নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রংধনু প্রকৃতি

শাবা

হাসতে হাসতে বেদনা ভোলা চাই.... আমি হেঁটে বেড়াই সীমাবদ্ধ পৃথিবী ফুরিয়ে যায়। সত্যের ভূবনে সবই সত্য শুধু মিথ্যা আমার অস্তিত্ব। * শামীমুল বারী নামে আমার অন্য একটি ব্লগ রয়েছে।

শাবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

১ম পর্ব : আমরা বাংলা বানান কতটুকু শুদ্ধ করে লেখি?

১০ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২৮

বাংলা ভাষা কি এক সময় হারিয়ে যাবে?



আপনি হয়তো জোর গলায় বলবেন, অসম্ভব - কখনই নয়।



কিন্তু এমনটাই মনে করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।



সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মৃত্যুর কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের আজি হতে শতবর্ষ পরে’ কিন্তু আমাদের কবিতা, উপন্যাস শতবর্ষ কেন, পঞ্চাশ নয়, দশ বছর পরেও কেউ পড়বে না।’ কারণ কী? বলেন, ‘বাংলা কি কেউ আজকাল পড়ে নাকি? সবকিছু এখন অন্য কিছু, টেকনোলজি আর ইংরেজি এই দুটো জিনিস। এই দুটো জিনিস ছাড়া আর কিছুই টিকবে না।’



যদিও ১লা ফাল্গুনে একটি প্রতিষ্ঠিত দৈনিক পত্রিকায় ‘বাংলা এখন ৩০ কোটি মানুষের ভাষা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রবন্ধে বাংলা ভাষার দ্রুত সম্প্রসারণ দেখে প্রবন্ধকার আত্মতুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। তিনি দলিল হিসেবে রবীন্দ্রনাথের ‘বঙ্গমাতা’ কবিতাকে পেশ করেন। কবিতায় উল্লিখিত সাত কোটি বাঙালিকে পুঁজি ধরে বর্তমান সংখ্যাকে বিয়োগ করে সম্প্রসারণের বিশালতা দেখেছেন। উইকিপিডিয়ার জরিপে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ কোটি।



‘বঙ্গমাতা’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ২৬ চৈত্র ১৩০২ বাংলায়। বর্তমানে ১৪২০ বাংলা। সময়ের ব্যবধান ১১৮ বছর। জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির সর্বনিম্ন হারে হিসাব করলেও ১১৮ বছরে সাত কোটি মানুষের শুধু উত্তরাধিকারী দাঁড়ায় ৫০ কোটি। ৫০ কোটির স্থলে সারা বিশ্বে বাংলাভাষীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি। পুঁজি থেকেও ২৫ কোটি ঘাটতি। এটা সন্তুষ্টির ব্যাপার নয়, অনুশোচনার ব্যাপার।



বাংলা ভাষা সম্পর্কে অনেকেই অশনি সঙ্কেত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, 'ভাষার বেলায় পিউরিফিকেশন যত দিন না হবে, ভাষার মৃত্যু ঘটতে থাকবে। বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থা বিরাজ থাকলে আগামী ২০-২৫ বছর পরে আর টিকে থাকবে না।' এ মত প্রদানকারীদের অন্যতম হলেন বিশিষ্ট ভাষা গবেষক, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ভাষাতত্ত্বের প্রিন্সিপাল ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি প্রবীর দত্ত গুপ্ত। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের মতে, ‘সমৃদ্ধির বদলে ভাষার বিকৃতি হচ্ছে কেন? ভাষা আন্দোলনের পর ৬১ বছর ধরে এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সঙ্গত কারণে ডুবেছে মাতৃভাষা। ডুবে তলিয়ে যাচ্ছে। গড়ে ওঠেনি সচেতন প্রজন্ম। গড়ে ওঠেনি মাতৃভাষার পক্ষে সুষ্ঠু পরিবেশ।’



এ জন্য মূলত নানা মুনির নানা মতসহ বাংলা ভাষার হ-য-ব-র-ল অবস্থাই দায়ী। এমন অবস্থা চলতে থাকলে লাতিন সংস্কৃতিসহ বহু ভাষার মত বাংলা ভাষাও 'কাজির গরুর মত কাগজে আছে গোয়ালে নেই' হয়ে যাবে।



বাংলা ভাষাটা আজকাল একটা অরাজকতার মধ্যে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক গোঁজামিল ঢুকেছে। সেটা মূলত বানান এবং ব্যাকরণের জটিলতা। একই শব্দের বানান হরেক রকমের, এটি অন্য ভাষায় পাওয়া যাবে না।



বাংলা বানান নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রবল বাগ্‌যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন দেবপ্রসাদ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথ তার জবাবও দিয়েছিলেন। তা নিয়ে পরে দেবপ্রসাদ ঘোষ একটি বই প্রকাশ করেন, 'বাঙ্গালা ভাষা ও বাণান'। এখানে দুটি শব্দের বানান লক্ষ্য করতে হবে, 'বাঙ্গালা' এবং 'বাণান'। তাঁর অভিমত ছিল বর্ণন থেকে আসার জন্য 'বাণান' লিখতে হবে।



বাংলা আমাদের মাতৃভাষা হলেও তার অনেক দুরবস্থা ও হেনস্থা চলে আসছে। 'বাংলা' শব্দটিরই বানান ৬ প্রকার হয়, বাঙ্গালা, বাঙ্গলা, বাঙ্গ্‌লা, বাঙলা, বাঙ্‌লা, বাংলা। 'সবিশেষ' শব্দটির বানান প্রায় ২৪ প্রকার হতে পারে। যদিও এত প্রকারে সত্যিই লেখা হয় না, তবে সে ব্যবস্থা (সম্ভাবনা/আশংকা) এর মধ্যে নিহিত আছে। তাহলে অন্য নানা শব্দে তেমন বিভ্রান্তি কতই তো হতে পারে৤ বানানে এই বিভ্রম নিয়েই আমাদের চলাচল।



বাংলায় আছে প্রায় দেড় লক্ষ শব্দ (ইংরেজিতে সাড়ে চার লক্ষ শব্দ)। বাংলার এই দেড় লক্ষ শব্দে যদি প্রতিটিতে একাধিক বানানের 'সম্ভাবনা' নিহিত থাকে তবে যে কী বিপদ তা বুঝতে কোনই অসুবিধে নেই।



একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, এক-একটি খবরের কাগজের নিজস্ব বানান রীতি আছে, প্রতিটি সাময়িক পত্রিকার নিজস্ব বানান রীতি আছে, প্রতিটি প্রকাশনা সংস্থার নিজস্ব বানান রীতি আছে, প্রতিটি অভিধানের নিজস্ব বানান রীতি আছে, প্রত্যেক পণ্ডিত ব্যক্তির নিজস্ব বানান রীতি আছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এ অবস্থাটা ব্যাপক প্রচলিত। সেখানে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বানানরীতি, আনন্দবাজার গোষ্ঠির একটা, আজকালের একটা, চলন্তিকা বিশ্বকোষের একটা-- এ রকম অসংখ্য বানান সেখানে প্রচলিত।



এ জন্যই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আজকাল বাংলা কেউ পড়ে নাকি। সত্যি কি পড়ার লোক নেই ? পড়তে গেলেই তো বিভীষিকা, এটা কি এ রকম হয় নাকি? এভাবেই তো সব আগ্রহ হারিয়ে যায়। তাতে করে কী হচ্ছে, এই ভাষাভাষির জনগোষ্ঠী আর বাড়ছে না।



অষ্টম শতকের প্রথম থেকে ফরাসি ভাষা সরকারিভাবে ফ্রান্সে চালু হয়। তার আগে লাতিন ছিল। অষ্টম শতকে কিং হেনরি আইন জারি করলেন যে, ‘এখন থেকে সরকারি সব কাজে শুধু ফরাসি ভাষাই ব্যবহার হবে, লাতিনের আধিপত্য আমরা মানছি না।' ষোড়শ শতকে সমিতি করে ফরাসি একাডেমি হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হলো, ফরাসি একাডেমির নির্দেশনা অনুযায়ী ফরাসি ভাষা চলবে। ষোড়শ শতাব্দী থেকে ভাষার যে শব্দরূপ ও ধাতুরূপ ছিল তা আজ অবধি কোনো পরিবর্তন হয় নি। কিন্তু বাংলাতে দেখা যায় একই শব্দ কেউ ’ে' কার দিয়ে লেখে কেউ লেখে 'ি' কার বা ‘ে া’ কার দিয়ে। ফরাসি ভাষায় কিন্তু এরকম পাওয়া যাবে না। মূলত বাংলার সাহিত্যকর্মী, শিল্পী, অধ্যাপক, সংস্কৃতিকর্মী সবাই হয়তো বিভ্রান্ত নয়তো উদাসীন। যে যেভাবে পারছে লিখছে। রিসার্চ করার ক্ষেত্রে যদি রিসার্চ ওরিয়েন্টেট না হয় তাহলে যে যেভাবে পারে সে ভাবেই তো লিখে যাবে।



নি, না, ন-অর্থক সব কিছুই আলাদা করতে হবে। ‘করিনি বলিনি’ কী কারণে হয়? এক দল বলছে আলাদা হয়ে যাবে, অন্য দল বলছে একত্রে হবে। যারা একত্রে লিখছে ওদের ব্যাখা হচ্ছে, ‘নি’ শব্দটা পরাশ্রয়ী। এটা একা চলতে পারে না। কেউ কোনো প্রশ্ন করলে শুধু ‘নি’ দিয়ে উত্তর দেওয়া যায় না। আরেক দল বলছে ‘নি’ হলো চলতি রূপ। ‘নি’ ‘নাই’-এর চলতিরূপ। যেহেতু ‘নাই’ থেকে ‘নি’ হয়েছে তাই ‘নি’টা আলাদা করে লিখতে হবে।



