নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অধরায় অধরা

সেরাজুম মুনীরা ১৪১

সেরাজুম মুনীরা ১৪১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষনিকের অতিথি

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৫

নিউজের ফাঁকে কলিগ নিপাকে নিয়ে নিউজরুম থেকে বের হলাম চটপটি খেতে....আধা ঘন্টা ধরে দুজন মিলে এত্তোগুলো টক নিয়ে সেই চটপটি খাওয়া শেষ করলাম...হঠাৎ চটপটিয়ালা বললো আমাকে ‘ আপা বাচ্চাটা কি আপনার সাথে এসেছে’...ওর কথায় চমকে পাশে তাকাতেই দেখি ছোট্ট একটা কিউট ছেলে বাচ্চা আমার ঠিক পাশেই বসে...মুহুর্তে কোত্থেকে এলো জানিনা...কোন কথা নেই ছেলেটার মুখে..ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে...এটা ওটা জিজ্ঞেস করছি দুজন... নিরুত্তর সে...নিপাকে বললাম, মনে হয় কথা বলতে পারে না...ও বললো, কথা না বলতে পারলে শুনতো না...আমার মনে পড়ে গেলো বাজরাঙ্গী ভাইজানের কথা....সেই মুন্নীর বয়সী বাচ্চাটা...হয়তো আরো কিছুটা ছোট... তাকিয়ে দেখলাম, পেটটা মিশে আছে...জানতে চাইলাম চটপটি খাবে? এবার মাথা ঝাঁকিয়ে জানালো হ্যা....চটপটিওয়ালাকে বললাম, ঝাল কম দিয়ে একটা চটপটি দিতে....সময় নিয়ে চটপটি ওয়ালা চটপটি বানালো...ধৈর্য নিয়ে বাচ্চাটা অপেক্ষা করলো নিশ্চুপ থেকে, চোখে মুখে কি যেন একটা টেনশন...দেখলাম কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম চিকচিক করছে...গায়ে অনেকগুলো কাটাদাগ....বললাম কাছে এসে বসতে...এবার সাহস পেয়ে ছেলেটা আমার খুব কাছ ঘেঁষে বসলো...বললাম ক্ষিদে লেগেছে?...আবারো মাথা ঝাঁকিয়ে বললো হ্যা..বললাম দুপুরে খেয়েছো?...এবার মাথা ঝাকিয়ে বললো না ....এরই মধ্যে চটপটিওয়ালা চটপটি দিলো...কেবলই ছোট বলে আমি ওর হাতে না দিয়ে, নিজেই খাওয়াতে শুরু করলাম...যে চটপটি আমরা আধা ঘন্টায় খেলাম,সেটা সে ৫ মিনিটে গোগ্রাসে খেয়ে নিলো...এরপর এক গ্লাস পানি দিলাম...পুরো গ্লাসের পানিটা খেয়ে নিলো একটানে...দেখলাম ছোট্ট পেটটা এবার রীতিমতো ফুলে উঠেছে...টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে দিলাম...কপালের চিকচিক করা ঘাম মুছলাম...বাধ্য ছেলের মতো চুপ করে থাকলো সে...দেখে মনে হচ্ছিলো এই ভালবাসাটুকু উপভোগ করছে দারুণভাবে...কিছুক্ষণ অাগের অসহায় চেহারায় এবার প্রশান্তি ফুটে উঠলো....আবারো নাম জানতে চাইলাম...কণ্ঠে এবার জোর পেয়ে আস্তে করে বললো...ইয়াসিন..খুবই অস্পস্ট করে...এরপর লাফ দিয়ে বেঞ্চ থেকে নেমে ছোট পায়ে দে ছুট....আমি অপলক তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে.....কি অযত্নে অবহেলায় বড় হচ্ছে এরা...কি অনিশ্চিত ভবিষ্যত এদের...ক্ষনিকের জন্য বাচ্চাটার মায়া আমাকে প্রচন্ডভাবে ঘিরে ধরলো....আর চোখে ভেসে উঠলো মায়াভরা ছোট্ট মুখখানি....একই চেহারায় দেখলাম কোন এক আয়ালানকে, দেখলাম বাজরাঙ্গী ভাইজানের মুন্নীকে, একই সাথে দেখলাম এদেশের চরম দারিদ্রের এক প্রতিচ্ছবি...যা মেনে নেয়া সত্যিই অনেক বেশী কষ্টকর.....

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪৮

নির্মল জাওয়াদ বলেছেন: এরকম শিশুর অভাব এদেশে নাই।এদের দেখলে নিজেরই লজ্জা লাগে,আমি কি সুন্দর দিনযাপন করি আর এরা সবসময়ই বঞ্চিত।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.