নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগের স্বত্বাধিকারী সামিয়া

সামিয়া

Every breath is a blessing of Allah.

সামিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেথি শাক অভিজ্ঞতা

২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৩১

ছবিঃ গুগল

সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল টিপাটিপি করতে করতে নারী দিবস পোস্ট দেখে কোন কারণ ছাড়াই উঠে পাশের রুমে গেলাম সেখানে আমার শাশুড়ি এবং আমার মা আর আমার একমাত্র ছোট্ট মেয়েটা আড্ডা দিয়ে যাচ্ছে ঘন্টাখানেক ধরে। তাদের গল্পের আসর ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য অযথাই বললাম আজকে নারী দিবস ওঠেন ওঠেন সবাই উঠে পড়েন ছবি তোলা হবে। উনাদের তিনজনের একটা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বসে আছি, তখন শাশুড়ি মা এসে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে বললেন যাও তোমার মায়ের পছন্দের একটা বড় ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে আসো।
সঙ্গে সঙ্গে আমার দিল মে লাড্ডু ফুটা কত শত যুগ আগে বিবাহের পূর্বে এইভাবে একা একা বাইরে বের হতাম সে যেন আজ রূপকথার গল্প, আজকে এত বছর পর এত আনন্দের দিন আমি কই যাব!! কোথায় গিয়ে নিজেকে রিফ্রেশ করব নাকি কোন রুফটপ রেস্টুরেন্টে গিয়ে বিন্দাস রিলাক্স করতে করতে পিজ্জা খেয়ে আসব! কি করা যায়! কই কই যাওয়া যায়! এত শর্ট টাইমে টাইম ট্রাভেল করা যায় কিনা! কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই, কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই, সকল ছেলে জুটি। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি।

আমি ফাস্ট ফাস্ট রেডি হতে হতে মেয়ের দিকে ফিরলাম শেষ রক্ষার কি অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার লক্ষ্যে বললাম আপনি কি আমার সাথে যাবেন!? না দাদির সাথে আর নানের থাকবেন! প্লিজ আপনি যদি আমাকে ভালোবেসে থাকেন তাহলে বলবেন আপনি বাসায় থাকবেন ডোন্ট ব্রেক মাই হার্ট বেইবি।

সে যেহেতু আমাকে ভালবাসে তাই তার মনের আবেগকে দমন করে বলল আমি কি বলেছি নাকি আমি তোমার সাথে যাব আমি তো বলেছি আমি দাদির সাথে থাকবো নানের সাথে থাকবো। এক নিঃশ্বাসে সে কথাগুলো বলে সামনে থেকে প্রস্থান করার সাথে সাথে সুযোগ হাতছাড়া করার রিক্স না নিয়ে আমি বের হয়ে গেলাম।

নিজেকে মুক্ত পাখির মত লাগলেও আসলে মুক্ত পাখিরা কখনো মুক্ত হতে পারেনা, দেখা গেল আমি আমার প্ল্যান করার টাইম ট্রাভেল ফেলে সুরসুর করে সুপার শপ স্বপ্নতে ঢুকলাম ইলিশ মাছ কিনতে।
ইলিশ মাছ কিনতে লাগলো ২২৫০ টাকা, বাকী টাকা দিয়ে কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মেয়ের জন্য চকলেট কিনলাম, শাক কিনলাম জীবনে দেখিনাই এইরকম একটা শাক। ভেজিট্যাবল কর্নারের ছেলেটা শাকগুলা প্যাকেট করে দিতে দিতে বলল সে এই শাকের নাম জানে না জিন্দেগিতে দেখেও নাই, আমিও এই শাক কোনদিন চোখে দেখি নাই। চিমটি চিমটি।

