নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু দেশের জন্য

জীবন অতি সংক্ষিপ্ত

গ. ম. ছাকলাইন

আমি একজন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ

গ. ম. ছাকলাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এবোলা (Ebola) ভাইরাস-আফ্রিকা থেকে ইউরোপ হয়ে নতুন গন্তব্য এশিয়া: এখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সঠিক সময় বাংলাদেশের জন্য

০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

ইবোলার নেপথ্য ঘটনা



কঙ্গোর এবোলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে মারাত্মক ভাইরাসজনিত এক রোগের খবর শোনা যায় ১৯৭৬ সালে৷ সেই নদীর নাম থেকেই এই ভাইরাসের নাম দেয়া হয় এবোলা৷ সেই সময় নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩১৮ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মারা যায়৷
ধারণা করা হয় এক জাতীয় বানর ও বাদুরের মধ্যে এই ভাইরাস আস্তানা গাড়ে৷ এই সব জীবজন্তুর ভাইরাস প্রতিরোধী শক্তি আছে বলে মনে করা হয়, তাই রোগটা এদের মধ্যে মাথা চাড়া দিতে পারে না৷ কিন্তু এই সব প্রাণীর সংস্পর্শে এলে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়৷ তবে কিছু কিছু গরিলার মধ্যেও এই অসুখ দেখা গেছে৷

ইবোলা এইডস-এর মতোই এক মহামারি!



ইবোলা বা এবোলা এইডস-এর মতো মহামারি আকার ধারণ করছে৷ পশ্চিম আফ্রিকায় এইডস-এর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ইবোলাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে৷ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থমাস ফ্রিডেন৷

যুক্তরাষ্ট্রের ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার (সিডিসি) জানিয়েছে যে, এই রোগ প্রতিরোধেভালো পদক্ষেপ নেয়া না হলে আগামী জানুয়ারির মধ্যে বিশ্বব্যাপী ইবোলা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪ লাখে৷ এত দ্রুত ছড়ানোর কারণ মানুষের শরীর নিঃসৃত রস থেকে ইবোলা ছড়িয়ে পড়ে৷

পরিচালক টম ফ্রিডেন বলেন, বিশ্বকে দ্রুত কাজ করতে হবে যাতে করে ইবোলা পরবর্তী এইডস' মহামারি হয়ে না দাঁড়ায়৷ ইবোলা সংকট নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের উচ্চপর্যায়ের একটি ফোরামে কথা বলেন ফ্রিডেন৷ তাঁর মতে, ইবোলা মোকাবিলায় দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে৷ ফ্রিডেন বলেন, জনস্বাস্থ্যে আমি ৩০ বছর ধরে কাজ করছি৷ এরকম একটিমাত্র জিনিস ছিল এইডস৷


রোগ নির্ণয়



বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক জীবাণুর মধ্যে একটি এবোলা ভাইরাস৷ এই ভাইরাসকে প্রথম লক্ষ্য করা যায় কঙ্গো ও দক্ষিণ সুদানে৷ প্রাণঘাতী এই জীবাণুকে আয়ত্তে আনার জন্য বিজ্ঞানীরা অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷



এবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যই অবধারিত৷ এই অসুখের ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত৷ এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না৷ মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে কঙ্গো, সুদান, গাবন ও আইভরিকোস্টে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি৷

Ebola ভাইরাস রোগের লক্ষণ



আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হতে থাকে দুই থেকে একুশ দিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হতে থাকে৷ মাথাব্যথা, পেশিব্যথা ও কাঁপুনি দেখা দেয়৷ রুচি নষ্ট হয়ে যায়৷ বমি ও পেটখারাপ হয়৷ পেটের শিরায় টান খায়৷ এক ধরনের জ্বর হয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হয়৷ বিশেষ করে পেট ও অন্ত্রের নালী এবং প্লীহা ও ফুসফুস আক্রান্ত হয়৷ যা ভুক্তভোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷
nইবোলা ভাইরাস সংক্রমণের ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রাথমিক লক্ষণ গুলো অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগের লক্ষণ সমূহের মতোই। ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নিরীহ ফ্লু;র মতো হালকা জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা অনুভব করে। কিছুদিন পর তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা, ত্বকে দানা দানা উঠা, মুখে ঘা, ডায়রিয়া এবং মারাত্মক বমি শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে শরীরের ভিতরে বাইরে রক্তপাত শুরু হতে পারে। এই ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, কিডনি, হৃদপিণ্ড অকেজো করে দেয়, যার ফলে রোগীর মৃত্যু ঘটে।

এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ ফ্লু;র মতোই। সর্দি কাশি, মাথা ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া এবং জ্বর এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। তাই কারো উপরোক্ত কোনও উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে! রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হ্যাপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনও রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে কিনা!