‘নি’-এর ব্যবহারের মতো সে রকমই কিছু ব্যাপার আছে ক্রিয়া পদের শেষে ‘ে া’ কার যোগ করে দেয়া। যেমন ‘বল’ এবং ‘বলো’-এর তফাতটা কী ? ‘দেখ’ অথবা ‘দেখো’ কোনটা শুদ্ধ? ‘আসো’, ‘এস’ নাকি ‘এসো’, তিনটিই শুদ্ধ কিন্তু প্রয়োগ ক্ষেত্রটি আলাদা। যেমন, তুমি প্রায় সময়ই তো এই এলাকায় বেড়াতে আসো, তখন আমাদের বাড়িতে তো একবারও আসো না। বর্তমান কালে যদি আদেশ অনুরোধ হয়, তখন এসো হয়। যেমন ‘তুমি আমার কাছে এসো’।



কিন্তু ওটা যদি ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা পদ হয় যেমন, ‘তুমিতো বিলেত যাচ্ছ ওমুকের সাথে দেখা করো’। যদি সাধু রূপ হয় তাহলে হবে ‘করিও’। এটা হবে ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায়।

‘এ’কদিন’ এখানে খুব গরম পড়েছে। এখানে একটা গ্যাপ দিতেই হবে। গ্যাপ না দিলে একদিন হয়ে যাবে। এই যে অসংলগ্ন এটা হয়তো ছোটবেলা থেকে শিখানো হয় নি বা প্রতিষ্ঠিত করা হয় নি।



‘কি’ এবং ‘কী’ এর ব্যবহার একেকজন একেকভাবে করছে। মুখ্য ভূমিকার ক্ষেত্রে ‘কী’ হবে গৌণ ভূমিকার ক্ষেত্রে হবে ‘কি’। যেমন- সে আমাকে অনুরোধ করেছিল, ‘এমন কি’ আমার বাড়িতে এসে টানাটানিও করেছিল, তবু আমি যাই নি। এই নিরপরাধ ছেলেটাকে এত মারধর করলে, সে ‘এমন কী’ অপরাধ করেছিল?



শব্দরূপ/ধাতুরূপ, এটা জানে না বলেই কেউ ডাকে ‘এই এদিকে আস’ আস-টা অনুজ্ঞা পদ নয়। এটা হবে এদিকে এসো। এখানে বসেন হবে না, বসুন হবে। আপনি যখন এই চেয়ারটায় সবসময় ‘বসেন’ তখন এটা অনুজ্ঞা হয় না। কিন্তু কেউ যখন কাউকে অনুরোধ করবে তখন এটা ‘বসুন’ হবে। এই যে তফাতটা এটা হয় না, কারণ শব্দরূপ ও ধাতুরূপ আমাদের দেশে সেভাবে পড়ানো হয় না; কিন্তু যখন লাতিন, ফরাসি বা স্পেনিস শিখানো হয়, তখন শব্দরূপ দিয়ে শুরু করতে হয়, এটা বাধ্যতামূলক। ফরাসি ভাষাতে বেশ কিছু ক্রিয়া পদ আছে একদম পরিবর্তন হয়ে যায় কিন্তু ইংরেজিতে সেটা হয় না। এক সময় দক্ষিণ আমেরিকায় স্পেনিস ছিল সরকারি ভাষা যা তারা ঠিকমতো বলতে পারত না। সহজ বলে আজ ইংরেজি কত সুন্দর করে বলে তারা। কারণ ইংরেজিটা সোজা বলে, ওদের ক্রিয়া পদগুলো খুবই সোজা। ফ্রেঞ্চ, স্পেনিস এবং লাতিনে কিছু ভেরিয়েশন আছে, যা জীবনের শুরুতেই তারা শিখিয়ে দেবে। সেটা সে জন্যই জীবনে কখনোই ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বাংলাতেও এই বৈচিত্র্য এত ব্যাপক হারে নেই, যেটুকু আছে সেটুকু গোড়াতে শেখানো হয় না।



আমরা যারা বাংলায় লেখালেখি করি, তারা কতটুকু শুদ্ধ বানানে লেখি? আর অন্যরা? যারা লেখালেখির সাথে জড়িত নন, তাদের বানানের অবস্থা কেমন হবে ধারণা করা যায়? বাংলা বানান অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থায় থাকায় এখনো তার সত্যিকারের প্রমিত রূপ দেয়া সম্ভব হয় নি। বাংলা একাডেমি যা প্রকাশ করেছে, তা অনেকেই মানছে না।সবাই তার ইচ্ছে মত বানান লিখে যাচ্ছে। অথচ অন্য সমৃদ্ধ ভাষাগুলো সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। আমাদের দেশের শিক্ষিত সমাজ যাদের মাঝে মাঝে দু চারটা ইংরেজি বাক্য লেখতে হয়, তারা কেউই পারত পক্ষে ভুল বানানে ইংরেজি লেখেন না, এক দুইটা শব্দ ভুল লেখলে হৈচৈ পড়ে যায় এবং টাইপিং-এ গেলে তা শুধরে যায়। কিন্তু বাংলা লেখায় অহরহ ভুল লেখে যাচ্ছি, সে দিকে আমাদের কারোই নজর নেই। এমন কি অনেক বিখ্যাত ব্লগার অসংখ্য ভুল বানান ও ভুল বাক্যে ব্লগ লিখে চলেছেন। শুধরাবার কেউ নেই।



আমি বাংলা বানান নিয়ে ধারাবাহিক কিছু লিখতে চাচ্ছি। উপরের আলোচনাটা ভূমিকা বলা যায়। মূলত বানানের ব্যাপারে আমার দখলতা বাড়ানোর জন্যই এ লেখা।



তথ্যসূত্র ও বিশেষ কৃতজ্ঞতা :

১. বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখুন : অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন

২. বাংলা বানান-- এক হউক, এক হউক, এক হউক : মনোজকুমার দ. গিরিশ

৩. বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান

মন্তব্য ৭০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৭০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮

ইখতামিন বলেছেন:
বাংলা বানানে আমরা যত্নশীল না কেন?

১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

শাবা বলেছেন: আসলে আমাদের গোড়াতেই গলদ। ভাষাটা সেভাবে আমাদের শেখানো হয় না। আর যারা আমাদের বাংলা শিখাচ্ছেন, তাদেরও ভাষার জ্ঞান ভাসা ভাসা। এটা আমাদের জন্য এক দু:খজনক ব্যাপার।

২| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:





দারুন পোষ্ট +++
বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখার আপনার এই প্রয়াসকে সাধুবাদ। পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫২

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ।
বিশ্বায়নের যুগে মাতৃভাষাকে বাঁচাতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও গণসচেতনতা প্রয়োজন।

৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

সাঈদসুমন বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমি নিজেও অনেক ভুল বানানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এটা একদমই উচিৎ না। নিজেদের সচেতন হবার পাশাপাশি এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার জন্য ভূমিকা রাখা উচিৎ, যেটা আপনি শুরু করেছেন । আপনার লেখাটা পড়ে অনেক কিছু জানাও যায় যেটা খুব জরুরী। কারণ পাঠককেও কিছু দিতে হবে, নইলে আনন্দটা কেথায়। অনেক শুভকামনা রইলো। আছি আপনার সাথে।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথে থাকুন অনেক দিন। :)

৪| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:২৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
চমৎকার পদক্ষেপ। অনেক কিছু জানার এবং শেখার আছে।


অজ্ঞতা বা উদাসীনতাই আমাদের ভুল বানানের জন্য দায়ী বলে আমার মনে হয়। ইংরেজির জন্য স্পেল চেকার আছে, বাংলায় নেই। এটাও আরেকটা কারণ। সব বানান সব সময় মুখস্থ থাকবে তা সম্ভব নয়- এজন্য হাতের কাছে বানান-অভিধান রাখা প্রয়োজন। কিন্তু বানাটি ভুল না শুদ্ধ, সেটি যাচাই করার ধৈর্য বা সময় হয়তো সব সময় থাকে না। কাজেই ভুলের ছড়াছড়ি বেড়ে যায়। এ ছাড়া, কিছু তথাকথিত মুক্তমনা আছেন যাঁরা যাচ্ছেতাই বানানকেই শুদ্ধ বলে চালাতে চান। এখানে আমি তাঁদের জ্ঞানের অগভীরতাকেই প্রত্যক্ষ করেছি- একটু কষ্ট করলেই সঠিক বানানটা বের করা যায়, তা তাঁরা করতে পছন্দ করেন নি।

চলতে থাকুক।

দেখতে পারেন- বাংলা বানান প্রমিতীকরণের ইতিহাস

১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ খলিল ভাই।
বাংলা বানান প্রমিতীকরণের ইতিহাস- আপনার লেখা এ ব্লগটি দেখলাম। আপনার মত আমারও প্রমিত বানান নিয়ে জানাজানি শুরু হয় ১৯৯২ সালের পর থেকে। আমার বড় ভাই কথা সাহিত্যিক। তিনি সে সময় একটি উচ্চাঙ্গের বাংলা ব্যাকরণ লেখেন। সেখানে এই প্রমিত বানান রীতি নিয়ে আসেন।
প্রায়ই অনেকের সাথে এই বানান নিয়ে কত ঝগড়া-বাহাস হয়েছে তার ঠিক নেই। করে নি, হয় নি কিংবা কি, কী বা তৈরি, তৈরী এ ধরনের অনেক বিষয় লোকদের সামনে খোলাসা করে কত যে কৃতিত্ব নিয়েছি, তা বলে শেষ করা যাবে না। :D
আপনার ব্লগের উদ্ধৃত বাংলা একাডেমির বইগুলো অনেক আগেই দেখার সুযোগ হয়েছে। এমন কিছু বইপত্র, লেখাই আমাকে এ ধরনের লেখায় উদ্বুদ্ধ করেছে।

৫| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৫

ভারসাম্য বলেছেন: অসাধারণ ( 'ন' নয় তো? নাকি, 'নয়তো'? 'নাকি' নাকি 'না কি'? '?' না, '!' ? ) !!!

