নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সবসময় সত্য,আমি সত্যেরই সারথী।লেখালেখির অভ্যাস পুরানো,ফেলতে পারি না;সময় অসময়ে জেগে ওঠে।ব্লগ কিংবা ফেবুতে আমি একজনই..\"শাহেদ শাহরিয়ার\'\',জয়\' নামটা বন্ধুদের দেয়া।ওটা\'ও তাই রেখেই দিয়েছি।লিখছি,যতকাল পারা যায় লিখব;ব্যস এতটুকুই!

শাহেদ শাহরিয়ার জয়

আমি শাহেদ শাহরিয়ার,একটু আবেগি আর খানিকটা যৌক্তিক।

শাহেদ শাহরিয়ার জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবতার মুক্তির সনদ, ঐতিহাসিক বিদায় হজ্জের ভাষণ।(পত্রিকা হতে সংকলিত)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৮



মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৩ বছর বয়সে নবুয়তের ১৩তম বর্ষে মদিনায় হিজরত করেন। হিজরতের ষষ্ঠ বছরে মক্কা শরিফে জিয়ারতের জন্য এসে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি সম্পাদন করে ফিরে যান। দুই বছর পর অষ্টম হিজরির রমজান মাসে মক্কা বিজয় হয় এবং নবীজি ওমরাহ সম্পাদন করেন। দশম হিজরিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রায় সোয়া লাখ সাহাবি সঙ্গে নিয়ে হজ সম্পাদন করেন। এই হজই নবীজির জীবনের একমাত্র হজ; এটিই প্রথম হজ, এটিই শেষ হজ। এর ৮৩ দিন পর ১২ রবিউল আউয়াল তিনি ইন্তেকাল করেন। এ কারণে এই হজ ইতিহাসে বিদায় হজ নামে প্রসিদ্ধ। (বিশ্বনবী, গোলাম মোস্তফা)।
বিদায় হজে প্রিয় নবীজি (সা.) উপস্থিত সোয়া লাখ সাহাবির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত। এটি ছিল তাঁর জীবনের সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক ভাষণ, যা তিনি দশম হিজরি সনের ৯ জিলহজ আরাফার দিনে মসজিদে নামিরাতে ও জাবালে রহমতের ওপরে এবং পরদিন ১০ জিলহজ ঈদের দিন ও কোরবানির দিন মিনাতে দিয়েছিলেন। (সিরাতুন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনে হিশাম (রা.), খণ্ড: ৪, পৃষ্ঠা: ২৭৩-২৭৭)।
মহানবী (সা.) তাঁর ভাষণের শুরুতে মহান আল্লাহর হামদ ও প্রশংসা জ্ঞাপন করার পর বলেন, হে লোকসকল! আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘হে মানবজাতি! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সেই সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক পরহেজগার। (আল-কোরআন, পারা: ২৬, সুরা-৪৯ হুজুরাত, আয়াত: ১৩)। সুতরাং কোনো অনারবের ওপর কোনো আরবের; কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের, এমনিভাবে শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের এবং কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই; তবে তাকওয়ার ভিত্তিতে। সব মানুষ আদম (আ.)-এর সন্তান; আর আদম (আ.) মাটি দ্বারা সৃষ্ট। হে সভ্যমণ্ডলী! এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই, সব মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই; তোমাদের অধীনদের (দাস-দাসী) প্রতি খেয়াল রাখবে, তোমরা যা খাবে তাদের তা খাওয়াবে, তোমরা যা পরবে তাদেরও তা পরাবে। সাবধান! ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করবে না; কেননা তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা ধর্মীয় বিষয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
‘হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করবে; পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, রমজান মাসে রোজা রাখবে, সন্তুষ্টচিত্তে সম্পদের জাকাত প্রদান করবে, স্বীয় প্রভুর ঘরে এসে হজ পালন করবে এবং নেতৃবৃন্দের আনুগত্য করবে; তাহলে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।
‘হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃবৃন্দ! আজ যে কথা তোমাদের বলব তা মনোযোগ দিয়ে শোনো। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তোমাদের সঙ্গে একত্রে হজ করার সুযোগ আর আমার ঘটবে না।
‘হে মুসলিম! আঁধার যুগের সমস্ত ধ্যানধারণাকে ভুলে যাও, নব আলোকে পথ চলতে শেখো। আজ থেকে অতীতের সমস্ত মিথ্যা সংস্কার, অনাচার পাপ-প্রথা বাতিল হয়ে গেল। মনে রেখো, সব মুসলমান ভাই ভাই। কেউ কারও চেয়ে ছোট নও, কারও চেয়ে বড় নও। আল্লাহর চোখে সবাই সমান। নারী জাতির কথা ভুলো না। নারীর ওপর পুরুষের যেমন অধিকার আছে, পুরুষের ওপর নারীরও তেমন অধিকার আছে। তাদের প্রতি অত্যাচার কোরো না। মনে রেখো, আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের গ্রহণ করেছ। অচিরেই তোমরা তোমাদের মহান প্রভুর সাক্ষাতে উপনীত হবে। তখন তিনি তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। তোমাদের কারও কাছে যদি কোনো আমানত গচ্ছিত থাকে, তা তার প্রাপকের কাছে অবশ্যই পৌঁছে দেবে। নিশ্চয়ই সকল প্রকার সুদ রহিত করা হলো। তবে তোমাদের মূলধন বহাল থাকবে। তোমরা কোনো জুলুম করবে না, তোমাদের প্রতিও কোনো জুলুম করা হবে না। জাহিলি যুগের যত রক্তের দাবি তা সব রহিত করা হলো। প্রথম আমি রবিয়া ইবনে হারিস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের শিশুপুত্রের রক্তের দাবি রহিত করলাম।