রোগ নির্ণয় করা হয় লক্ষণ দেখে এবং তা নিশ্চিত করা হয় রোগীর শরীর থেকে রক্ত নিয়ে পিসিআর এর মাধ্যমে ইবোলা ভাইরাসের জিন ডিটেকশন এর মাধ্যমে। রক্তে ইবোলা ভাইরাসের এন্টিবডির উপস্থিতি দেখেও রোগ সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়।

সংক্রমণ

এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে কোন সংক্রামিত পশুর (সাধারণত: বানর অথবা ফলাহারী বাদুড়-fruit bat)-এর রক্ত বা শরীর রস-এর সংস্পর্শ থেকে।প্রাকৃতিক পরিবেশে হাওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণের কোন খবর পাওয়া যায়নি।বিশ্বাস করা হয় যে বাদুর নিজে আক্রান্ত না হয়ে এই রোগ বহন করে ও ছড়ায়। মানব শরীরে একবার সংক্রমণ ঘটলে মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। জীবিত পুরুষের বীর্য-এর মাধ্যমে এই রোগ প্রায় দুই মাস পর্যন্ত পরিবাহিত হতে সক্ষম। রোগ নিরূপণ করার জন্য সাধারণত: একই প্রকার লক্ষণযুক্ত অন্যান্য রোগ, যেমন, ম্যালেরিয়া, কলেরা এবং অন্যান্য ভাইরাল হেমোরেজিক ফিভারগুলিকে বাদ দিতে হয়। রোগ নিরূপণকে নিশ্চিত করতে রক্তের নমুনাগুলির পরীক্ষা ভাইরাল অ্যান্টিবডি, ভাইরাল RNA, অথবা এই ভাইরাসটির জন্যই করতে হবে।

রক্তের মাধ্যমে সংক্রমণ



সাধারণত শরীরের তরল পদার্থ যেমন রক্ত, লালা ইত্যাদির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয় এবোলা ভাইরাস৷ ক্ষুদ্র কোনো ক্ষত দিয়েই শরীরে ঢুকে পড়তে পারে এই ভাইরাস৷ আক্রান্ত হওয়ার চার থেকে ১৬ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণগুলি দেখা যায়৷ আক্রান্তরা জ্বর, শরীর কাঁপুনি, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা, অরুচি এসব উপসর্গের কথা বলেন৷ সংক্রমণের এক সপ্তাহের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে রক্ত বের হতে থাকে৷ চলে যেতে পারে দৃষ্টি শক্তিও৷ এমনকি মানসিক বৈকল্য ও শরীরে অবশ ভাবও দেখা যায়৷ একে একে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷ মৃত্যু ঘটে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই৷

এবোলা ভাইরাসের বেশির ভাগ সংক্রমণই ঘটে থাকে উন্নয়নশীল দেশগুলির হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা যন্ত্রপাতির মাধ্যমে৷ হাসপাতালের কর্মী ও নার্সদের মাধ্যমেও ছড়ায় এই ভাইরাস৷

এবোলা ভাইরাসে সংক্রমণ হলে পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম৷ ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ রোগীই মারা যান৷ এটা নির্ভর করে ভাইরাসটির প্রজাতির ওপর৷ এই জীবাণুর গবেষণাও করতে হয় খুব সতর্কতার সঙ্গে৷ গবেষণাগারের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে করতে হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা৷