অনেক প্যাঁচ। :( .. বাংলা বানানে আমি অনেক কাঁচা। তাই ভূমিকা হিসেবে যা লেখা হয়েছে, তাতেই মুগ্ধ। বিস্তারিত পর্বে না জানি আরো কত মুগ্ধতা বাকী আছে! পরবর্তী লেখার সাথেও থাকার ইচ্ছা রাখছি।

আমার মতে বহুল প্রচলিত যে কোন রীতিই শুদ্ধ হিসেবে ঘোষিত হওয়া উচিৎ। গণমানুষ যেটাকে বেশি ব্যাবহার করবে সেটাই একসময় প্রমিত হয়ে যাবে। তবে ব্যাকরণের নিয়মগুলোও দরকারী। তাই যেমন খুশী তেমন নীতির মধ্যেও যৌক্তিকতা থাকা চাই। আমার কাছে ফোনেটিক্স অনুযায়ী ব্যাকরণের নিয়ম ও বানানরীতি প্রমিত হওয়া সবচেয়ে বেশি যৌক্তিক ও সহজ মনে হয়। একাধিক যৌক্তিক রীতির সব গুলোকেই বৈধতা দিলে, আমার মনে হয়, মানুষ মুখে যেভাবে বলে সেভাবেই লিখতে পছন্দ করবে। এজন্য অবশ্য দু/একটি অতিরিক্ত বর্ণের প্রয়োজন পড়তে পারে। তবে বাংলা বর্ণমালা এমনিতেই অনেক সমৃদ্ধ। অতিরিক্ত বর্ণ ছাড়াও বিভিন্ন 'কার'/'ফলা' ইত্যাদির মাধ্যমেও বাংলায় যেকোন ধ্বণিরূপের লেখ্যরূপ দেয়া সহজেই দেয়া যেতে পারে। তখন হয়তো 'সহজ' কে, 'শহজ' হিসেবে লিখব। কেউ 'সহজ' লিখলে সেটাতেও আপত্তি করব না। এভাবে যৌক্তিক অথবা আগে থেকেই প্রচলিত সব ধরনের রীতিই যদি একই সাথে বৈধতা পায় তাহলেই, ভাষা ও বানানের প্রমিতিকরণ সহজ হবে বলে মনে হয় আমার কাছে।

আমি যদিও ভাষাবিদ নই, কিন্তু বাংলা আমারও মাতৃভাষা। সময় সুযোগ পেলে, নিজেও হয়তো কিছু লিখতে পারি কখনো। আপাততঃ আগামী পর্বগুলোর সাথে সক্রিয়ভাবে থাকার ইচ্ছা রইল। সশ্রদ্ধ শুভকামনা।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৪

শাবা বলেছেন: ভাই, অসাধারণ বানান অসাধারণই হয়েছে, ভুল হয় নি :)
ণ-ত্ব বিধান কিংবা স্পেস বিষয়ে ভিন্ন পোস্ট লিখবো, ততদিন সাথে থাকবেন আশা করি।
মুখের ভাষা আর লিখিত ভাষার মধ্যে তফাৎ পৃথিবীর সব ভাষাতেই আছে।
একটা ঘটনা লেখছি, দ্বিজেন্দ্রলালের ছেলে দীলিপ কুমার রায় যিনি ক্যামব্রিজে অ্যাকাউনটিং পড়তে এসেছিলেন, পরে পালিয়ে রবীন্দ্রনাথের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দীলিপ কুমার বহু ভাষাতে বুৎপত্তি লাভ করেছিলেন। তো সেই দীলিপ বাবু চিঠিতে হৃদরোগ লিখেছিলেন, ‘রিদ্রোগ’। অনেক হাসাহাসির পর উনি বলেছিলেন, আমরাতো এভাবেই উচ্চারণ করি।
একজন বাড়িতে যে পোশাক পরে থাকে, সজ্জন সভাতে তো ওই পোশাকে যেতে পারে না। তো ভাষার বেলায়ও মৌখিক আর লিখিত ভাষার ব্যাপারটিও সেরকম। যা ছাপার অক্ষরে বেরোচ্ছে, যারা পড়বে হয় সমালোচনা করবে অথবা শিখবে।
এ জন্য লেখার ভাষাটা একটা নিয়মনীতির মধ্যে হওয়া চাই, যে যেমন উচ্চারণ করছে, সেভাবে লেখলেই চলবে না।
ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো পোস্ট । সিরিজ চালিয়ে যাবেন আশা করি ।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।

৭| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫

ভারসাম্য বলেছেন: রিদ্রোগ! =p~

যাই হোক, আমি অবশ্য বলি নি যে, কোন নিয়মনীতি ছাড়াই যেমন খুশী তেমন লেখা যাবে সব কিছু। যেখানে একাধিক মতের সবগুলোতেই শক্ত যুক্তি আছে অথবা যে রীতি অনেক আগে থেকেই বহুল ব্যবহৃত, সেসবের সবগুলো রীতিকে একইসাথে বৈধতা দিয়ে দেয়ার কথা। আর লেখ্যরূপকে উচ্চারণবিধির যতটা কাছাকাছি রাখা যায় ততই ভাল। কেতাবী ভাষার সাথে মুখের ভাষার পার্থক্য বেশি থাকুক অলংকরণে, বানানে নয়। বানানরীতি নির্ধারিত হোক সহজ ও যৌক্তিক নিয়ম অনুযায়ী। উদাহরণ হিসেবে, 'ণ-ত্ব' বিধান প্রসংগে একটু বলার লোভ সামলাতে পারছি না। খাঁটি 'ণ' এর উচ্চারণ রেফযুক্ত ( 'র্ণ' ) অবস্থাতেই হয়। এছাড়া 'র' ফলা, এমনকি 'র' বর্ণের পর অর্ধমাত্রার 'ন' ধ্বনির ক্ষেত্রেও, 'ণ' এর উচ্চারণ আসে কিছুটা। অথচ বিদেশী শব্দের প্রতিবর্ণায়নের ক্ষেত্রে সব ক্ষেত্রেই 'ন' ব্যাবহার প্রমিত করা হয়েছে। বাংলা শব্দের উচ্চারণে 'ঈ' এর ব্যাবহার না থাকলেও, বিদেশী অনেক ভাষার শব্দেই আছে। তাই বিদেশী শব্দের প্রতিবর্ণায়নের ক্ষেত্রেই বরং 'ঈ' এর সফল ব্যাবহার হতে পারত। অথচ সেক্ষেত্রে, 'ই' সাজেষ্ট করা হচ্ছে। আমাদের এত সমৃদ্ধ বর্ণমালা থাকা স্বত্তেও সেগুলোর সফল প্রয়োগ ঘটাতে পারছি না।

অনেক বললাম, কিন্তু রিদ্রোগ! :P না না, তার চেয়ে প্রমিতরীতি যতটুকু অনুসরণ করা যায় তাও ভাল। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দিন। ভাল থাকুন।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৮

শাবা বলেছেন: খাঁটি বাংলা শব্দে কোন ণ নেই। ণ-ত্ব, ষ-ত্ব বিধান শুধুমাত্র তৎসম শব্দের জন্য। অর্থাৎ শুধু সংস্কৃত শব্দের জন্য। বাংলা বানানের যত ঝামেলা এই সংস্কৃত শব্দগুলো নিয়েই। দেশি এবং অন্য কোন বিদেশি শব্দের জন্য 'ী', 'ূ', 'ণ', 'ষ'-এর মত জটিল কোন বিধান নেই। আসলে দু:খ এখানেই। সংস্কৃত ভাষাকে কুলীন রাখতেই সংস্কৃত পণ্ডিতরা এ অপকর্মটি করেছিলেন। আর রবীন্দ্রনাথ অনুমোদন করাতে তাদের এটা হালে পানি পায়। অথচ আরবি ভাষার প্রতিবর্ণায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্বরের প্রয়োজন আছে এবং আমাদের সমৃদ্ধ বর্ণমালাও তা করতে সক্ষম, সেখানে হ্রস্ব স্বরের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। একটি গোষ্ঠি এ বিধান মানছে না। খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানই এ কাজ করে চলেছে। বাংলা একাডেমির বানানরীতি এক আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বানানরীতি ভিন্ন।

৮| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:১৭

আশীষ কুমার বলেছেন: আপনার এই লেখা আমার অনেক কাজে লাগবে।

১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০১

শাবা বলেছেন: আপনার কাজে লাগবে জেনে খুশি হলাম।
ভাল থাকবেন।

৯| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৫০

সুমন কর বলেছেন: গুড পোস্ট।

১১ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর।

১০| ১০ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২৪

ভারসাম্য বলেছেন: আমি খাঁটি বাংলা শব্দে 'ণ' -এর ব্যাবহারের কথা বলি নি। 'ণ' বর্ণের খাঁটি উচ্চারণের প্রয়োগের কথা বলছিলাম, যা সংস্কৃত ব্যাকরণে যৌক্তিকভাবেই বিধিবদ্ধ হয়েছে। একই বিধি যদি সকল বাংলা শব্দে ( তদ্ভব, দেশী, বিদেশী) এবং বিদেশী শব্দের বাংলা প্রতিবর্ণায়নে ব্যাবহৃত হয় তাহলেই বরং শুধু বিধি জানলেই যে কোন শব্দের শুদ্ধ বানান সহজ হয়। এখন সহজ করতে গিয়ে ব্যাপারটি আরো কঠিন হয়ে গিয়েছে। তৎসম শব্দের কুলীনতা রক্ষার স্বার্থে নয়, বরং সংস্কৃত ব্যাকরণের যৌক্তিক বিধিগুলো সকল ধরনের শব্দে একইভাবে প্রয়োগেই সহজ ও যুক্তিযুক্ত মনে হয় আমার কাছে।

আমি তো দেখছি লম্বা লম্বা মন্তব্য করে ফেলছি। অথচ এর ভেতরেই হয়তো অনেক বানান ও ব্যাকরণ ঘটিত ভুল আছে। 'ভুল' বানানেও 'ভূল' লেখার পক্ষপাতী আমি। :P তবে এর ব্যাখ্যায় এখন আর না যাই। এমনিতেই বেশ পাকামো করে ফেলছি। আসলে আমি ব্যাকরণে অতটা দক্ষ না। :#> আর এই মন্তব্যের উত্তর অল্পতেই সেরে দেবেন। না হয়, আবার পাকামো করতে হতে পারে। পেরে উঠব না সেভাবে। তাতে কোন লাভও নেই। আমার জানার ক্ষেত্রই সীমিত হয় কিছুটা।

