নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃত্যু কাহন

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০১

রিচার্ড আমাকে এক অদ্ভুত কথা শুনিয়েছিল।
-‘জানো তো, মানুষ কিন্তু শোক বেশ উপভোগ করে।’
ওর দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতে দেখে রিচার্ড বেশ হেসে ওঠে।
- বিশ্বাস হচ্ছেনা তো। কথাটা কিন্তু একদম সত্য। না হলে শোক হারিয়ে যায় কেন, বলো?
- কেন?
- মানুষ যে জিনিস উপভোগ করে তা সে ধরে রাখতে পারেনা। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। প্রিয়জনের মৃত্যুশোক চিরকাল বয়ে বেড়াতে হলে পৃথিবী চলতো কি?
- তুমি বলতে চাইছো মানুষ প্রিয়জনের মৃত্যু ভুলে যাবার জন্য তা উপভোগ করে।
- বলতে পারো। অনেকটা তেমনই। তবে এটা সে নিজে করেনা। প্রকৃতি তাকে এটা করিয়ে নেয়। শেষকৃত্য এবং তার পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতাগুলো দেখলেই তুমি আমার কথাটা ধরতে পারবে।
রিচার্ডের সাথে আমার পরিচয় ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরিতে। পরিচয়ের কিছুদিনের পরই সখ্যতা।
রিচার্ড ও’নীল। আয়ারল্যান্ডের লোক। ব্রিটিশ SAS (Special Air Service) এ কাজ করেছে অনেক বছর। প্রায় ও হেসে বলে, জানো মৃত্যু ‍হাতের মুঠোয় নিয়ে আমি খেলেছি।
আমার একগুঁয়েমি মার্কা অবিশ্বাসের হাসি দেখে ও আবার বলে, শোনো উপভোগের বিষয়টা তো আছেই। তার সাথে মানুষ কারও মৃত্যু ভোলার জন্য আরও অদ্ভুত কিছু কাজ করে।
একটা গল্প বলি, ল্যাটিন আমেরিকার একটা দেশ। অপারেশনে সেখানকার ড্রাগ কার্টেলের এক কিংপিনকে মেরে ফেলেছি। বেচারার বয়স বেশ কম। তোমার থেকে খুব একটা বড় হবেনা হয়তো।
পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে ওকে যখন শুট করি ওর ঠিক পাশেই ছিল ওর প্রেমিকা। মেয়েটার নামটা পরে জানতে পারি, লিসা।
প্রেমিকের রক্তে লিসার গোটা মুখ মাখামাখি। আমরা ওকে ইন্টারোগেশনের জন্য আমাদের সাথে নিয়ে আসি।
মজার বিষয় কি জানো, মেয়েটা এরপর থেকে একদম চুপচাপ হয়ে যায়। কোন কথাই বলেনা। শুধু আমাকে দেখলে সাপের মত হিসহিস করে উঠতো।
- সে নিশ্চয় প্রেমিকের শোকে ওরকম করছিল।
রিচার্ড হেসে ওঠে।
- সেই ড্রাগলর্ডের ব্যাপারে আমাদের টিপ দিয়েছিল কে জানো?
অবাক বিষ্ময়ে বলি, লিসা?
- একদম ঠিক। ও জানতো আমরা ওর প্রেমিককে গ্রেপ্তার করবোনা। মেরে ফেলবো।
তবুও প্রেমিকের মৃত্যুর পর সে শোক ভুলে থাকতে গিয়ে আমার ওপর ক্ষোভ ঝাড়তে থাকে। এই আক্রোশটাই উপভোগ করতে থাকে সে। এটাই প্রকৃতির আজব খেয়াল।
- ডু ইউ মিস ইউর জব?
- আই ইউজড টু। করতাম একসময়। জানো, মানুষ মারাটা হলো নেশার মত। মৃতদেহ গুলো আমাদের কাছে ছিল শুধুই টার্গেট। একসময় এমন টার্গেট খুব মিস করতাম। মাঝে মাঝে হাত নিশপিশ করতো...
- ছাড়লে কেন?
- ওয়াইফের কারণে।
আমার চোখের কৌতূহল বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে রিচার্ড। অনেক্ষণ থেমে বলে, অন্যরা যেমন শোক উপভোগ করে, আমি হয়তো মৃত্যু উপভোগ করতাম। ও বলেছিল, ‘সেই উপভোগ্য জিনিসটাই তোমায় ছাড়তে হবে। এটাই তোমার শাস্তি।’
- শাস্তি?
- হুমম। লিসা এমনটাই বলে। আমার ওপর যে ওর জন্মের আক্রোশ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১০

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: মন্তব্য করতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও না করে পারলাম না। ভাল লেগেছে।

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৩

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: রিচার্ড আমাকে এক অদ্ভুত কথা শুনিয়েছিল।
-‘জানো তো, মানুষ কিন্তু শোক বেশ উপভোগ করে।’

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.