দেহের তরল পদার্থের মাধ্যমে সংক্রমণ

সাধারণত এবোলা ভাইরাস বাতাসে নয়, দেহের তরল পদার্থ রক্ত, লালা ইত্যাদির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়৷ সরাসরি শারীরিক সংযোগের মাধ্যমে ঘটে থাকে সংক্রমণ৷ যেমন ভাইরাসে আক্রান্ত কারো সেবা করলে৷ এ কারণে হাসপাতালগুলিতে এর বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়৷ এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির মরদেহ স্পর্শ করলেও সংক্রমণ হতে পারে৷ ভাইরাসরা বাহকের প্রতিটি সেলেই বিস্তৃত হতে পারে৷

এছাড়া জীবজন্তু বিশেষ করে বাঁদুড় এই ভাইরাস ছড়াতে পারে৷ অসুস্থ বা মৃত জন্তুর সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ হতে পারে৷ মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে এই ভাইরাসকে লম্বা ও পাতলা সুতার মতো মনে হয়৷ এগুলির অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ বিশেষ কয়েকটি মানুষকে অসুস্থ করতে পারে৷ আর এরকম হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়৷



এবোলা নিরোধক ওষুধ বের হয়নি এখনও

এখন পর্যন্ত এবোলা প্রতিরোধী ওষুধ বা টিকা বাজারে আসেনি৷ রোগীকে উপসর্গগুলি কমানোর ওষুধ দেয়া হয়৷ বিগত বছরগুলিতে এই ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বের করার জন্য বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে৷ কিন্তু মানবদেহে প্রয়োগ করার অনুমোদন এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি৷

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় গবেষক চার্লস আর্নজটেন ও তাঁর টিম ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এবোলা প্রতিরোধে এমন এক ধরনের টিকা আবিষ্কার করেছেন, যা চিকিত্সা জগতে আশার আলো জাগাতে পারে৷ এটি সুলভ মূল্যে প্রস্তুত করা যায়৷ আরেকটি ইতিবাচক দিক হল, বহুদিন পর্যন্ত এই টিকা মজুত করে রাখা যায়৷ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা যখন তখন এই টিকার প্রয়োজন হতে পারে এবং দ্রুত সরবরাহ করতে হতে পারে৷

চিকিত্সা এবং ভ্যাকসিন তৈরীর চেষ্টা চলছে

এবোলা ইমিউন কমপ্লেক্স

এই টিকাকে এবোলা ইমিউন কমপ্লেক্স' বলা হয়৷ এবোলা ভাইরাস থেকে সংগ্রহ করা প্রোটিন এবং এক ধরনের অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি হয় এই প্রতিরোধী পদার্থটি৷ উত্পাদনের এই প্রক্রিয়াটি চলে জিন পরিবর্তন করা তামাক গাছে৷ গবেষণাগারে এই টিকা দেয়ার পর ইঁদুরগুলিকে এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত করা হয়৷ পাঁচটির মধ্যে চারটি ইঁদুরই বেঁচে থাকে৷

ক্যানাডায় আরেক ধরনের টিকা বের করে মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে৷ বছর তিনেক আগে হামবুর্গের এক ভাইরাস বিশেষজ্ঞ সুই এর খোঁচায় আহত হয়ে সম্ভবত এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হন৷ নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁকে এমন এক ধরনের ওষুধ দিয়ে টিকা দেয়া হয়, যা শুধুমাত্র বানরের ওপরই পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ কয়েক সপ্তাহ পর তিনি হাসপাতালের কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারেন৷

ক্যানাডার এই টিকা এখনও বাজারে বের হওয়ার অনুমোদন পায়নি৷ এজন্য আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন৷ এছাড়া এই টিকা সংরক্ষণ করাও সহজ নয়৷ সব সময় ওষুধের গুণাগুণের দিকে নজর রাখতে হয়৷

অ্যারিজোনায় তৈরি টিকা মানুষের জন্য কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও গবেষকরা বলতে পারছেন না৷ এছাড়া এটাও বলা যাচ্ছে না, এই টিকা এবোলা দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পর কাজে লাগবে কিনা৷