শুভকামনা।

১১ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৪

শাবা বলেছেন: কেন ভাই, 'ভূল' লেখতে চান? অদ্ভুত ব্যাপার তো। দেখছি, আপনি বাংলা বানানের খৈল-নৈচা বদলিয়ে ফেলতে চান।:P
আমি তৎসমকে আত্মিকরণের পক্ষপাতি। এর কুলীনতা ভাঙতে চাই। আমাদের উচ্চারণে যেহেতু দীর্ঘস্বর নেই, এখানেও রাখার প্রয়োজন নেই। যেভাবে আমরা অন্য বিদেশি শব্দকে আমাদের মত করে নিয়েছি, সংস্কৃতকেও তেমন করতে চাই। কিন্তু এখনো যেহেতু গ্রহণযোগ্য হয় নি বলে আমি বাংলা একাডেমির প্রমিত বানানই অনুসরণ করছি। দেখুন, ভাষা আন্দোলনর জনক এবং বাংলা একাডেমির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাসেম উচ্চারণ অনুযায়ী 'রিদ্রোগ'-এর মত অনেক বানানই প্রচলন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা হালে পানি পায় নি। যেমন তিনি 'বিজ্ঞান'-কে বিগ্যান লেখতেন, এমন অনেক শব্দেরই তার নিজস্ব বানান ছিল। এ জন্য কোন কিছু করতে হলে তা সব মহলে গ্রহণযোগ্য করেই করতে হবে। নইলে নতুন ফেরকার আবির্ভাব ঘটবে।
ভাই, মত প্রকাশে তো আমরা সবাই স্বাধীন। কেন প্রতি উত্তরে এত সংকোচ? ইচ্ছে মত লেখেন। আমাদের ব্যাপারটা বেশ জমে যাচ্ছে।

১১| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫

চিরতার রস বলেছেন: চমৎকার উদ্দ্যোগ। বাংলা ভাষাকে দূষিত করতে আমি নিজেও কিছুটা দায়ী। সময়ের সাথে তাল দিয়ে দিয়ে হরহামেশাই ভুল বানান লিখছি, ভাষা বিকৃতি করছি। নিজেকে দিয়েই দেখতে পাচ্ছি বাংলা ভাষার খারাপ ভবিষ্যতের চেহারা। :( :(

১১ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ চিরতার রস।
ফানি লেখায় অনেক সময় শব্দকে ফানি বানাতে উলট-পালট করা হয়, তা জায়েয বলতে পারেন।
তবে সবক্ষেত্রে ইচ্ছেমত বানান লেখা ঠিক না। আমাদের উপলব্ধি শানিত হলে, বাংলা ভাষাটা হয়তো টিকে যাবে।
ভাল থাকুন, শুভকামনা।

১২| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

আদম_ বলেছেন: প্রিয়তে থাকলো। দোষ কম বেশি সবারই আছে। তবে আমি অভিযোগ করবো আমাদের বাংলা পড়ানোর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে, যারা আমাদের গরু-পেটানো ছাড়া আর কিছুই পারতেন না। শালা পড়াশোনা থেকে মনটাই উঠে গিয়েছিলো। বাংলা ব্যাকরণ বইয়ে প্রতিটা বিষয় এত জটিল ভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে যে নেহায়েত পন্ডিত না হলে বোঝা দুস্কর, যা বাংলার প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টিতে যথেষ্ট।

আর জাতি হিসেবে আমরাতো উদাসীন বহুকাল থেকেই..........

১২ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০২

শাবা বলেছেন: আসলে আমাদের ভুল এখানেই যে, নিজের ভাষা-- এখানে শেখার কী আছে?

আমাদেরকে সহজভাবে যদি ধাতুমূল, শব্দমূল এবং শব্দের বিভিন্ন রূপান্তর অর্থাৎ শব্দপ্রকরণটা ভালভাবে শিখিয়ে দেয়া হতো তাহলে বানান নিয়ে আজীবন এমন বিভ্রান্তির মধ্যে আমরা পড়তাম না।

বাংলা বাক্যপ্রকরণটা অনেক সহজ এবং সুন্দর। এটা শেখার তেমন কিছু নেই। শব্দের আগে পরের ব্যবহারে বাংলা বাক্যের কোন অর্থ পরিবর্তন হয় না। পৃথিবীর খুব কম ভাষায় এমনটা রয়েছে। যেমন, আমি ভাত খাই/ আমি খাই ভাত/ ভাত আমি খাই/খাই ভাত আমি-- সবটাই শুদ্ধ।

এই সমৃদ্ধ ও সুমধুর ভাষাটাকে বাঁচাতে হলে আমাদের সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

১৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:১৯

ভারসাম্য বলেছেন: জমছে বটে, কিন্তু বোঝার/বোঝাতে পারার ঘাটতিও ঘটছে হয়তো। সংকোচ কিছুটা এ জন্যও। তবে সংকোচের চেয়েও বড় হল, আগামী পর্ব গুলোও তাড়াতাড়ি পেয়ে আরো অনেক কিছু জানার।

'ভুল' নিয়ে 'ভূল' করতে চাওয়ার পেছনে বড় রকমের তেমন প্রয়োজন নেইও। কিছুটা হালকা মেজাজেই বলছিলাম। তবু একদমই অযৌক্তিক, তাও না। খুব ছোট হলেও একটা যুক্তি এমন যে, মহাপ্রাণ ধ্বনিগুলো, স্বল্পপ্রাণ ধ্বনির চেয়ে একটু বেশি সময় ধরে উচ্চারিত হয়, তাই এর সাথে সংযুক্ত স্বরটিও একটু হলেও দীর্ঘ হয়। এ এমন কিছু নয়। কিন্তু বড় যুক্তি হল, 'ভুল' যেমন আছে থাকুক, সাথে 'ভূল' কেও শুদ্ধ করে নেয়া হোক। এতে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না, শুদ্ধতাই বাড়বে মনে হয় আমার কাছে।

'জ্ঞান' ও 'গ্যান' এর উচ্চারণে ভিন্নতা আছে। ভুল উচ্চারণের বানান সঠিক নিয়মে লিখলেও তা ভুলই। কিন্তু সঠিক উচ্চারণের ভুল বানান হওয়া উচিৎ না। বাংলা শব্দে ( বিশেষ করে, তৎসম শব্দে) তেমন একটা নেইও। যেটুকু ভিন্নতা আছে, তাও যথার্থই বিধিবদ্ধ। তাই স্রেফ সংস্ক্রিত'র ( 'ঋ-কার' আসছে না :( ) কুলীনতা ভাঙার জন্যই, কম যৌক্তিক বানান রীতি প্রচলনের যুক্তি নেই। আপনিও হয়তো সেভাবে বলেন নি। যাই হোক, এখন যদি বর্তমান প্রমিত নিয়ম অনুযায়ী তৎসম শব্দকেও অন্য বাংলা শব্দের মত একইভাবে আত্তীকরণ করা হয়, তখন 'ণ'/'ষ'/'ঈ'/'ঈ-কার'/'ঊ'/'ঊ-কার' ইত্যাদির কোন ব্যাবহারই থাকবে না। অথচ এগুলোর প্রত্যেকটির আলাদা ও সত্যিকার ধ্বনিভিত্তিক তাৎপর্য আছে। এগুলো আমাদের বর্ণমালার সম্পদ। এর মাধ্যমেই আমরা অন্যভাষার শব্দ সমূহকে বাংলা ভাষায় যথাযথ ভাবে আত্তীকৃত/প্রকাশিত করতে পারি।

আমি বাংলা বানানের খোল-নলচে বদলে ফেলার পক্ষে নই, বরং যা ছিল তা তেমনিই থাকুক, তবে নতুন যা কিছু যুক্ত হচ্ছে তা যৌক্তিক কারনে ও যৌক্তিক নিয়মে সংযোজিত হোক এবং সব ধরনের নিয়মই একই সাথে প্রমিত মানসন্মত ঘোষিত হোক। তখন কেবল নিয়মগুলো জেনে রাখলেই সব শব্দেরই প্রমিত বানান শুদ্ধভাবে লেখা সহজ হবে, পড়তেও সহজ ও সঠিক উচ্চারণে হবে। 'সাদা' কে 'শাদা' হিসেবে জীবনানন্দ লিখেছেন তার কবিতায়। আমিও 'শাদা' -এর পক্ষপাতী, কিন্তু 'সাদা' কেও মানব। এভাবেই হয়তো, ভাষা আরো সহজ ও সমৃদ্ধ হত।

আবারো পাকামো করতে হল। :P সংকোচ আছে ;) । থাকুক একটু আপাততঃ। তাছাড়া জমিয়ে তোলার মত রসদ সম্পন্নদের বেশি বেশি আনাগোনা আশা করছি এখানে। তার আগে নিজ উদ্যোগেই একটু তাঁদের ( আপনিও আছেন) চেয়ার গরম করে রাখার চেষ্টা, যাতে আপনাদের মাধ্যমেই, আমার মত বানান/ব্যাকরণ অনভিজ্ঞরা জানতে পারি অনেক কিছু।

শুভকামনা। :)

১২ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

শাবা বলেছেন: ভুল নিয়ে আমি আসলে এভাবে ভেবে দেখে নি। দেখছি আপনার ভূলই ভুল না আর পণ্ডিতরাই ভূল :D করেছেন, যেমন তারা বাঙলা-কে বাংলা মেনে নিয়েছেন।

একই শব্দের বানান বিভিন্ন হলে ভাষা সমৃদ্ধ হয় না। বরং নতুন নতুন শব্দ আমদানি বা তৈরি করলে ভাষা সমৃদ্ধ হয়। দেখুন, বৃটিশ ইংরেজি এবং আমেরিকান ইংরেজির প্রভেদ সুস্পষ্ট। তাদের অল্প কিছু শব্দের বানানে ভিন্নতা আছে। যিনি বৃটিশ ইংরেজি ব্যবহার করেন, তিনি পারতপক্ষে আমেরিকান বানান ব্যবহার করেন না। আমাদেরও বাংলা এমন সুনির্দিষ্ট ভাগে বিভক্ত হতে পারে। হতে পারে কোলকাতার বাংলা, ঢাকার বাংলা। কিন্তু এমন হওয়া কাংখিত নয় যে, প্রত্যেক লেখকের, প্রত্যেক পত্রিকার, প্রত্যেক সংস্থার পাণ্ডিত্ব জাহিরের জন্য নিজস্ব বানানের সমাহার। এতে করে নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে, সংশয়ে পড়ছে। বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে এক ছাতার নিচে আসতেই হবে।

