নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু দেশের জন্য

জীবন অতি সংক্ষিপ্ত

গ. ম. ছাকলাইন

আমি একজন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ

গ. ম. ছাকলাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও একটি আত্মহত্যা: তবুও আত্মহত্যা সমর্থনযোগ্য নয়

১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

আরাফাত শাওন। এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে লিখে গেছে এই সুইসাইড নোট। তার বানানরীতি অপরিবর্তীত রেখে তা হুবহু এখানে প্রকাশ করা হলো।

-১ আরাফাত শাওন

-২ আরাফাত শাওন

-৩ আরাফাত শাওন

-৪ আরাফাত শাওন

‘আমি জানি না আজ আমি ঠিক কী ভুল কাজ করছি। তবে এখন এটা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। আসলে ছেলে হয়ে এ পরিবারে জন্মগ্রহণ করাটাই আমার দূরভাগ্য। তা না হলে ছোট থেকে এ পর্যন্ত মেয়ের মতো সব সময় পরিবারের কাজ করতেই হয়েছে। আর কখনো পরিবার থেকে আমাকে খেলাধুলার সময় বা খেলতে দেওয়া হয়নি।

আর আমিও মেয়ের মতো সবসময় মায়ের আঁচলের নিচেই ছিলাম। আর আমি আদো জানি না যে আমি কি? এই পরিবারের বা আমার মা-বাবার সন্তান, তা না হলে সব সময় এ রকম শাসন আর কড়া শাসনের উপর আমাকে রাখা হয়েছে। কোন বাবা-মা তার সন্তানকে পড়া লিখার খরচে খোটা দেয় না। কিন্তু আমার মা বাবা সব সময় আমাকে বলে তোর জন্য মাসে মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করছি। এভাবেই প্রতিনিয়ত বকাঝকা করা হয়। সব সময় বাবার থেকে শুধু খারাপ ভাষার গালি আর গালি শুনতে হয়। যা আমার একটু ভালো লাগতো না। কিন্তু আমি এতোদিন সহ্য করেছিলাম। কারণ কোন কিছু করার কথা ভাবলে মনে হতো এ দুনিয়ায় তো বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসা পেলাম না। পেলাম না সুখশান্তি। আসলে মানুষ বলে যে ঠিক টাকা পয়সা ও ধন সম্পদ মানুষকে সুখী করতে পারে না। আর যদি আমি নিজের হাতে আত্মহত্যা করি তা হলে মরার পরও শান্তি পাবো না। আর মরার পর আমাকে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। তাই এখন আমার আর এসব কিছু সহ্য হচ্ছে না।

আমাদের ছাত্রদের কি দোষ বলুন আমরা তো আমাদের মতো শ্রেষ্টা (চেষ্টা) করে যাই।

তবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো কারণে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এমন হাল।

এর আগের বছর সরকার তার নিজের স্বার্থের জন্য শিক্ষার হার বাড়িয়ে দিয়েছে।

আর এবার হরতাল-অবরোধ দেয়ার ফলে বর্তমান সরকারবিরোধী দলীয় সরকারকে গালি দেয়ার জন্য পাশের হার কমিয়ে দিয়েছে, যাতে দেশে ফেল এর হার বেড়েছে।

বলুন আমরা আর কীভাবে ভালো রেজাল্ট করতে পারি!!!???’ আমাদের মা-বাবা চায় আমরা ভালো রেজাল্ট করি। কিন্তু দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে ও তো দেখতে হবে।

আমার বাবা ও আমার আত্মীয়-স্বজন আমার এ রেজাল্ট (৪.৮৩) এর উপর খুশি না। সবাই আমাকে বকাবকি করছে। কিন্তু আমার স্কুলের মধ্যে ২য় স্থান পাওয়ার পরও কিন্তু তারা অন্যদের রেজাল্ট এর কথা দেখে না, ভাবে না। তাদের কথা আমাকে এ+ পেতেই হবে। এ+ কী গাছে ধরে যে আমি পেড়ে আনবো। আরো অনেক কথা যা মনের ভিতর জমা করে রেখেছি। কিন্তু বললে শেষ হবে না। থাক।

যদিও আমি মারা যাই তা হলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদিও বেঁচে যাই.!!!

আমার কিছু ঋণ রয়েছে DJ Flower Tuch = সূর্য ৯০০ আমার বন্ধু শুভ= ১০০ (টাকা) ইসমাইল= ২০০/পূবালী ইলেকট্রনিক শহীদ মার্কেট।’

এভাবেই শাওন তার সুইসাইড নোট লিখেছে।

আমাদের বর্তমান অবস্থা এমন হয়েছে যে ভালো করতেই হবে, না হলে রক্ষা নেই', এমনই এক প্রচলিত চাপের মধ্যে দিয়ে শিক্ষাজীবনের কঠিন পথ পাড়ি দিচ্ছে দেশের কয়েক কোটি শিশু শিক্ষার্থী। জন্মের পর 'অ আ ক খ' শেখার পরই ক্লাস ১ এ ভর্তির অসম প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে হয় শিশুদের, বিশেষ করে শহুরে শিশুদের।

কোনো রকমে ক্লাস ১ ভর্তির সেতু পার হয়ে, নতুন বই এর ঘ্রাণ আর পড়া-লেখার মজা নিতে নিতেই এসে পড়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি)। সেখান থেকেই শুরু হয় A+ নামের মাইলফলক ছোয়ার 'মাষ্ট উইন' প্রতিযোগিতা। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে ওই A+ এর মাইলফলক বিষয়টা কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ/বোধোগম্য তা জানি না, কিন্তু অভিভাবকদের কাছে তা জীবন-মরণের চেয়ে মান-সন্মানের পরীক্ষা।

এরকম অবস্থা থেকে আমাদের অবশ্যই বের হয়ে আসতে হবে। আর শিক্ষার্থীদের কাছে আমার অনুরোধ কোন অবস্থাতেই আপনারা আত্মহত্যার মত ঘৃনিত ও মহাপাপের পথ বেছে নেবেননা।

শাওনের এই সুইসাইড নোট থেকে আশা করি আমাদের রাজনীতিবিদরাও শিক্ষা নেবেন!!!!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:১১

কালের সময় বলেছেন: বড় বেদনা দায়ক একটি ঘটনা ।

১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:৪৫

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: হুমমমমম! অনেক বেদনাদায়ক। এমন ঘটনা যেন আর কারো জীবনে না আসে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.