ডা. চার্লস আর্নজটেন আশা করেন, ভবিষ্যতে হাসপাতালগুলিতে এবোলা প্রতিরোধী টিকা ও অ্যান্টিবডি দুটোই মজুত করে রাখা যাবে৷ তাঁর ভাষায়, কেউ যদি এবোলা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়, তাকে প্রথমে অ্যান্টিবডি দিয়ে ইনজেকশন দেয়া হবে, তারপর আমাদের তৈরি এবোলা প্রতিরোধী টিকা দেয়া হবে তাকে৷ এর ফলে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধী শক্তি গড়ে উঠতে পারে রোগীর শরীরে৷

প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ:এবোলা প্রতিরোধে যা যা করণীয়



এবোলা ভাইরাস নিয়ে প্রতিটি মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক৷ এ রোগ থেকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই ; এ কথা সম্পূর্ণ সত্য না হলেও, এর জন্য প্রয়োজন সতর্কতা৷ জানা যাক বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে৷

সাধারণত যে সকল জায়গাতে এ রোগ দেখা দিয়েছে ঐ সকল জায়গায় না গেলে আপনার ভয় পাওয়ার কিছু নেই! কিন্তু আপনি যদি লাস্ট দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত দেশ গুলোর কোনও একটিতে ভ্রমণ করে থাকেন তবে অবশ্যই সতর্ক অবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সবসময় হাত সাবান ও গরম পানি দিয়ে ধুতে হবে, খেয়াল রাখতে হবে যাতে চোখ, নাক বা মুখে হাত না লাগানো হয় হাত না ধুয়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির বডি লিকুইড যাতে আপনার সংস্পর্শে না আসে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনও কারণে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয় তবে সাথে সাথে নিজেকে আলাদা করে ফেলতে হবে যাতে অন্য কেউ এ রোগে আক্রান্ত না হয় এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিদিন বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিমানের মাধ্যমে চলাফেরা করছে মানুষ৷ যে কোনো জীবানু অসুস্থ রোগীর মধ্যে থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে বিমান আরোহীদের মধ্যে৷ আর সেখান থেকে হাজারো মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে সেই জীবাণু৷ বৃহস্পতিবার এ কারণেই হয়ত যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকার পশ্চামাঞ্চলের দেশ গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওনে প্রয়োজন না হলে যেতে নিষেধ করেছে৷

এত নিরাপত্তা বা প্রতিরোধের কারণ হলো এই ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন বা উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো আবিষ্কার হয়নি৷ এখন ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ৬০ ভাগ৷ আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত, লালা, শরীর থেকে বের হওয়া অন্য কোনো ধরনের রস থেকে অন্য ব্যক্তি খুব সহজেই সংক্রমিত হতে পারে৷ তবে এয়ার বোর্



' বা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে এই সংক্রমণের ঘটনা এখনো জানা যায়নি৷


এবোলার গুজবে গায়ে লবণ মাখছেন আফ্রিকার মানুষ

এবোলা এসেছে, এই গুজবে গায়ে লবণ মাখা শুরু করেছেন আইভরি কোস্টের মানুষরা৷ এদিকে, এবোলায় আক্রান্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে জার্মানিতে৷ আর বাংলাদেশে এবোলা নিয়ে কাজ করছে ব্র্যাক৷




সরকারি হিসেবে আইভরি কোস্টে এখনো এবোলা প্রবেশ করেনি৷ কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে থেকেই কুতুবা গ্রামের লোকজন লবণ পানি পান ও রসুন খাওয়া শুরু করেছেন৷ এছাড়া তাঁরা গায়ে মাখছেন লবণ৷ এর মাধ্যমে নাকি এবোলার আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়৷ কুতুব গ্রামের সিয়ামু কোবেনান জানান, ;শেষ রাতে একজন ভদ্রলোক ফোন করে জানিয়েছেন, দেশে এবোলার ভাইরাস ঢুকেছে এবং সেজন্য আমাদের লবণ পানি পান ও লবণ মাখা দরকার৷

এরপর থেকে সবাই লবণের ব্যবহার শুরু করায় এবোলা এখনো তাদের গ্রামে প্রবেশ করতে পারেনি বলে মনে করেন কোবেনান৷