আপনার এ কথার সাথে আমিও একমত যে, তৎসম শব্দ যেমন আছে, তেমনই থাকা দরকার। এমন করলে আমাদের সমৃদ্ধ বর্ণমালার অনেকগুলো ধ্বনি ও বর্ণ আমরা হারিয়ে ফেলবো। আমি এ কারণে কৌলিন্য ভাঙার কথা বলেছিলাম যে, তারা নিজেদের বেলায় এক নিয়ম, কিন্তু অন্য সকল শব্দের জন্য ভিন্ন নিয়ম বানিয়েছে। যেসব বিদেশি শব্দের বিভিন্ন স্বর ও ধ্বনির প্রয়োজন রয়েছে তাদের জন্য তা মেনে নিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। সবাই এক ছাতার নিচে আসতে পারি। নইলে তৎসম শব্দকেও অন্যসব শব্দের মত এক করে দাও- এ অর্থেই আমি আত্তীকরণের কথা বলেছিলাম।

সুচিন্তিত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

১৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৪

বেকার সব ০০৭ বলেছেন: এক কথায় অসাধারন পোস্ট দিছেন, অজানা তথ্য গুলো জানা হল

১২ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৪

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
বাংলা ভাষা টিকানোর আন্দোলনে আপনিও শরিক হন।

১৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:০৩

ভারসাম্য বলেছেন: জ্বী, আমার মূল বক্তব্য এটাই যে, প্রমিত করতে গিয়ে তৎসম শব্দ ভিন্ন অন্যান্য বাংলা শব্দ ও বিদেশী শব্দের প্রতিবর্ণায়নে আলাদা নিয়ম করা ঠিক হয় নি। এর কারণ এই যে, সংস্কৃত ব্যাকরণ যথেষ্ট যৌক্তিক ভাবেই বিধিবদ্ধ ছিল।

একাধিক বানানরীতির যথেচ্ছ ব্যাবহার ভাষার শৃংখলা নষ্ট করে সত্যি, কিন্তু ভাষার বিকাশে একই শব্দের একাধিক বানান যথার্থ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদনের প্রয়োজন আছে। যদিও ভাষা প্রথমতঃ গণমানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে ব্যাবহৃত মৌখিক কথপোকথন এবং দ্বিতীয়তঃ সেই ভাষার সাহিত্যচর্চার উপর নির্ভর করে। সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রেও সাহিত্যিকের গুণের চেয়েও গণমানুষ সেটাকে কিভাবে, কতটুকু গ্রহণ করছে সেটাই মুখ্য। জীবনানন্দের কবিতা তার সময়ে মোটেও আদৃত হয়নি, ব্যাকরণের হিসেবেও ভুল-ভাল পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আজ, জীবনানন্দের কবিতাই বাংলা কবিতার মানদন্ড অনেকটা। কিন্তু সাহিত্যের মাধ্যমেও ভাষা যত না টেকসই হয়, তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব মানুষের প্রয়োজনের জায়গাটি। এমন অনেক ভাষা পাওয়া যাবে যে ভাষায় অনেক সাহিত্য রচিত হয়েছে কিন্তু সেসব ভাষায় মানুষ এখন আর কথা বলে না। এজন্যই ভাষাকে যুগপোযোগী করারও প্রয়োজন আছে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রযুক্তির সাথে তাল মেলানো। শহীদ মুনীর চৌধুরীর বাংলা টাইপরাইটিং ইন্টারফেইস প্রবর্তন, পরে কম্পিউটারে বিজয় কী-বোর্ড, ইউনিকোড হিসেবে বাংলা ভাষার অন্তর্ভূক্তি, এখনকার অভ্র ইত্যাদিরও প্রচন্ড ভূমিকা রয়েছে ভাষা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে। একেক পত্রিকার একেকরকম বানানরীতি হবার কারনও এটা যে, অনেক কিছুই যৌক্তিক ও যুগোপযোগী উপায়ে প্রমিতিকরণ করা হয় নি।

যাই হোক, আমি নিজে প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট হওয়ায় যুক্তির প্রতি বিশেষ অনুরাগী। ভাষায় অনেক কাঁচা। আমার কাছে নিয়ম শিখে নেয়া সহজ মনে হয়। আলাদা করে প্রতিটা শব্দের বানান শেখা অনেক কষ্ট। /:)

তবে তারপরও, ভাষার ক্ষেত্রে ভাষাবিদগণকেই গুরু মানবো। যে নিয়মগুলো চালু আছে সেগুলোই শেখা দরকার। যে নিয়মের সংস্কার দরকার মনে হয়, সেগুলো বলব হয়তো কেবল। কিন্তু পালন করার দিক দিয়ে ব্যাকরণ ও প্রমিত রীতিতে যা আছে সেটাই পালন করার চেষ্টা করা উচিৎ। সেগুলোই জানি না ভাল। তাই এত সংকোচ। :P

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩

শাবা বলেছেন: আমাদের ডায়ালগ প্লুটোর ডায়ালগ নামে খ্যাত সক্রেটিসের ডায়ালগের মত হচ্ছে কি না, যার মাধ্যমে অনেক বিষয় সবার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে।

সাহিত্যে আপনি গণমানুষের ভাষার কথা বলেছেন, সেটা ঠিক আছে। তাই সংলাপে অনেক কথ্য ভাষা দেখা যায়, যা গ্রহণযোগ্য। সেটাও একটা ভাষা, কিন্তু আমরা কথা বলছি বানান নিয়ে। কথ্য ভাষা দিয়ে আপনি কিন্তু বর্ণনা দেন না। শুদ্ধ ভাষায় আপনি কথ্য শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্যই আঞ্চলিক ভাষার অভিধান লেখা হয়েছিল। যাতে বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডার বেড়ে যায়। তো সব শব্দেরই একটা নির্দিষ্ট বানান থাকতে হবে। হ্যাঁ, আমিও তো নিয়মের কথা বলছি, প্রতিটি শব্দের আলাদা বানান শেখার কথা বলছি না।

বানানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কিভাবে সহযোগিতা নেয়া যায়, এ কেন্দ্রিক আমার একটা লেখা থাকবে। সে ক্ষেত্রে আপনার সহযোগিতা পাব আশা করি।

খুব ব্যস্ত ছিলাম, তাই উত্তর দিতে দেরি হয়ে গেল।

শুভেচ্ছা রইল।

১৬| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২৯

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অসামান্য এবং চমৎকার একটা পোষ্ট। প্রিয়তে সরাসরি।+++।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪

শাবা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৭| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৮

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন: আসলে আমাদের গোড়াতেই গলদ। ভাষাটা সেভাবে আমাদের শেখানো হয় না। আর যারা আমাদের বাংলা শিখাচ্ছেন, তাদেরও ভাষার জ্ঞান ভাসা ভাসা।

আমাদের উপলব্ধি শানিত হলে, বাংলা ভাষাটা হয়তো টিকে যাবে।

অনন্য পোস্ট। ধন্যবাদ।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ অস্পিসাস প্রেইস।

১৮| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:০১

আদম_ বলেছেন: ভাত আমি খাই/খাই ভাত আমি-- সবটাই শুদ্ধ
এভাবে লিখলে ভাব না হয় বোঝা গেল, বাক্য গঠন শুদ্ধ কিনা? জানতে চাই।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৪৯

শাবা বলেছেন: ব্যাকরণের বিধিবদ্ধ আইনে হয়তো ধরাবাধা কিছু নিয়ম আছে। তবে রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে হালের হুমায়ন আহমেদ পর্যন্ত সবারই সাহিত্যকর্মে এ ৪ধরনের বাক্যের প্রয়োগ দেখতে পাবেন। কবিতায়তো অহরহ হচ্ছেই। এমনকি পঞ্চম/ষষ্ঠ ধরনের বাক্য হতে পারে।
ধন্যবাদ

১৯| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

কাকভেজা বলেছেন: অনেকদিন পর একটা ভাল লেখা পড়ার সুযোগ হল। আজকাল উঠতি সাহিত্যিকদের টানাপোড়নে আমাদের মত পেন্সিল হাতে বাঙালীদের নাজেহাল অবস্থা। একটা কিছু লিখলেই ৪/৫ রকম তত্ত্ব সামনে এসে হাজির। কেউ বলে ভুল হয়েছে, কেউ বলে চলে, আরো কতরকম মত। কিন্তু আসলে যেভাবে বাংলা ভাষার বানান দুয়ার খুলে রাখা হয়েছে তাতে ভবিষ্যতে যে, বিদেশীরা এসে বাংলার নতুন বানান সৃষ্টির দুঃসাহস দেখাবে না তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে কি? যাই হোক, আমরা বাপু আদার ব্যাপারি জাহাজের খবর নিয়ে লাভ কি। শুধু এমন দিন যেন আমাদের দেখতে না হয় যে, বাঙালিরা বানান ধান্ধায় পড়ে এমন যেন বলতে শুরু না করে "ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি"। আপনার লেখা পড়ে উপকৃত হলাম। চালিয়ে যান। +

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২৩

শাবা বলেছেন: বিশ্বায়নের কারণে মানুষের আন্তর্জাতিক রূপ পাচ্ছে। মানুষ কোন দেশ বা ভাষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এখন। তাই সুযোগ ও সুবিধা যেখানে পাবে সেখানেই ছুটবে সবাই। ডারউইন তার On the Origin of Species বইয়ে দেখিয়েছিলেন যে Survival of the fittest বা যোগ্যদের জন্য পৃথিবী। সেই সূত্রেই বলতে পারি, আমরা যদি ভাষা ও বানান নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করি, তাহলে নতুন প্রজন্ম অন্য ভাষাকেই গ্রহণ করবে। তার প্রমাণ আমরা এখনই দেখতে পাচ্ছি, নতুন প্রজন্ম ইংলিশ মিডিয়াম আর ইংলিশ ভার্সন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে বাংলাকে ইতোমধ্যে ২য় ভাষা বানিয়ে ফেলেছে।
বাংলায় কিছু লেখতে গিয়ে যখন বার বার তারা কনফিউশনে পড়বে, তখন আর বাংলায় কিছু লেখবে না। বরং ইংরেজিতে অফিসিয়াল ওয়ার্ক এবং ভাব প্রকাশ করতে থাকবে। বর্তমানে এ প্র্যাকটিস কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে।
দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্মকে এখনই এ ভাষাকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

