নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা সেই কৈশোর থেকেই । মাঝে মাঝে লিখতেও চেষ্টা করি । যেই সাহিত্য আমাকে ধরেছে, সেই সিলেবাস আমাকে দূরে সরিয়ে দিছে । সুতরাং একাডেমিক কন্ডিশন চরম বাজে । প্রচণ্ড অলস এবং অসামাজিক । নিজের কাজের প্রতি চরম বিশ্বাসহীনতা । মাঝে মাঝে সবকিছুকেই অনর্থক ফাও ফাও মনে হয় । এমনকি বেঁচে থাকাটাও । তবুও বেঁচে আছি । কেন ? জানি না । শুধু জানি, কিছু একটা করতে হবে । কী সেটা ? তাও জানি না । মানবজন্মটাকে এভাবে বৃথা চলতে দেয়া যায় না, এই ভেবেই বোধোহয় আরেকটু বাঁচবার লোভ হয় ।
বাংলা উপন্যাসে এর পূর্বে এমনটা ঘটেছে কিনা জানা নেই; যেখানে লেখকই উপন্যাসের মূল চরিত্র এবং সরাসরি নিজের নামটিই ব্যবহার করেছেন তিনি । হ্যাঁ আমি ‘আত্মপ্রকাশ’ উপন্যাসটির কথাই বলছি; ওপার বাংলার বরেণ্য লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যার স্রষ্টা । এই উপন্যাসটির মধ্য দিয়েই সুনীলের কথাসাহিত্যে অভিষেক ঘটে ।
অগোচালো প্লট, চরিত্র নির্মাণে প্লটের সাথে সেতুবন্ধন নেই । অর্থাৎ বাংলা উপন্যাসের পূর্ববর্তী ধারাকে ভেঙ্গে একটা নতুন ধারা সংযোজনের প্রয়াস তিনি চালিয়েছেন । এক্ষেত্রে লেখক কতটা সফল কিংবা কতটা ব্যর্থ— সেই হিসেবটা না কষে শুধু বলতে চাই, উপন্যাসটি পাঠের মধ্য দিয়ে পাঠক এক নতুন পাঠ-অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন । লেখক যখন নিজ মুখেই স্বীকারোক্তি দেন, আমি গতরাতে বেশ্যালয়ে গিয়েছি, প্রচুর মদ্যপান করেছি, জুয়ার আড্ডায় বসেছি— তখন পাঠকের অভিভূত না হওয়ার কোন কারণ থাকে না ।
প্লটের মত উপন্যাসের নায়ক সুনীলও বেশ অগোচালো এক যুবক । জামাইবাবুর বরাতে একটা ছোট চাকরি জুটে গেলেও সেখানে তার একদম মন নেই । সভ্য জগতের বাইরে যে এক অসভ্য নিষিদ্ধ জগত— সেটাই ওকে টানে বেশি ।
সুবিমল এসে রোজ সুনীলের অফিসে হানা দেয় । সুনীলের মত সুবিমলের অবশ্য ওসব চাকরি-বাকরির জুট-জামেলা নেই । সে আপদমস্তক বেকার । শিল্প-সাহিত্য নিয়ে অবশ্য টুকটাক নাড়াছাড়া করে । সুবিমলের আগমনে সুনীল মাঝে মাঝে বিরক্ত হলেও রোজই সে বেরিয়ে পড়ে জুয়াড়ি লম্পট মাতাল বন্ধু-বান্ধবদের আড্ডাখানায় । অবিনাশ, পরীক্ষিত, শেখরসহ তার সব সঙ্গপাঙ্গদের সেও মেতে উঠে অসভ্য, নোংরা অথচ মোহনীয় জীবনের উল্লাসে । জাগতিক সব দুঃখ-কষ্ট-গ্লানি-পূর্ণতা-অপূর্ণতাকে ছুটি দিয়ে ওরা কেউ গাঁজা টানে, কেউ মদ্যপান করে মাতলামি করে, কেউ বেশ্যার বুকে আশ্রয় খোঁজে, কেউ বা জুয়ার টেবিলে হাসতে হাসতে পকেট উজাড় করে দেয় । অতঃপর তাদের অনেকেই নেমে আসে কোলকাতার রাস্তায়— এবার বাড়ি ফেরার পালা ।
অনেকেই বাড়ি ফিরে না । মাতাল হয়ে পড়ে থাকে আড্ডাখানায় । কাল রাতে শেখর বাড়ি ফিরে নি । সকাল হতেই শেখরের ছোটভাই পরিতোষ এসে সুনীলকে শাঁসিয়ে যায় । শেখরের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে সুনীল । না, মদ-জুয়ার আড্ডাখানায় শেখরকে খুঁজে পাওয়া যায় না । অবিনাশ, সুবিমল, পরীক্ষিত, নুরুল— সবাই আছে ওখানে, শুধু শেখর নেই । শেখর নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে । অবশ্য খুব চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ওঠে না সুনীল । শেখরটা অমনই । ছোটবেলা থেকেই সে দেখে আসছে ।
তিন-চারদিন পরেই শেখরের খোঁজ পাওয়া যায় । সে বীণার ৫নং বাড়িতে আছে । বীণা মেয়েটি রক্ষিতা, দেহব্যবসা তার পেশা । তবে শেখরের সাথে বীণার শুধুই দেহ-লেনদেনের সম্পর্ক নয়, এর চেয়ে বেশি কিছু । বন্ধুরা সবাই জানে ।
খোঁজ পেতেই সুনীল, অনিমেষ, সুবিমল— বন্ধুরা সবাই গিয়ে হাজির হয় বীণার ৫নং বাড়িতে । সেখানে গিয়ে আরেকটি নতুন মেয়েকে দেখতে পায় ওরা— সাধনা ।
সাধনা বীণার বোন এবং উপন্যাসটির সবচেয়ে ট্রাজিক চরিত্র । একসময় যে সন্তান ছেড়ে পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যায়; সেই ছেলেকে ফিরে পেতে সাধনা শেষ পর্যন্ত পাগল হয়ে যায় । শেখর, অবিনাশ, সুনীলরা সাধনার সন্তানকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে গিয়ে কারাবাসে নিক্ষিপ্ত হয় । যদিও একরাত মাত্র । জেল থেকে মুক্ত হয়ে তারা আবার মেতে উঠে উল্লাসে পুরনো সেই মাতলামি ও নোংরামিভরা জীবনের জয়ধ্বনি করতে করতে ।
