নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফ্লপ প্রজেক্ট

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২১

কিছুদিন আগে ইনবক্সে হঠাৎ এক রমনীর ছবি। মাথায় হিজাব, শরীরে জড়ানো আধুনিক বোরখাটা অনেকটা জাপানিস কিমানোর মত। মুখে চোখ ধাঁধানো জৌলুস। বাস্তবদর্শন না হলে ফর্সা রংটা মেকাপের কারসাজি বলে মনে হতে বাধ্য।
ছবি দেখে আমার চোখ-মন ধাঁধানো বা টাটানো বাদ দিয়ে ধন্দে পড়ে যায়। প্রেরককে অবাক হয়ে শুধাই,
- এ ছবি দিয়ে আমি কী করবো?
- আগের চেয়ে আরো সুন্দর হয়েছে না?
- তো?
- এখনও কিন্তু সে সিঙ্গেল?
- তাতে আমার কী?
- পুরোনো প্রেম ঝালিয়ে নিতে পারিস্।
- হারামজাদা আমার সুখের সংসারে আগুন লাগাতে চাস্?
- তোর এখনকার প্রেমিকার চেয়ে ঢেড় সুন্দরী।
- তা ঠিক, তবে তোর সাবেক প্রেমিকার চেয়ে বেশি নয়। শি ইজ দা বেস্ট।
ছবি প্রেরক বন্ধুটি চুপসে যায়। আশেপাশে থাকা বউয়ের ভয়ে কিংবা সাবেক সেই প্রেমিকাকে না পাবার দুঃখে।
আমি দুঃখের সাগরে না ভাসলেও ছবিটি আমায় ভাসিয়ে দেয় স্মৃতির ভেলায়। সেই বন্ধুটি আর আমি দুজনে উক্ত রমণী দুজনকে পাবার জন্য যে কত কিছু করেছি তার ইয়ত্তা নেই।
সবে তখন ক্লাশ নাইন। আমাদের গায়ে নতুন পাখনা। সাইকেলে চেপে কাংখিত নায়িকাদের পিছু। তারা একবার তাকালে আমরা হারাকিরি করে জান দিতেও প্রস্তুত। হাসি দিলেই ভাবি প্রেম বুঝি হয়েই গেল (যদিও তারা কখনই হাসেনি)।
ভিলেন হিসেবে আসে সহপাঠীরাই। আমার বক্ররৈখিক প্রেমকে ত্রিভুজাকৃতি করতে হাজির হয় প্রাণপ্রিয় এক বাল্যবন্ধু।
তার বয়ান সে নাকি ঐ মেয়েকে ভালোবাসে। ছলেবলে কৌশলে তাকে পথ থেকে সরাই। কিন্তু বাকিরা তো তার মত সহজ-সরল নয়। তার উপর আমি মুখচোরা, তারা মুখর। তারা জাহির করে আর আমি গুমরে থাকি।
আমার সেই ছবিপ্রেরক বন্ধুর দশা আরও করুণ। তার বুক এবং মুখ সবই ফুটে এবং ফাটে মাগার সেই মেয়ে পাথরসম হৃদয় নিয়ে তার ভালোবাসা ঝামা দিয়ে ঘষে দেয়। সেই সাথে রাস্তায় সাইকেল থামিয়ে প্রতিপক্ষের হুমকি এবং পদযুগল ভেঙ্গে হস্তগত করার কড়া শাসানি।
আমরা দমে যাইনা। দুজনে এবার আসি ধর্মের ছায়াতলে। কোন এক ইসলামি বইয়ে অদ্ভুত কিছু তথ্য পাই। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সময় নাই।
কাগজে দোয়া তারপর ক্রমানুসারে তাতে মেয়ে এবং মায়ের নাম লিখে সেই কাগজ পানিতে চুবিয়ে ঢকঢক করে পান করে ফেলি।
কিন্তু বইয়ের কথামত মেয়ে আমাদের প্রেমে পড়েনা। বন্ধুর ভাষ্য আমরা বুঝি ভুল করে মা এবং মেয়ের নাম উল্টোক্রমে লিখেছি।
আবার বইয়ের শরণ নেই। এবার সরাসরি বাণ। মেয়ের বাড়ির সামনে গিয়ে দোয়া লেখা কাগজ পুড়ালে মেয়ে ঘরদোড় সব ছেড়ে একেবারে বুকে।
আমরা স্বপ্নে ভাসি। মেয়ে চলে এলে তাকে কোথায় কিভাবে রাখা হবে এ উত্তেজনায় বন্ধুর ঘুম হারাম।
কিন্তু বাণ প্রজেক্টও ফ্লপ।
পরাজয়ে ডরে না বীর। আমরাও হাল ছাড়িনা। কিন্তু প্রেম একসময় ঠিকই ছেড়ে দেয় আমাদের। কৈশোরের প্রেম ভুলে যৌবনে আমরা অন্য সুখে মাতি।
ইনবক্সের সেই ছবি চলে যায় প্রেমিকার ইনবক্সে।
-ইস্, ঐ আপু আমার থেকে কত্তো সুন্দর।
-তো?
-তোমার এখনও উনাকে ভালো লাগে?
উত্তর দেইনা। আট বছরের চেনা প্রেমের কাছে কৈশোরের মোহ শুধুই একটা ছবি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৪

শায়মা বলেছেন: ঠিক ঠিক

হারানো দিন, হারানো প্রেম সবই স্মৃতির ধুলোর আস্তর পড়ে, মলিন হতে বাধ্য।

এত সময় নাই। বর্তমানই আসল!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.