২০| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:১০

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:





ভাষার আঞ্চলিকতা ও ভাষা বিকৃত করা থেকেও বিরত থাকা উচিত, অর্থাৎ শুদ্ধ ভাষার চর্চা করা উচিৎ। আপনার পোষ্টে প্লাস, শুভেচ্ছা সতত।



১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২৯

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ কসমিক- ট্রাভেলার।
হ্যাঁ, আপনি ঠিক বলেছেন। আঞ্চলিক শব্দ নিয়ে আমরা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে পারি, তবে তা একটা মানদণ্ডে হতে হবে।

২১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

ভারসাম্য বলেছেন: আবারও একটু ভুল বোঝাবুঝি সম্ভবতঃ। সাহিত্যে কথ্য ভাষার ব্যাবহারের কথা বোঝাতে চাই নি। একটি ভাষার টিকে থাকা ও বিকাশের জন্য সেই ভাষা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কতটুকু ব্যবহৃত হচ্ছে, এটাই মুখ্য। তারপরে হল, সেই ভাষায় সাহিত্যচর্চা কেমন হচ্ছে সেটা। একটি ভাষার কথ্যরূপেও অঞ্চলভেদে একাধিক ফর্ম থাকতে পারে, কিন্তু সেই একাধিক আঞ্চলিক রূপের মধ্যে থেকে একটি প্রমিত রূপও থাকা প্রয়োজন। বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে যেমন, নদীয়া-শান্তিপুরের আঞ্চলিক ভাষাকেই ভিত্তি ধরে ভাষা প্রমিতিকরণ করা হয়েছে ধরা যায়। অতঃপর এই প্রমিত ভাষাই সেই ভাষাভাষী মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কতটুকু ব্যাবহৃত হচ্ছে, এটিই একটি ভাষার বিকাশের প্রধান শর্ত। এই প্রয়োজন যেমন মুখের কথায়, তেমনি লেখায়ও। চিঠি, সংবাদপত্র, পাঠ্যপুস্তক, অফিস-আদালত ইত্যাদি। এর পরে আসে সাহিত্য-সংস্ক্রিতির ক্ষেত্রে সেই ভাষার ব্যাবহার। এখানেও কথ্যরূপ ও লেখ্যরূপের ব্যাপার আছে, কিন্তু ভিত্তি হবে সেই প্রমিত ভাষাই। নাটক, সিনেমা, গান, কবিতা, গল্প সবকিছুই এই দ্বিতীয় গোত্রে পড়ে। ভাষার বিকাশে সাহিত্য-সংসকৃতির অবদানও অনেক এবং এখানেও যত সাহিত্য রচিত হচ্ছে, তার মধ্যে গণমানুষ কতটুকু গ্রহণ করছে, সেটাও একটা ফ্যাক্টর।

ভাষার কথ্যরূপের ক্ষেত্রে 'উচ্চারণবিধি' প্রধান। লেখ্যরূপের ক্ষেত্রে 'বানানবিধি'। উভয়ক্ষেত্রেই ব্যাকরণ একই। মানে, ব্যাকরণ হল একটি ভাষার সার্বিক নিয়মকানুন যার মধ্যে কথ্য ও লেখ্য উভয়রূপের নিয়মই অন্তর্ভূক্ত।

যাই হোক, এই পোষ্টটি হল বাংলা শব্দের বানান নিয়ে। যৌক্তিক-অযৌক্তিক, সর্বসন্মত-মতভেদ যুক্ত যাই হোক না কেন, বাংলা শব্দের বানান এর একটি ( একাধিক অবশ্য) প্রমিত রীতি আছে। সেটা যেমন শেখা ও চর্চার দরকার আছে, তেমনি অসংগতি/মতভেদ এর ক্ষেত্রে বলারও থাকে অনেক কিছু। সেটা বলতে গিয়েই, এই পোষ্টের উদ্দেশ্যের বাইরেও অনেক কথা হচ্ছে। যদিও কথাগুলো একেবারে নিরর্থক নয়, তবে মূল উদ্দেশ্য চাপাও পড়ছে কিছুটা। খারাপ লাগছেনা অবশ্য। :D

সামনে আরো বলব হয়তো। আমি নিজেই কিছু লিখতেও চেয়েছিলাম কিছু কিছু অসঙ্গতি সম্পর্কে। হয়ে ওঠেনি। এখন হয়তো আপনার পোষ্টের কমেন্টে কমেন্টেই সেগুলোর অনেক কিছু বলা হয়ে উঠতে পারে। লেখার সাথে আগ্রহের সাথেই পাবেন। শুভকামনা। :)

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:১৯

শাবা বলেছেন: এখানে ভুল বোঝাবুঝি তো তেমন দেখছি না।

আপনার প্রধান বক্তব্য ছিল যে, ভাষার বানানের বিভিন্ন রূপ থাকতে পারে, যৌক্তিক সব রূপকে মেনে নয়া উচিৎ, নইলে ভাষা গতিহীন হয়ে যাবে। উদাহরণ হিসেবে জীবনানন্দকে এনেছেন। আমি এ বক্তব্যেরই কিঞ্চিৎ বিরোধিতা করে আসছিলাম। এভাবে দেখতে দেথতে অনেক জল গড়িয়ে গেল।

আপনি গণমানুষের কথা বলছেন বার বার। কিন্তু গণমানুষের ভাষার সাথে তো আমার কোন বিরোধ নেই। আমিও গণমানুষের সাহিত্যের পক্ষে এবং ভক্তও বটে। ভাষাকে গতিশীল ও চলমান রাখতে গণমানুষের ভাষা, চেতনা এবং বক্তব্যে সাহিত্য চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা বানান নিয়ে কথা বলছি। শব্দের উচ্চারণ কিন্তু পরিবর্তনশীল এবং অঞ্চলভেদে বিভিন্ন রকম। এক অঞ্চলের উচ্চারণকে মানদণ্ড ধরে বানানের প্রমিতরূপ দান করলে সেটা যদি সার্বজনিন হয়, তার উপর ভিত্তি করে ভাষা দাঁড়িয়ে যায়। তারপর উচ্চারণ বার বার পরিবর্তন হলেও বানান কিন্তু পরিবর্তন হয় না। উচ্চারণ পরিবর্তন হওয়াটাই স্বাভাবিক। বার বার যদি উচ্চারণ অনুযায়ী বানান পরিবর্তন হয় তাহলে ভাষা ও সাহিত্য যে কালের সংযোজনী তা হারিয়ে যাবে। ইংরেজির কথা আবারো বলতে হচ্ছে। গত একশত বছরের ইংরেজির উচ্চারণ প্রায় তিনটি ধারায় বিভক্ত হয়েছে, কিন্তু বানান অপরিবর্তন থেকেছে সবসময়। তাই আমরা বাংলা বানানের সার্বজনিন প্রমিত রূপ দিতে পারলে আর বানান পরিবর্তন নিয়ে মাথা না ঘামানো লাগবে না। তখনই বাংলা ভাষা একটি চিরন্তন রূপ লাভ করবে। সে দিনের অপেক্ষায় রইলাম।

এটা জেনে খুবই ভাল লাগলো যে, আপনি এ বিষয়ে কিছু লেখতে চাচ্ছেন। আপনি এ বিষয়ে কিছু লেখলে খুব খুশি হবো।

২২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

আদম_ বলেছেন: ভালো পোস্টের কদর এখনো আছে......
বহু ইংরেজি শব্দের বাংলা অনুবাদ/সমার্থক শব্দ নাই। এই যেমন মনে করেন "পোস্ট" দেয়া, ডাউনলোড/আপলোড ইত্যাদি। সময়-সময় এগুলো করলে ভাষার পাখায় একটা করে পালক যোগ হতো। আমরাই (সামুর লিখিয়েরা) শুরু করে দেইনা কেন কাজটা........নাকি আবার লাইসেন্স লাগবে।

তবে এক সময় বাংলা নামের কোন ভাষা ছিলনা.......এখন আছে........ভবিষ্যতে থাকবে না ।

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪১

শাবা বলেছেন: আপনি সুন্দর কথা বলেছেন। আসলে আমাদের শব্দের চাষ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেকটা। আমরা নতুন নতুন শব্দ তৈরি করছি না। শক্তিশালী সাহিত্যিকের অভাবে এমনটা হচ্ছে। যেমন, রবীন্দ্রনাথ report শব্দের বাংলা বানিয়ে ছিলেন প্রতিবেদন। এমন অসংখ্য শব্দ তিনি তৈরি করেছিলেন। এমন মেরুদণ্ড সম্পন্ন লেখক কোথায় এখন?
এসব ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে 'সাহিত্যে মননশীলতা' নামে আমার একটা লেখা আছে, যা ব্লগ বা কোথাও এখনো প্রকাশ করা হয় নি। বানানের প্যাচাল শেষ হলেই হয়তো এ ব্লগে আমি প্রকাশ করবো।
আমার বিশ্বাস বাংলা নামের ভাষা সব সময় থাকবে। যখনই বিপদে পড়বে কেউ না কেউ এটা রক্ষায় এগিয়ে আসবে।

২৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

ভারসাম্য বলেছেন: ভুল বোঝাবুঝি মানে এমন নয় যে, বড় রকম কোন বিরোধ তৈরী হচ্ছে। উত্তর-প্রতিউত্তর হিসেবে যা আসছে সেগুলোও ভুল না, বরং উপভোগ্য ও উপকারীই মনে হচ্ছে আমার কাছে।

