নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি রোমান্টিক গল্পের অপমৃত্য

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৪

কেউ কোথাও যাবার কথা বললে আমার পিছলিয়ে যাবার স্বভাব। সেটা যদি আবার হয় নতুন কোন জায়গা কিংবা অনুষ্ঠান তবে পিছলিয়ে নই আমি গড়িয়ে পড়ি।
কিন্তু সেবারে এমনটি হলোনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষ চলছে। ১ম বর্ষের শুরু থেকেই নাছোড়বান্দা সহপাঠী পিছে লেগে আছে তার সাথে একটা আড্ডায় যেতে হবে। উঠতি এবং হবু লেখকদের আড্ডা।
‌'আচ্ছা ঠিক আছে, আজ নয় কাল, পরশু' করে তাকে যতই কাটাই সে ততই খুশকির মত সেটে যায় আমার সাথে।
অগত্যা তার সাধনা আর অধ্যবসায় এর কাছে হার মেনে চললাম আড্ডায়।
জনাদশেক ছেলে মেয়ে এক মধ্যবয়সী রমণীকে কেন্দ্র করে গ্যারেজ টাইপ এক বিশাল ঘরের মেঝেতে বসে আছে।
আড্ডা চলছে। সেদিনের আড্ডার বিষয় নাটকের গল্প। সেটাও আবার হতে হবে রোমান্টিক, তাৎক্ষণিক এবং সম্মিলিত। অর্থাৎ, একজন গল্প শুরু করবে এবং ধীরে ধীরে রিলে রেসের মত গল্প কথকদের মুখে মুখে পরিণতির দিকে যাবে।
গল্প শুরু হলো। প্রথম কথক শুরু করলেন-
কলাভবনের বারান্দায় তার সাথে প্রথম দেখা। প্রথম দেখাতেই তাকে আমার ইয়ে লেগে গেল...
কথক নাম্বার ওয়ানের ‌'ইয়ে' মুদ্রাদোষ প্রবল। প্রতি লাইনেই কমপক্ষে দুটো 'ইয়ে' চলে আসছে। তার ইয়ে লাগার পর থেকে ঘুরে ফিরে শুধু মেয়েটির বর্ণনাই চলে আসছে। সে কলাভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই আড্ডার মধ্যমণি মধ্যবয়সী রমণী ‌'নেক্সট' বলে হেঁকে উঠলেন।
ঘরের ১২ জোড়া চোখ তখন আমার দিকে। অর্থাৎ আমিই সেই 'নেক্সট' ব্যক্তি। রিলে রেসের ব্যাটন আমার হাতে। কলাভবনের বারান্দা থেকেই দৌড় শুরু করতে হবে। অগত্যা...
মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে আমার ডিপার্টমেন্টের ঠিক পাশের ব্লকে। তবে কলাভবনের করিডোর গুলো ভুলভুলাইয়ার মত। এক ব্লকের সাথে আরেক ব্লকের এতটাই মিল যে সবসময় কেবল মনে হয় এইমাত্র-ই বুঝি এখান দিয়ে গেলাম।
চারপাশটা বেশ শুনশান। মেয়েটি কেন জানি দুপুরের ঠিক এসময়টাতেই এখানে এসে দাঁড়ায়।
কে জানে কেন? হতে পারে কারো অপেক্ষায়। হতে পারে...
না, আর সময় নষ্ট করা চলেনা। সাতদিন ধরে শুধুই দেখছি। আজ এসপার কি ওসপার। যা থাকে কপালে।
প্রথমদিন দেখেই যখন ইয়ে লেগে গেছে তখন আজ ইয়েটা করেই ফেলা উচিৎ।
(শ্রোতাদের ইচ্ছে করেই 'ইয়ে' দিয়ে কনফিউজড করে দিয়েছি।)
চারপাশ দেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম। কোথাও কেউ নেই। শুধু সে আর আমি ছাড়া। মনে মনে হিসেব কষছি পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে। মেয়েটি যদি চিৎকার করে ওঠে?
মেয়েটির সামনে যেতেই ঠিক যেন কত্তদিনের চেনা এমন একটা হাসি দিয়ে বললো, কোন ডিপার্টমেন্ট? প্রতিদিনই কিন্তু আপনাকে দেখি।
- আমিও।
মুখে কথা বললাম ঠিকই। কিন্তু আমার দৃষ্টি তার পায়ের দিকে। মেয়েটি আমার চোখ অনুসরণ করতে যেতেই আমি কাজটি সেরে ফেললাম।
দু হাতে মেয়েটির পা দুটো ধরে হ্যাচকা টানে তার দেহ শুন্যে তুলে তারপর বারান্দার রেলিং এর ওপর দিয়ে একদম নিচে।
পুরো ব্যাপরটিতে লাগলো মাত্র কয়েক সেকেণ্ড। ধুপ শব্দে বুঝলাম মেয়েটি দেয়ালের ধার ঘেষে শুকনো খটখটে নালার মধ্যে পড়েছে।
হিসেবে ভুল হবার কথা না। পা উপরে রেখে মাথা নিচে ফেলেছি। চারতলা থেকে যেহেতু পড়েছে ঘিলুটিলু বের হয়ে যাবার কথা।
- মানে কী?
আড্ডার মডারেটরের তীক্ষ চিৎকারে আমি থামলাম।
- মানে মেয়েটি ডেড। স্পটডেড। বাঁচানো যেত কিন্তু সেটা লজিক্যাল হোতনা।
- তুমি তাকে মারতে গেলে কেন?
- ম্যাডাম, সেই কারণ বাকিরা বলুক। আরো দশজন তো আছে।
ম্যাডামের শুন্য দৃষ্টিতে বুঝলাম আমি রিলে রেস ভেস্তে দিয়েছি। সেইসাথে একটি রোমান্টিক গল্পেরও অপমৃত্য কিংবা একটি আড্ডার।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪০

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: আহালে,লুমান্টিকতা আর হইল না। ;)

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪৬

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
আসলেই অপমৃত্যু।

থিমটা ভাল ছিল লেখার। কিন্তু, গভীরতা এবং সুন্দর সাজ-সজ্জা না থাকায় পরিপূর্ণ হল না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.