এদিকে আইভরি কোস্টের এক শিক্ষাবিদ জানিয়েছেন যে, সে দেশের কয়েকটি সম্প্রদায়ের লোকজন মনে করে, আফ্রিকার মানুষদের হত্যা করতে; সাদা মানুষ'-রা এবোলা ভাইরাস আবিষ্কার করেছেন৷
আইভরি কোস্টের প্রতিবেশী দেশ গিনিতে প্রথম এবোলার সন্ধান পাওয়া যায়৷ এখন পর্যন্ত সেখানে এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এ কারণে শুক্রবার থেকে গিনির সঙ্গে আইভরি কোস্টের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷

গিনি ছাড়াও লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন ও নাইজেরিয়ায় এবোলা ছড়িয়ে পড়েছে৷ এর মধ্যে লাইবেরিয়ায় মারা গেছেন ৬২৪ জন৷

সব মিলিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ শো'র বেশি মানুষ মারা গেছেন৷ এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করা স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ১২০-র থেকেও বেশি বলে জানা গেছে৷

সিয়েরা লিওনে এবোলা মোকাবিলায় ব্র্যাক

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের অনেক সদস্য সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ এর ফলে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে৷ এমনকি সে দেশে বাংলা ভাষাকে সম্মানসূচক অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷

সেই সিয়েরা লিওনে অনেকদিন ধরে কাজ করছে ব্র্যাক৷ সে দেশে এবোলা ভাইরাস যাওয়ার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি ব্র্যাকও কাজ করছে৷ ব্র্যাক ব্লগে প্রকাশিত এক পোস্ট থেকে জানা যায়, এবোলা আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে পাঠানোর জন্য ব্র্যাকের পক্ষ থেকে সরকারকে জীবাণুনাশক, সার্জিক্যাল গ্লভস, মুখোশ, সাবান, ক্লোরিন ইত্যাদি দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া এবোলা প্রতিরোধে কী করা উচিত । সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে তথ্যভিত্তিক প্রচার করছেন ব্র্যাক কর্মীরা৷

এবোলা ধেয়ে আসছে ইউরোপের দিকে

পশ্চিম আফ্রিকা ছেড়ে এবোলার থাবা এবার পড়েছে ইউরোপের মাটিতে৷ স্পেনের এক সেবিকার এবোলা ধরা পড়েছে৷ এবোলা আশঙ্কায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ বাকিদেরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে৷স্প্যানিশ গণমাধ্যমে আক্রান্ত সেবিকার নাম টেরেসা রোমেরো বলে জানানো হয়েছে৷ তাঁর বয়স ৪০ এর ঘরে৷ সোমবার থেকে তাঁকে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছে৷ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের একটি হাসপাতালে তিনি কাজ করেন৷ সেখানেই তিনি পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ফেরত আসা দু'জন স্প্যানিশ ধর্ম প্রচারককে সেবা প্রদান করেন, যাঁরা পরবর্তীতে এবোলার কারণে মারা যান৷

এই দুই ধর্ম প্রচারকের একজন গার্সিয়া বিয়েখো ৷ ৬৯ বছর বয়েসি বিয়েখো সিয়েরা লিওনে ছিলেন৷ সেখান থেকে স্পেনে ফেরার পর ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়৷ বিয়েখোকে সেবা দিয়েছিলেন রোমেরো৷ সেখানে থেকেই রোমেরো এবোলায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷এরপর এবোলা আসতে পারে এশিয়াতে।


এটা নিশ্চয় আল্লাহর গজব । কারন পৃথিবীতে মানুষ যে পরিমানে অনাচার, অত্যাচার আর মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে তাতে এটাকে আল্লাহর গজব বলা খুবই যৌক্তিক। আল্লাহ আমাদের সকলকে অনাচার, অত্যাচার আর মিথ্যার কবল থেকে রক্ষা করুন। সকলকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন।আর বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীর মানুষ এই বিপদ থেকে মুক্তি পাক।- আমীন


তথ্যসূত্র:
ব্র্যাক

গুগল

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৪৬

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

অনেক তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট। আশাকরি এ থেকে প্রতিকারের দিক খুব শিগ্রই বের হয়ে আসবে। তবে এর জন্য সচেতনতা আরো জোরদার করা জরুরী।


পোষ্টে ২য় ভাল লাগা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.