যেমন, বাংলা শব্দে খাঁটি 'ণ' উচ্চারণের কথায়, খাঁটি বাংলা শব্দে 'ণ' নেই এসেছে, যার সাথে আমারো দ্বিমত নেই। খাঁটি গরুর দুধেও যেমন ভেজাল থাকতে পারে, তেমনি ভেজাল গরুর খাঁটি দুধেও অনেক ঘাটতি থাকতে পারে। :P

একইভাবে, ভাষার বিকাশে গণমানুষের দৈনন্দিন জীবনে সেই ভাষার ব্যবহার এবং সেই ভাষার সাহিত্যচর্চার কথায়, সাহিত্যে গণমানুষের ভাষা ব্যাবহারের কথা এলেও, কথাগুলোর সাথে দ্বিমত নেই মোটেও।

তাই ভুল বোঝাবুঝি হলেও, যে জল গড়াচ্ছে তা স্রোতের অনুকূলেই বইছে। :D

হ্যাঁ, আমার প্রধান বক্তব্য অনেকটা এমন যে, যে সকল ক্ষেত্রে ভাষা প্রমিতিকরণ অধ্যায়ে নতুন সংযোজনগুলো যৌক্তিক উপায়ে হয় নি এবং যে সকল ক্ষেত্রে মতবিরোধ আছে সেই ক্ষেত্রগুলোতে অন্ততঃ একাধিক যৌক্তিক মত সমূহের সবগুলোকেই বৈধতা দেয়া। তার মানে এই নয় যে, আগে থেকেই যৌক্তিকভাবে বিধিবদ্ধ ও বহুল প্রচলিত বানান এও সংস্কার আনা। একটা সর্বজন গ্রহণযোগ্য বানানবিধি একটি ভাষার সংহতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেই ধাপে পৌঁছুবার জন্যও আগের ধাপে একাধিক ভিন্নতাকে অনুমোদনের প্রয়োজন আছে। সেটা না করলে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজের মত করে আলাদা আলাদা বানানবিধি অনুসরণ ঠেকানোও যাবে না। তবে ব্যাক্তিপর্যায়ে অবশ্যই, যে নিয়ম প্রমিত ধরা হয়েছে ( আমাদের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত) সে নিয়মসমূহই মেনে চলা উচিৎ। আর প্রমিতিকরণের কাজটি এখনও যেহেতু একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই কিছু কিছু নিয়মের সংস্কার এর কথাও বিভিন্ন মহল থেকে আসবে। সবই ভাষার টিকে থাকা ও বিকাশের স্বার্থেই।

আমিও অনেকটা সেদিকটা মাথায় রেখেই এটা ওটা বলছি এই পোষ্টে। আশা করছি, নিজের আর আলাদা করে কোন পোষ্ট লিখতে হবে না। আপনার লেখাতেই কমেন্ট করে করেই অনেক কিছু বলা হয়ে যাবে হয়তো। এভাবেই এই লেখার সাথে আছি। সাথে আছি ভাষার, ভাষা টেকানোর আন্দোলনে। :)

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৫

শাবা বলেছেন: আপনার ইতিবাচক মন্তব্য খুব ভাল লাগলো।

আপনার এ মন্তব্যের বিস্তারিত জবাব পরে দিব। আমার পরবর্তী লেখার পর।

ধন্যবাদ।

২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৪০

শাবা বলেছেন: দুঃখিত, আপনার সঠিক জবাব দিতে অনেক বিলম্ব হয়ে গেল । ইদানিং আমার খুব ব্যস্ততা যাচ্ছে। তারপর নতুন লেখার ভীষণ তাগাদা অনুভব করছিলাম। এটাও পীড়া দিচ্ছিল বার বার। শেষ পর্যন্ত নতুন পোস্টও দিয়ে দিলাম। তড়িঘড়ি করার কারণে সেখানে অনেক টাইপিং মিসটেক হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রকাশ হলো আর কি। আশা করি সেটা দেখবেন এবং আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পাব।

একটা সর্বজন গ্রহণযোগ্য বানানবিধি একটি ভাষার সংহতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেই ধাপে পৌঁছুবার জন্যও আগের ধাপে একাধিক ভিন্নতাকে অনুমোদনের প্রয়োজন আছে। আপনার এ কথার সাথে আমি প্রায় একমত। দেখুন ১৯৩৬ সালের কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত বানানরীতিতে কিছু কিছু শব্দের বিকল্প প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। ১৯৯২ সালের বাংলা একাডেমির বানানরীতিতে সেগুলো উঠিয়ে একক বানান দেয়া হয়েছে। আবার বাংলা একাডেমি ঈমান, ঈদ এরকম কতগুলো বানানকে যথাযথ রেখেছিল। বিদেশি শব্দ হিসেবে পরিবর্তন করে নি। ২০০৬ সালে প্রথম আলো তার নিজস্ব বানানরীতিতে এসব শব্দের বানান পরিবর্তন করে ফেলে। এভাবেই চলছে। প্রকৃতপক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ না থাকায় এমনটা চলছে।

আমরা আর কতকাল প্রাথমিক পর্যায় থাকবো? তাই এখন প্রয়োজন বলিষ্ঠ কোন উদ্যোগের। সবাইকে নিয়ে আসতে হবে এক জায়গায়। দু বাংলার বাংলাকে এক করতে হবে নতুবা বৃটিশ ও আমেরিকান ইংরেজির মত দুটি সুস্পষ্ট ধারা থাকতে হবে। নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচাতে হলে আমাদেরকেই ভাষা সংহতির কাজ শুরু করতে হবে।

অসংখ্য ধন্যবাদ এবং নতুন পোস্টে আমন্ত্রণ।

২৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

শাবা বলেছেন: কৈফিয়ত : এখানে মন্তব্য আর প্রতিউত্তর লেখায় ভুলের ছড়াছড়ি। বানানসহ অনেক ভুল! বানান নিয়ে লেখাতে বানান ভুল! :> অত্যন্ত হাস্যকর বটে।

কিন্তু করার কিছুই নেই। এখানে টাইপিং ভুল হচ্ছে, এমনিতেও ভুল হচ্ছে। শুধরানোর জন্য মন্তব্যে এডিট বাটনও নেই, স্পেল চেকারও নেই। এছাড়া মন্তব্য ও প্রতিউত্তর হঠাৎ করে লেখা হচ্ছে, কোন রিভিউ ছাড়া সরাসরি প্রকাশ হচ্ছে। তাই ভুলে ভরা বাংলাদেশে ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক! :> :> ;) সবাই কষ্ট করে সঠিকভাবে পড়ে নিবেন।

আমাদের নিয়ে হাসাহাসি না করলে খুশি হবো। =p~ =p~ =p~

২৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২

নাসরীন খান বলেছেন: ভালো ১টি লেখা। অনেকে টিভি ,বিভিন্ন মিডিয়িতে অভিনয় করছে অথচ বাংলা শব্দ গুলিকে খুব বাজে ভাবে বলছে যা শুনলে কান জ্বালা করে ।কী বিহিত হবে তার ?

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

শাবা বলেছেন: হ্যাঁ সত্যি কথা, আমরা অবাঙালি যুগে আরো ভাল বাংলা বলতাম। এখন তো স্বাধীন, তাই সব ক্ষেত্রেই স্বাধীনতা।

২৬| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৭

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: দোষটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার। আমি ক্লাশ ১০ পর্যন্ত বাংলা মোটামুটি পরেছি। তার পর প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কোন বাংলা পরতে পারি নাই। প্রকৌশলি সহ বাংলাদেশের সকল সম্মান শ্রেনির পরশুনায় বাংলা অনুপস্থিত। এই অবস্থায় কতদুর পারা যায়। আর বর্তমান মোবাইল এবং ইন্টারনেটের যুগে বাংলা সফ্টওয়ারগুলো তো দুঃসাদ্ধ হয়ে দারিয়েছে। তবে একটা বিষয় ভালো লাগে যে ফেসবুকে বাংলার ব্যাবহার খুব ভাল একটা অবস্থানে দারিয়েছে। এখন তো ফেসবুক মনে হয় কিছুদিনের মধ্যে বাংলাকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৪

শাবা বলেছেন: আপনি ভাল কথাই বলেছেন। রবীন্দ্রনাথসহ অনেকে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষার কথা বলেছেন। প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাসেম এ লক্ষ্যে কলেজ পর্যায়ে সর্বপ্রথম বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক রচনা শুরু করেন এবং বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পৃথিবীর সকল উন্নত জাতি তাদের মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জন্য সকল পর্যায়ে মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক রয়েছে। জ্ঞান যদি নিজের ভাষায় শেখা যায় তাহলে ভালভাবে আয়ত্ব করা যায়। তাই তারা উন্নত জাতি।
প্রযুক্তিতে বাংলা যদি ভালভাবে প্রয়োগ করা যায় তাহলে বাংলার ব্যবহার আরো বাড়বে। একসময় তো মনে হচ্ছিল তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি বাংলা ভাষাকে ভুলিয়ে দিবে। ই-মেল, চ্যাট সবই ইংরেজিতে বা ইংরেজি বর্ণমালায় হতো। অভ্রসহ কিছু সফট ওয়্যার আসাতে বর্তমানে এ অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আরো অনেক কাজ বাকি রয়েছে, আরো অনেক কাজ করতে হবে।
ধন্যবাদ।

২৭| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: শাবা ,




পান্ডিত্যপূর্ণ লেখা আর সাথে সহ ব্লগারদের ( বিশেষ করে "ভারসাম্য" এর )চমৎকার সব মন্তব্য মিলেমিশে যাওয়া এই পোষ্টটি যদি প্রিয়তে না রাখি তবে অনেক সুন্দর কিছু হারাতে হবে ।

পাছে হারিয়ে ফেলি, সে ভয়ে প্রিয়তে রাখছি !