বেশ্যালয়ে গমণ, মদ্যপান, হই-হুল্লোড়ে সুনীলের প্রাত্যহিক জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটলেও মাঝে মাঝেই সে সব দুরন্তপণা নোংরামি মাতলামি ছেড়ে ছুঁড়ে একজন শুদ্ধ মানুষ হয়ে ওঠার জন্য তুমুল লড়াই চালায় । কিন্তু সুনীল হেরে যায় । বার বার হেরে যায় । সবশেষে তাকে মদের টাকা জোগাড়ের জন্য বন্ধুবান্ধবের সাথে রাস্তায় ভিক্ষা করতেও দেখা যায় । তবে সবকিছু মাড়িয়ে পাঠকের সামনে বার বার সুনীলের একটি প্রেমিক হৃদয় ভেসে উঠে; সে হৃদয় কখনো গায়িত্রীর জন্য, কখনো মণীষার জন্য, কখনো বা যমুনার জন্য । সে হৃদয় নিষ্পাপ, বিন্দুমাত্র নোংরামির স্পর্শ নেই ।
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০১
সালমান মাহফুজ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানবেন মিলন ভাই ।
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০৪
সাদী ফেরদৌস বলেছেন: আপনি আমার এই পোস্ট টা এটা দেখতে পারেন , সুনিল বলেছেন তিনি নিজের জীবন থেকেই উপন্যাস লিখতেন । Click This Link
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১০
সালমান মাহফুজ বলেছেন: লিংকটা শেয়ারের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সাদী ভাই । ডাউনলোড করে নিলাম ভিডিও । পরে দেখে নিব ।
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০৪
হামিদ আহসান বলেছেন: চমৎকার রিভিউ ......
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১০
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ হামিদ ভাই ।
৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১১
স্টিভেন রিয়াদ বলেছেন: ভালো লেগেছে
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৮
সালমান মাহফুজ বলেছেন: মতামতের জন্য ধন্যবাদ স্টিভেন ।
৫| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:২৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চমৎকার রিভিউ| উপন্যাসটা পড়েছি| ভালো লেগেছে| ওরকম বেপরোয়া জীবন আমার কাম্য
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫০
সালমান মাহফুজ বলেছেন: হুম । প্রচলিত বাঁধাধরা নিয়মের মধ্যে নয়-- অনিয়ম আর নিজে গড়া নিয়মের মধ্যে চলুক জীবন ।
মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ রাখাল ভাই ।
৬| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৪৭
ধূসরছায়া বলেছেন: চমৎকার রিভিউ।
৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৪৪
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ @ধূসরছায়া
৭| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ২:৩০
অক্টোপাস পল বলেছেন: সুন্দর রিভিউ!
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০২
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ @অক্টোপাস পল
৮| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯
এহসান সাবির বলেছেন: আমার পড়া সেরা উপন্যাসের একটি।
রিভিউ ++
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০২
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ @এহসান
৯| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৪০
তুষার কাব্য বলেছেন: চমৎকার রিভিউ । ভালো লেগেছে আমার ।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১২
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ @কাব্য
১০| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
রিভিউটা চমৎকার হয়েছে।+++
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০৩
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ @কাব্য
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৩
সালমান মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ
১১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪১
এনামুল রেজা বলেছেন: আত্মপ্রকাশ নিয়ে সুন্দর আলোচনা। আর সুনীল যথেষ্টই সাহসী ছিলেন, তার কবিতাও এই সাহসের প্রমাণ বহন করে।
শুভকামনা জানবেন।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০৪
সালমান মাহফুজ বলেছেন: হুম ঠিক তাই । সুন্দর মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫৭
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: রিভিউটা অসাধারণ হয়েছে।