‘সাবধান! ধর্ম সম্বন্ধে বাড়াবাড়ি কোরো না; এই বাড়াবাড়ির ফলে অতীতে বহু জাতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানের ধন-প্রাণ পবিত্র বলে জানবে। যেমন পবিত্র আজকের এই দিন, ঠিক তেমনি পবিত্র তোমাদের পরস্পরের জীবন ও ধনসম্পদ। হে মুসলমানগণ! হুঁশিয়ার! নেতৃ-আদেশ কখনো লঙ্ঘন কোরো না। যদি কোনো কর্তিত নাসা কাফ্রি ক্রীতদাসকেও তোমাদের আমির করে দেওয়া হয় এবং সে যদি আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালনা করে, তবে অবনত মস্তকে তার আদেশ মেনে চলবে। দাস-দাসীর প্রতি সর্বদা সদ্ব্যবহার কোরো। তাদের ওপর কোনো ধরনের অত্যাচার কোরো না। তোমরা যা খাবে তাদেরও তা-ই খাওয়াবে; যা পরবে তা-ই পরাবে। ভুলো না, তারাও তোমাদের মতো মানুষ। সাবধান! পৌত্তলিকতার পাপ যেন তোমাদের স্পর্শ না করে। শিরক কোরো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা কথা বোলো না, জেনা-ব্যভিচার কোরো না। সর্বপ্রকার মলিনতা থেকে নিজেকে মুক্ত করে পবিত্রভাবে জীবনযাপন করো। চিরদিন সত্যাশ্রয়ী হয়ো। মনে রেখো, একদিন তোমাদের আল্লাহর কাছে ফিরে যেতেই হবে। সেদিন তোমাদের কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। বংশের গৌরব কোরো না। যে ব্যক্তি নিজ বংশকে হেয় মনে করে অপর এক বংশের নামে আত্মপরিচয় দেয়, আল্লাহর অভিশাপ তার ওপর নেমে আসে।
‘হে মানবজাতি! তোমরা আমার কথা শোনো ও অনুধাবন করো। তোমরা অবশ্যই জেনে রেখো, প্রত্যেক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই এবং মুসলমানরা ভ্রাতৃপ্রতিম। সুতরাং কোনো মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের কোনো কিছু বৈধ নয়, যতক্ষণ না সে সন্তুষ্টচিত্তে তাকে তা প্রদান করে। অতএব, তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম কোরো না।
‘হে আমার উম্মতগণ! আমি যা রেখে যাচ্ছি, তা যদি তোমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে থাকো, তবে কিছুতেই তোমাদের পতন হবে না। সেই গচ্ছিত সম্পদ কী? তা আল্লাহর কোরআন এবং তাঁর রাসুলের সুন্নাহ। নিশ্চয় জেনো, আমার পর আর কেউ নবী নেই। আমিই শেষ নবী। যারা উপস্থিত আছো, তারা অনুপস্থিত সব মুসলমানের কাছে আমার এই সব বাণী পৌঁছে দিয়ো। হয়তো অনেক অনুপস্থিত লোক উপস্থিত শ্রোতা অপেক্ষা অধিক হেফাজতকারী হবে।’
হজরতের মুখমণ্ডল ক্রমেই জ্যোতিদীপ্ত হয়ে উঠতে লাগল। কণ্ঠস্বর করুণ ও ভাবগম্ভীর হয়ে এল। ঊর্ধ্ব আকাশের দিকে মুখ তুলে তিনি আবেগভরে বলতে লাগলেন, ‘হে আল্লাহ! হে আমার প্রভু! আমি তোমার বাণী পৌঁছে দিতে পারলাম? আমি কি আমার কর্তব্য সম্পাদন করতে পারলাম?’ লাখো কণ্ঠে নিনাদিত হলো: ‘নিশ্চয়ই! নিশ্চয়ই!’ তখন হজরত কাতরকণ্ঠে পুনরায় বলতে লাগলেন, ‘প্রভু হে! শ্রবণ করো, সাক্ষী থাকো; এরা বলছে, আমার কর্তব্য আমি পালন করেছি।’ ভাবের আতিশয্যে হজরত নীরব হয়ে রইলেন। বেহেশতের জ্যোতিতে মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এই সময় কোরআনের শেষ আয়াত নাজিল হলো, ‘হে মুহাম্মদ (সা.) আজ আমি তোমার দীনকে সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমার ওপর আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম; ইসলামকেই তোমার ধর্ম বলে মনোনীত করলাম।’ (আল-কোরআন, পারা: ৬, সুরা-৫ মায়িদাহ, আয়াত: ৩)। হজরত ক্ষণকাল ধ্যান-মৌন হয়ে রইলেন। বিশাল জনতা এখন নীরব। কিছুক্ষণ পরে তিনি চোখ মেলে করুণ স্নেহমাখা দৃষ্টিতে সেই জনসমুদ্রের প্রতি তাকিয়ে বললেন, ‘বিদায়!’ একটা অজানা বিয়োগ-বেদনা সবার হৃদয়ে ছায়াপাত করল। (সূত্র: আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির), খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ১৯৮ ও ৩২০-৩৪২, ই. ফা. বা.)।

তবুও একটা গ্রুপ মুসলিম কিংবা নবী মোহাম্মদ সঃ এর বিরুদ্ধে থাকবেই,ওটা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্যও হতো পারে,আবার কিছু মুসলিমও আজীবন তেমনিই থেকে যাবে,অসাম্প্রদায়িকতার নাম করে মুসলিম বিদ্বেষানল জ্বালানোর চেষ্টায়! কিছুতো অবশ্যই আছে একটু বাড়াবাড়িতে,যেটা মহানবী সঃ বারং বার বলে গেছেন" সাবধান,তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না!"
(পত্রিকা হতে সংকলিত)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.