শুভেচ্ছান্তে ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৭

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস।
সামনেও আমাদের সাথে থাকবেন আশা করি।

২৮| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০

আদম_ বলেছেন: বাংলা ক্লাস যে কতটা হৃদয়গ্রাহী হতে পারে তা বুঝেছিলাম ইন্টারে পড়ার সময়। ম্যাডাম যখন নজরুলের যৌবনের গান রচনাটি পড়াতেন তখন আমরা যেন প্রতিটি কথা শুধু শুনতাম না গিলে গিলে খেতাম। আমি নিয়মিত ক্লাস করতাম না, শুধু বাংলা ক্লাসের লোভে পড়ে নিয়মিত ক্লাস করা আরম্ভ করি।

আমার মনে হয়, বাংলা ভাষা নিয়ে ভুল-ভাল অথবা বিতর্ক কিছুটা থাকলেও আমাদের যোগ্য শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। আগে বিটিভিতে একটা অনুষ্ঠান হতো বাংলা ভাষার সঠিক উচ্চারণ/বলা/ লেখা নিয়ে, এখন হয় কিনা জানিনা। শুদ্ধ ভাষার প্রসারে মিডিয়া একটা বিরাট ভুমিকা পালন করতে পারে।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪

শাবা বলেছেন: আমাদের মাঝে আরো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনান্দ দাশের জন্ম হতে হবে। অর্থাৎ তাদের মত প্রতিশ্রুতিশীল সাহিত্য ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন, যারা তাদের লেখনি দ্বারা পাঠকদের মন জয় করবে। নতুন নতুন পাঠক তৈরি করবে।
আমাদের মাঝ থেকেই এমন কালজয়ী সাহিত্যিক তৈরি হতে হবে। তবেই ভাষা আবার জেগে উঠবে।
ধন্যবাদ।

২৯| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪০

এম এস জুলহাস বলেছেন: .
প্রত্যেকটি সন্তানের অভিভাবকই এ কথা স্বীকার করবেন আশাকরি- প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় শিক্ষার্থীই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথার / আচরণের অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। এক্ষেত্রে অভিভাবক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেও তাঁদের সন্তানদেরকে এ অবস্থা থেকে টলাতে পারেন না। শুনতে হয়- আব্বু / আম্মু এটা আমার স্কুলের টিচার বলেছে, কিংবা ওটা আমার ম্যাডাম করেছে। এদের কাছে টিচারের আচরণ, কথাবার্তা যে কী শক্ত অবস্থানে আছে তা ভূক্তভোগী মাত্রই জানেন। তবুও আমার মতে একটি বাচ্চার পূর্ণ বিকাশের জন্য তার অভিভাবকই প্রধান।

আমার কথা সেটা না। বাচ্চাদের প্রথম হাতে খড়ি হয় তাদের বাবা-মা’র মাধ্যমে। প্রথম প্রথম শেখা পড়াগুলো বাচ্চারা অনেক দিন এমনকি সারা জীবন মনে রাখে। তাই আসুন গোড়াতেই বাংলা শতকিয়ার নিম্নের সাধারণ ভুলগুলি আমরা অভিভাবকগণই শুধরে দেই। যে ভুলগুলি আমরা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীর মাঝে প্রকটভাবে লক্ষ্য করে থাকি। এমনকি আমরা বড়রাও করে থাকি নিজেদের অজান্তেই।

সিদ্ধান্তহীন কিছু বানানের নমুনা নিচে দেখি-

অংক সংখ্যা-বাংলা অশুদ্ধ উচ্চারণ/বানান-বাংলা শুদ্ধ উচ্চারণ/বানান
৯- নও- নয়
১৪- চোইদ্দ- চৌদ্দ
১৫- পনর- পনের
১৭- সতর- সতের
২৮- আঠাশ- আটাশ
৩৫- পাইত্রিশ- পঁয়ত্রিশ
৪৫- পোচ্চল্লিশ- পঁয়তাল্লিশ
৪৬- ছেচল্লিশ/ছিচল্লিশ- ছয়চল্লিশ
৫১- একপঞ্চাশ- একান্ন
৫২- বাহান্ন- বায়ান্ন
৫৫- পোচপান্ন- পঞ্চান্ন
৫৬- ছিয়ান্ন- ছাপ্পান্ন
৬৬- ছেষট্টি/ছিষট্টি- ছয়ষট্টি
৬৭- সাষট্টি- সাতষট্টি
৬৮- আষট্টি- আটষট্টি
৭৩- তেহাত্তর / তিহাত্তর- তিয়াত্তর
৭৪- চোহাত্তর- চুয়াত্তর
৭৬- ছিহাত্তর- ছিয়াত্তর
৮২- ব্রিয়াশি- বিরাশি
৮৩- ত্রিয়াশি- তিরাশি
৮৭- সপ্তাশি / সপ্তআশি- সাতাশি
৮৮- অষ্টাশি / অষ্টআশি- আটাশি
৯২- ব্রিয়ানব্বই- বিরানব্বই
৯৩- ত্রিয়ায়ানব্বই- তিরানব্বই
৯৭- সপ্তানব্বই- সাতানব্বই
৯৮- অষ্টানব্বই- আটানব্বই
১০০- একশো/একশ- একশত

ট্রেনিং -এ গিয়ে ৭/৮ টা বিদ্যালয়ের সবকটিতেই ষষ্ঠ-দশম শ্রেণীর প্রায় ৯০-৯৫ ভাগ শিক্ষার্থীকেই এ ধরনের বানানগুলো লিখতে দেখেছি। যা আমার মতে আমাদের বাংলা শতকিয়ার জন্য চরম অপমান জনক।
অথচ আজও জানতে পারলাম না কোন নোটিসবলে, কোন সার্কুলারে উপরোক্ত কিছু কিছু বানানের পরিবর্তন হলো ! যেহেতু কোন নোটিস নীতিমালা পাইনাই সেহেতু শিক্ষার্থীদের লেখা কোন বানানটা সঠিক হিসেবে গণ্য করব ?

২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৫৫

শাবা বলেছেন: আপনি সুন্দর কথা বলেছেন। সঠিক ভাষা শেখানোর জন্য আমাদেরকে পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে।
বানানের জন্য ‘বাংলা একাডেমী বাংলা বানান-অভিধান’ অথবা ‌বাংলা একাডেমী সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান' দেখলে আপনার সিদ্ধান্তহীনতা কেটে যাবে এবং সেখানে ভুল বানানগুলোর জন্য কোন সনদ দেখতে পাবেন না।
আপনার শুভকামনা।

৩০| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

ইঞ্জিনিয়ার বেলাল বলেছেন: বানান নিয়ে অনেক কিছু জানলাম। মনে হচ্ছে আমি কিছুই জানি না।
এতদিন কী করলাম, নিজের ভাষাই ঠিকমতো বলতে পারে না।

২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:১২

শাবা বলেছেন: ভাই, আপনার উপলব্ধির জন্য ধন্যবাদ। আমাদের উপলব্ধি শানিত হলে পরবর্তী প্রজন্ম সচেতন হবে, নিশ্চয়ই।

৩১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩০

লাবনী আক্তার বলেছেন: বাহ! চমৎকার পোস্ট । সত্যি শিখলাম। এখনতো লেখার সময় এসব ভাবতে হবে খুব। বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। :|| :||

প্রিয়েতে নিলাম।

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৫

শাবা বলেছেন: না, অত চিন্তার কিছুই নেই। লিখে যাবেন স্বাভাবিকভাবে। লেখতে লেখতে সঠিক বানান রপ্ত হয়ে যাবে। আর পাশে যদি প্রমিত কোন অভিধান থাকে তাহলে তো কথাই নেই, কোন বানানের ব্যাপারে সন্দেহ হলেই দেখে ফেলবেন।

তবে বানান নিয়ে ভাববেন না- আগে ভাব প্রকাশ, পরে না হয় ঠিক করা যাবে। লেখা না থাকলে কী ঠিক করবেন? অতএব কোন চিন্তা না করে লিখে যান অফুরন্ত ধারায়।

ধন্যবাদ।

৩২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

বাকপ্রবাস বলেছেন: শিশুর স্কুল জীবনটা মূখ্য বানানটা শুদ্ধ করার জন্য তখন গাঁথুনি শক্ত না হলে পরে আর সম্ভব হয়ে উঠৈনা, আমার খুব বানান ভুল হয় তার জন্য মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে হয়............ধন্যবাদ আপনাকে অমূল্য পোষ্ট এর জন্য

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৪৫

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ বাকপ্রবাস। হ্যাঁ, শুরুটা ভালো হলে সবটাই ভালো হয়। আমাদের ক্ষেত্রে তা হয় না। আমাদের শুরুটা হয় এলোমেলো ভাবে। গাঁথুনি হয়ে যায় দুর্বল। একবার কোন বানানে সন্দেহ তৈরি হয়ে গেলে তা সহজে মিলিয়ে যায় না। আমি একজন সাহিত্যিককে চিনি। তিনি একবার অতিথি বানান লিখেছিলেন অথিতি এবং সেটা ছাপাও হয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখেছি তিনি বার বার এ বানান ভুল করছেন। এ বানান লেখতে গেলে তিনি সব সময় সন্দিহান হয়ে যান এবং সঠিকটাকে ভুল মনে করে ভুলটাই লেখেন। আসলে একবার সন্দেহ ঢুকলে তা কাটানো খুব কঠিন। এ জন্য স্কুল জীবনে বানানের গাঁথুনি ঠিক করে দিতে হবে।

৩৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আমরা বাংলা বানান কতটুকু শুদ্ধ করে লিখি ?

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২১

শাবা বলেছেন: হ্যাঁ, এটাই দেখার বিষয়।
আমরা লেখকরা সচেতন হলে বাংলা বানানের বিভ্রান্তি অরনক কেটে যেতো।
ধন্যবাদ।

৩৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:১২

আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম।চালিয়ে যান। আরেকটা কথা,আগে আমরা "শ্রেণী" লিখতাম,কিন্তু এখন তো দেখি "শ্রেণি" লিখা দেখতে পাই।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৫

শাবা বলেছেন: দুঃখিত, বিলম্বে উত্তর দেয়ায়। আসলে আমার দৃষ্টিতে আসে নি আপনার এ কমেন্ট।
শ্রেণী বানান শুদ্ধ নয়, শ্রেণি বানানটি নেয়া হয়েছে সহজিকরণ হিসেবে।
আমার অন্য পোস্টগুলো পড়ার অনুরোধ রইলো।

৩৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:০৬

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: ++
দারুন পোস্ট

১৬ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

শাবা বলেছেন: ধন্যবাদ মায়াবী রূপকথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.