বিল দেয়ার কাউন্টার একদম রাশ এরিয়া, হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে থাকতে থাকতে কাউন্টারে ছেলেটি আমার বাজারগুলোর প্রাইস এন্ট্রি করতে করতে এসে থমকে দাঁড়ালো বলল ম্যাম এটা কি শাক? আই ডোন্ট নো বলে দাঁড়িয়ে আছি, ওর সাথে সাহায্যকারী আরো দুজন ছেলে দাঁড়ানো তিনজনেই বিপদে পড়েছে শাক বিল করা নিয়ে, নাম না জানলে প্রাইস এন্ট্রি করবে কি করে! মুশকিল! একজনকে শাক নিয়ে পাঠালো শাকসবজির কর্নারের ছেলেটার কাছে নাম জেনে আসতে, সেইখান থেকে ছেলেটি আর আসছেও না সম্ভবত নাম জানতে পারে নাই। আমার পিছনে লম্বা লাইন বিল দেওয়ার জন্য। আমার পরের সিরিয়ালে এক সুদর্শন দম্পতি তারা যথেষ্ট বিরক্ত। পুরুষটির মুখ কঠিন তিনি পঞ্চাশোর্ধ, জামাইর দেখাদেখি স্ত্রী ও মুখ কঠিন করে দাঁড়িয়ে আছে উনি বেশ সুন্দরী ও মিশুক।

পাঁচ মিনিট সময় এভাবে শাকের নাম খোঁজাখুঁজি করে ব্যয় হওয়ার পর কঠিন মুখের সুদর্শন পঞ্চাশোর্ধ লোকটি গম্ভীর কণ্ঠে বলল এটা মেথি শাক, মেথি লিখে সার্চ দাও তাহলেই বিল করতে পারবে, তোমরা নিউ জেনারেশন চেনো শুধু বার্গার পিজ্জা চাওমিন ভাল জিনিশ চিনবে কি করে। আমি বোকার মতন তার স্ত্রীর দিকে ফিরে বললাম আমি ও ফার্স্ট টাইম এটা দেখেছি, তাই ট্রাই করার জন্য নিলাম আজ, আমার কথা শুনে সে মোলায়ম কন্ঠ করে আমাকে বলল, এটা ছোট মাছ দিয়ে রান্না করতে হয়। শুধু পিয়াজ কাঁচামরিচ দিয়ে ভাজি করলে কিন্তু খেতে পারবেন না তিতা লাগবে। ছোট টেংরা মাছ অথবা শোল মাছ অথবা মিক্সড যেকোনো ছোট মাছের পাশে দিয়ে রান্না করে দেখবেন খেতে ভাল লাগবে। বললাম ছোট মাছ তো শেষ তবে শোল মাছ আছে ফ্রিজে,
- তাহলে তো হলোই অত মাছ দিতে হবে না শোল মাছ হলে ওটার শুধু একটা লেজ দিয়ে রান্না করলেও হয়,
তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে বাসায় এসে মা ও শাশুড়ি মাকে ঘটনা ও শুনে আসা রেসিপি বলে সত্যি সত্যি শোল মাছের লেজ দিয়ে মেথি শাক রান্না করলাম এবং মা ও শাশুড়ি মা সেটি খেয়ে অনেক খুশি হল। এবং বার বার প্রশংসা করার পর খুব আফসোস হল রেসিপি বলা মানুষটিকে ধন্যবাদ না জানিয়ে আসার জন্য, চেনা মানুষের ভিড়ে ক্ষণিকের জন্য হলেও পথে ঘাটে নানা স্থানে কত অচেনা মানুষ ও কত রকম উপকার করে জীবন থেকে হারিয়ে যায় সেগুলো মনে রাখি না, বরং এটা ভেবে রাত জেগে চোখের জল দিয়ে বালিশ ভেজাই কত মানুষের জন্য কত কিছু করলাম কেউ সেগুলো মনে রাখলো নাহ দুনিয়াটা বেইমানের কারখানা।

উপরের লেখাটা নারী দিবসের দিন ঘটা অভিজ্ঞতার আলোকে লিখেছিলাম সেই দিনই। শেষ অংশ নারী দিবস নিয়ে বাকী আরো কি কি লিখব ভেবে রেখেছিলাম যা এখন আর মনে আসছে না।
ভাল থাকুন সবাই,
দশম রমজানের শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৩৮

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: মেথি শাক আমার আর স্ত্রীরও বেশ পছন্দ। যদিও আমরা মাছ দিয়ে খাই না। প্রথমে ধুয়ে এক্সট্রা পানি ছাড়া সিদ্ধ করে ফেলি, পানি শুকিয়ে, পেঁয়াজ কুঁচি, রসুন কুঁচি, কাচা মরিচ আর সামান্য লবন দিয়ে। এরপর তেল গরম হলে তাতে দুটো শুকনো মরিচ, পেঁয়াজ কুঁচি আর রসুন কুঁচি দেই। হালকা বাদামী হলে, শাক দিয়ে ভেজে নামিয়ে ফেলি। রেসিপি দিয়ে দিলাম :D

