নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত মানুষ , মুক্ত সমাজ, মুক্ত পৃথিবী; মুক্তিই জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ।

সালমান মাহফুজ

সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা সেই কৈশোর থেকেই । মাঝে মাঝে লিখতেও চেষ্টা করি । যেই সাহিত্য আমাকে ধরেছে, সেই সিলেবাস আমাকে দূরে সরিয়ে দিছে । সুতরাং একাডেমিক কন্ডিশন চরম বাজে । প্রচণ্ড অলস এবং অসামাজিক । নিজের কাজের প্রতি চরম বিশ্বাসহীনতা । মাঝে মাঝে সবকিছুকেই অনর্থক ফাও ফাও মনে হয় । এমনকি বেঁচে থাকাটাও । তবুও বেঁচে আছি । কেন ? জানি না । শুধু জানি, কিছু একটা করতে হবে । কী সেটা ? তাও জানি না । মানবজন্মটাকে এভাবে বৃথা চলতে দেয়া যায় না, এই ভেবেই বোধোহয় আরেকটু বাঁচবার লোভ হয় ।

সালমান মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : ফোনসেক্স

২৮ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬

ছি ! ছি ! এমন বিচ্ছিরি বিচ্ছিরি কথা ! কীভাবে এসব কথা মুখ দিয়ে বের হয় ? মুখটা কি মানুষের ? মোবাইল ফোনের ডিম আলোয় সৌরভ মুখটা দেখতে পায় । হ্যাঁ, অবিকল মানুষের মুখ । এই মুখ তার খুব চেনা । গত তিন বছর ধরে দেখে আসছে ।
সেই কখন থেকে শাহীন কানে ফোন চেপে একটানা বলেই যাচ্ছে । ছি ! ছি ! একটুও মুখে বাঁধে না ওর । তাও নাকি প্রেমিকার সাথে বলছে । প্রেমে আদিমতা আছে, কে না জানে । তবে সেটা গভীর গোপনে । তাই বলে ভিতরের আদিমতাকে কন্ঠনালি দিয়ে বাইরে টেনে আনাটা ! ছি ! সেটা কি তখন আর প্রেম থাকে ? লাম্পট্য, স্রেফ লাম্পট্য ! প্রেমিক আর লম্পটের মধ্যে তফাৎ তো এখানেই । প্রেমিক তার ভিতরের আদিমতাকে সভ্যতার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখতে পারে বলেই সে প্রেমিক, আর যে পারে না সেই লম্পট । সৌরভ যত ভাবে ততই ঘেন্না বেড়ে যায় শাহীনের প্রতি ।
শব্দগুলো সৌরভের অপরিচিত নয় । শৈশবে পাশের ঘরের রহমতুল্লাহ রোজ রাতে মদ খেয়ে বৌকে পেটাতো, আর শব্দগুলো উচ্চারণ করত । তবে রহমতুল্লাহ উচ্চারণ করত বিকট স্বরে, কণ্ঠ থেকে একটা ভয়ানক হিংস্রতা ঝরে পড়ত । শাহীন বলছে আস্তে আস্তে ,আদুরে স্বরে । সবাই বলাবলি করত— রহমতুল্লাহ মানুষের বাইচ্চা না , শালা একটা জানোয়ার ! আর শাহীন ?
শাহীনকে কেউ ওটা বলবে না । সমাজের আর আট দশজন মানুষের কাছে শাহীন একজন সভ্য সুশীল মার্জিত যুবক । সদ্য মাস্টার্স শেষ করে একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব পেয়েছে । বন্ধুমহলে একজন বড় মাপের প্রেমিক হিসাবে স্বীকৃত । এই পর্যন্ত ডজনখানেক মেয়ে তার প্রেমে পড়েছে । অনেককেই পাত্তা দেয় নি শাহীন । লাইলিটা তো সেদিন শ্বশুরবাড়িতে সুইসাইড করতেই বসেছিল । কয়টা ছেলের ভাগ্যে এমনটা জোটে ।
সেই শাহীনের মুখে কি এসব মানায় ? রহমতুল্লাহ জানি মূর্খ বেকার মদখোর । কিন্তু শাহীন ? না, না— শাহীনের মুখে এমন বিচ্ছিরি বিচ্ছিরি শব্দ শোভা পায় না । সৌরভ ভাবে আর বিস্মিত হয় ।

