নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু দেশের জন্য

জীবন অতি সংক্ষিপ্ত

গ. ম. ছাকলাইন

আমি একজন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ

গ. ম. ছাকলাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসলে কে এই প্রেসিডেন্ট মুরসী? কি তার অতীত আর কি তার বর্তমান!

২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:০৬



৩০ বছর পর মিশরের মানুষ পেয়েছিল নতুন নেতা মোহাম্মদ মুরসিকে। মুরসির জীবনের শুরটা হয়েছিল অধ্যাপনা দিয়ে। এরপর সময়ের পালাবদলে তিনি এখন মিশরের গনতন্ত্রের পথপ্রদর্শক। ১৯৫১ সালের ২০ আগষ্ট মিশরে জন্ম গ্রহণ করেন মোহম্মদ মুরসি। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা শেষ করে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে যান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৩ বছর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তারপর ৮৫তে আবারো মিশরে ফিরে আসেন জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে।

মুরসি রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেন তারও অনেক পরে। ২০০০-থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পার্লামেন্টে মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। মুরসি ব্রাদারহুড দলটির উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।

২০১১ সালে ব্রাদারহুডের অর্থায়নে পরিচালিত ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির প্রধান হন মুরসি।

মুরসির স্বর্নোজ্জল অতীত যা অনুসরনীয় হতে পারে সকল শান্তিতে বিশ্বাসী মানুষের কাছে

১. প্রেসিডেন্ট মুরসী কুরআনে হাফিজ
একথাটি অনেকেই জানেন না যে প্রেসিডেন্ট মুরসী সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করেছেন। তার এই বিষয়টি নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবীদার।

২. তিনি বুদ্ধিমান
অনেকেরই ধারনা মুরসী অত বুদ্ধিমান ছিলেন না। তার বিরোধীরা অনবরত তার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে তার বুদ্ধিমত্তার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। মুরসীর শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেকেরই অজানা। তিনি পিএইচডি ডিগ্রীধারী, এবং জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান ছিলেন। তিনি আমেরিকাতে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছেন এবং সেখানে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।

৩. তিনি একটি সাধারণ অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতেন
মিশরের প্রেসিডেন্টদের জন্য বিভিন্ন বিলাসবহুল প্রাসাদ বরাদ্দ থাকলেও প্রেসিডেন্ট মুরসী তার জন্য বরাদ্দকৃত প্রাসাদে প্রথম ঢুকেই সিদ্ধান্ত নেন তিনি সেখানে থাকবেননা। তিনি তার অফিসিয়াল কাজকর্ম প্রাসাদ থেকে পরিচালনা করলেও, তার ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতেন। বর্তমান মুসলিম অনেক নেতাদের টয়লেটও হয়তো এই প্রেসিডেন্টের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বড় ছিল।

৪. তিনি তার মরণাপন্ন বোনের চিকিতসার জন্য কোন বাড়তি সুযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানান
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময় মোহম্মদ মুরসীর বোন অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাশ্চাত্যে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, এবং মেডিকেলের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হেলিকপ্টার ব্যবহার করার অনুমতি চান। কিন্তু মুরসী বলেন তিনি তার পরিবারের জন্য কোন বাড়তি সুবিধা নেবেন না। তার বোন সরকারী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

৫. আজান তার বক্তৃতার আগে প্রাধান্য পেত
একদিন অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ বক্তৃতা দেয়ার সময় তাকে জানানো হয় নামাজের সময় হয়েছে। তিনি বক্তৃতা বন্ধ করে জোরে আজানের পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন।

৬. একজন গৃহহারা মহিলার প্রতি তার দয়া
একজন গৃহহারা বিধবা মহিলা রাস্তায় জীবন যাপন করতেন। একদিন একটি গাড়ি তার পাশে এসে থামে যার ভেতর থেকে মুরসী নেমে তাকে জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি রাস্তায় শুয়ে আছেন। মহিলা তার দু:খের কথা খুলে বললে, তিনি আদেশ দেন মহিলাকে যেন সরকারী খরচে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

৭. স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দেশ-বিদেশ ভ্রমন
মুরসী বিভিন্ন দান-অনুদান প্রকল্পে অংশগ্রহন করতেন। দক্ষিন এশিয়ার ভয়াবহ সুনামীর পর তিনি সাহায্য মিশনে সেখানে আর্তদের সহায়তায় ছুটে গিয়েছিলেন। বাশার আল আসাদ প্রেসিডেন্ট পদ প্রাপ্ত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানালে তিনি প্রতি উত্তরে তিনি জানান, ‘আপনাকে আমি সিরিয়াবাসীর প্রকৃত প্রতিনিধি মনে করিনা’। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের হত্যাকান্ডের কারণে প্রোটোকল থাকা সত্ত্বেও তিনি তার প্রতি ভদ্রতা প্রকাশ করতে পারেন নি।