আমি আর আমার স্ত্রীর সম্পর্ক বেশ মধুর হলেও, দুজনেরই তিতা টাইপের শাক বেশ পছন্দ। তবে একবার মাছ দিয়ে ট্রাই করে দেখব রান্না করে।

২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৪৭

সামিয়া বলেছেন: বাহ! চমৎকার! রেসিপির জন্য ধন্যবাদ, আমি অবশ্যই আপনাদের রেসিপি ট্রাই করবো নেক্সট টাইম। তিতা সবজি আসলেই অন্যরকম ভালো, আমার বেশ ভালো লাগে, আপনাকে ও আপনার স্ত্রীকে রমজানের শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন

২| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৩৯

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: মেথি শাকের ভর্তা একদিন খেতে হবে।

২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪২

সামিয়া বলেছেন: আচ্ছা আচ্ছা

৩| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:৩৯

নামস্কাল বলেছেন: গরমকালে তিতা শাকসবজি ভালই লাগে খেতে

২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪৩

সামিয়া বলেছেন: হুম রাইট রাইট

৪| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:৪৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমি কখনো মেথি শাক খাইনি। যদিও শাক আমার বেশ পছন্দ।

২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪৭

সামিয়া বলেছেন: হুম মেথি শাক বলে যে শাক আছে আমারও জানা ছিল না

৫| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫০

আরইউ বলেছেন:



সামিয়া,
মেথি শাক আমি জীবনে কখনো দেখিনি; এ শাক খাওয়া যায় জানা ছিলনা। পোস্ট পড়তে ভালো লেগেছে।
শুভকামনা!

২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪৫

সামিয়া বলেছেন: আমি ও সেদিন প্রথম জেনেছিলাম। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

৬| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫৯

অপু তানভীর বলেছেন: মেথি শাক আমার পরিবারের বাবা আর মায়ের বেশ পছন্দ । তবে আমার একদম ভাল লাগে না । আমার লাল পালং শাক বেশি পছন্দ।

২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৩:৪৬

সামিয়া বলেছেন: একেক মানুষ একেক একেক আলাদা আলাদা পছন্দ।মেথি শাক বলে যে শাক আছে সেদিন ই জেনেছিলাম।

৭| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:৩৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: দেশে এই শাক নিশ্চয়ই খেয়েছি তবে সম্ভবত এই শাকটাকে বিশেষভাবে মনে রাখার প্রয়োজন বোধ করিনি।

মজার বিষয় হলো কানাডা আসার পরে এই শাক চিনেছি। গ্রীষ্মে আগাছার সাথে এই শাক কোন রকমের পরিশ্রম ছাড়াই প্রচুর পরিমানে উৎপাদন হয়। শাকটা খেতে মন্দ লাগে না। তবে গাছগুলো গ্রীষ্মের আবহাওয়ায় বেশি বড় হয়ে গেলে তখন আর এর পাতা খাওয়া যায় না। তখন এই গাছগুলো অন্য আগাছার মত উপড়ে ফেলতে হয়।

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৪

সামিয়া বলেছেন: আচ্ছা আচ্ছা, ধন্যবাদ

৮| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর একটা লেখা পড়লাম।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৫

সামিয়া বলেছেন: এটা কিন্তু বাড়িয়ে বলা হলো এটা সুন্দর কোন লেখা না

৯| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

চিরকুটে সাহিত্য প্রকাশনী বলেছেন: অনেক ভালো লেখেছেন চিরকুটে সাহিত্য

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৫

সামিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:৩৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: আমি আপনাকে ভুল তথ্য দিয়ে ফেলেছি। আসলে আমি যে শাকটির কথা বলেছি তার নাম মেথি নয়। তার নাম বেতে, বইতা বা এরকম কিছু। আমার স্ত্রী জানালেন যে বাংলাদেশেও এ শাকটি আগাছার মধ্যেই হয়।

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৪

সামিয়া বলেছেন: ও আচ্ছা, ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.