন্দ করেন না, আবার অনেকে আছেন যারা ঘুষ প্রিয় । মূলত: ঘুষপ্রিয় ব্যক্তিদের জন্যই সাধারন মানুষের মনে অস্থিরতা কাজ করে। তাই অন্তত: আগামী একমাস সবাই যারা ঘুষ খাই তারা নিজেকে ঘুস খাওয়া থেকে বিরত রাখি এবং প্রিয় সন্তান ও পরিবারকে হালাল খাওয়ার সযোগ করে দিই। কারন এই ঘুষ ফরমালিনের চেয়েও অনেক অনেক বেশী গুন ক্ষতিকর আমাদের সকলের জন্য । বিশেষ করে আমাদের সমাজের জন্য ও পরিবারের জন্য ।





আর তা না হলে, কে জানে কোন একদিন হয়তো আসবে যেদিন সকল ঘুষখোর একজোট হয়ে রাস্তায় নামবে আর শ্লোগান দিবে ’ঘুষ খাওয়া আমাদের অধিকার, আমরা সকল ঘুষখোর ঘুষ খাওয়ার জন্য দ্রুত বৈধতা চাই । বৈধতা না দিলে কঠোর কর্মসূচী দেওয়া হবে ।’



আর বেসরকারী অফিসে যারা কাজ করি তারা ভুয়া বিল তৈরী করা একমাসের জন্য বন্ধ করি আর সাধারন কর্মচারীদের বেতন-বোনাস সময়মত দেওয়ার জন্য মালিক শ্রেনীর সাথে দরকষাকষি করি (যার যার পদ থেকে যতটুকু করা সম্ভব)।



২. ব্যবসার ক্ষেত্রে সংযম: অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন ব্যবসার ক্ষেত্রে আবার কিভাবে সংযম হতে পারে? এখানে নিত্যপন্য কেনা আর বেচাই তো ব্যবসার মূল কাজ। হ্যা কেনা আর বেচার পার্থক্যটা যেন জনগনের হাতের নাগালে থাকে । আকাশ-পাতাল ব্যবধান না থাকে ।

আজ (২৭/৬/২০১৪) বাজারে বেগুন কিনতে গিয়ে দেখলাম প্রতি কেজির দাম মাত্র ৭০ টাকা! যা কিছু দিন আগেও ছিল মাত্র ২০ টাকা । যেহেতু সামনে সংযমের মাস তাই দাম বাড়াতে হবে এজন্য ২০ টাকা থেকে ৭০ টাকা! যদিও এদাম স্থির নয় হয়তো রোজার প্রথম ১০/১৫ দিন শুধু বাড়বে আবার ঈদের আগের দিন যখন কিনবেন তখন এর দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনেহয় । পৃথিবীর অনেক দেশেই সংযমের মাসে সকল নিত্যপন্যের দাম কমে যায় শুধু আমাদের দেশে এর উল্টো হয়। এর কারন আমাদের নৈতিক অবক্ষয়। পার্শ্ববর্তীদেশ ভারতেও রমজান মাসে নিত্যপন্যের দাম স্বাভাবিক থাকে । কিন্তু আমারা তা করতে সবসময়ই ব্যর্থ। এভাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাধারন মানুষকে কষ্ট দেওয়া কখনই ঠিক নয় ।



আবার এই রমজান মাসে একটি মৌসুমী ব্যবসা শুরু হবে তা হলো ইফতার বিক্রয়।

পাড়ায়-মহল্লায়, অলিতে-গলিতে প্রচুর ইফতারের দোকান পাওয়া যাবে। ইফতরের ব্যবসা চলবে কোন সমস্যা নেই। উদ্বেগের জায়গাটা হলো তারা কতখানি নিরাপদ খাবার সরবরাহ করতে পারবে? এটা দেখার দায়ীত্ব কার জানিনা হয়তো আমরা যারা ঐ খাবার কিনবো তাদের। কিন্তু আমাদের ঐ খাবার ভাল না খারাপ তা জানার কোন উপায় নেই কারন সাধারন মানুষ খাদ্য বিশেষজ্ঞ নয় খাবার গ্রহনের পর যখন অসুস্থ হয়ে পড়বে তখনই কেবল মানুষ যাচাই করতে পারবে খাবারটা কতখানি নিরাপদ ছিল? তাই ঐসব ব্যবসায়ীদের বলবো সচেতন হোন মানুষের কাছে নিরাপদ খাবার সরবরাহ করুন এই সংযমের মাসে।