ফোনালাপ শেষ । শাহীনের মুখে এই মুহূর্তে একটা ক্ষীণ স্বস্তির প্রদীপ জ্বলছে ।
‘আচ্ছা দোস্ত, একটা কথা বলি মাইন্ড করিস না ।’ সৌরভ জিজ্ঞেস করে ।
‘বল ।’ শাহীন সৌরভের দিকে দৃষ্টি ফেরায় ।
‘ রাত জেগে জেগে মোবাইল ফোনে এইসব নষ্ট কথা কইয়্যা কী শান্তিটা পাস ? এটাকে কি প্রেম বলে ? প্রেম মানেই কি শুধু ... ?’
‘তবে প্রেম কী ? প্রেম তুমি পুষ্পের মত পবিত্র, নারী তুমি পূর্ণিমা চাঁদের মত আলোকিত— এইসব ফালতু সেন্টিমেন্টের কথা বলার আগে নিজের ভিতরটাকে যাচাই করে দেখ । ওইসব ভণ্ড রোমান্টিক কবিদের কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তব দুনিয়ায় ফিরে আয় । লজিক্যাল হওয়ার চেষ্টা কর । এই শরীর রক্তমাংসের । এই শরীরে ক্ষুধা আছে ।’
‘হুম তা মানলাম । শরীরে ক্ষুধা আছে, তার জন্য শরীরের কাছে যা । ফোনসেক্স করে করে মুখ আর কাঁথা নোংরা করার চেয়ে সেটাই বেটার ।’
‘তা তো আর চাইলেই হয় না । সোসাইটিটা যে বড্ড ইনোসেন্ট । পারবি তুই এনে দিতে— রোজরাতে একটা করে রক্তমাংসের যুবতির শরীর , পারবি এনে দিতে ?’ শাহীনের কন্ঠ থেকে কিছুটা ক্ষোভ ঝরে পড়ে ।
সৌরভ নির্বাক । জবাব খুঁজে পাচ্ছ না । ঠিকই তো— যুবতির সাথে রাত জেগে ফোনসেক্স করাটা কিছুটা সহজলোভ্য হলেও, তার রক্তমাংসের শরীর ভোগ করাটা মোটেই সহজলোভ্য নয় । তার জন্য হয় সমাজের কাছে আত্মসমার্পন করে সংসারের শেকলে আটকে পড়তে হবে, নয়ত ভালো মানুষের পোষাকটা খুলে ফেলে সামাজিক বৈধতার বেড়া ডিঙাতে হবে । দুটোই বেশ শক্ত কাজ । সবার পক্ষে যখন তখন সম্ভব না । তার চেয়ে বরং রাত জেগে ফোনসেক্সই বেটার । সভ্য মুখোশ পরে প্রেমিক সেজে উপবাসী থাকার চেয়ে মাঝরাতে ফোনসেক্স করে লম্পট হওয়াটাই অনেক বেশি তৃপ্তির ।
চোখ বোঁজে সৌরভ । বহুকাল উপবাসী থাকার যন্ত্রণাটা এইমাত্র টের পেয়েছে সৌরভ । সেও যদি শাহীনের মত এই নিঃশব্দ নির্ঘুম মধ্যরাতে একটু লম্পট হওয়ার সুযোগ পেত !


ছি ! ছি ! এমন বিচ্ছিরি বিচ্ছিরি কথা ! কীভাবে এসব কথা মুখ দিয়ে বের হয় ? মুখটা কি মানুষের ? মোবাইল ফোনের ডিম আলোয় সৌরভ মুখটা দেখতে পায় । হ্যাঁ, অবিকল মানুষের মুখ । এই মুখ তার খুব চেনা । গত তিন বছর ধরে দেখে আসছে ।
সেই কখন থেকে শাহীন কানে ফোন চেপে একটানা বলেই যাচ্ছে । ছি ! ছি ! একটুও মুখে বাঁধে না ওর । তাও নাকি প্রেমিকার সাথে বলছে । প্রেমে আদিমতা আছে, কে না জানে । তবে সেটা গভীর গোপনে । তাই বলে ভিতরের আদিমতাকে কন্ঠনালি দিয়ে বাইরে টেনে আনাটা ! ছি ! সেটা কি তখন আর প্রেম থাকে ? লাম্পট্য, স্রেফ লাম্পট্য ! প্রেমিক আর লম্পটের মধ্যে তফাৎ তো এখানেই । প্রেমিক তার ভিতরের আদিমতাকে সভ্যতার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখতে পারে বলেই সে প্রেমিক, আর যে পারে না সেই লম্পট । সৌরভ যত ভাবে ততই ঘেন্না বেড়ে যায় শাহীনের প্রতি ।
শব্দগুলো সৌরভের অপরিচিত নয় । শৈশবে পাশের ঘরের রহমতুল্লাহ রোজ রাতে মদ খেয়ে বৌকে পেটাতো, আর শব্দগুলো উচ্চারণ করত । তবে রহমতুল্লাহ উচ্চারণ করত বিকট স্বরে, কণ্ঠ থেকে একটা ভয়ানক হিংস্রতা ঝরে পড়ত । শাহীন বলছে আস্তে আস্তে ,আদুরে স্বরে । সবাই বলাবলি করত— রহমতুল্লাহ মানুষের বাইচ্চা না , শালা একটা জানোয়ার ! আর শাহীন ?
শাহীনকে কেউ ওটা বলবে না । সমাজের আর আট দশজন মানুষের কাছে শাহীন একজন সভ্য সুশীল মার্জিত যুবক । সদ্য মাস্টার্স শেষ করে একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব পেয়েছে । বন্ধুমহলে একজন বড় মাপের প্রেমিক হিসাবে স্বীকৃত । এই পর্যন্ত ডজনখানেক মেয়ে তার প্রেমে পড়েছে । অনেককেই পাত্তা দেয় নি শাহীন । লাইলিটা তো সেদিন শ্বশুরবাড়িতে সুইসাইড করতেই বসেছিল । কয়টা ছেলের ভাগ্যে এমনটা জোটে ।
সেই শাহীনের মুখে কি এসব মানায় ? রহমতুল্লাহ জানি মূর্খ বেকার মদখোর । কিন্তু শাহীন ? না, না— শাহীনের মুখে এমন বিচ্ছিরি বিচ্ছিরি শব্দ শোভা পায় না । সৌরভ ভাবে আর বিস্মিত হয় ।

