নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গন্তব্য - হাসপাতালের বারান্দায় মেয়েটা মরার মতো পরে আছে

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩০

কাওরান বাজার থানায় বসে আছি ঘন্টা দু'য়েক হলো । আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সরাসরি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে । অপরাধ বোমা হামলায় আহত মেয়েটিকে নিজ গরজে হাসপাতলে নিয়ে আসা । আহত রিকশাওয়ালা হাসপাতালে আসতে রাজি হয়নি । আমাকে যখন থানায় নিয়ে আসা হয় তখনও মেয়েটির জ্ঞান ফিরেনি । মেয়েটির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে বোমা হামলায় শরীরের উপরের অংশের অনেকটা জ্বল্সে গেছে ।

সিএনজিতে করে হাসপাতালে পৌছাবার পর, বোমা হামলায় আহত শুনে কোন ডাক্টার মেয়েটিকে চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি । সবার এক কথা, এটা পুলিশ কেস । আগে পুলিশকে ইনফম করুণ । তা না হলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে । আরে এখন আমি পুলিশ পাবো কোথায় ? মেয়েটার আগে চিকিৎসা দরকার । আগে মেয়েটার চিকিৎসার ব্যবস্হা করবো নাকি পুলিশের খোজে ছুটবো । ডাক্টারদের সে কথা বলাতে তারা ফিরে ও দেখেনি । মেয়েটি মরার মতো ট্টলিতে পরে আছে । আমি এদিক ওদিক করছি । একে ,ওকে সাহায্য করার জন্য বলছি । হঠাৎ করেই যেন চিড়িয়াখানার যন্তুতে পরিনত হলাম। সবাই বেশ অবাক হয়ে আমাদের দেখছে । আমাকে অসহায় অবস্থায় ছোটা ছুটি করতে দেখে , অনেকক্ষন যাবত পাশে ঘুর ঘুর করা একটা লোক এসে বলল, স্যার এখানে কিছু হবে না । কাছেই একটা ক্লিনিক আছে, যেখানে চলেন , চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি । আমি বুঝলাম লোকটা দালাল । গরুর দালাল , বাড়ির দালাল এর মতো এখন মানুষের সেবা পা্ওয়ার জন্য ও দালাল তৈরি হয়েছে । আমি বললাম, দেখ ভাই মেয়েটা আমার কোন আত্মীয় হয়না, রাস্তায় আহত হয়ে পরেছিল আমি চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছি । একটু সাহায্য করো ।

লোকটা ফিসফিস করে বলল, এখানে কিছু হবে না । বললাম তো ক্লিনিকে নিয়ে চলেন । সব ব্যবস্হা করে দেবো ।

দেখ, আমার কাছে খুব বেশি টাকা নেই । আমি অসহায় হয়ে বললাম ।

আপনি কেন টাকা দেবেন ?

তাহলে কে দিবে ?

দেবে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজন । খবর পেয়ে তারা আসবে না ? তখন বিল দিয়ে মেয়ে নিয়ে যাবে । আমার ইচ্ছে হলো, লোকটার গালে কষে একটা থাপ্তর মারতে । কোন রকম নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, দয়া করে তুমি আমার সামনে থেকে যাও ।

আমি কি আপনার লগে থাকতে আইছিনি মিয়া ? বিপদে পরছেন তাই সাহায্য করতে চাইছি ।

তোমার সাহায্য আমার দরকার নাই । তুমি যাও ।

যামু মানে এইটা কি আপনার বাবার জায়গা নাকি ?

আমি আর কথা না বাড়িয়ে হাসপাতালের মহাপরিচালকের রুমটা খুজে বের করে বিনা অনুমতিতে ঢুকে গেলাম ।

সব কথা শুনার পর মহাপরিচালক সাহেব ফোনে কাউকে নিদের্শ দিলেন । আমাকে বললেন , আপনি আমার পিওনের সঙ্গে যান । আর এটা পুলিশ কেস । পুলিশ না আসা পযর্ন্ত কোথাও যাবে না । আমি মাথা নেড়ে পিয়নের পেছন পেছন গেলাম । হাসপাতালের বারান্দায় মেয়েটা মরার মতো পরে আছে কারা যেন ট্রলি থেকে নামিয়ে মেঝেতে শুইয়ে দিয়েছে । আমি ছুটে গিয়ে মেয়েটাকে তুলে বসাতে চাইলাম । পারলাম না । মেয়েটার শ্বাস প্রশ্বাস চলছে কিনা বুঝতে পারছি না । দূরে দাঁড়িয়ে সেই দালালটাকে হাসতে দেখলাম । মহাপরিচালকের পিয়ন ডাক্টার আর ট্রলি নিয়ে এসে মেয়েটাকে একটা ওয়াডে নিয়ে গেল । মেয়েটার চিকিৎসা শুরু হলো । আমি মেয়েটাকে যে ওয়াডে নিয়ে যাওয়া হলো তার বাইরে একটা টুলে বসে পরলাম । মনে পরে গেল আমার গন্তব্যের কথা । যে গন্তব্যে আমার পৌছাতেই হতো ।

পুলিশ আসতে আসতে রাত আটটা । পুরো ঘটনা শুনে অল্প বয়স্ক এসআই আমাকে বলল, আপনাকে থানায় যেতে হবে । পুরো ঘটনাটা রহস্যজনক । তদন্ত করে দেখতে হবে । আমি বললাম আমাকে যেতে হবে কেন ? ঘটনা যা ঘটেছে তার তো সবটাই বললাম । আমি আমার বাসার ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিচ্ছি । আমাকে ডাকলেই আমি এসে দেখা করবো । এস আই বলল, না তা হবে না । রিপোট লিখতে হবে । যান গাড়িতে গিয়ে বসুন । সারা ঢাকা শহর ঘুরে যখন থানায় এসে পৌছালাম তখন ঘড়িতে সাড়ে নটা বাজে । তারপর থেকে ওসি সাহেবর জন্য থানায় বসে আছি ঘন্টা দু'য়েক । ওসি সাহেব এসে যা বলবেন তার উপর আমাক ভাগ্য নির্ভর করছে । ওসি সাহেব বলে দিবেন আমি আপরাধী না পরউপকারী । একটা দ্বীঘ শ্বাস ছেড়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে বললাম , তোমার সৃস্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষগুলো এতো নিকৃস্ঠ কেন প্রভু?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯

আলী খান বলেছেন: নিরাশ হয়ে লাভ নেই, এটা বাংলাদেশ.........

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১২

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: তবুও আশায় বাধি বুক

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪২

আজীব ০০৭ বলেছেন: আলী খান বলেছেন: নিরাশ হয়ে লাভ নেই, এটা বাংলাদেশ.........

সহমত

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: সহমত

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪১

কর্ণেল সামুরাই বলেছেন: ঠিক এজন্যই ডাক্তারদের বদনাম হয়। বাংলাদেশী সরকারের উদ্ভট কিছু নিয়ম চিকিৎসা সেবাটাকেই নিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে দেয়।

রোগী ভর্তির লম্বা লাইন, সরকার কি পারেনা কাউন্টার ১টা না বানিয়ে ১০ টা বানাতে? চিকিৎসার আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন!

এসব নিয়ম না মেনে কোন ডাক্তার যদি সেবা দিতে যায় তাকে আবার আইনি ঝামেলা পোহাতে হয়। সরকারের উচিত উদ্ভট এসব ঝামেলা এড়িয়ে সেবাকেন্দ্রিক আইন প্রণয়ন।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ধন্যবাদ বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.