৩. ফলমূলের ব্যবসা:



একটু আলাদা করে বলবো ফলমূল ব্যবসার কথা । কারন ফলমূল নিয়ে আমাদের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা খুবএকটা সুখকর নয় । আমি গত প্রায় একমাস যাবত কোন ফলমূল কিনিনা। এতে আমার দুটো লাভ হয়েছে, প্রথমত: টাকা খরচ করতে হচ্ছে না আর দ্বিতীয়ত: নিজহাতে সন্তান আর পরিবারকে বিষ কিনে খাওয়াতে হচ্ছে না! এই সংযমের মাসে ইফতারে ফলমূলের একটা বিশেষ চাহিদা থাকে যা অন্য মাসে হয়তো এতটা থাকেনা। তাই ফলমূল ব্যবসায়ীদের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ ’ আপনাদের দাবী অনুযায়ী ফলমূলে ফরমালিন দেওয়া আপনাদের অধিকার, যার জন্য আপনারা আধাবেলা সফল স্ট্রাইক করেছেন যা রাজনৈতিক দল গুলোর কাছে অনুকরনীয় হতে পারে।’ কিন্তু ঐ তথাকথিক অধিকার আগামী একমাসের জন্য প্রত্যাহার করুন আর সাধারন মানুষকে বিষ খাওয়ানো থেকে মুক্ত রাখুন। আবার একমাস পর নাহয় নতুন করে বিবেচনা করে দেখবেন বিষ খাওয়ানো সঠিক কি না?



৪. যাকাত-ফেতরা প্রদান:

যারা যাকাত আর ফেতরা প্রদান করবেন তারা মনে রাখবেন যাকে যাকাত আর ফেতরা প্রদান করবেন তারা আসলেই যোগ্য ব্যক্তি হিসাবে পাচ্ছে কি না । যতদুর জানি এবং মনেহয় যাাকাত ফেতরা হলো ধনী আর গরীবের মধ্যে সামঞ্জস্য বা ব্যালান্স করার একটি উতকৃষ্ট বৈধ পন্থা। তাই এই দান যেন সঠিক ব্যক্তির হাতেই যায় তা আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।



৫. পরিবারের ক্ষেত্রে:
আমরা যারা বিভিন্ন চাকরী বা ব্যবসা করি তারা আমাদের পরিবারকে অন্য যেকোন মাসের চেয়ে এই সংযমের মাসে একটু বেশী ভাল রাখার চেষ্টা করি তবে তা যার যার সামর্থ অনুযায়ী। আর যাদের ঘরে গৃহকর্মী আছে তারা গৃহকর্মীদের অন্য মাসের চেয়ে কম নির্যাতন করবেন। কমপক্ষে গৃহকর্মীদের ভাল-মন্দের খোজ খবর নিবেন। সর্বোপরি সকলের সাথে ভাল ব্যবহার করি যাতে কেউ আমাদের আচার-ব্যবহারে মন:কষ্ট না পায় ।



যারা কষ্ট করে আমার এ লেখা পড়বেন তাদেরকে বলব, আমার এ লেখার উদ্দেশ্য পাঠকপ্রিয়তা পাওয়া নয়, জনসচেতনতা সৃষ্টি করা মাত্র। ১জন মাত্র পাঠকও যদি আমার এ লেখা মন দিয়ে পুরোটা পড়ে কিছু শিখতে পারেন আর তার বিন্দু মাত্র প্রয়োগ করতে পারেন সেটাই আমার স্বার্থকতা। এই সাম হোয়ার ইন ব্লগে বিভিন্ন পেশার মানুষ আছেন যদি আমার লেখা কারো মন:কষ্টের কারন হয় তার জন্য আমি দু:খিত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

পাগলামৃদুল বলেছেন: ভালো লাগলো। কেউ চেষ্টা করে সফল হলে খুব খুশি হব। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।

০১ লা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.