নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা গল্প বলি শুনবেন ??? এক ছিলো ভবন। তার নাম ছিলো রানা। রানা যখন খুব ছোট, তখন থেকেই ভুগছিলো অপুষ্টিতে। কারণ তার বাবা তার প্রতি ছিলো খুবই বেখেয়ালি। রানার বেড়ে ওঠা শরীরের জন্য বাবা দুধ, হরলিক্স, ডিম কোন কিছূই দিতেন না। তাই বাবার সামনে সে ধীরে ধীরে অপুষ্টি নিয়েই বড় হতে লাগলো। বাবা শুধু চাইতেন কত তাড়াতাড়ি রানা বড় হবে আর আয় করবে।
প্রকৃতির নিয়মেই রানা ধীরে ধীরে দুর্বল ভিত্তি নিয়ে অনেক বড় হলো। এবার তাকে দেখে তার বাবা তো মহা খুশী। ছেলে বড় হয়েছে এখন কামাই করবে। যেমনি ভাবা অমনি কাজ। রানার দুর্বলতার দিকে খেয়াল না করে প্রতিনিয়ত রানার ওপর বড়ো বড়ো বোঝা চাপিয়ে তাকে দিয়ে আয় করতে লাগলো সে। যতোই বোঝা বাড়ে, রানার শরীরের স্বল্প শক্তি ততই ফুরিয়ে আসতে থাকে।
বাবার আয় বাড়ে। রানাকে নিয়ে দারুণ খুশি তিনি। রানার কাছ থেকে শুধু পেতেই চান বিনিময়ে তাকে কিছু দিতে নারাজ। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, বছর যায় আর রানার ওপর বাড়তে থাকে বাবার মহামূল্যবান জিনিসের ওজন।
হঠাৎ এক সকালে বন্ধুর টেলিফোনে ঘুম ভাঙে রানার বাবার। এক নিঃশ্বাসে বন্ধু তাকে বলে চলে...সর্বনাশ হয়েছে, তোর সব শেষ, তোর ছেলে রানা, তোর মূল্যবান বোঝাসমেত মাটিতে পড়ে হাত পা ভেঙে গুড়ো গুড়ো। তোর আমও গেছে, ছালাও গেছে...তুই পালা,তুই পালা।পুলিশ তোকে খুঁজছে।
এ কথা শুনো তো বাবার চোখ ছানাবড়া। কি বলবে বোঝার আগেই দুজনে ক্রস কানেকশনে শুনতে পায় বুড়ো এক আংকেল তাদের কথা শুনে হেসে কুটি কুটি। ফোকলা দাঁতে হেসে হেসে বলছেন, কি বলছো বাবারা, এটা কোনো ব্যাপার হলো? রানার একটা চুল ধরে দুষ্টু লোকেরা টান দিয়েছে। তাই সহ্য করতে না পেরে রানা চিৎপটাং। এমনি সময় অপর প্রান্ত থেকে আরেক ক্রসকানেকশনে এক মহিলা বলে উঠলো, এই যে ভদ্রলোকেরা আপনারা কতদিন ধরে আমার ফোনটা আটকে রেখেছেন। সেই ১৭ দিন ধরে আমি আপনাদের কথা শুনছি। ফোনটা রেখে কি এখনো আমাকে উদ্ধার করা যায় না?
এরপর যথারীতি রানার বাবাকে পুলিশ গ্রেফতার করলো। চারিদিকে পড়ে আছে রানার ভেঙে পড়া হাত, পা আর শরীরের বিভিন্ন অংশ। আর রানার শরীরের নীচে চাপা পড়ে আছে অনেক মূল্যবান সেই জিনিসপত্র।
@@@ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি রানাপ্লাজার হারিয়ে যাওয়া সেই মূল্যবান মানুষদের। বর্ষপূর্তিতে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি পরম করুণাময় আল্লাহ পাকের কাছে। আমীন।
©somewhere in net ltd.