ফোনালাপ শেষ । শাহীনের মুখে এই মুহূর্তে একটা ক্ষীণ স্বস্তির প্রদীপ জ্বলছে ।
‘আচ্ছা দোস্ত, একটা কথা বলি মাইন্ড করিস না ।’ সৌরভ জিজ্ঞেস করে ।
‘বল ।’ শাহীন সৌরভের দিকে দৃষ্টি ফেরায় ।
‘ রাত জেগে জেগে মোবাইল ফোনে এইসব নষ্ট কথা কইয়্যা কী শান্তিটা পাস ? এটাকে কি প্রেম বলে ? প্রেম মানেই কি শুধু ... ?’
‘তবে প্রেম কী ? প্রেম তুমি পুষ্পের মত পবিত্র, নারী তুমি পূর্ণিমা চাঁদের মত আলোকিত— এইসব ফালতু সেন্টিমেন্টের কথা বলার আগে নিজের ভিতরটাকে যাচাই করে দেখ । ওইসব ভণ্ড রোমান্টিক কবিদের কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তব দুনিয়ায় ফিরে আয় । লজিক্যাল হওয়ার চেষ্টা কর । এই শরীর রক্তমাংসের । এই শরীরে ক্ষুধা আছে ।’
‘হুম তা মানলাম । শরীরে ক্ষুধা আছে, তার জন্য শরীরের কাছে যা । ফোনসেক্স করে করে মুখ আর কাঁথা নোংরা করার চেয়ে সেটাই বেটার ।’
‘তা তো আর চাইলেই হয় না । সোসাইটিটা যে বড্ড ইনোসেন্ট । পারবি তুই এনে দিতে— রোজরাতে একটা করে রক্তমাংসের যুবতির শরীর , পারবি এনে দিতে ?’ শাহীনের কন্ঠ থেকে কিছুটা ক্ষোভ ঝরে পড়ে ।
সৌরভ নির্বাক । জবাব খুঁজে পাচ্ছ না । ঠিকই তো— যুবতির সাথে রাত জেগে ফোনসেক্স করাটা কিছুটা সহজলোভ্য হলেও, তার রক্তমাংসের শরীর ভোগ করাটা মোটেই সহজলোভ্য নয় । তার জন্য হয় সমাজের কাছে আত্মসমার্পন করে সংসারের শেকলে আটকে পড়তে হবে, নয়ত ভালো মানুষের পোষাকটা খুলে ফেলে সামাজিক বৈধতার বেড়া ডিঙাতে হবে । দুটোই বেশ শক্ত কাজ । সবার পক্ষে যখন তখন সম্ভব না । তার চেয়ে বরং রাত জেগে ফোনসেক্সই বেটার । সভ্য মুখোশ পরে প্রেমিক সেজে উপবাসী থাকার চেয়ে মাঝরাতে ফোনসেক্স করে লম্পট হওয়াটাই অনেক বেশি তৃপ্তির ।
চোখ বোঁজে সৌরভ । বহুকাল উপবাসী থাকার যন্ত্রণাটা এইমাত্র টের পেয়েছে সৌরভ । সেও যদি শাহীনের মত এই নিঃশব্দ নির্ঘুম মধ্যরাতে একটু লম্পট হওয়ার সুযোগ পেত !

ফেসবুকে লেখক


মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.