৮. দুনিয়ার সবচেয়ে কম বেতনপ্রাপ্ত নেতা
বর্তমান বিশ্বে খেলোয়াড় কিংবা নায়ক নায়িকাদের আয় শুনলেই আমাদের অবাক লাগে, আমরা ধরেই নেই রাজনৈতিক নেতাদের বেতন হবে আকাশচুম্বী। কিন্তু মুরসী ছিলেন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। তিনি নির্ধারণ করেন তার বেতন সারা বছরে হবে ১০,০০০ ডলার। তাকে অপহরণ করার সময় জানা যায়, তিনি আসলে কোন বেতনই গ্রহন করেননি। তিনি পুরো সময় বিনামূল্যে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।

৯. তিনি নামাজের ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন
তার বিরোধীরা প্রায়ই বলত, তার ধার্মিকতা একটি অভিনয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুরসী নামাজ নিয়মিত পড়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। জুমার খুতবায় তাকে কাদতেও দেখা গেছে।

১০. অফিসে তার কোন ছবি নয়
সারাবিশ্বে আমরা দেখি নেতা নেতৃদের ছবি দিয়ে দেয়াল ভরা থাকে। মুরসী নির্বাচিত হওয়ার পর পর তিনি আদেশ জারি করেন তার কোন ছবি সরকারী ভবনে ঝোলানো যাবেনা। বরং তিনি আল্লাহর নাম দিয়ে দেয়ালগুলো ভরার আদেশ দেন।

সত্য হলো যুদ্ধের প্রথম শিকার। এই দশটি পয়েন্টের চেয়ে সত্য আরো বেশী জটিল। মুরসীরও ভুল হয়েছে – তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাকে ভালোবাসুন আর ঘৃণা করুন এই বিষয়গুলো হয়তো সত্যিকারের মানুষটিকে চিনতে সাহায্য করবে।

মুরসির বর্তমান

মুরসির মৃত্যুদণ্ড

নিকট ভবিষ্যতে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ফাঁসিতে ঝোলানো হতে পারে। যে কপট বিচারের মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলো, তা খুবই গুরুতর অবিচার।

তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আরও জোরালো কারণ রয়েছে। ইসলামপন্থী মানেই খারাপ—এমন ভিত্তিহীন অভিযোগে মিসর যে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সুদূরপ্রসারী ও নির্মম অভিযান চালাচ্ছে, সেটা ক্রমেই স্বতঃসিদ্ধ ভবিষ্যদ্বাণীতে পরিণত হচ্ছে। মুরসিকে ফাঁসিতে দেওয়ার মাধ্যমে একজন অপেক্ষাকৃত কম প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ককে আমরা শহীদ হতে দেখব। এর মাধ্যমে মিসরবাসীকে দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রয়োজনীয় বার্তা দেওয়া হবে। তারা ঐতিহাসিকভাবে জঙ্গিত্ববিরোধী হলেও এর কারণে তারা হয়তো মনে করবে, অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়াটাই দাবি আদায়ের একমাত্র মাধ্যম।

যখন কোন রাষ্ট্র পথভ্রষ্ট হয় তখন সত্য পথের যাত্রীরা এভাবেই হারিয়ে যায় অর্থাৎ জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়! তবে মোহাম্মাদ মুরসি মুসলিম বিশ্বের নেতাদের কাছে আইডল হিসাবে কাজ করবেন। মহান আল্লাহ মোহাম্মাদ মুরসিকে দীর্ঘজীবী করুন।

সাহায্য: পোষ্টটি লিখতে বিভিন্ন নিউজ পেপার ও ব্লগের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৩

আহমেদ ফিরোজ. বলেছেন: সুন্দর লিখছেন। ধন্যবাদ।

২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১২

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ফিরোজ ভাই।

২| ২৩ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪

জনতার রায় বলেছেন: ঐ ব্যাটা বাংলাদেশে জন্মালে.....................
কোন সন্দেহ নেই যে যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার বিচার হত।
মিশরে ত আর মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, তাই অন্য কেস, কিন্তু পরিণতি একই।

২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১৭

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: তারপরও ঐরকম (মো: মুরসি/এরদোগান/মাহাথির মো:) একজন নেতা বাংলাদেশে দরকার । যাকে দেখে মানুষ অনেক কিছু শিখবে। দেশও এগিয়ে যাবে। বিশেষ করে দেশের জনগন নিরাপত্তা পাব।

৩| ২৪ শে মে, ২০১৫ ভোর ৪:৪৩

লাবিব ইত্তিহাদুল বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।

২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:১২

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.